রাশিয়ায় ইসলামের বিস্তার by জহির উদ্দিন বাবর
বিশ্বের বৃহত্তম দেশ রাশিয়ায় দ্রুতগতিতে ইসলামের বিকাশ ঘটছে। সম্প্রতি মস্কোর একটি কেন্দ্রে ইসলাম গ্রহণকারী দশ হাজার নারী রেজিস্ট্রেশন করিয়েছেন। রাশিয়ার রাজধানী মস্কোয় বর্তমানে বিশ লাখের বেশি মুসলমান বাস করে। এ হিসাবে এটি ইউরোপে মুসলমানদের বড় শহরগুলোর অন্যতম।
বিবিসির ভাষ্যমতে, এ কারণে মস্কোর চারটি মসজিদ নামাজের জন্য যথেষ্ট হচ্ছে না। প্রত্যেক জুমাবারে মুসলি্লদের সংখ্যা এত বাড়ে যে, অনেককেই বাইরে বরফের ওপর দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করতে হয়। সরকারের অনুমতি না থাকায় নতুন কোনো মসজিদ প্রতিষ্ঠা করা যাচ্ছে না। তাতারিদের প্রতিষ্ঠিত ঐতিহাসিক একটি মসজিদ নতুন ভবনে স্থানান্তর করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও সবার পক্ষে মসজিদের ভেতরে নামাজ আদায় করা সম্ভব হয় না। তাতার মসজিদের ইমাম হাসান ফখরিতদিনোভ বিবিসিকে বলেন, ধারণ ক্ষমতা কম হওয়ায় বৃষ্টি-বাদল ও তুষারপাত উপেক্ষা করেই মসজিদের বাইরে মুসলি্লদের নামাজ আদায় করতে হচ্ছে। আলি চিসলাফ নামে এক পাদ্রি ইসলাম গ্রহণ করে একটি কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছেন, যেখানে নও মুসলিমদের সহযোগিতা করা হয়। এখানে এসে অনেক মুসলমান আশ্রয় নিচ্ছেন।
মস্কোয় মুসলমানের সংখ্যা দ্রুত বাড়ার অন্যতম কারণ সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত কেন্দ্রীয় এশিয়া ও ককেশাস অঞ্চলের অভিবাসীরা। দারিদ্র্য ও সহিংসতা তাদের বাধ্য করছে নতুন জীবনের সন্ধানে রাশিয়ায় পাড়ি জমাতে। উজবেকিস্তান, তাজাকিস্তান ও কিরগিজস্তানের লাখো মুসলিম তরুণের ভিড় এখন মস্কোয়। রাশিয়ার জনসংখ্যা অনেক কারণে ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে প্রতি বছর। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী নতুন শিশু জন্মের তুলনায় জনগণের মৃত্যুর হার বার্ষিক প্রায় ১০ লাখ। বর্তমানে রাশিয়ায় জনসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৪ কোটি ২০ লাখে। অপরদিকে রাশিয়ায় মুসলিম জনসংখ্যার হার ক্রমেই বাড়ছে। বিভিন্ন নৃতাত্তি্বক মুসলিম গোষ্ঠী বিশেষত, তাতার, উত্তর ককেশাস ও দাগিস্তান বংশোদ্ভূত স্থানীয় জনগণের মধ্যে জন্মহার বেশি। ধর্মীয় অনুশাসন ও নৈতিক মূল্যবোধ মেনে চলার ফলে রাশিয়ার মুসলমানদের জীবনধারা সুশৃঙ্খল ও সুনিয়ন্ত্রিত। অনেক নৃতাত্তি্বক স্লাভ গোষ্ঠী সুস্থ জীবনধারার সন্ধানে ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় নিচ্ছেন। এটা ইসলামের ক্রমবিকাশ ধারায় ইতিবাচক অগ্রগতি। সমাজতত্ত্ববিদরা পূর্বাভাস দিয়েছেন, জনসংখ্যা বিষয়ক এ প্রবণতা যদি আগামী দিনগুলোতে অব্যাহত থাকে তাহলে ২০৫০ সালে রাশিয়ায় মুসলিম জনসংখ্যার হার ১৫% থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৫১%-এ উন্নীত হবে। বর্তমানে রাশিয়ান ফেডারেশনে মুসলমানদের সংখ্যা ২ কোটি।
১৯১৭ সালে বলশেভিক বিপ্লবের পর রাশিয়ায় সব ধর্ম ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়। ফলে রাশিয়ায় ইসলাম ৭০ বছর ধরে প্রকাশ্যে বিকশিত হতে পারেনি। ইসলামের প্রচার-প্রসার, দাওয়াত ও তাবলিগ সাময়িকভাবে বন্ধ থাকে। রুশ মুসলমানদের ধর্মীয় অনুশাসন ও সাংস্কৃতিক রীতি-নীতি পালন স্থগিত হয়ে যায়। ১৯৯১ সালে ধর্মীয় স্বাধীনতা আইন পাস হলে ইসলাম আবার নতুন করে যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে ১৪ কোটি ২০ লাখ রুশ জনগোষ্ঠীর মধ্যে মুসলমানের সংখ্যা প্রায় ২০ লাখ।
রাশিয়ার মুসলমানরা এক সময় ইসলামের জ্ঞান-বিজ্ঞানে প্রভূত ভূমিকা রেখেছেন। বিভিন্ন শাস্ত্রের প্রবর্তক ও আবিষ্কারক মুসলিম মনীষীদের জন্ম এ অঞ্চলে। দূর আরব থেকে ইসলামের নূরানি আভা আমাদের দেশ পর্যন্ত পেঁৗছতে যথেষ্ট অবদান রয়েছে এ অঞ্চলের মানুষদের। আজও রাশিয়ার মতো একটি ক্ষমতাধর রাষ্ট্রে প্রতিকূলতা সত্ত্বেও মুসলমানরা টিকে আছেন নিজেদের ঐতিহ্য নিয়ে। ইসলাম যে নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার ধর্ম নয় সেটা প্রমাণ করছেন রাশিয়ার মুসলমানরা।
zahirbabor@yahoo.com
মস্কোয় মুসলমানের সংখ্যা দ্রুত বাড়ার অন্যতম কারণ সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত কেন্দ্রীয় এশিয়া ও ককেশাস অঞ্চলের অভিবাসীরা। দারিদ্র্য ও সহিংসতা তাদের বাধ্য করছে নতুন জীবনের সন্ধানে রাশিয়ায় পাড়ি জমাতে। উজবেকিস্তান, তাজাকিস্তান ও কিরগিজস্তানের লাখো মুসলিম তরুণের ভিড় এখন মস্কোয়। রাশিয়ার জনসংখ্যা অনেক কারণে ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে প্রতি বছর। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী নতুন শিশু জন্মের তুলনায় জনগণের মৃত্যুর হার বার্ষিক প্রায় ১০ লাখ। বর্তমানে রাশিয়ায় জনসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৪ কোটি ২০ লাখে। অপরদিকে রাশিয়ায় মুসলিম জনসংখ্যার হার ক্রমেই বাড়ছে। বিভিন্ন নৃতাত্তি্বক মুসলিম গোষ্ঠী বিশেষত, তাতার, উত্তর ককেশাস ও দাগিস্তান বংশোদ্ভূত স্থানীয় জনগণের মধ্যে জন্মহার বেশি। ধর্মীয় অনুশাসন ও নৈতিক মূল্যবোধ মেনে চলার ফলে রাশিয়ার মুসলমানদের জীবনধারা সুশৃঙ্খল ও সুনিয়ন্ত্রিত। অনেক নৃতাত্তি্বক স্লাভ গোষ্ঠী সুস্থ জীবনধারার সন্ধানে ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় নিচ্ছেন। এটা ইসলামের ক্রমবিকাশ ধারায় ইতিবাচক অগ্রগতি। সমাজতত্ত্ববিদরা পূর্বাভাস দিয়েছেন, জনসংখ্যা বিষয়ক এ প্রবণতা যদি আগামী দিনগুলোতে অব্যাহত থাকে তাহলে ২০৫০ সালে রাশিয়ায় মুসলিম জনসংখ্যার হার ১৫% থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৫১%-এ উন্নীত হবে। বর্তমানে রাশিয়ান ফেডারেশনে মুসলমানদের সংখ্যা ২ কোটি।
১৯১৭ সালে বলশেভিক বিপ্লবের পর রাশিয়ায় সব ধর্ম ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়। ফলে রাশিয়ায় ইসলাম ৭০ বছর ধরে প্রকাশ্যে বিকশিত হতে পারেনি। ইসলামের প্রচার-প্রসার, দাওয়াত ও তাবলিগ সাময়িকভাবে বন্ধ থাকে। রুশ মুসলমানদের ধর্মীয় অনুশাসন ও সাংস্কৃতিক রীতি-নীতি পালন স্থগিত হয়ে যায়। ১৯৯১ সালে ধর্মীয় স্বাধীনতা আইন পাস হলে ইসলাম আবার নতুন করে যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে ১৪ কোটি ২০ লাখ রুশ জনগোষ্ঠীর মধ্যে মুসলমানের সংখ্যা প্রায় ২০ লাখ।
রাশিয়ার মুসলমানরা এক সময় ইসলামের জ্ঞান-বিজ্ঞানে প্রভূত ভূমিকা রেখেছেন। বিভিন্ন শাস্ত্রের প্রবর্তক ও আবিষ্কারক মুসলিম মনীষীদের জন্ম এ অঞ্চলে। দূর আরব থেকে ইসলামের নূরানি আভা আমাদের দেশ পর্যন্ত পেঁৗছতে যথেষ্ট অবদান রয়েছে এ অঞ্চলের মানুষদের। আজও রাশিয়ার মতো একটি ক্ষমতাধর রাষ্ট্রে প্রতিকূলতা সত্ত্বেও মুসলমানরা টিকে আছেন নিজেদের ঐতিহ্য নিয়ে। ইসলাম যে নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার ধর্ম নয় সেটা প্রমাণ করছেন রাশিয়ার মুসলমানরা।
zahirbabor@yahoo.com
No comments