আনন্দময় শৈশব চাই
শিশুরা আর শিশু নেই। তারা যেন নির্মাণাধীন মানব রোবট। তাদের মা-বাবা, শিক্ষক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সমাজ, রাষ্ট্র_সবাই তাদের সেভাবেই দেখতে চায়। প্রাক-প্রাথমিক স্তরের একটি শিশু, বয়স সাড়ে তিন বা চার বছর; তাকে পড়তে হয় ১২টি বই। কিন্ডারগার্টেন বা তথাকথিত ইংলিশ স্কুলের চিত্র এটি।
অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, শিশুটির থেকে তার স্কুল ব্যাগের আকৃতি বড়। কারণ একেকটি বিষয়ের আবার দুই-তিনটি করে খাতা রাখতে হয়। মা-বাবা কিংবা অন্য কাউকে বহন করতে হয় সে ব্যাগ। আর তাতেই মা-বাবারা মহাখুশি। শুধু তা-ই নয়, আবার বিকেলে কোচিং সেন্টারে নিয়ে যাওয়া, রাতে গৃহশিক্ষক। খেলাধুলা, বিনোদনের সুযোগ তো নেই-ই, রাতে টিভিতে কার্টুন বা কোনো সিরিয়াল দেখতে গেলেই বাধা, 'না বাবা, হোম ওয়ার্কটা সেরে নাও। কালকের পড়াটা আরেকটু দেখ।' সরকারি বিদ্যালয়ের চিত্র অবশ্য কিছুটা ভিন্ন, সেখানে এখনো পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত বইয়ের সংখ্যা ছয়টি। কিন্তু এর ফল কী হচ্ছে? চিকিৎসকদের মতে, এতে শিশুরা শারীরিক, মানসিক_দুই দিক থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অতিরিক্ত মানসিক চাপে পড়াশোনার প্রতি তার এক ধরনের ভীতি তৈরি হয়, মনোযোগ কমে যায়। এ ছাড়া খেতে না চাওয়া, ঘুম কমে যাওয়া, অস্থিরচিত্ততা, মেজাজ খারাপ থাকা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিতে পারে। ফলে তার শারীরিক ক্ষতি হওয়ারও আশঙ্কা থাকে।
গত ৩০ ডিসেম্বর বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কর্মসূচি উদ্বোধনের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিশুদের ওপর চাপ কমাতে পাঠ্যসূচি কমানোর নির্দেশও দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পর পাঠ্যসূচি কমানোর জন্য দুটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। যতদূর জানা যায়, কমিটিতে যোগ্য ব্যক্তিরাই স্থান পেয়েছেন। তাই আশা করা যায়, তাঁরা দ্রুত এবং যথাযোগ্য সুপারিশই করবেন। কিন্তু সমস্যা হলো, কিন্ডারগার্টেনগুলো এখনো সরকারি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও এ ব্যাপারে তাঁদের অপারগতার কথা তুলে ধরেছেন। শনিবারের কালের কণ্ঠে এ ব্যাপারে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু এটি কোনো কাজের কথা নয়। তাদের যেভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা যায়, সে রকম ব্যবস্থা নিতে হবে। তাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে হবে। প্রয়োজনে আলাদা নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা গঠন করতে হবে। একটি স্বাধীন দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় অনিয়ন্ত্রিতভাবে কোনো কিছু চলতে পারে না।
দুনিয়াব্যাপী শিশুদের নিয়ে কাজ করে যেসব সংগঠন, তাদের প্রধান দাবি_'আনন্দময় শৈশব চাই শিশুদের জন্য।' আমাদের দেশে শিশুদের বড় একটি অংশ আর্থিক কারণে আনন্দময় শৈশব থেকে বঞ্চিত, আরেকটি অংশ সচেতনতার অভাবে তা থেকে বঞ্চিত। অথচ শিশুদের মধ্যে সৃজনশীলতা বিকাশের জন্য আনন্দময় শৈশবের কোনো বিকল্প নেই। আমরা আশা করি, বর্তমান সরকার শিশুদের জন্য আনন্দময় শৈশবের লক্ষে যথাসম্ভব কাজ করে যাবে।
গত ৩০ ডিসেম্বর বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কর্মসূচি উদ্বোধনের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিশুদের ওপর চাপ কমাতে পাঠ্যসূচি কমানোর নির্দেশও দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পর পাঠ্যসূচি কমানোর জন্য দুটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। যতদূর জানা যায়, কমিটিতে যোগ্য ব্যক্তিরাই স্থান পেয়েছেন। তাই আশা করা যায়, তাঁরা দ্রুত এবং যথাযোগ্য সুপারিশই করবেন। কিন্তু সমস্যা হলো, কিন্ডারগার্টেনগুলো এখনো সরকারি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও এ ব্যাপারে তাঁদের অপারগতার কথা তুলে ধরেছেন। শনিবারের কালের কণ্ঠে এ ব্যাপারে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু এটি কোনো কাজের কথা নয়। তাদের যেভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা যায়, সে রকম ব্যবস্থা নিতে হবে। তাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে হবে। প্রয়োজনে আলাদা নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা গঠন করতে হবে। একটি স্বাধীন দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় অনিয়ন্ত্রিতভাবে কোনো কিছু চলতে পারে না।
দুনিয়াব্যাপী শিশুদের নিয়ে কাজ করে যেসব সংগঠন, তাদের প্রধান দাবি_'আনন্দময় শৈশব চাই শিশুদের জন্য।' আমাদের দেশে শিশুদের বড় একটি অংশ আর্থিক কারণে আনন্দময় শৈশব থেকে বঞ্চিত, আরেকটি অংশ সচেতনতার অভাবে তা থেকে বঞ্চিত। অথচ শিশুদের মধ্যে সৃজনশীলতা বিকাশের জন্য আনন্দময় শৈশবের কোনো বিকল্প নেই। আমরা আশা করি, বর্তমান সরকার শিশুদের জন্য আনন্দময় শৈশবের লক্ষে যথাসম্ভব কাজ করে যাবে।
No comments