ইতিবাচক উদ্যোগটিকে অর্থবহ করে তোলা জরুরি-অনলাইনে আয়কর বিবরণী দাখিল

রাজধানীর একটি কর অঞ্চলে ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে বা অনলাইনে আয়কর বিবরণী দাখিলের ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। কোনো রকম দ্বিধা ছাড়াই বলা যেতে পারে যে এটি একটি ইতিবাচক উদ্যোগ, যা সুদূরপ্রসারী ফল বহন করবে।


পরীক্ষামূলকভাবে ও সীমিত আকারে এখন চালু হওয়ায় এ পদ্ধতিতে কী কী ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে, তা যাচাই-বাছাই করে সংশোধনমূলক পদক্ষেপ নেওয়া যাবে। তারপর ক্রমান্বয়ে সব কর অঞ্চলের জন্য এ ব্যবস্থা চালু করা যাবে। ফলে আয়কর বিবরণী দাখিলের কাজটি অনেক সহজ ও ঝক্কিমুক্ত হয়ে যাবে। করদাতাকে বারবার আয়কর কার্যালয়ে দৌড়াতে হবে না।
তবে অনলাইনে বিবরণী দাখিলকে অর্থবহ করতে হলে ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে আয়করের অর্থ পরিশোধের ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ছাড়া অনলাইনেই আয়কর হিসাবযন্ত্র বা ক্যালকুলেটর সংযোজন করতে হবে। জানা গেছে, এসব কাজ চালুর বিষয়টিও প্রক্রিয়াধীন। আশা করা যায়, দ্রুত এসব বিষয়ে অগ্রগতি সাধন করে সরকার সত্যিকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ অতিক্রম করতে সক্ষম হবে। পাশাপাশি অনলাইনে আয়কর বিবরণী দাখিলের ব্যবস্থা করদাতাসহ করযোগ্য আয় নিয়েও যাঁরা করের আওতার বাইরে রয়ে গেছেন, তাঁদের সঠিক ও নিয়মিতভাবে আয়কর দিতে উৎসাহিত করবে।
অনলাইনে আয়কর প্রদানপদ্ধতি উদ্বোধন করার পাশাপাশি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত আরেকটি দৃষ্টান্তমূলক কাজ করেছেন। তিনি নিজের মালিকানাধীন স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির মূল্যমান ও আয়সহ কত টাকা আয়কর দিয়েছেন, তা জনসমক্ষে প্রকাশ করেছেন। এ জন্য অর্থমন্ত্রী অবশ্যই ধন্যবাদ ও অভিনন্দন পাওয়ার যোগ্য। মন্ত্রীরা যেখানে সম্পদের হিসাব প্রকাশে অনীহ, সাংসদেরা যেখানে আয়কর ছাড়ের সুবিধা নিতে উদগ্রীব, সেখানে দেশের অর্থমন্ত্রী যখন নিজের সম্পদ ও আয়করের তথ্য জাতির সামনে তুলে ধরেন, তখন তা একটি বিরাট ঘটনা হিসেবেই বিবেচনা করতে হয়। এটি জনগণের সামনে নিজেদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রকাশের ক্ষেত্রে একটি বড় পদক্ষেপ। অর্থমন্ত্রীর এ দৃষ্টান্ত তাঁর সহকর্মীসহ অন্যদেরও একই কাজে উৎসাহিত করবে এবং গণতন্ত্রের চর্চাকে সমৃদ্ধ করবে—এটাই সবার কাম্য।

No comments

Powered by Blogger.