ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তির শুনানি-আবারও উত্তপ্ত পাহাড় by সৈকত দেওয়ান
পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন চেয়ারম্যানের একতরফাভাবে ভূমিবিরোধের মামলার শুনানি নিয়ে পাহাড়ের রাজনীতি আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। একতরফা শুনানির প্রতিবাদে ইতিমধ্যে তিন পার্বত্য জেলায় দুই দিনের সড়ক ও নৌপথ অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
আজ ১০ জুন ও কাল ১১ জুন ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তি মামলার শুনানির দিন ধার্য করেছে ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন। একতরফা এই শুনানির প্রতিবাদে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) সমর্থিত গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম আজ খাগড়াছড়ি সদরে অবস্থিত ভূমি কমিশন কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে।
গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাইকেল চাকমা জানান, ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তিতে একতরফা শুনানির প্রতিবাদে আজ খাগড়াছড়ি ভূমি কমিশন কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করা হবে।
পার্বত্য চট্টগ্রামে আদিবাসীদের প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলোর অভিযোগ, পার্বত্য চুক্তির শর্ত না মেনে জাতীয় সংসদে ভূমি কমিশন আইন পাস হয়েছে। শান্তিচুক্তি অনুযায়ী পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ে কোনো আইন প্রণয়ন করতে হলে আঞ্চলিক পরিষদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। এই আইন পাসের পর জনসংহতি সমিতির নেতা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা) ভূমি কমিশন আইনের ২৩টি ধারাকে পার্বত্য চুক্তির সঙ্গে বিরোধাত্মক হিসেবে চিহ্নিত করেন এবং আইনের এ ধারাগুলো সংশোধনের দাবি জানান। ২০১০ সালের ২০ সেপ্টেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ভূমি মন্ত্রণালয় এবং আঞ্চলিক পরিষদের নেতাদের এক সভায় আইনের ১৪টি ধারা পরিবর্তন বা সংশোধনের বিষয়ে একমত হন। কিন্তু এই ধারাগুলো সংশোধনের আগেই ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তির শুনানি ডাকায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন আদিবাসী নেতারা।
আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান সন্তু লারমা ও ভূমি কমিশনের সদস্য তিন সার্কেলের প্রধানেরা ভূমি কমিশন আইন সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত কমিশনের কার্যক্রমে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকার ঘোষণা দিয়েছেন।
অভিযোগ আছে, ভূমি কমিশনের বর্তমান চেয়ারম্যান বিচারপতি খাদেমুল ইসলাম চৌধুরী ২০০৯ সালের ২০ জুলাই দায়িত্ব পাওয়ার পর কমিশনের অন্য সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি জরিপ করার ঘোষণা দেন এবং এ জরিপ ছয় মাসের মধ্যে শেষ করার সময়ও বেঁধে দেন। চেয়ারম্যানের এই ঘোষণার পর পাহাড়ে আদিবাসীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। আদিবাসীরা ভূমি আইনের সংশোধনের পর বিরোধ নিষ্পত্তির দাবি জানান এবং এরপর ভূমি জরিপ করার পক্ষে মত দেন। শেষ পর্যন্ত ভূমি জরিপের উদ্যোগ ভেস্তে যায়। বর্তমান ভূমি কমিশনের মেয়াদ আগামী ১৯ জুলাই শেষ হবে।
সম্প্রতি পাহাড়ে উত্তেজনা বেড়েছে ভূমি কমিশনের চেয়ারম্যানের একটি ঘোষণার পর। গত ৩ মে কমিশনের চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন, কমিশনের অন্য সদস্যরা অনুপস্থিত থাকলেও বিশেষ বিধানে তিনি ভূমিবিরোধের নিষ্পত্তি করবেন। এই ঘোষণার পর পাহাড়ের রাজনীতি আবারও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ২৩ ও ২৪ মে শুনানির দিন ধার্য থাকলেও সেদিন শুনানি হয়নি। আজ ও আগামীকাল আবারও শুনানির দিন ধার্য করায় প্রতিবাদমুখর হয়ে উঠেছে আদিবাসী জনসাধারণ।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (এমএন লারমা) কো-চেয়ারপারসন ও আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য সুধাসিন্ধু খীসা বলেন, ‘চেয়ারম্যান যে উদ্যোগ নিচ্ছেন, তা বাস্তবায়িত হলে ভূমি সমস্যার সমাধান তো হবেই না, বরং সমস্যাটি জটিল থেকে আরও জটিলতর হবে।’
পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটির অন্যতম সদস্য ও সাবেক যুগ্ম সচিব উ ক্য জেন বলেন, ‘ভূমি কমিশন চেয়ারম্যান বিশেষ বিধানে ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তির যে ঘোষণা দিয়েছেন, ভূমি কমিশন আইনে সে ধরনের ক্ষমতা চেয়ারম্যানকে দেওয়া হয়নি।’
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যেখানে আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠকে ভূমি কমিশন আইন সংশোধনের সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেখানে সংশোধনের আগেই কমিশনের চেয়ারম্যানের একতরফা ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তির ঘোষণা অযৌক্তিক।
এদিকে পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ কমিটি ২৮ মে ঢাকায় বৈঠকে বসে।
কিন্তু পরিবীক্ষণ কমিটি থেকে সুস্পষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় সাধারণ আদিবাসীদের হতাশা আরও বেড়েছে। উল্লেখ্য, এই পরিবীক্ষণ কমিটির সদস্যরা হলেন: সংসদ উপনেতা সাজেদা চৌধুরী (চেয়ারম্যান), আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান সন্তু লারমা ও খাগড়াছড়ি থেকে নির্বাচিত সাংসদ যতীন্দ্র লাল ত্রিপুরা।
গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাইকেল চাকমা জানান, ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তিতে একতরফা শুনানির প্রতিবাদে আজ খাগড়াছড়ি ভূমি কমিশন কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করা হবে।
পার্বত্য চট্টগ্রামে আদিবাসীদের প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলোর অভিযোগ, পার্বত্য চুক্তির শর্ত না মেনে জাতীয় সংসদে ভূমি কমিশন আইন পাস হয়েছে। শান্তিচুক্তি অনুযায়ী পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ে কোনো আইন প্রণয়ন করতে হলে আঞ্চলিক পরিষদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। এই আইন পাসের পর জনসংহতি সমিতির নেতা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা) ভূমি কমিশন আইনের ২৩টি ধারাকে পার্বত্য চুক্তির সঙ্গে বিরোধাত্মক হিসেবে চিহ্নিত করেন এবং আইনের এ ধারাগুলো সংশোধনের দাবি জানান। ২০১০ সালের ২০ সেপ্টেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ভূমি মন্ত্রণালয় এবং আঞ্চলিক পরিষদের নেতাদের এক সভায় আইনের ১৪টি ধারা পরিবর্তন বা সংশোধনের বিষয়ে একমত হন। কিন্তু এই ধারাগুলো সংশোধনের আগেই ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তির শুনানি ডাকায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন আদিবাসী নেতারা।
আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান সন্তু লারমা ও ভূমি কমিশনের সদস্য তিন সার্কেলের প্রধানেরা ভূমি কমিশন আইন সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত কমিশনের কার্যক্রমে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকার ঘোষণা দিয়েছেন।
অভিযোগ আছে, ভূমি কমিশনের বর্তমান চেয়ারম্যান বিচারপতি খাদেমুল ইসলাম চৌধুরী ২০০৯ সালের ২০ জুলাই দায়িত্ব পাওয়ার পর কমিশনের অন্য সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি জরিপ করার ঘোষণা দেন এবং এ জরিপ ছয় মাসের মধ্যে শেষ করার সময়ও বেঁধে দেন। চেয়ারম্যানের এই ঘোষণার পর পাহাড়ে আদিবাসীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। আদিবাসীরা ভূমি আইনের সংশোধনের পর বিরোধ নিষ্পত্তির দাবি জানান এবং এরপর ভূমি জরিপ করার পক্ষে মত দেন। শেষ পর্যন্ত ভূমি জরিপের উদ্যোগ ভেস্তে যায়। বর্তমান ভূমি কমিশনের মেয়াদ আগামী ১৯ জুলাই শেষ হবে।
সম্প্রতি পাহাড়ে উত্তেজনা বেড়েছে ভূমি কমিশনের চেয়ারম্যানের একটি ঘোষণার পর। গত ৩ মে কমিশনের চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন, কমিশনের অন্য সদস্যরা অনুপস্থিত থাকলেও বিশেষ বিধানে তিনি ভূমিবিরোধের নিষ্পত্তি করবেন। এই ঘোষণার পর পাহাড়ের রাজনীতি আবারও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ২৩ ও ২৪ মে শুনানির দিন ধার্য থাকলেও সেদিন শুনানি হয়নি। আজ ও আগামীকাল আবারও শুনানির দিন ধার্য করায় প্রতিবাদমুখর হয়ে উঠেছে আদিবাসী জনসাধারণ।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (এমএন লারমা) কো-চেয়ারপারসন ও আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য সুধাসিন্ধু খীসা বলেন, ‘চেয়ারম্যান যে উদ্যোগ নিচ্ছেন, তা বাস্তবায়িত হলে ভূমি সমস্যার সমাধান তো হবেই না, বরং সমস্যাটি জটিল থেকে আরও জটিলতর হবে।’
পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটির অন্যতম সদস্য ও সাবেক যুগ্ম সচিব উ ক্য জেন বলেন, ‘ভূমি কমিশন চেয়ারম্যান বিশেষ বিধানে ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তির যে ঘোষণা দিয়েছেন, ভূমি কমিশন আইনে সে ধরনের ক্ষমতা চেয়ারম্যানকে দেওয়া হয়নি।’
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যেখানে আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠকে ভূমি কমিশন আইন সংশোধনের সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেখানে সংশোধনের আগেই কমিশনের চেয়ারম্যানের একতরফা ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তির ঘোষণা অযৌক্তিক।
এদিকে পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ কমিটি ২৮ মে ঢাকায় বৈঠকে বসে।
কিন্তু পরিবীক্ষণ কমিটি থেকে সুস্পষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় সাধারণ আদিবাসীদের হতাশা আরও বেড়েছে। উল্লেখ্য, এই পরিবীক্ষণ কমিটির সদস্যরা হলেন: সংসদ উপনেতা সাজেদা চৌধুরী (চেয়ারম্যান), আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান সন্তু লারমা ও খাগড়াছড়ি থেকে নির্বাচিত সাংসদ যতীন্দ্র লাল ত্রিপুরা।
No comments