মিট দ্য প্রেসে রফিক-উল হক-বিচার বিভাগ স্বাধীন কিন্তু বিচারকেরা নন

প্রবীণ আইনজীবী রফিক-উল হক বলেছেন, বিচার বিভাগ স্বাধীন। কিন্তু বিচারকেরা স্বাধীন নন। রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগপ্রাপ্ত বিচারকদের ওপর রাজনৈতিক প্রভাব কাজ করে। গতকাল শনিবার বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে মুক্তচিন্তা ফোরাম আয়োজিত ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে রফিক-উল হক এসব কথা বলেন।


অনুষ্ঠানে প্রশ্নোত্তর পর্বে রফিক-উল হক বলেন, ‘বিচার বিভাগ স্বাধীন। কিন্তু প্রশ্ন হলো, যিনি বিচারকাজ করছেন, তিনি কতটা স্বাধীন? মুশকিল হলো, সরকার গত দুই বছরে যোগ্যতা-অযোগ্যতা বিচার না করে রাজনৈতিক বিবেচনায় বেশি পরিমাণে বিচারক নিয়োগ দিয়েছে। এসব বিচারকের ওপর রাজনৈতিক প্রভাব কাজ করে।’
বিচার বিভাগ ও জাতীয় সংসদের দ্বান্দ্বিক অবস্থান সম্পর্কে রফিক-উল হক বলেন, সংসদে যা কিছু আলোচনা হবে, তা নিয়ে বা কোনো কার্যধারা নিয়ে কোনো আদালতে কোনো প্রশ্ন তোলা যাবে না। সংবিধান সংসদকে এ ক্ষমতা দিয়েছে। তবে সংসদ আদালতকে নিয়ে কথা বলতে পারে। কিন্তু বিচার বিভাগ সংসদকে নিয়ে কোনো কটাক্ষ করতে পারে না। সুতরাং, সাংবিধানিকভাবেই সংসদ অনেক বেশি সুরক্ষিত। সম্প্রতি যা ঘটেছে, সেটি দুর্ঘটনা। এ নিয়ে আর বাড়াবাড়ি করা ঠিক হবে না। স্পিকার ও প্রধান বিচারপতি একসঙ্গে বসে বিষয়টি মীমাংসা করে ফেলা উচিত।
স্পিকার সম্পর্কে বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন আহমেদ চৌধুরীর মন্তব্য প্রসঙ্গে রফিক-উল হক বলেন, ‘খোদার বিচার বড় বিচার। নইলে বিচারপতি শামসুদ্দিন এত বড় বিপদে পড়বেন কেন? মনে রাখতে হবে, খোদা অহংকারীকে পছন্দ করে না।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে রফিক-উল হক বলেন, সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীসংক্রান্ত মামলার রায় হাতে পাওয়ার পর তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিল করলে এ নিয়ে প্রশ্ন উঠত না। তিনি বলেন, ‘আমার কথা হলো, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। নির্দলীয় সরকার দরকার। এ জন্য তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থাই ফিরিয়ে আনতে হবে এমন না, নির্দলীয় যেকোনো পদ্ধতির সরকার হলেই চলবে।’
গণমাধ্যমকে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ উল্লেখ করে রফিক-উল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রী গণমাধ্যম সম্পর্কে যেসব মন্তব্য করেছেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যা হিসেবে তাঁর কাছ থেকে তা আশা করা যায় না। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা না থাকলে দেশে গণতন্ত্র থাকে না। এর ওপর আঘাত করলে দেশ অচল হয়ে যাবে।

No comments

Powered by Blogger.