প্রবাসীদের ভোটার করা হচ্ছে না কেন?

যুক্তরাজ্যে ১৫ লাখের বেশিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রায় ৭০ লক্ষাধিক বাংলাদেশী ভোটার হবার যোগ্য। এই ৭০ লক্ষাধিক প্রবাসীর ভোটাধিকার এখনও প্রতিশ্রুতিতেই আটকে আছে। কেবল যুক্তরাজেই ১৫ লাখের বেশি বাংলাদেশী স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন।


যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের একটি সামান্য অংশ ছাড়া অন্য সকলেই বৃহত্তর সিলেটের বাসিন্দা, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, মধ্য প্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন বাংলাদেশীরা। জানা যায়, ১৯৭৬, ১৯৮২ ও ১৯৮৪ সালে বিভিন্ন অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশীদের ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়। এর পর থেকে প্রবাসীরা ভোটের অধিকার চেয়ে আন্দোলন তথা সভা-সেমিনার করে যাচ্ছেন। অতীতে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সরকার এবং গত তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রদানের কথা বলেছে, কিন্তু তা কার্যকরী হয়নি। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান মহাজোট সরকারও প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সরকারের এই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে এখনও পর্যন্ত তেমন কোন অগ্রগতি নেই। প্রবাসীদের ভোটার তালিকাভুক্ত করতে হলে ভোটার তালিকা প্রণয়নের আইন পরিবর্তন করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধসহ বাংলাদেশের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে প্রবাসীদের অবদান রয়েছে। তাঁরা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও বিশেষ ভূমিকা রাখছেন। তাদের অবশ্যই ভোটার হওয়ার অধিকার রয়েছে। তাই ভোটার তালিকা আইন পরিবর্তন করে প্রবাসীদের ভোটার করার ব্যবস্থা করা একান্ত আবশ্যক। জানা গেছে, বর্তমান সরকার প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রদানে আন্তরিক। ইতোমধ্যে বিষয়টি সংসদেও আলোচিত হয়েছে। আইনগত জটিলতা নিরসনের পর বিষয়টি চূড়ান্ত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নিজ মাতৃভূমির ভোটাধিকার প্রাপ্তি প্রবাসীদের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি। বিভিন্ন দেশে অক্লান্ত পরিশ্রম করে দেশের অর্থনীতির চাকাকে তাঁরা এগিয়ে নিচ্ছেন। সঠিক বিবেচনায় প্রবাসীদের অবদান কোনভাবেই অস্বীকার করা যাবে না। তাই অনতিবিলম্বে ভোটার তালিকা প্রণয়নের আইন অতিদ্রুত পরিবর্তন করে অথবা বৈধ যে কোন উপায় অবলম্বন করে ৭০ লক্ষাধিক প্রবাসীর ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে সরকারকে অতি দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে তা বাস্তবায়ন করতে হবে।
মোঃ তাজুল ইসলাম খান
সোনারগাঁ হাউজ, ফরিদাবাদ, ঢাকা।

No comments

Powered by Blogger.