চরাচর-আনিস-হাজেরাদের মৌসুমি গল্প by তামান্না ইসলাম অলি
আনিস। বয়স ১২ বছর। রাজধানীর কারওয়ান বাজারের ফল বিক্রেতা সে। মৌসুমি ফল। কখনো আম, জাম, লিচু। আবার কখনো করমচা, লেবু পেয়ারা, তাল, বেল। যখন যেটা পায়। তবে যখন মৌসুমি ফলের সরবরাহ কম থাকে, তখন নতুন কাজ খুঁজতে হয়।
যে বয়সে ওর হাতে থাকার কথা ছিল বই, সে বয়সে ও কাঁধে নিয়েছে সংসারের জোয়াল। দারিদ্র্য ওকে কাজে নামিয়েছে। সারা দিন ফল বিক্রির পর যে লাভ হয়, তাতে সে মহাখুশি। কারণ, বছরের এ সময়েই তার আয় বেশি। আর পরিশ্রমও কম। যদিও বয়স কমের কারণে অনেকেই খারাপ ব্যবহার করে। তার পরও মৌসুমি এই ফলগুলোই ওর মুখে হাসি ফোটায়।
হাজেরার বাড়ি রংপুর। ঢাকা এসেছেন পাঁচ বছর। চার সন্তান ও স্বামী নিয়ে থাকেন রামপুরার একটি বস্তিতে। স্বামী রিকশা চালিয়ে যা আয় করেন, তা দিয়ে সংসার চলে না। তাই তাঁকেও নামতে হয় কাজে। রামপুরায়ই তিনি রাস্তার পাশে বসে ফল বিক্রি করেন। তিনিও আনিসের মতোই। যখন যে ফল বাজারে আসে, তাই বিক্রি করেন। প্রতিদিন সকালে পাইকারদের কাছ থেকে ফল আনেন। তবে নারী বলে তাঁকে অনেক সময় ঠকানোর চেষ্টা করে পাইকাররা। কখনো অপমানিতও হতে হয়।
সুফিয়া তাঁর পরিবার নিয়ে থাকেন মগবাজারে। বাড়ি বরিশাল। ভ্যানচালক স্বামীর আয়ে কোনো রকম থাকা-খাওয়া চলে। কিন্তু অন্যান্য চাহিদা মেটাতে দরকার হয় বাড়তি আয়ের। তাই ফলের মৌসুমে বড় ছেলেটাকে নিয়ে ফল বিক্রি করেন। স্বামী সকালে কারওয়ান বাজার থেকে ফল নিয়ে আসেন। তাই সারা দিন বিক্রি করেন। আর এ সময় যে লাভ হয় তা জমিয়ে রাখার চেষ্টা করেন। ফল নিজেরা খান কি না জিজ্ঞাসা করলে ম্লান হেসে উত্তর দেন, যেটা একটু খারাপ হওয়া শুরু করে সেটাই আলাদা করে রাখেন। পরে বাড়ির সবাই মিলে ভাগ করে সেগুলো খান।
আনিস-হাজেরার মতো হাজারও নারী ও শিশু এ ধরনের কাজে নিয়োজিত আছে। সংসারের অভাব মেটাতে তাদের নামতে হচ্ছে কাজে। পুরো মৌসুম ফল বিক্রি করে ওরা। তবে তারা জানে না, একটা ভালো ফল কতটা সুস্বাদু। তার পরও সুফিয়ারা এ সময়ের অপেক্ষা করে একটু ভালো থাকার জন্য।
ভরপুর ফলের মৌসুম বলতে আমাদের দেশে গ্রীষ্মকালকেই বোঝায়। এ সময়ই সবচেয়ে বেশি ফল বাজারে আসে। আর বছরের অন্যান্য সময় দু-একটি মৌসুমি ফল পাওয়া গেলেও এর পরিমাণ যেমন কম থাকে, দামও অনেক বেশি। অবশ্য দাম বেশি হলেও মানুষ গ্রীষ্মের ফলের অপেক্ষায়ই থাকে। সবাই সাধ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ কেনার চেষ্টা করে। যে কারণে দরিদ্র ফল ব্যবসায়ীরাও অপেক্ষায় থাকেন এ মৌসুমের। তাঁরাও যেন এ মৌসুমকে ঘিরে সুখস্বপ্ন আঁকেন। দারিদ্র্য থেকে একটু মুক্তি পেতে বা একটু ভালো থাকতে তাঁরাও মৌসুমি ব্যবসা করেন। সময়টা খুব অল্প। তবে জোগান অনেক বেশি। সব বাজারেই মৌসুমি ফলের সুবাসে ম-ম করে বাতাস। তাই মৌসুমি ফল শুধু খেতেই সুস্বাদু নয়, এ ফল দরিদ্র মানুষের মুখে হাসিও ফোটায়।
তামান্না ইসলাম অলি
হাজেরার বাড়ি রংপুর। ঢাকা এসেছেন পাঁচ বছর। চার সন্তান ও স্বামী নিয়ে থাকেন রামপুরার একটি বস্তিতে। স্বামী রিকশা চালিয়ে যা আয় করেন, তা দিয়ে সংসার চলে না। তাই তাঁকেও নামতে হয় কাজে। রামপুরায়ই তিনি রাস্তার পাশে বসে ফল বিক্রি করেন। তিনিও আনিসের মতোই। যখন যে ফল বাজারে আসে, তাই বিক্রি করেন। প্রতিদিন সকালে পাইকারদের কাছ থেকে ফল আনেন। তবে নারী বলে তাঁকে অনেক সময় ঠকানোর চেষ্টা করে পাইকাররা। কখনো অপমানিতও হতে হয়।
সুফিয়া তাঁর পরিবার নিয়ে থাকেন মগবাজারে। বাড়ি বরিশাল। ভ্যানচালক স্বামীর আয়ে কোনো রকম থাকা-খাওয়া চলে। কিন্তু অন্যান্য চাহিদা মেটাতে দরকার হয় বাড়তি আয়ের। তাই ফলের মৌসুমে বড় ছেলেটাকে নিয়ে ফল বিক্রি করেন। স্বামী সকালে কারওয়ান বাজার থেকে ফল নিয়ে আসেন। তাই সারা দিন বিক্রি করেন। আর এ সময় যে লাভ হয় তা জমিয়ে রাখার চেষ্টা করেন। ফল নিজেরা খান কি না জিজ্ঞাসা করলে ম্লান হেসে উত্তর দেন, যেটা একটু খারাপ হওয়া শুরু করে সেটাই আলাদা করে রাখেন। পরে বাড়ির সবাই মিলে ভাগ করে সেগুলো খান।
আনিস-হাজেরার মতো হাজারও নারী ও শিশু এ ধরনের কাজে নিয়োজিত আছে। সংসারের অভাব মেটাতে তাদের নামতে হচ্ছে কাজে। পুরো মৌসুম ফল বিক্রি করে ওরা। তবে তারা জানে না, একটা ভালো ফল কতটা সুস্বাদু। তার পরও সুফিয়ারা এ সময়ের অপেক্ষা করে একটু ভালো থাকার জন্য।
ভরপুর ফলের মৌসুম বলতে আমাদের দেশে গ্রীষ্মকালকেই বোঝায়। এ সময়ই সবচেয়ে বেশি ফল বাজারে আসে। আর বছরের অন্যান্য সময় দু-একটি মৌসুমি ফল পাওয়া গেলেও এর পরিমাণ যেমন কম থাকে, দামও অনেক বেশি। অবশ্য দাম বেশি হলেও মানুষ গ্রীষ্মের ফলের অপেক্ষায়ই থাকে। সবাই সাধ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ কেনার চেষ্টা করে। যে কারণে দরিদ্র ফল ব্যবসায়ীরাও অপেক্ষায় থাকেন এ মৌসুমের। তাঁরাও যেন এ মৌসুমকে ঘিরে সুখস্বপ্ন আঁকেন। দারিদ্র্য থেকে একটু মুক্তি পেতে বা একটু ভালো থাকতে তাঁরাও মৌসুমি ব্যবসা করেন। সময়টা খুব অল্প। তবে জোগান অনেক বেশি। সব বাজারেই মৌসুমি ফলের সুবাসে ম-ম করে বাতাস। তাই মৌসুমি ফল শুধু খেতেই সুস্বাদু নয়, এ ফল দরিদ্র মানুষের মুখে হাসিও ফোটায়।
তামান্না ইসলাম অলি
No comments