তরুণ প্রজন্মের প্রত্যাশা by মুহাম্মদ সালাহউদ্দিন
পুলিশ বাহিনীর দুর্নীতি নিয়ে সম্প্রতি এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশন (এএইচআরসি) একটি বিবৃতি দিয়েছে। যাতে বলা হয়েছে, 'দেশের মানুষ সরকারকে যত টাকা কর দেয়, তার চেয়ে বেশি টাকা ঘুষ দেয় পুলিশকে।' আমাদের পুলিশ নিয়ে হংকংভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংগঠনের এ ধরনের মন্তব্য দেশের তরুণ প্রজন্মকে আশাহত করেছে।
তারা নিজেদের বিবেকের কাছে প্রশ্ন তুলেছে, তা হলে কি দেশটা অবশেষে দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত হচ্ছে? আবার নিজ থেকেই এর পক্ষে যুক্তি দাঁড় করান এভাবে_ ইতিমধ্যেই বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির অভিযোগে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধ করে দিয়েছে; একটি মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতির কালো বিড়াল রেললাইন ধরে সবার সামনে চলে এসেছে; দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় একজন মন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। দুর্নীতি হচ্ছে উন্নয়ন প্রকল্পে, ভাঙা রাস্তা সংস্কারে, অফিসের প্রমোশনে, ফাইল ছাড়াতে, আদালতে নিজ পক্ষে রায় আনতে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগে, এমনকি একজন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগেও। দেশের সর্বক্ষেত্রেই দুর্নীতির রাজত্ব কায়েম হয়েছে।
পুলিশের চাঁদাবাজির দৃশ্য ঢাকা শহরে বাসকারীরা নিত্যই দেখেন। যাত্রীবাহী গাড়ি, ট্রাক, ভ্যান, রিকশা, হকার_ এমনকি ভিক্ষুকের কাছ থেকেও পুলিশের চাঁদাবজির দৃশ্য সবারই কমবেশি দেখা। পুলিশ কোনো গাড়ি থামালে তরুণ প্রজন্ম অনেকটা উৎসাহ নিয়েই তাকিয়ে থাকে একজন পুলিশ কীভাবে তার পেশা ও ব্যক্তিসম্মান বিসর্জন দিয়ে অবৈধ টাকা নিচ্ছে, তা দেখার জন্য। এএইচআরসির বিবৃতিতে পুলিশের এসব দুর্নীতির বিষয়ই উঠে এসেছে। পুলিশ দেশের নাগরিকদের সেবার নামে কত জায়গায় দুর্নীতি করছে তার বর্ণনাও দিয়েছে তারা। তারা বলছে, পুলিশের দুর্নীতির সবচেয়ে বেশি শিকার হচ্ছেন গ্রামের সাধারণ মানুষ। যেখানে সাধারণ মানুষদের নিত্যদিনই পুলিশকে ঘুষ দিতে হয়। যেমন, সাধারণ ডায়েরি থেকে শুরু করে পুলিশি নির্যাতন ও অসদাচরণ থেকে রেহাই পেতে, অভিযুক্ত কিংবা সাক্ষীর তালিকায় কারও নাম যুক্ত করা বা বাদ দিতে, সন্দেহভাজন কাউকে গ্রেফতার করাতে। আর সন্দেহভাজনও পুলিশকে ঘুষ দেয় গ্রেফতার এড়াতে। যেন ঘুষ আর পুলিশের জীবনচক্র একই বৃত্তে বাঁধা।
এখানেই শেষ নয়। তদন্তে যাতে আসামিকে অভিযুক্ত করা হয়, সে জন্য অভিযোগকারী ঘুষ দেয়। অন্যদিকে অভিযোগ থেকে নাম বাদ দিতে ঘুষ দেয় আসামি। ফৌজদারি তদন্তের ক্ষেত্রে আলামত সুরক্ষিত রাখতে, অস্ব্বাভাবিক মৃত্যুর ক্ষেত্রে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কোনো হাসপাতালে পাঠাতেও পুলিশকে ঘুষ দিতে হয়। এমনকি ধর্ষণের শিকার হলেও পুলিশকে ঘুষ দিতে হয়। সবচেয়ে মজার ব্যাপার, দু'পক্ষের মধ্যে কোন পক্ষ বেশি ঘুষ দেয়, তার ওপর নির্ভর করে অভিযোগের ধরন ও কে অভিযুক্ত হবে। মানে, পুলিশের সঙ্গে একজন সাধারণ মানুষের প্রতিটি প্রক্রিয়ায় চলে দুর্নীতি। এখানেই শেষ নয়। একটি রাষ্ট্রের কত ক্ষেত্রে যে পুলিশ দুর্নীতি করে, তার বর্ণনা দিয়েছে ওই সংস্থাটি। তারা বলেছে, এমন কোনো স্থান নেই, যেখানে পুলিশ ঘুষ আদায় করে না। তারা ব্যাখ্যা দিয়েছে এভাবে_ ফুটপাতে ব্যবসা করতে পুলিশকে ঘুষ দিতে হয়; রাস্তায় গাড়ি চালাতে পুলিশকে ঘুষ দিতে হয়। ঘুষ ছাড়া হকাররা ফুটপাতে ও ব্যবসায়ীরা মার্কেটে ব্যবসা করতে পারে না। উল্টো মাদক বিক্রিসহ নানা অভিযোগে তাদের ফাঁসিয়ে দেয়। নেওয়া হয় হাজতে। সেখান থেকে মুক্তি পেতেও পুলিশকে ঘুষ দিতে হয়।
তরুণ প্রজন্ম চায়_ সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিক। তাদের আহ্বান শুধু স্লোগানে নয়; সত্যিকারভাবে পুলিশকে জনগণের বন্ধু হিসেবে তৈরি করুন। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে পুলিশকে ব্যবহার না করে জনগণের সেবক হিসেবে ব্যবহার করুন, যাতে এ বাহিনীর প্রতিটি সদস্য মানুষকে সঠিকভাবে নাগরিক সেবা প্রদান করে।
স মুহাম্মদ সালাহউদ্দিন :ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী
ms.bdasia@gamil.com
পুলিশের চাঁদাবাজির দৃশ্য ঢাকা শহরে বাসকারীরা নিত্যই দেখেন। যাত্রীবাহী গাড়ি, ট্রাক, ভ্যান, রিকশা, হকার_ এমনকি ভিক্ষুকের কাছ থেকেও পুলিশের চাঁদাবজির দৃশ্য সবারই কমবেশি দেখা। পুলিশ কোনো গাড়ি থামালে তরুণ প্রজন্ম অনেকটা উৎসাহ নিয়েই তাকিয়ে থাকে একজন পুলিশ কীভাবে তার পেশা ও ব্যক্তিসম্মান বিসর্জন দিয়ে অবৈধ টাকা নিচ্ছে, তা দেখার জন্য। এএইচআরসির বিবৃতিতে পুলিশের এসব দুর্নীতির বিষয়ই উঠে এসেছে। পুলিশ দেশের নাগরিকদের সেবার নামে কত জায়গায় দুর্নীতি করছে তার বর্ণনাও দিয়েছে তারা। তারা বলছে, পুলিশের দুর্নীতির সবচেয়ে বেশি শিকার হচ্ছেন গ্রামের সাধারণ মানুষ। যেখানে সাধারণ মানুষদের নিত্যদিনই পুলিশকে ঘুষ দিতে হয়। যেমন, সাধারণ ডায়েরি থেকে শুরু করে পুলিশি নির্যাতন ও অসদাচরণ থেকে রেহাই পেতে, অভিযুক্ত কিংবা সাক্ষীর তালিকায় কারও নাম যুক্ত করা বা বাদ দিতে, সন্দেহভাজন কাউকে গ্রেফতার করাতে। আর সন্দেহভাজনও পুলিশকে ঘুষ দেয় গ্রেফতার এড়াতে। যেন ঘুষ আর পুলিশের জীবনচক্র একই বৃত্তে বাঁধা।
এখানেই শেষ নয়। তদন্তে যাতে আসামিকে অভিযুক্ত করা হয়, সে জন্য অভিযোগকারী ঘুষ দেয়। অন্যদিকে অভিযোগ থেকে নাম বাদ দিতে ঘুষ দেয় আসামি। ফৌজদারি তদন্তের ক্ষেত্রে আলামত সুরক্ষিত রাখতে, অস্ব্বাভাবিক মৃত্যুর ক্ষেত্রে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কোনো হাসপাতালে পাঠাতেও পুলিশকে ঘুষ দিতে হয়। এমনকি ধর্ষণের শিকার হলেও পুলিশকে ঘুষ দিতে হয়। সবচেয়ে মজার ব্যাপার, দু'পক্ষের মধ্যে কোন পক্ষ বেশি ঘুষ দেয়, তার ওপর নির্ভর করে অভিযোগের ধরন ও কে অভিযুক্ত হবে। মানে, পুলিশের সঙ্গে একজন সাধারণ মানুষের প্রতিটি প্রক্রিয়ায় চলে দুর্নীতি। এখানেই শেষ নয়। একটি রাষ্ট্রের কত ক্ষেত্রে যে পুলিশ দুর্নীতি করে, তার বর্ণনা দিয়েছে ওই সংস্থাটি। তারা বলেছে, এমন কোনো স্থান নেই, যেখানে পুলিশ ঘুষ আদায় করে না। তারা ব্যাখ্যা দিয়েছে এভাবে_ ফুটপাতে ব্যবসা করতে পুলিশকে ঘুষ দিতে হয়; রাস্তায় গাড়ি চালাতে পুলিশকে ঘুষ দিতে হয়। ঘুষ ছাড়া হকাররা ফুটপাতে ও ব্যবসায়ীরা মার্কেটে ব্যবসা করতে পারে না। উল্টো মাদক বিক্রিসহ নানা অভিযোগে তাদের ফাঁসিয়ে দেয়। নেওয়া হয় হাজতে। সেখান থেকে মুক্তি পেতেও পুলিশকে ঘুষ দিতে হয়।
তরুণ প্রজন্ম চায়_ সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিক। তাদের আহ্বান শুধু স্লোগানে নয়; সত্যিকারভাবে পুলিশকে জনগণের বন্ধু হিসেবে তৈরি করুন। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে পুলিশকে ব্যবহার না করে জনগণের সেবক হিসেবে ব্যবহার করুন, যাতে এ বাহিনীর প্রতিটি সদস্য মানুষকে সঠিকভাবে নাগরিক সেবা প্রদান করে।
স মুহাম্মদ সালাহউদ্দিন :ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী
ms.bdasia@gamil.com
No comments