স্বপ্ন নিয়েই বুক বাঁধি by কামরুজ্জামান
বাংলাদেশ পৃথিবীর মানচিত্রে ছোট একটি দেশ, যার ইতিহাস অনেক কষ্টের, বহু ত্যাগের বিনিময়ে ঠাঁই হয়েছে বিশ্ব মানচিত্রে, কিন্তু আমরা মানচিত্রেই আমাদের দেশকে ঠাঁই করে নিতে এত কিছু করেছি, না আমরা স্বাধীনতার জন্য এত কিছু করেছি? ৩০ লাখ প্রাণের বিনিময়ে এবং দুই লাখ মা, বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে আমরা এদেশ স্বাধীন করেছি,
কিন্তু আমরা কি প্রকৃত অর্থেই স্বাধীন? এ প্রশ্নটা আজও বুকে বাধে, ভাবতে অবাক লাগে স্বাধীনতার ৩৮ বছর পরও আমরা পরাধীন, এ পরাধীনতার শেকলে আমরা কতকাল আবদ্ধ থাকব। আমাদের দেশের রাজনীতিবিদরাই আমাদেরকে আবদ্ধ করে রেখেছে। আমাদের দেশে প্রধান ছুটি রাজনৈতিক দল, একটির কর্ণধার ছিলেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী, জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান। অন্যটির আরেক কিংবদন্তি জিয়াউর রহমান। মুজিব যে স্বপ্ন নিয়ে দেশকে স্বাধীন করেছিলেন তা বাস্তবায়নের আগেই ঘাতকের নির্মম বুলেটের আঘাতেই নিহত হন। জিয়াউর রহমান যে স্বপ্ন নিয়ে দেশকে শাসন শুরু করেছিলেন তারও সে স্বপ্ন বাস্তবে পরিণত হওয়ার আগেই তিনিও শহীদ নিহত হন, যদিও তার ক্ষমতায় আসা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে, তবুও তিনি একজন ভাল শাসক ছিলেন। যার কারণে তাকে প্রাণ দিতে হয়। প্রথমজন আমাদের স্বপ্নপুরুষ যাঁকে ছাড়া এদেশ স্বাধীন হওয়া অসম্ভব ছিল। দুজন দুভাবে আমাদের দেশকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁদের অকাল মৃতু্যতে জাতি শোকাহত। এ দুজনের দ্বারা দুটি দল বাংলাদেশের রাজনীতিতে সুনাম অর্জন করেছে। কিন্তু তাঁদের মৃতর্ু্যর পর তাঁদের প্রতিষ্ঠিত দল দুটি বাংলাদেশে তাঁদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছে। একবার যদি বিএনপি ক্ষমতায় আসে তখন বিরোধী দল তাদের বিরুদ্ধে ভোট কারচুপির অভিযোগ তোলে এবং তাদের ভুল-ভ্রান্তি ধরতে থাকে। আর জনগণকে নিজেদের দলে ভেড়ানোর চেষ্টা করে, এবং তারা এতে সফল হয় এবং পরবর্তীতে তারা সরকার গঠন করে। এখানে একটা বিষয় সুস্পষ্ট যে দু দলই দু দলের প্রতি ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলেছে, তাহলে এখানে বলা যায় দু দলই ভোট কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে এবং তারা বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপের সাথে জড়িত। এখানে একটা উদাহরণ দেয়া যায়, বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে ঢাকা শহর গড়ে উঠেছে। এই ছোট নদীটির বর্তমান বেহাল অবস্থা। এই অবস্থা হবার কারণ ক্ষমতার অপব্যবহার, বড় নেতারা ক্ষমতার অপব্যবহার করে বুড়িগঙ্গা ভরাট করে হাউজিং প্রকল্প বানাচ্ছে। ফলে একদিন বুড়িগঙ্গা বলে আর কোন নদী থাকবে না। জনগণ শুধু চেয়ে চেয়ে দেখবে, ঠিক এভাবেই অপরাজনীতির ফলে আমাদের দেশটাও হয়ত বিলীন হয়ে যাবে। যে দলই ক্ষমতায় যায় খুন, ধর্ষণ, দখল টেন্ডারবাজি, দলীয়করণ, দুর্নীতি তাদের নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা, রাজনীতিবিদ সরকারী কর্মকর্তারা যদি দুর্নীতি না করেন এবং সন্ত্রাসীদের প্রশ্রয় না দেন তাহলে এ দেশে দুর্নীতি ও সকল প্রকার সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চিরদিনের জন্য বন্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু আমাদের দেশের রাজনীতিবিদরা, সরকারী কর্মকর্তারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দুর্নীতি ও সন্ত্রাসী কাজের সাথে জড়িত। আমাদের দেশের একটা নিয়ম ভালো তা হলো: সরকারী দল থেকে যখন কোন দল বিরোধী দলে যায়, তখন তারা জনগণের কথা চিন্তা করে, কারণ এটাই হচ্ছে আবার ক্ষমতায় যাওয়ার সোক্ষম হাতিয়ার, একটু ভাল কাজ করে পরবর্তীতে বেশী করে ধোকা দেওয়ার জন্য। আমাদের দেশের রাজনীতি পৃথিবীর সেরা গণতান্ত্রিক দেশের রাজনীতির মতো হোক, এটা আমরা তরুণরা আশা করি। হরতাল নয়, আলোচনার মাধ্যমে দু দলই যে কোন সমস্যার সমাধান করছেন। কোন হিংসা নয় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছেন তা হলেই বুঝব তাঁরা দেশের জন্য কাজ করছেন। কিন্তু তারা দেশ ও জনগনের কথা চিনা না করে নিজেদের আরাম আয়েশ নিয়ে ব্যস্ত। হয় তাঁদের এসব থেকে বেরিয়ে আসতে হবে নইলে জনগনই তাদের ডাস্টবিনে ছুড়ে ফেলে দিবে। আমাদের দেশ সোনার বাংলাদেশ আমরা তরুণ স্বপ্ন দেখি, সুস্থ রাজনীতি, দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশের যেখানে থাকবে না কোন হিংসা, থাকবে না কোন ক্লেশ, থাকবে না অসমঝোতার বিন্দুমাত্র লেশ। এ স্বপ্ন আগামী প্রজন্মের। এই স্বপ্ন নিয়েই বুক বাঁধি।
No comments