অপেক্ষার শেষ হচ্ছে আজ by উৎপল শুভ্র
বাকি ৬টি হিটেই প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত স্প্রিন্টারের নামটা আগে বললেন ঘোষক। ব্যতিক্রম শুধু চার নম্বর হিটের সময়। এর-ওর নাম বলে চুপ। দৌড় শুরু হবে বলে দর্শকদের নীরব থাকতে বলা হলো বড় পর্দায়, অলিম্পিক স্টেডিয়ামে ঝুপ করে নেমে এল নিস্তব্ধতা।
তখনই ঘোষকের চিৎকার—সাত নম্বর লেনে ইতিহাসের দ্রুততম মানব...। দর্শকদের তুমুল চিৎকারে ‘উসাইন বোল্ট’ কথাটা প্রায় হারিয়েই গেল।
দৌড় শুরুর আগে বোল্ট দর্শকদের সঙ্গে নানা মজা করেন। কখনো কখনো প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গেও। বেইজিং অলিম্পিকে এ নিয়ে কে যেন অভিযোগও করেছিলেন। কদিন আগেই এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, রেডি-সেট শোনার আগ পর্যন্ত নাকি দৌড় নিয়ে ভাবেনই না!
কাল দুপুরের বোল্ট একটু ব্যতিক্রম। মুখে হাসি নেই, দর্শকদের সঙ্গে দুষ্টুমি নেই। বারবার শুধু হাত দুটি মাথায় বোলাচ্ছেন। ইতিহাসের দ্রুততম মানব, তবে মানবই তো! চাপটা কি তবে টের পেতে শুরু করেছেন উসাইন বোল্ট?
১০০ মিটার স্প্রিন্ট বরাবরই অলিম্পিকের প্রাণভোমরা। ওই সেকেন্ড দশেক সময়ের এমনই আশ্চর্য এক মোহজাল ছড়ানো যে পুরো বিশ্ব উন্মুখ অপেক্ষায় থাকে এর জন্য। তবে এবারের মতো আর কখনো থেকেছে কি না সন্দেহ। কারণটা তিনিই। ১০০ মিটার স্প্রিন্ট সব সময়ই এক মাদকতার নাম হয়ে ছিল, তবে এই জ্যামাইকান সেটিকে নিয়ে গেছেন অন্য মাত্রায়। আজ স্থানীয় সময় ৯টা ৫০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় রাত ২-৫০ মি.) তাঁর জন্যই থমকে যাবে পুরো বিশ্ব। কোটি কোটি চোখ খুঁজে ফিরবে তাঁকে।
বেইজিং অলিম্পিকের পর থেকে যখন যেখানে যান, তখনই এমন হয়। কালই যেমন হিটে দৌড়ে মিক্সড জোন দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় তাঁর ছবি তোলার প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেল পেশাদার সাংবাদিকদের মধ্যে। বোল্ট দুবার দাঁড়ালেন। যা বললেন, তার মর্মার্থ একটাই—হিটে হিটের মতোই দৌড়েছেন।
নিজের হিট জিতেছেন। তবে ১০.০৯ সেকেন্ডে। সেমিফাইনালে কোয়ালিফাই করা ২৭ স্প্রিন্টারের মধ্যে তাঁর চেয়ে ভালো টাইমিং করলেন আটজন। তবে বোল্টকে দেখেই বোঝা গেল, সেরাটা তিনি ফাইনালের জন্যই রেখে দিতে চান। বেইজিংয়ের ১০০ মিটার ফাইনালে প্রায় ৩০ মিটার বাকি থাকতেই উদ্যাপন শুরু করে দিয়েছিলেন। হিটে তা করার প্রশ্নই নেই। তবে শেষদিকে তাঁর আয়েশি ভাব দেখে বুঝিয়ে দিল, টাইমিং নিয়ে একদমই ভাবেননি, প্রথমে শেষ করতে পারাটাই ছিল একমাত্র লক্ষ্য। হ্যামস্ট্রিংয়ের যে চোট নিয়ে গত কিছুদিন এত গবেষণা, সেটি অবশ্য আপাতত থেমে গেছে এতেই।
হিটে অবশ্য কেউ-কেউ প্রাণপণও দৌড়ালেন। ২০০৪ অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন জাস্টিন গ্যাটলিন ৯.৯৭ সেকেন্ডে দৌড়ে অলিম্পিক হিটে সেরা টাইমিংয়ের রেকর্ডই করে ফেললেন। সেটি অবশ্য কয়েক মিনিটই স্থায়িত্ব পেল। পরের হিটেই তা ভেঙে দিলেন যুক্তরাষ্ট্রের তরুণ স্প্রিন্টার রায়ান বেইলি (৯.৮৮)।
হিটে কোনো অঘটন ঘটেনি। যাঁদের জেতার কথা, জিতেছেনও তাঁরাই। টাইমিংয়ের বিচারে বেইলি-গ্যাটলিনের পরই ইয়োহান ব্লেক। ঠিক ১০ সেকেন্ড নিলেন বোল্টের ট্রেনিং-সঙ্গী, বন্ধু ও সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বীও। একই কোচের ছাত্র তাঁরা দুজন, গ্লেন মিলস ভালো একটা ঝামেলাতেই পড়েছেন। জ্যামাইকান ট্রায়ালে ব্লেক বোল্টকে হারিয়ে দেওয়ার পর গবেষণা হয়েছে, মিলস্্ এখন বড় কাজ ভাববেন কোনটিকে—বোল্টের ধাক্কা খাওয়া আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনা নাকি ব্লেককে উৎসাহ দিয়ে নতুন বিশ্বজয়ী তৈরি করা।
দুই জ্যামাইকান অবশ্য জানি দোস্ত। ট্র্যাকে যতই প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাক, ট্র্যাকের বাইরে সারাক্ষণ একে অন্যের সঙ্গে মজা করেন। দুজনই ক্রিকেটের খুব ভক্ত। অলিম্পিকে আসার পর থেকে ক্রিকেট দেখেই সময় কাটাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ব্লেক। বোল্টও সঙ্গী থেকেছেন প্রায়ই।
জ্যামাইকান ট্রায়ালের পর থেকেই এই অলিম্পিকের ১০০ মিটার অনেকটা ‘বোল্ট বনাম ব্লেক’ হয়ে গেছে। কিন্তু অলিম্পিক বড় আজব জায়গা, এখানে অভাবিত অনেক কিছুই ঘটে যেতে পারে। গ্যাটলিন-গে-পাওয়েল নামগুলোও তো কম বড় নয়। রায়ান বেইলির মতো নতুনেরাও তো টগবগ করে ফুটছেন।
অপেক্ষা করাই তাই ভালো। ইতিহাসের সবচেয়ে প্রতীক্ষিত ১০০ মিটার দেখতে কাউন্টডাউনটা বরং শুরু করে দিন!
দৌড় শুরুর আগে বোল্ট দর্শকদের সঙ্গে নানা মজা করেন। কখনো কখনো প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গেও। বেইজিং অলিম্পিকে এ নিয়ে কে যেন অভিযোগও করেছিলেন। কদিন আগেই এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, রেডি-সেট শোনার আগ পর্যন্ত নাকি দৌড় নিয়ে ভাবেনই না!
কাল দুপুরের বোল্ট একটু ব্যতিক্রম। মুখে হাসি নেই, দর্শকদের সঙ্গে দুষ্টুমি নেই। বারবার শুধু হাত দুটি মাথায় বোলাচ্ছেন। ইতিহাসের দ্রুততম মানব, তবে মানবই তো! চাপটা কি তবে টের পেতে শুরু করেছেন উসাইন বোল্ট?
১০০ মিটার স্প্রিন্ট বরাবরই অলিম্পিকের প্রাণভোমরা। ওই সেকেন্ড দশেক সময়ের এমনই আশ্চর্য এক মোহজাল ছড়ানো যে পুরো বিশ্ব উন্মুখ অপেক্ষায় থাকে এর জন্য। তবে এবারের মতো আর কখনো থেকেছে কি না সন্দেহ। কারণটা তিনিই। ১০০ মিটার স্প্রিন্ট সব সময়ই এক মাদকতার নাম হয়ে ছিল, তবে এই জ্যামাইকান সেটিকে নিয়ে গেছেন অন্য মাত্রায়। আজ স্থানীয় সময় ৯টা ৫০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় রাত ২-৫০ মি.) তাঁর জন্যই থমকে যাবে পুরো বিশ্ব। কোটি কোটি চোখ খুঁজে ফিরবে তাঁকে।
বেইজিং অলিম্পিকের পর থেকে যখন যেখানে যান, তখনই এমন হয়। কালই যেমন হিটে দৌড়ে মিক্সড জোন দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় তাঁর ছবি তোলার প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেল পেশাদার সাংবাদিকদের মধ্যে। বোল্ট দুবার দাঁড়ালেন। যা বললেন, তার মর্মার্থ একটাই—হিটে হিটের মতোই দৌড়েছেন।
নিজের হিট জিতেছেন। তবে ১০.০৯ সেকেন্ডে। সেমিফাইনালে কোয়ালিফাই করা ২৭ স্প্রিন্টারের মধ্যে তাঁর চেয়ে ভালো টাইমিং করলেন আটজন। তবে বোল্টকে দেখেই বোঝা গেল, সেরাটা তিনি ফাইনালের জন্যই রেখে দিতে চান। বেইজিংয়ের ১০০ মিটার ফাইনালে প্রায় ৩০ মিটার বাকি থাকতেই উদ্যাপন শুরু করে দিয়েছিলেন। হিটে তা করার প্রশ্নই নেই। তবে শেষদিকে তাঁর আয়েশি ভাব দেখে বুঝিয়ে দিল, টাইমিং নিয়ে একদমই ভাবেননি, প্রথমে শেষ করতে পারাটাই ছিল একমাত্র লক্ষ্য। হ্যামস্ট্রিংয়ের যে চোট নিয়ে গত কিছুদিন এত গবেষণা, সেটি অবশ্য আপাতত থেমে গেছে এতেই।
হিটে অবশ্য কেউ-কেউ প্রাণপণও দৌড়ালেন। ২০০৪ অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন জাস্টিন গ্যাটলিন ৯.৯৭ সেকেন্ডে দৌড়ে অলিম্পিক হিটে সেরা টাইমিংয়ের রেকর্ডই করে ফেললেন। সেটি অবশ্য কয়েক মিনিটই স্থায়িত্ব পেল। পরের হিটেই তা ভেঙে দিলেন যুক্তরাষ্ট্রের তরুণ স্প্রিন্টার রায়ান বেইলি (৯.৮৮)।
হিটে কোনো অঘটন ঘটেনি। যাঁদের জেতার কথা, জিতেছেনও তাঁরাই। টাইমিংয়ের বিচারে বেইলি-গ্যাটলিনের পরই ইয়োহান ব্লেক। ঠিক ১০ সেকেন্ড নিলেন বোল্টের ট্রেনিং-সঙ্গী, বন্ধু ও সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বীও। একই কোচের ছাত্র তাঁরা দুজন, গ্লেন মিলস ভালো একটা ঝামেলাতেই পড়েছেন। জ্যামাইকান ট্রায়ালে ব্লেক বোল্টকে হারিয়ে দেওয়ার পর গবেষণা হয়েছে, মিলস্্ এখন বড় কাজ ভাববেন কোনটিকে—বোল্টের ধাক্কা খাওয়া আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনা নাকি ব্লেককে উৎসাহ দিয়ে নতুন বিশ্বজয়ী তৈরি করা।
দুই জ্যামাইকান অবশ্য জানি দোস্ত। ট্র্যাকে যতই প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাক, ট্র্যাকের বাইরে সারাক্ষণ একে অন্যের সঙ্গে মজা করেন। দুজনই ক্রিকেটের খুব ভক্ত। অলিম্পিকে আসার পর থেকে ক্রিকেট দেখেই সময় কাটাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ব্লেক। বোল্টও সঙ্গী থেকেছেন প্রায়ই।
জ্যামাইকান ট্রায়ালের পর থেকেই এই অলিম্পিকের ১০০ মিটার অনেকটা ‘বোল্ট বনাম ব্লেক’ হয়ে গেছে। কিন্তু অলিম্পিক বড় আজব জায়গা, এখানে অভাবিত অনেক কিছুই ঘটে যেতে পারে। গ্যাটলিন-গে-পাওয়েল নামগুলোও তো কম বড় নয়। রায়ান বেইলির মতো নতুনেরাও তো টগবগ করে ফুটছেন।
অপেক্ষা করাই তাই ভালো। ইতিহাসের সবচেয়ে প্রতীক্ষিত ১০০ মিটার দেখতে কাউন্টডাউনটা বরং শুরু করে দিন!
No comments