আন্তর্জাতিক ফুটবল by মাহমুদুন্নবী চঞ্চল
২০১২ সাল ছিল স্পেন জাতীয় দলের জন্য ভীষণ আনন্দের। ট্রেবল জয়ের আনন্দে মেতেছিল স্প্যানিশরা। ইউরো ফুটবলে ইতালিকে হারিয়ে ইউরো-বিশ্বকাপ-ইউরো, টানা তিনটি গুরুত্বপূর্ণ শিরোপা জয়ের গৌরব অর্জন করে ইকার ক্যাসিয়াস বাহিনী।
যার নেতৃত্ব দেন কোচ ভিসেন্তে দেল বস্ক। ২০০৮ সালে ইউরো চ্যাম্পিয়ন স্পেন বাজিমাত করে ২০১০ সালের ফুটবল বিশ্বকাপে। দক্ষিণ আফ্রিকায় যেখানে প্রথম বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয় হল্যান্ডকে হারিয়ে। এর বছর দুয়েক পর ২০১২তে আবারো ইউরো জেতে জাভি-ইনিয়েস্তারা।বরখাস্ত ম্যারাডোনা ॥ বছরের আলোচিত ঘটনা ছিল আল ওয়াসল থেকে দিয়াগো ম্যারাডোনার বরখাস্তের ঘটনা। যা ছিল ভক্তদের জন্য হতাশারই। গত ১০ জুলাই আরব আমিরাতের আল ওয়াসলের কোচের পদ থেকে বরখাস্ত করা হয় ম্যারাডোনাকে। ২০১১ সালে দুই বছর মেয়াদি চুক্তিতে দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু প্রত্যাশিত রেজাল্ট (ম্যাচ-২২, জয়-৭, ড্র-৫, হার-১০) এনে দিতে পারেননি বলে ১৪ মাস পরই কোচের পদ থেকে ছাঁটাই করা হয় তাঁকে। আল ওয়াসলের সঙ্গে এখনও অবশ্য ম্যারাডোনার সম্পর্ক শেষ হয়ে যায়নি। এখনও তিনি কাজ করছেন ক্লাবটির ‘এ্যাডভাইজার’ হিসেবে। এ বছরে ম্যারাডোনা আলোচিত ছিলেন আরেকটি কারণে। ৫১ বছর বয়সে আবারো তিনি বাবা হতে চলেছেন। বয়সে ১৮ বছরের ছোট বান্ধবী ভেরোনিকা ওজেদা আর কিছুদিন পরেই জন্ম দিবেন ফুটবল ঈশ্বরের আরেকটি সন্তান। অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছরও ম্যারাডোনা-পেলে তর্কযুদ্ধ ছিল দেখার মতো। নেইমারকে মেসির তুলানায় সেরা বলায় পেলেকে সঠিক ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন ম্যারাডোনা। তিনি বলেছিলেন, ‘পেলে সঠিক সময়ে সঠিক বড়ি খেতে ভুলে গেছেন’।
গার্ডিওলার বিদায় ॥ মাত্র চার বছর। এর মধ্যেই বার্সাকে প্রায় অপরাজেয় করেছিলেন তিনি। শিরোপা জিতিয়েছেন প্রায় ১৪টি। মেসির মেসি হয়ে ওঠার গল্প তার হাত ধরেই। বার্সার সফল কোচের তকমা গায়ে মাখা পেপ গার্ডিওলা সকল মায়া ছিন্ন করে বিদায় নেন বার্সা থেকে। গেল জুন মাসে গার্ডিওলা ছিলেন আন্তর্জাতিক ফুটবলে আলোচিত ঘটনা। তার বিদায়ের পর বার্সিলোনার দায়িত্ব নেন তারই সহকারী হিসাবে কাজ করা টিটো ভিলানোভা। বর্তমানে যিনি ক্যান্সারের সঙ্গে যুদ্ধ করছেন। ২০১২ সালেই ফিফা বর্ষসেরা কোচের পুরস্কার পান ৪১ বছর বয়সী গার্ডিওলা।
অসুখী রোনাল্ডো ॥ মাদ্রিদে সুখে নেই রোনাল্ডো। বিষয়টি বেশ আলোচনা হয়েছে। এক ম্যাচে গোল করার পরও স্বাভাবিক উদযাপন করেননি রিয়াল মাদ্রিদের পর্তুগিজ তারকা ফরোয়ার্ড ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। পরে কারণ হিসাবে বলেন, রিয়ালে সুখী নন তিনি। তখন থেকেই আলোচনার সূত্রপাত। ঠিক কি কারণে ভালো নেই বর্তমান বিশ্বের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া এই ফুটবলার। অনেকের মতে, রিয়াল অধিনায়ক ক্যাসিয়াসের সঙ্গে অন্তদ্বর্ন্দ্বই নাকি এর মূল কারণ। তবে মুখ ফুটে রোনাল্ডো কিছুই বলেননি। ফলে অন্তর্হিত কারণটি আর জানাই যায়নি। তবে এ নিয়ে লেখালেখি হয়েছে বিস্তর।
পিকে-শাকিরা রোমান্স ॥ বার্সা ডিফেন্ডার জেরার্ড পিকে ও কলম্বিয়ান পপ তারকা শাকিরার প্রেম-রোমান্স অনেক দিন ধরেই। তবে এ বছরে তা পেয়েছে বাড়তি মাত্রা। এ বছরেই উদঘাটিত হয়েছে শাকিরার পেটে পিকের সন্তান। দুজনেই স্বীকার করেছেন তা। আল্টাসনোগ্রামে ছেলের ছবিও প্রকাশ হয়েছে। নতুন বছরেই পিতা-মাতার স্বাদ নিতে পারেন দুই গ্রহের দুই তারকা।
চিতালুর উত্থান ॥ গডফ্রে চিতালু। বছরের আলোচিত নাম। যা এসেছে মেসির কল্যাণেই। এক বছরে গার্ড মুলারের ৮৫ গোলের রেকর্ড ভাঙ্গার পরই, আলোচনায় আসেন জাম্বিয়ার এই ফুটবলার। মেসি, মুলার নন, এক বছরে সর্বোচ্চ গোলের মালিক চিতালু, বলে দাবি করে জাম্বিয়ান ফুটবল ফেডারেশন। ক্লাব ও জাতীয় দলের হয়ে এই কীর্তি চিতালু করেছিলেন ১৯৭২ সালে। তবে ফিফা আনুষ্ঠানিক অনুমোদন না দেয়ায়, মেসির ৯১ গোলই এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ বলে ধরে নেয়া হচ্ছে। যদিও এর মাঝে এসেছে পেলের নামও।
ব্রাজিলের অধঃপতন ॥ ২০১০ বিশ্বকাপে ব্রাজিলের বাজে পারফরমেন্সের কারণে চাকরি যায় কোচ ডুঙ্গার। তার জায়গায় আসেন মানো মেনেজেস। দুই বছরে তার পারফরমেন্স খুব একটা খারাপ ছিল না। তারপরও বরখাস্ত করা হয় তাকে। তার জায়গায় আনা হয় ব্রাজিলকে ২০০২ বিশ্বকাপ জেতানো ফিলিপ সোলারিকে। তবে তার আগেই ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে চরম অবনমন হয় ব্রাজিলের। এক দফায় সেরা দশের বাইরে। সর্বশেষ ১৮তম স্থানে রয়েছে ব্রাজিল, ব্রাজিলের ইতিহাসে সবচেয়ে বাজে র্যাঙ্কিং।
No comments