খবর শুধু খবর নয় by নিয়ামত হোসেন
ওবামার সাক্ষাতকার নিল এক কিশোর সাংবাদিক সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সাক্ষাতকার নিয়েছে সে দেশের এক কিশোর সাংবাদিক। নাম তার ডেমন ওয়েভার। ওয়েভার পামবীচ কাউন্টিং কিড টিভির রিপোর্টার। বয়স তার মাত্র এগারো বছর। মার্কিন প্রেসিডেন্টকে সামনে পেয়ে তাঁকে একের পর এক নানা বিষয়ে প্রশ্ন করে গেছে সে।
কোনরকম দ্বিধা বা জড়তা দেখা যায়নি তার মধ্যে। ওবামা তার সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। ছেলেটি প্রেসিডেন্টকে মোট এগারোটি প্রশ্ন করে। প্রশ্নগুলোর মধ্যে ছিল শিক্ষা ও সহিংসতার বিষয়। তবে দুপুরে স্কুলে ছাত্রদের যে খাবার দেয়া হয় সে ব্যাপারেও কিশোর ঐ রিপোর্টার প্রেসিডেন্টের বক্তব্য শুনতে চায়। ছেলেটি এর আগে মার্কিন ভাইস-প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনেরও সাক্ষাতকার নেয়। এবার প্রেসিডেন্টের সাক্ষাতকার নেয় একেবারে পেশাদার সাংবাদিকের মতোই।
সাক্ষাতকার শেষে সে প্রেসিডেন্ট সম্পর্কে মন্তব্য করেছে, তিনি মোটেই এমন কোন ব্যক্তি নন যাকে দেখলে সাধারণের বাইরের অসাধারণ মানুষ মনে হতে পারে। তিনি একেবারেই সাধারণ যে কোন মানুষের মতো। ওবামাকে ছেলেটি প্রশ্ন করেছে, প্রেসিডেন্ট যে হয়েছেন, কেমন লাগছে এখন? ওবামা সুন্দরভাবে তার মনের কথা প্রকাশ করেছেন। ক্ষুদে ঐ সাংবাদিক সাক্ষাতকার শেষে প্রেসিডেন্টের পোষা কুকুরটি আদর করে এসেছে বলেও প্রকাশিত খবরে জানা গেল। ছেলেটির সাক্ষাতকারের ব্যাপারে তার স্কুলের শিক্ষকরা খুব খুশি।
ক্ষুদে এই সাংবাদিক যে ভবিষ্যতে খ্যাতিমান সাংবাদিক হয়ে উঠবে, এখনই তার আভাস পাওয়া যায়। সুযোগ এবং পরিবেশ পেলে শিশুরা যে নিজেদের ভবিষ্যত সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে পারে দুনিয়ার দেশে দেশে প্রমাণিত এই সত্যটির নতুন একটি প্রমাণ এই শিশু সাংবাদিক।
স্বামী ৯৬ স্ত্রী ৯৪
বেটি উড এবং জেসি উড_ এঁরা স্বামী-স্ত্রী। ১৯৭২ সালে ব্রিটেনের হার্ডফোর্ডশায়ারে তাঁদের বিয়ে হয়েছিল। উভয়েরই বয়স যখন ৯৭ বছর তখন তাদের মধ্যে মনোমালিন্য শুরু হয় এবং পরের বছর বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। এই দম্পতিই বিশ্বের বিবাহবিচ্ছেদকারী সবচেয়ে বেশি বয়সী দম্পতি বলে চিহ্নিত হয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে আরও খবর হচ্ছে, ব্রিটেনে মাস দুয়েক আগে নবদম্পতি হিসাবে জীবন শুরু করেছে দুই নারী-পুরুষ, যাদের উভয়ের মিলিত বয়স ১৮১ বছর। একজন লেন এ্যাটওয়েল যাঁর বয়স ৯৪ বছর, অন্যজন শেলী ওয়ালেস, তাঁর বয়স ৮৭ বছর। এই দম্পতি ব্রিটেনের সবচেয়ে প্রবীণ নবদম্পতি হিসাবে চিহ্নিত হয়েছেন। এখন তাঁরা সুখে সংসার করে চলেছেন। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, এক ফরাসী দম্পতি ২০০২ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন যখন স্বামীর বয়স ৯৬ বছর এবং স্ত্রীর বয়স ৯৪ বছর। স্বামী ফ্রাংকো এবং স্ত্রী মাদেলিন বিশ্বে সবচেয়ে বেশি বয়সে পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হয়ে সংসার ধর্ম পালনের রেকর্ড করেছেন।
নবীন দম্পতিগুলোর মতো এ প্রবীণ দম্পতিগুলোর সংসার সুখের হোক_ যিনিই এঁদের বিয়ের খবর শুনবেন, তিনিই নিশ্চয়ই এই শুভ কামনাটি করবেন।
মাটি থেকে শিশুদের দূরে রাখা ঠিক নয়!
শিশুদের সব সময় সাবধানে রাখা, প্রকৃতির তথা পরিবেশের সঙ্গে মিশতে না দেয়া, একটু মাটিও যাতে তারা স্পর্শ না করে সেভাবে সারাক্ষণ তাদের রাখা_ এসব ভাল নয়। এমনভাবে শিশুদের সবসময় রাখলে তাতে তাদের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয় তথা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। সম্প্রতি এই মন্তব্য মার্কিন বিজ্ঞানীদের। তাদের এমন বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছে ন্যাচার মেডিসিন পত্রিকার এক গবেষণা নিবন্ধে।
বিজ্ঞানীরা বলেছেন, যেসব শিশু তাদের ঘরবাড়ির আশপাশের মাটিতে খেলে বা ময়লা মাটিতে খেলাধুলা করে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি থাকে। যারা ধুলোময়লা মাটি ইত্যাদি থেকে দূরে থেকে সাবধানে-সাবধানে বড় হয়, তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। আশপাশের প্রকৃতির সঙ্গে মিশলে তথা মাটিতে খেলাধুলা করলে শিশুর ত্বকে একধরনের ব্যাকটিরিয়া আশ্রয় নিতে পারে। এগুলো ত্বকের ক্ষতি করতে পারে না, বরং এতে উপকারই হয়। ত্বক এলার্জি রোধ করতে পারে, শরীরে আঘাত লাগলে বা ছড়ে গেলে ব্যথা কম হয় এবং খুব বেশি ফুলেও ওঠে না। সামান্য আঘাত লাগলেও দ্রুত ব্যথা সেরে যায়, ইনফেকশনেরও ভয় তেমন থাকে না। সেজন্য বিজ্ঞানীদের বক্তব্য, শিশুদের আশপাশের প্রকৃতি ও পরিবেশের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে না রেখে বরং স্বাভাবিকভাবে খেলাধুলা করতে দেয়া, মাটির সঙ্গে যাতে সম্পর্ক থাকে সেই ব্যবস্থা করা উচিত।
দীর্ঘ গবেষণার পর বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, প্রকৃতির সঙ্গে মিশে মাটির সঙ্গে সম্পর্ক রেখে যারা বড় হয়ে ওঠে তাদের স্বাস্থ্য, পুতু পুতু করে মানুষ করা শিশুদের চেয়ে অনেক ভাল থাকে। বিষয়টি সবার কাছেই স্বীকৃত। তবে বিজ্ঞানীরা যখন গবেষণা করে বিষয়টির প্রমাণ পেয়েছেন তখন বিশ্বাসটা আরও জোরদারই হবে নিঃসন্দেহে!
এখানে একটি আফসোসের কথা, আমরা অনেক শিশুকে এভাবে মানুষ করি না। দ্বিতীয়ত শহরের শিশুরা মাটির সঙ্গে মিশবে, খেলাধুলা করবে, প্রকৃতির সঙ্গে মিশবে, বিশেষ করে রাজধানী নগরী ঢাকায় তাদের সে সুযোগ কোথায়! ঢাকা নগরীতে এখন শত শত শিশু বড় হচ্ছে যারা সাঁতারই জানে না, সাঁতার শেখার তেমন কোন সহজ সুবিধাজনক ব্যবস্থাও এখানে নেই! বড় হচ্ছে এরা এভাবেই।
No comments