বিশেষ সাক্ষাৎকার : মাহবুবুল আলম-হুমকি-ধমকি মোকাবিলা করেই সাংবাদিকদের দায়িত্ব পালন করতে হবে
সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা সাম্প্রতিককালে বেড়ে গেছে। রাজনৈতিক দলের কর্মী-সমর্থক থেকে শুরু করে সন্ত্রাসী এমনকি পুলিশ বাহিনীরও টার্গেট এখন সাংবাদিক। আক্রান্ত হচ্ছে সংবাদমাধ্যমের অফিস। এসব বিষয় নিয়ে কালের কণ্ঠের মুখোমুখি হলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও দি ইনডিপেনডেন্টের সম্পাদক মাহবুবুল আলম।
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আলী হাবিব
কালের কণ্ঠ : সম্প্রতি লক্ষ করা যাচ্ছে, সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদের পাশাপাশি পুলিশের আক্রমণের শিকার হচ্ছেন সাংবাদিকরা। এই প্রবণতা হঠাৎ বৃদ্ধির কারণ কী?
মাহবুবুল আলম : হ্যাঁ, সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা সম্প্রতি যেভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে তা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিনা উসকানিতে সাংবাদিকদের ওপর পুলিশের এই আচরণ অনভিপ্রেত। কেন তারা সাংবাদিকের ওপর হামলা করছে?
সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যাওয়ার কারণ একাধিক। পুলিশের চাকরিতে নিয়োগ মেধাভিত্তিক না হয়ে পক্ষপাতিত্ব ও অন্য বিষয়ের প্রাধান্য, যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের অভাব, শিথিল চেইন অব কমান্ড ও নিয়ন্ত্রণহীনতা এর কারণ হতে পারে বলে আমার ধারণা।
কালের কণ্ঠ : এটা খুবই স্বাভাবিক যে একজন সাংবাদিক সবাইকে তুষ্ট করতে পারবেন না। সেই অসন্তোষের বহিঃপ্রকাশ এভাবে ঘটবে কেন?
মাহবুবুল আলম : সরকার এ ব্যাপারে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আশা করি।
কালের কণ্ঠ : দেখা যাচ্ছে, রাজনৈতিক দলের কর্মী-সমর্থকরাও সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হচ্ছেন, এই সংস্কৃতি কি আগেও ছিল?
মাহবুবুল আলম : রাজনৈতিক দলের কর্মী-সমর্থকরাও হালে সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হচ্ছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। অতীতেও এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে; কিন্তু সার্বিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক দলের কর্মীদের দ্বারা লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনা খাটো করে দেখার অবকাশ নেই।
কালের কণ্ঠ : এই নিরাপত্তাহীন অবস্থায় সাংবাদিকদের পক্ষে কাজ করা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। এই পরিস্থিতিতে আমাদের করণীয় কী? বিশেষ করে মাঠপর্যায়ে যাঁরা কাজ করছেন, তাঁদের অনেক প্রতিকূল অবস্থার মধ্য দিয়ে কাজ করতে হয়। তাঁদের জন্য আপনার পরামর্শ কী।
মাহবুবুল আলম : সাংবাদিকদের পেশাটাই ঝুঁকিপূর্ণ। তদুপরি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, সন্ত্রাসী ও রাজনৈতিক দলের কর্মী ও সমর্থকদের হুমকি-ধমকি মোকাবিলা করেই সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করে যেতে হবে। একই সঙ্গে রাষ্ট্রীয় পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত সবাইকে আইন মেনে তাদের কর্তব্য পালনের কথা মনে করিয়ে দিতে হবে।
কালের কণ্ঠ : এখন সাংবাদিকদের কর্মক্ষেত্রও আক্রান্ত হচ্ছে। এ অবস্থায় সরকার বা রাষ্ট্রের কি কিছু করণীয় আছে?
মাহবুবুল আলম : এসবই হচ্ছে অসহিষ্ণুতার ফল। সমাজকে পরমতসহিষ্ণু হতে হবে। পারস্পরিক সহযোগিতার মনোভাব গড়ে তুলতে হবে। এর জন্য যে মৌলিক কাজটুকু করা দরকার, সেটা করতে হবে সরকারকে।
কালের কণ্ঠ : পেশার নিরাপত্তা ও সাংবাদিকের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাংবাদিক সমাজের এখন করণীয় কী?
মাহবুবুল আলম : আমরা দেখতে পাচ্ছি, সাংবাদিকসহ দেশের সর্বস্তরের মানুষ যদি অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়, প্রতিবাদ জানায় এবং প্রয়োজনে আইনের আশ্রয় নেয়, তাহলে আইন ভঙ্গকারীদের কিছুটা হলেও নিবৃত্ত করা সম্ভব হবে।
কালের কণ্ঠ : এ পেশায় আপনার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা। সেই অভিজ্ঞতা থেকে আপনার কাছে জিজ্ঞাসা, আগেও কি পেশাটি এমন নিরাপত্তাহীন মনে হতো?
মাহবুবুল আলম : না, আমার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় সাংবাদিকদের এই ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে দেখিনি।
কালের কণ্ঠ : সব সময় মিডিয়াকে দায়ী করার একটি প্রবণতাও লক্ষ করা যায়। এটা কেন হয়?
মাহবুবুল আলম : এটা হচ্ছে নিজেদের ত্রুটি ঢাকার সহজ উপায়। তবে মিডিয়াকে গুরুত্বহীন মনে করার কোনো কারণ নেই।
কালের কণ্ঠ : যখন পুলিশও বিনা উসকানিতে সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হয়, তখন তো আর আশ্রয় বলতে কিছু থাকে না। কেন এমন হচ্ছে বলে মনে হয়?
মাহবুবুল আলম : কিছুসংখ্যক পুলিশ সদস্যের কৃতকর্মের জন্য আজ গোটা পুলিশ বাহিনী প্রশ্নবিদ্ধ এবং এর ভাবমূর্তি বিপন্ন।
কালের কণ্ঠ : স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, পুলিশ থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে দায়িত্ব পালন করতে। এ মন্তব্য আপনি কিভাবে দেখছেন?
মাহবুবুল আলম : স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর এ মন্তব্য সংবাদমাধ্যমে এসেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, এ ধরনের কথা প্রতিমন্ত্রী বলেননি। এরপর এ নিয়ে মন্তব্য করার কিছু নেই।
কালের কণ্ঠ : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মতে পুলিশ এখন অনেক ভালো হয়ে গেছে। এ প্রসঙ্গে আপনার মন্তব্য কী?
মাহবুবুল আলম : এটা তাঁর নিজস্ব বক্তব্য। পরে অবশ্য তিনি ওই সব ঘটনা নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
কালের কণ্ঠ : সাংবাদিক ও সাংবাদিকতা পেশা এখন আক্রান্ত। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের কোনো পথ দেখছেন?
মাহবুবুল আলম : এ অবস্থার আশু পরিবর্তন অত্যাবশ্যক। এ জন্য নির্বাচিত সরকারকেই দায়িত্ব নিতে হবে।
কালের কণ্ঠ : আপনাকে ধন্যবাদ
মাহবুবুল আলম : আপনাকেও ধন্যবাদ।
কালের কণ্ঠ : সম্প্রতি লক্ষ করা যাচ্ছে, সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদের পাশাপাশি পুলিশের আক্রমণের শিকার হচ্ছেন সাংবাদিকরা। এই প্রবণতা হঠাৎ বৃদ্ধির কারণ কী?
মাহবুবুল আলম : হ্যাঁ, সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা সম্প্রতি যেভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে তা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিনা উসকানিতে সাংবাদিকদের ওপর পুলিশের এই আচরণ অনভিপ্রেত। কেন তারা সাংবাদিকের ওপর হামলা করছে?
সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যাওয়ার কারণ একাধিক। পুলিশের চাকরিতে নিয়োগ মেধাভিত্তিক না হয়ে পক্ষপাতিত্ব ও অন্য বিষয়ের প্রাধান্য, যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের অভাব, শিথিল চেইন অব কমান্ড ও নিয়ন্ত্রণহীনতা এর কারণ হতে পারে বলে আমার ধারণা।
কালের কণ্ঠ : এটা খুবই স্বাভাবিক যে একজন সাংবাদিক সবাইকে তুষ্ট করতে পারবেন না। সেই অসন্তোষের বহিঃপ্রকাশ এভাবে ঘটবে কেন?
মাহবুবুল আলম : সরকার এ ব্যাপারে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আশা করি।
কালের কণ্ঠ : দেখা যাচ্ছে, রাজনৈতিক দলের কর্মী-সমর্থকরাও সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হচ্ছেন, এই সংস্কৃতি কি আগেও ছিল?
মাহবুবুল আলম : রাজনৈতিক দলের কর্মী-সমর্থকরাও হালে সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হচ্ছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। অতীতেও এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে; কিন্তু সার্বিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক দলের কর্মীদের দ্বারা লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনা খাটো করে দেখার অবকাশ নেই।
কালের কণ্ঠ : এই নিরাপত্তাহীন অবস্থায় সাংবাদিকদের পক্ষে কাজ করা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। এই পরিস্থিতিতে আমাদের করণীয় কী? বিশেষ করে মাঠপর্যায়ে যাঁরা কাজ করছেন, তাঁদের অনেক প্রতিকূল অবস্থার মধ্য দিয়ে কাজ করতে হয়। তাঁদের জন্য আপনার পরামর্শ কী।
মাহবুবুল আলম : সাংবাদিকদের পেশাটাই ঝুঁকিপূর্ণ। তদুপরি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, সন্ত্রাসী ও রাজনৈতিক দলের কর্মী ও সমর্থকদের হুমকি-ধমকি মোকাবিলা করেই সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করে যেতে হবে। একই সঙ্গে রাষ্ট্রীয় পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত সবাইকে আইন মেনে তাদের কর্তব্য পালনের কথা মনে করিয়ে দিতে হবে।
কালের কণ্ঠ : এখন সাংবাদিকদের কর্মক্ষেত্রও আক্রান্ত হচ্ছে। এ অবস্থায় সরকার বা রাষ্ট্রের কি কিছু করণীয় আছে?
মাহবুবুল আলম : এসবই হচ্ছে অসহিষ্ণুতার ফল। সমাজকে পরমতসহিষ্ণু হতে হবে। পারস্পরিক সহযোগিতার মনোভাব গড়ে তুলতে হবে। এর জন্য যে মৌলিক কাজটুকু করা দরকার, সেটা করতে হবে সরকারকে।
কালের কণ্ঠ : পেশার নিরাপত্তা ও সাংবাদিকের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাংবাদিক সমাজের এখন করণীয় কী?
মাহবুবুল আলম : আমরা দেখতে পাচ্ছি, সাংবাদিকসহ দেশের সর্বস্তরের মানুষ যদি অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়, প্রতিবাদ জানায় এবং প্রয়োজনে আইনের আশ্রয় নেয়, তাহলে আইন ভঙ্গকারীদের কিছুটা হলেও নিবৃত্ত করা সম্ভব হবে।
কালের কণ্ঠ : এ পেশায় আপনার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা। সেই অভিজ্ঞতা থেকে আপনার কাছে জিজ্ঞাসা, আগেও কি পেশাটি এমন নিরাপত্তাহীন মনে হতো?
মাহবুবুল আলম : না, আমার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় সাংবাদিকদের এই ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে দেখিনি।
কালের কণ্ঠ : সব সময় মিডিয়াকে দায়ী করার একটি প্রবণতাও লক্ষ করা যায়। এটা কেন হয়?
মাহবুবুল আলম : এটা হচ্ছে নিজেদের ত্রুটি ঢাকার সহজ উপায়। তবে মিডিয়াকে গুরুত্বহীন মনে করার কোনো কারণ নেই।
কালের কণ্ঠ : যখন পুলিশও বিনা উসকানিতে সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হয়, তখন তো আর আশ্রয় বলতে কিছু থাকে না। কেন এমন হচ্ছে বলে মনে হয়?
মাহবুবুল আলম : কিছুসংখ্যক পুলিশ সদস্যের কৃতকর্মের জন্য আজ গোটা পুলিশ বাহিনী প্রশ্নবিদ্ধ এবং এর ভাবমূর্তি বিপন্ন।
কালের কণ্ঠ : স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, পুলিশ থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে দায়িত্ব পালন করতে। এ মন্তব্য আপনি কিভাবে দেখছেন?
মাহবুবুল আলম : স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর এ মন্তব্য সংবাদমাধ্যমে এসেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, এ ধরনের কথা প্রতিমন্ত্রী বলেননি। এরপর এ নিয়ে মন্তব্য করার কিছু নেই।
কালের কণ্ঠ : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মতে পুলিশ এখন অনেক ভালো হয়ে গেছে। এ প্রসঙ্গে আপনার মন্তব্য কী?
মাহবুবুল আলম : এটা তাঁর নিজস্ব বক্তব্য। পরে অবশ্য তিনি ওই সব ঘটনা নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
কালের কণ্ঠ : সাংবাদিক ও সাংবাদিকতা পেশা এখন আক্রান্ত। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের কোনো পথ দেখছেন?
মাহবুবুল আলম : এ অবস্থার আশু পরিবর্তন অত্যাবশ্যক। এ জন্য নির্বাচিত সরকারকেই দায়িত্ব নিতে হবে।
কালের কণ্ঠ : আপনাকে ধন্যবাদ
মাহবুবুল আলম : আপনাকেও ধন্যবাদ।
No comments