সময়মতো বেতন-ভাতা পরিশোধ করুন-রূপগঞ্জে পোশাকশ্রমিক অসন্তোষ

বকেয়া বেতনের দাবিতে আবারও বিক্ষোভ করেছেন নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা। গত রোববার তাঁরা কারখানায় ভাঙচুর চালান, প্রায় দেড় ঘণ্টা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন এবং কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেন।


পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, সংঘর্ষ হয়েছে এবং পুলিশের সদস্যসহ বহু শ্রমিক আহত হয়েছেন। শ্রমিকদের অসন্তোষের পেছনে জোরালো কারণ থাকলেও তাঁদের বিক্ষোভ প্রদর্শনের এই ধরনটি একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। তবে, শ্রমিককে তাঁর ন্যায্য পাওনা সময়মতো পরিশোধ করা নিশ্চিত করা গেলে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার মুখোমুখি হতে হতো না।
বর্তমান সরকার পোশাকশ্রমিকদের নতুন মজুরিকাঠামো ঘোষণা করেছে। কিন্তু সেটির বাস্তবায়নে এখনো কয়েক মাস বাকি। বাস্তবায়নের এই বিলম্ব শ্রমিকদের মনে সন্দেহ ও অবিশ্বাস সৃষ্টি করেছে। তাঁরা কয়েক দিন ধরে সহিংস বিক্ষোভ করেছেন। কিন্তু তার পরও নতুন মজুরিকাঠামো পোশাকশিল্পে স্থিতিশীলতা আনার ক্ষেত্রে যে আশা জাগিয়েছিল, তার মূলে আঘাত লাগবে যদি পোশাকশিল্প-মালিকেরা তাঁদের কোনো কাজের মাধ্যমে শ্রমিকের সন্দেহ ও অবিশ্বাসকে নানাভাবে আরও বাড়িয়ে দিতে থাকেন। প্রায় প্রতিবছর ঈদের আগে আগে বকেয়া বেতন ও বোনাসের দাবিতে পোশাকশিল্প অস্থির হয়ে উঠতে দেখা যায়। এবারও যেন তেমনটা না ঘটে সে জন্য বিজেএমইএ ও সরকারকে এখনই সজাগ হওয়া প্রয়োজন। পুলিশ দিয়ে শ্রমিকদের বিক্ষোভ দমনই প্রধান বিবেচ্য না রেখে, বিক্ষোভের কোনো কারণ যেন সৃষ্টি না হয় সেদিকে দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। অন্যদিকে, শ্রমিকদেরও ধ্বংসাত্মক পথ পরিহার করে দাবি আদায়ের শান্তিপূর্ণ পথের অনুসন্ধান করা উচিত।
বছরের পর বছর ধরে শ্রমিক অসন্তোষের প্রধান কারণ হয়ে আছে মজুরি প্রসঙ্গ। পোশাকশ্রমিকেরা বর্তমানে যে মজুরি পাচ্ছেন তা স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর ভাষায় ‘অমানবিক’। সেই মজুরি পরিশোধ করার ক্ষেত্রেও টালবাহানা করা এ শিল্পে স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এ জন্য মালিকপক্ষের যথাযথ ভূমিকা পালনে গাফিলতির কোনো সুযোগ নেই।

No comments

Powered by Blogger.