পবিত্র কোরআনের আলো-যুদ্ধে বিজয়ী হলেও আল্লাহ কাফেরদের অন্তরে ভীতির সঞ্চার করেছেন
১৪৮. ফাআ-তা-হুমুল্লা-হু ছাওয়া-বাদ্ দুনইয়া-ওয়া হুছনা ছাওয়া-বিল আ-খিরাতি; ওয়াল্লা-হু ইউহিব্বুল মুহ্ছিনীন।
১৪৯. ইয়া-আয়্যুহাল্লাযীনা আ-মানূ ইন তুত্বীউ'ল্লাযীনা কাফারূ ইয়ারুদ্দূকুম আ'লা-আ'ক্বা-বিকুম ফাতানক্বালিবূ খা-ছিরীন।
১৪৯. ইয়া-আয়্যুহাল্লাযীনা আ-মানূ ইন তুত্বীউ'ল্লাযীনা কাফারূ ইয়ারুদ্দূকুম আ'লা-আ'ক্বা-বিকুম ফাতানক্বালিবূ খা-ছিরীন।
১৫০. বালিল্লা-হু মাওলা-কুম; ওয়া হুয়া খাইরুন্ না-সিরীন।
১৫১. ছানুলক্বী ফী ক্বুলূবিল্লাযীনা কাফারুর্ রু'বা বিমা-আশরাকূ বিল্লাহি মা-লাম ইউনায্যিলবিহী ছুলত্বা-নান; ওয়া মা'ওয়া-হুমুন্ না-র; ওয়াবি'ছা মাছওয়ায্ যা-লিমীন।
[সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৪৮-১৫২]
অনুবাদ
১৪৮. অতঃপর আল্লাহতায়ালা তাদের দুনিয়ায়ও পুরস্কৃত করেছেন এবং আখিরাতেও উত্তম পুরস্কার দিয়েছেন। আল্লাহতায়ালা নেককার বান্দাদের ভালোবাসেন।
১৪৯. হে ইমানদাররা, তোমরা যদি কাফেরদের অনুসরণ করতে শুরু করো, তাহলে এরা তোমাদের পূর্ববর্তী জাহেলিয়াত অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। ফলে তোমরা ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে।
১৫০. আল্লাহতায়ালা হচ্ছেন তোমাদের একমাত্র অভিভাবক এবং তিনিই তোমাদের উত্তম সাহায্যকারী।
১৫১. আমি অচিরেই এ কাফেরদের অন্তরে ভীতির সঞ্চার করে দেব, যেহেতু তারা আল্লাহর সঙ্গে এমন সব শরিক বানাচ্ছে যে ব্যাপারে আল্লাহ কোনো দলিল-প্রমাণ নাজিল করেননি। এদের শেষ গন্তব্য হচ্ছে জাহান্নামের আগুন; জালেমদের অবস্থান কত নিকৃষ্ট।
ব্যাখ্যা
এ আয়াতগুলোও আগের প্রসঙ্গের ধারাবাহিকতায় এসেছে। মূলত ওহুদের যুদ্ধের বিপর্যয়কে কেন্দ্র করে এসেছে এসব প্রসঙ্গ। ১৪৮ নম্বর আয়াতটি ১৪৭ নম্বর আয়াতের উপসংহার। সেই আয়াতে বলা হয়েছে নেককার লোকরা কিভাবে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা জানায়। সেখানে তাদের এ মোনাজাতটি উদ্ধৃত করা হয়েছে, 'হে আমাদের প্রভু, তুমি আমাদের যাবতীয় গুহনা মাফ করে দাও, আমাদের কাজকর্মে যেসব বাড়াবাড়ি হয়েছে সেগুলোও ক্ষমা করো, তুমি আমাদের সত্য ও ন্যায়ের ওপর মজবুতভাবে দাঁড় করিয়ে রাখো এবং কাফেরদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে আমাদের সাহায্য করো। এরপর এ আয়াতে বলা হচ্ছে, 'অতঃপর আল্লাহতায়ালা তাদের দুনিয়ায়ও পুরস্কৃত করেছেন এবং আখিরাতেও উত্তম পুরস্কার দিয়েছেন। আল্লাহতায়ালা নেককার বান্দাদের ভালোবাসেন।
১৪৯ ও ১৫০ নম্বর আয়াতে ইমানদারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তারা যেন কোনোক্রমেই কাফেরদের অনুসরণ না করে বা তাদের কথা মেনে নিয়ে তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তোলার চেষ্টা না করে। ইমানদারদের পথ হলো আল্লাহর পথ তথা সত্য ও ন্যায়ের পথ। মুসলমানরা যদি কাফেরদের কথা মেনে নেয় এবং তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব জমানোর চেষ্টা করে, তবে কাফেররা হয়তো তাদের আগের সেই জাহেলিয়াতের পথে নিয়ে যাবে। সুতরাং মুসলমানদের অবশ্যই তাদের নিজেদের পথে থাকতে হবে, যেখানে আল্লাহই তাদের বন্ধু ও অভিভাবক এবং তিনিই উত্তম সাহায্যকারী।
১৫১ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে কাফেরদের অন্তরে ভীতি সঞ্চার করে দেওয়ার কথা। এ আয়াতের শানে নুজুল এ রকম_ওহুদের যুদ্ধে দৃশ্যত মুসলমানদের পরাজয় ঘটল এবং কাফেররা বিজয়ী হলো। তথাপি এরা কিন্তু মক্কায় ফিরে গেল, মদিনা আক্রমণে অগ্রসর হতে সাহসী হলো না। তারা তো প্রকৃতপক্ষে ওহুদ প্রান্তর থেকে মক্কায় ফিরে আসার জন্য যুদ্ধাভিযান করেনি। তারা অভিযান করেছিল মদিনা দখলের জন্য। কিন্তু যুদ্ধে সাময়িকভাবে বিজয়ী হলেও তাদের মনে মুসলমানদের ব্যাপারে যথেষ্ট ভীতি ছিল বলেই তারা মক্কায় ফিরে এসেছিল। মক্কার দিকে অনেক দূর চলে আসার পর তারা আক্ষেপ করে নিজেদের মধ্যে বাক্যবিনিময় করছিল। তাদের কেউ কেউ মদিনা আক্রমণের বাসনা প্রকাশ করেছিল। কিন্তু তাদের মনে এমন ভীতির সঞ্চার হলো যে তারা আর মদিনা আক্রমণে যেতে সাহসই পেল না। এ অবস্থায়ই এ আয়াতটি নাজিল হয়। এই আয়াতে কাফেরদের মূল দুর্বলতার বিষয়টি ফাঁস করে দেওয়া হয়েছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
১৫১. ছানুলক্বী ফী ক্বুলূবিল্লাযীনা কাফারুর্ রু'বা বিমা-আশরাকূ বিল্লাহি মা-লাম ইউনায্যিলবিহী ছুলত্বা-নান; ওয়া মা'ওয়া-হুমুন্ না-র; ওয়াবি'ছা মাছওয়ায্ যা-লিমীন।
[সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৪৮-১৫২]
অনুবাদ
১৪৮. অতঃপর আল্লাহতায়ালা তাদের দুনিয়ায়ও পুরস্কৃত করেছেন এবং আখিরাতেও উত্তম পুরস্কার দিয়েছেন। আল্লাহতায়ালা নেককার বান্দাদের ভালোবাসেন।
১৪৯. হে ইমানদাররা, তোমরা যদি কাফেরদের অনুসরণ করতে শুরু করো, তাহলে এরা তোমাদের পূর্ববর্তী জাহেলিয়াত অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। ফলে তোমরা ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে।
১৫০. আল্লাহতায়ালা হচ্ছেন তোমাদের একমাত্র অভিভাবক এবং তিনিই তোমাদের উত্তম সাহায্যকারী।
১৫১. আমি অচিরেই এ কাফেরদের অন্তরে ভীতির সঞ্চার করে দেব, যেহেতু তারা আল্লাহর সঙ্গে এমন সব শরিক বানাচ্ছে যে ব্যাপারে আল্লাহ কোনো দলিল-প্রমাণ নাজিল করেননি। এদের শেষ গন্তব্য হচ্ছে জাহান্নামের আগুন; জালেমদের অবস্থান কত নিকৃষ্ট।
ব্যাখ্যা
এ আয়াতগুলোও আগের প্রসঙ্গের ধারাবাহিকতায় এসেছে। মূলত ওহুদের যুদ্ধের বিপর্যয়কে কেন্দ্র করে এসেছে এসব প্রসঙ্গ। ১৪৮ নম্বর আয়াতটি ১৪৭ নম্বর আয়াতের উপসংহার। সেই আয়াতে বলা হয়েছে নেককার লোকরা কিভাবে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা জানায়। সেখানে তাদের এ মোনাজাতটি উদ্ধৃত করা হয়েছে, 'হে আমাদের প্রভু, তুমি আমাদের যাবতীয় গুহনা মাফ করে দাও, আমাদের কাজকর্মে যেসব বাড়াবাড়ি হয়েছে সেগুলোও ক্ষমা করো, তুমি আমাদের সত্য ও ন্যায়ের ওপর মজবুতভাবে দাঁড় করিয়ে রাখো এবং কাফেরদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে আমাদের সাহায্য করো। এরপর এ আয়াতে বলা হচ্ছে, 'অতঃপর আল্লাহতায়ালা তাদের দুনিয়ায়ও পুরস্কৃত করেছেন এবং আখিরাতেও উত্তম পুরস্কার দিয়েছেন। আল্লাহতায়ালা নেককার বান্দাদের ভালোবাসেন।
১৪৯ ও ১৫০ নম্বর আয়াতে ইমানদারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তারা যেন কোনোক্রমেই কাফেরদের অনুসরণ না করে বা তাদের কথা মেনে নিয়ে তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তোলার চেষ্টা না করে। ইমানদারদের পথ হলো আল্লাহর পথ তথা সত্য ও ন্যায়ের পথ। মুসলমানরা যদি কাফেরদের কথা মেনে নেয় এবং তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব জমানোর চেষ্টা করে, তবে কাফেররা হয়তো তাদের আগের সেই জাহেলিয়াতের পথে নিয়ে যাবে। সুতরাং মুসলমানদের অবশ্যই তাদের নিজেদের পথে থাকতে হবে, যেখানে আল্লাহই তাদের বন্ধু ও অভিভাবক এবং তিনিই উত্তম সাহায্যকারী।
১৫১ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে কাফেরদের অন্তরে ভীতি সঞ্চার করে দেওয়ার কথা। এ আয়াতের শানে নুজুল এ রকম_ওহুদের যুদ্ধে দৃশ্যত মুসলমানদের পরাজয় ঘটল এবং কাফেররা বিজয়ী হলো। তথাপি এরা কিন্তু মক্কায় ফিরে গেল, মদিনা আক্রমণে অগ্রসর হতে সাহসী হলো না। তারা তো প্রকৃতপক্ষে ওহুদ প্রান্তর থেকে মক্কায় ফিরে আসার জন্য যুদ্ধাভিযান করেনি। তারা অভিযান করেছিল মদিনা দখলের জন্য। কিন্তু যুদ্ধে সাময়িকভাবে বিজয়ী হলেও তাদের মনে মুসলমানদের ব্যাপারে যথেষ্ট ভীতি ছিল বলেই তারা মক্কায় ফিরে এসেছিল। মক্কার দিকে অনেক দূর চলে আসার পর তারা আক্ষেপ করে নিজেদের মধ্যে বাক্যবিনিময় করছিল। তাদের কেউ কেউ মদিনা আক্রমণের বাসনা প্রকাশ করেছিল। কিন্তু তাদের মনে এমন ভীতির সঞ্চার হলো যে তারা আর মদিনা আক্রমণে যেতে সাহসই পেল না। এ অবস্থায়ই এ আয়াতটি নাজিল হয়। এই আয়াতে কাফেরদের মূল দুর্বলতার বিষয়টি ফাঁস করে দেওয়া হয়েছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments