মন্ত্রিসভায় ডেসটিনির কর্মকাণ্ড নিয়ে উদ্বেগ-সমবায়ের নামে ব্যাংকিং করলে সাত বছর জেল

বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি ছাড়া সমবায় সমিতির নামে কোনো ব্যাংকিং কার্যক্রম চালালে সর্বোচ্চ সাত বছর কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান করা হচ্ছে। এ-সংক্রান্ত সমবায় সমিতি (সংশোধন) আইন, ২০১২-এর খসড়া গতকাল সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদিত হয়েছে।


খসড়াটি আইন মন্ত্রণালয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জাতীয় সংসদে পাস হলে তা আইনে পরিণত হবে। বৈঠক শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা এই তথ্য জানান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
বিদ্যমান আইনে সমবায় সমিতি অবৈধ ব্যাংকিং করলে সর্বোচ্চ এক বছর কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের বিধান আছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, প্রস্তাবিত সংশোধনীতে সমবায় অধিদপ্তরের প্রধানের পদটির নাম পরিবর্তন করে ‘নিবন্ধক’-এর পরিবর্তে ‘মহাপরিচালক’ করা হয়েছে। এর পরও তিনি বিভিন্ন সমিতি নিবন্ধনের জন্য নিবন্ধকের ক্ষমতা পাবেন। আইন পাস হলে সমবায় অধিদপ্তরের জনবলকাঠামোও পুনর্বিন্যস্ত করা হবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, সমবায় সমিতি আইনে নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় মাইক্রোক্রেডিট আইন ও ব্যাংক কোম্পানি আইনের প্রয়োগ করা যাবে না। এ ধরনের প্রয়োগ আইনের ব্যত্যয় বলে বিবেচিত হবে। ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে সমবায় সমিতিগুলোকে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি নিতে হবে। সমিতি শুধু তাদের সদস্যদের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ করতে পারবে। কোনো অসদস্যের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ করা যাবে না।
এমএলএম কোম্পানিগুলোর অবৈধ ব্যাংকিংয়ের কারণেই আইনটি দ্রুত সংশোধন করা হচ্ছে কি না, জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বিষয়টি এমন নয়। আইনের খসড়াটি গত বছরের মার্চে এসেছে। এত দিন খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে কাজ হচ্ছিল।
এদিকে ডেসটিনির কর্মকাণ্ডে মন্ত্রিসভায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। কয়েকজন মন্ত্রী বৈঠকে বলেন, ডেসটিনির নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ড সম্পর্কে সরকারকে নজর দিতে হবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, আলোচনায় ডেসটিনির বিষয়টিও এসেছে। ডেসটিনির কর্মকাণ্ড সম্পর্কে সরকার তীক্ষ নজর রাখছে।
বঙ্গোপসাগরের ভূতাত্ত্বিক উপাত্ত ব্যবহার প্রসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, মন্ত্রিসভার বৈঠকে বঙ্গোপসাগরের সাম্প্রতিক ভূতাত্ত্বিক জরিপে পাওয়া তথ্য-উপাত্ত সংরক্ষণ ও ব্যবহারের বিষয়েও আলোচনা হয়। নেদারল্যান্ডের অর্থসহায়তায় বাংলাদেশ সরকার এই জরিপ করেছে। পেট্রোবাংলাকে এসব তথ্য ও উপাত্ত সংরক্ষণে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এসব গোপনীয় তথ্য ও উপাত্ত সমুদ্র তলদেশের সম্পদ অনুসন্ধান এবং একাডেমিক গবেষণার কাজে ব্যবহার করা যাবে। তবে এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তার নীতি নিশ্চিত করতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.