তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা হবে আরও আধুনিক by সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থায় পরিবর্তন আনার উদ্যোগ নিয়েছে সংবিধান সংশোধনে গঠিত বিশেষ কমিটি। একই সঙ্গে ৯০ কার্যদিবস অনুপস্থিত থাকায় সাংসদদের আসন শূন্য হওয়ার যে বিধান আছে, তা পরিবর্তন করে ৯০ দিন করারও চিন্তাভাবনা চলছে।
এ সম্পর্কে বিশেষ কমিটির কো-চেয়ারম্যান সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার গতকাল সাক্ষাৎকার দেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মিজানুর রহমান খান
প্রথম আলো তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা তাহলে যথারীতি বহাল থাকছে?
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ঠিক যেমন আছে তেমনটি নয়। একে আরও গতিশীল, আরও আধুনিক ও আরও কার্যকর করা হবে। এ ব্যাপারে আমরা এখনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছি। তবে বর্তমান সংঘাত ও সাংঘর্ষিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই বিধান আরও প্রলম্বিত করার পক্ষেই অধিকাংশ সদস্য মত দিয়েছেন।
প্রথম আলো আপনারা সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল ইত্যাদি বিষয়ে কি আলাপ-আলোচনা করেছেন?
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত আমরা অত দূর যাইনি। এখন পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকারসংক্রান্ত বিধানাবলিতে আছি।
প্রথম আলো রাষ্ট্রপতি বর্তমানে পাঁচ বছর মেয়াদে নির্বাচিত হন। কিন্তু তাঁর উত্তরসূরি না আসা পর্যন্ত তিনি দায়িত্বে বহাল থাকেন। এখানে যে পরিবর্তন আনছেন, সেটা কি তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে গতিশীল করতেই, নাকি অন্য কিছু?
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত একই কারণে। সংবিধানের ৯৩ অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রপতির যে অবারিত ক্ষমতা রয়েছে, সেটা বহাল রাখা হবে কি হবে না, সেটা নিয়েও আমরা চিন্তাভাবনা করছি।
প্রথম আলো আপনি মনে হয় সংসদ ভেঙে যাওয়ার পর অধ্যাদেশ প্রণয়নের ক্ষমতার কথা বলছেন। পুনর্মুদ্রিত সংবিধানে দেখছি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদে রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ প্রণয়নের ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত সংবিধানের ৪৮ অনুচ্ছেদে যে রাষ্ট্রপতিকে আমরা দেখি, তিনি একজন খেতাবি রাষ্ট্রপ্রধান। তাঁর তেমন কোনো ক্ষমতা নেই। কিন্তু পাঁচ বছর পর সংসদ ভেঙে যাওয়ার পর তিনি একজন ক্ষমতাবান রাষ্ট্রপতিতে পরিণত হন। তখন সংবিধানে যে ভারসাম্যের ব্যবস্থা রয়েছে, সেটা বিঘ্নিত হয়। তখন সেটা অনেকটা গণবিরোধী হয়ে ওঠে। এসব নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।
প্রথম আলো আপনারা কি এবারেও বিশেষজ্ঞদের ডাকবেন?
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এখনো এ নিয়ে ভাবিনি। আমরা প্রথম খসড়া তৈরি করা নিয়ে ভাবছি।
প্রথম আলো আর কত দিনের মধ্যে আপনারা এটা শেষ করবেন?
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত আগামী ৬-৭ এপ্রিলের মধ্যেই আমরা এটা শেষ করে ফেলব। আমাদের পরবর্তী বৈঠক এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে।
প্রথম আলো আগামী বাজেট অধিবেশনের আগেই আপনারা সংবিধান সংশোধন বিল পাস করতে চান?
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত দেখা যাক। ইতিহাসের যাতে বিকৃতি না ঘটে, আমরা সেদিকে নজর রাখব।
প্রথম আলো এম কে আনোয়ারকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনারা সহযোগিতা দেবেন কি না। তিনি বললেন, সুরঞ্জিত বাবুর এক কথাতেই তাঁদের মনোভাব বোঝা যায়। তিনি বলেছেন, শেখ মুজিবুর রহমানকে এমনভাবে সংবিধানে রাখবেন, যা আর কেউ কোনো দিন পাল্টাতে না পারে। তাঁদের মনোভাবে বাকশালের আছর রয়েছে। তাঁরা বাকশালের ধারণা থেকে বের হতে পারেননি। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী?
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত তিনি তাঁর উপলব্ধি থেকে এ রকম অভিমত রেখেছেন। আমি তাঁদের তো আহ্বান জানিয়েছি। তাঁরা যখন একাদশ ও দ্বাদশ সংশোধনী পাস করেছেন, তখন আমরা তাঁদের সহযোগিতা দিয়েছি। আওয়ামী লীগ দ্বাদশ সংশোধনীর বিষয়ে পূর্ণ বিল সংসদে পেশ করেছিল। তাঁদেরও উচিত এখন আমাদের সহযোগিতা দেওয়া। তাঁরা সামরিক ফরমান দিয়ে যখন সংবিধানের দেহে নানা বিষয় প্রতিস্থাপন করেছিলেন, তখন তাঁদের সেটা কি বাকশাল মনোভাবের ছিল না? ৯২ক অনুচ্ছেদ যুক্ত করে জিয়াউর রহমান নিজে সংবিধান ও সংসদের ঊর্ধ্বে অবস্থান নিয়েছিলেন। আর সেটাকে আটকাতে মানুষের ঘাড় ধরে গণভোটের ব্যবস্থা করেছিলেন।
প্রথম আলো কিন্তু আপনি কী করে বলছেন, আপনারা সংবিধানে যে পরিবর্তন আনবেন, সেটা আর বদলানো যাবে না?
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত সংবিধানের মৌলিক কাঠামো চূড়ান্ত করেছেন। এটা শুধু পঞ্চম সংশোধনীর মামলার রায়ে নয়, এটা স্বীকৃত ও প্রশংসিত হয়েছে ঐতিহাসিক অষ্টম সংশোধনী মামলার রায়েও। এর মূল কথা হলো, সংসদ দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় সংবিধান সংশোধন করতে পারবে। কিন্তু যা মৌলিক কাঠামো, তা দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিয়েও বদলাতে পারবে না। আমরা সেই কারণেই এই যুক্তি দিচ্ছি। ১৯৭৩ সালে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের কেশবানন্দ ভারতী বনাম কেরালা মামলায় সংবিধানের অপরিবর্তনীয় মৌলিক কাঠামো স্বীকৃত হয়েছে। সেই রায়ে বলা হয়েছে, সংবিধান সংশোধনের প্রক্রিয়ায় জাতীয় সংসদও সংবিধানের কোনো মৌলিক কাঠামো ধ্বংস করতে পারে না।
প্রথম আলো এম কে আনোয়ার বলছেন, আওয়ামী লীগ এটা বলতে পারছে। কারণ বিচারকেরা আপাতত তাদের পক্ষে আছেন। তারা কিন্তু ‘আপাতত’ শব্দটি ব্যবহার করছেন।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত মওদুদও বলছেন, সংবিধান কোরআন নয়। সেটা তো আমরাও বলছি। সংবিধান বদলানো যাবে। কিন্তু মৌলিক কাঠামো বদলানো যাবে না। এখন তাঁরা যদি গায়ের জোরে করতে চান, তাহলে সেটা ভিন্ন কথা। গায়ের জোরে তো তাঁরা অনেক কিছুই করেছেন। পুরো সংবিধানই তাঁরা বাতিল করতে পারবেন।
প্রথম আলো তত্ত্বাবধায়ক সরকারে পরিবর্তন আনার বিষয়টি বিএনপিও ইতিবাচক হিসেবে দেখছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও তারা এই প্রক্রিয়ায় শামিল হচ্ছে না। এই বিরোধীদলীয় রোগ আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করেন? এটা কবে দূর হবে?
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এটা বিএনপিই বলতে পারে।
প্রথম আলো আপনারা বিএনপির সহযোগিতা চান কি না?
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এক শ বার চাচ্ছি। তবে তাদের সহযোগিতা না করতে পারার কারণটা আমরা বুঝি। সেটা তাদের রাজনৈতিক দেউলিয়াপনা। তাদের সবকিছুই তো অবৈধ। তাদের জিয়াউর রহমান, তাদের সায়েম, তাদের মোশতাক—সবকিছুই তো অবৈধ।
প্রথম আলো এম কে আনোয়ার অভিযোগ করেছেন, আপনারা সহযোগিতা চান অথচ পুনর্মুদ্রিত সংবিধানের কপি তাঁদের দেন না। সুপ্রিম কোর্টের রায় পড়ে তাঁরা দেখেছেন, পঞ্চম সংশোধনীর ৪১টি অনুচ্ছেদ সংশোধন করা হয়েছিল; কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট মাত্র আটটি অনুচ্ছেদ বাতিল করেন। অথচ পুনর্মুদ্রিত সংবিধানে তার চেয়ে বহু বেশি অনুচ্ছেদ বিলোপ করা হয়েছে।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত পুনর্মুদ্রিত সংবিধান যদি আইনমন্ত্রী তাঁদের না দেন, তাহলে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের রায় তো তাঁরা পেয়েছেন। সেটা পেতে তো কোনো অসুবিধা হয়নি। তাহলে সেই রায় দুটো নিয়ে এসে যত কথাবার্তা আছে, সেটা তাঁরা আমাদের কমিটির কাছে বলতে পারেন।
প্রথম আলো আপনাকে ধন্যবাদ।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ধন্যবাদ।
প্রথম আলো তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা তাহলে যথারীতি বহাল থাকছে?
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ঠিক যেমন আছে তেমনটি নয়। একে আরও গতিশীল, আরও আধুনিক ও আরও কার্যকর করা হবে। এ ব্যাপারে আমরা এখনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছি। তবে বর্তমান সংঘাত ও সাংঘর্ষিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই বিধান আরও প্রলম্বিত করার পক্ষেই অধিকাংশ সদস্য মত দিয়েছেন।
প্রথম আলো আপনারা সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল ইত্যাদি বিষয়ে কি আলাপ-আলোচনা করেছেন?
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত আমরা অত দূর যাইনি। এখন পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকারসংক্রান্ত বিধানাবলিতে আছি।
প্রথম আলো রাষ্ট্রপতি বর্তমানে পাঁচ বছর মেয়াদে নির্বাচিত হন। কিন্তু তাঁর উত্তরসূরি না আসা পর্যন্ত তিনি দায়িত্বে বহাল থাকেন। এখানে যে পরিবর্তন আনছেন, সেটা কি তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে গতিশীল করতেই, নাকি অন্য কিছু?
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত একই কারণে। সংবিধানের ৯৩ অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রপতির যে অবারিত ক্ষমতা রয়েছে, সেটা বহাল রাখা হবে কি হবে না, সেটা নিয়েও আমরা চিন্তাভাবনা করছি।
প্রথম আলো আপনি মনে হয় সংসদ ভেঙে যাওয়ার পর অধ্যাদেশ প্রণয়নের ক্ষমতার কথা বলছেন। পুনর্মুদ্রিত সংবিধানে দেখছি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদে রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ প্রণয়নের ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত সংবিধানের ৪৮ অনুচ্ছেদে যে রাষ্ট্রপতিকে আমরা দেখি, তিনি একজন খেতাবি রাষ্ট্রপ্রধান। তাঁর তেমন কোনো ক্ষমতা নেই। কিন্তু পাঁচ বছর পর সংসদ ভেঙে যাওয়ার পর তিনি একজন ক্ষমতাবান রাষ্ট্রপতিতে পরিণত হন। তখন সংবিধানে যে ভারসাম্যের ব্যবস্থা রয়েছে, সেটা বিঘ্নিত হয়। তখন সেটা অনেকটা গণবিরোধী হয়ে ওঠে। এসব নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।
প্রথম আলো আপনারা কি এবারেও বিশেষজ্ঞদের ডাকবেন?
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এখনো এ নিয়ে ভাবিনি। আমরা প্রথম খসড়া তৈরি করা নিয়ে ভাবছি।
প্রথম আলো আর কত দিনের মধ্যে আপনারা এটা শেষ করবেন?
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত আগামী ৬-৭ এপ্রিলের মধ্যেই আমরা এটা শেষ করে ফেলব। আমাদের পরবর্তী বৈঠক এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে।
প্রথম আলো আগামী বাজেট অধিবেশনের আগেই আপনারা সংবিধান সংশোধন বিল পাস করতে চান?
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত দেখা যাক। ইতিহাসের যাতে বিকৃতি না ঘটে, আমরা সেদিকে নজর রাখব।
প্রথম আলো এম কে আনোয়ারকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনারা সহযোগিতা দেবেন কি না। তিনি বললেন, সুরঞ্জিত বাবুর এক কথাতেই তাঁদের মনোভাব বোঝা যায়। তিনি বলেছেন, শেখ মুজিবুর রহমানকে এমনভাবে সংবিধানে রাখবেন, যা আর কেউ কোনো দিন পাল্টাতে না পারে। তাঁদের মনোভাবে বাকশালের আছর রয়েছে। তাঁরা বাকশালের ধারণা থেকে বের হতে পারেননি। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী?
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত তিনি তাঁর উপলব্ধি থেকে এ রকম অভিমত রেখেছেন। আমি তাঁদের তো আহ্বান জানিয়েছি। তাঁরা যখন একাদশ ও দ্বাদশ সংশোধনী পাস করেছেন, তখন আমরা তাঁদের সহযোগিতা দিয়েছি। আওয়ামী লীগ দ্বাদশ সংশোধনীর বিষয়ে পূর্ণ বিল সংসদে পেশ করেছিল। তাঁদেরও উচিত এখন আমাদের সহযোগিতা দেওয়া। তাঁরা সামরিক ফরমান দিয়ে যখন সংবিধানের দেহে নানা বিষয় প্রতিস্থাপন করেছিলেন, তখন তাঁদের সেটা কি বাকশাল মনোভাবের ছিল না? ৯২ক অনুচ্ছেদ যুক্ত করে জিয়াউর রহমান নিজে সংবিধান ও সংসদের ঊর্ধ্বে অবস্থান নিয়েছিলেন। আর সেটাকে আটকাতে মানুষের ঘাড় ধরে গণভোটের ব্যবস্থা করেছিলেন।
প্রথম আলো কিন্তু আপনি কী করে বলছেন, আপনারা সংবিধানে যে পরিবর্তন আনবেন, সেটা আর বদলানো যাবে না?
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত সংবিধানের মৌলিক কাঠামো চূড়ান্ত করেছেন। এটা শুধু পঞ্চম সংশোধনীর মামলার রায়ে নয়, এটা স্বীকৃত ও প্রশংসিত হয়েছে ঐতিহাসিক অষ্টম সংশোধনী মামলার রায়েও। এর মূল কথা হলো, সংসদ দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় সংবিধান সংশোধন করতে পারবে। কিন্তু যা মৌলিক কাঠামো, তা দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিয়েও বদলাতে পারবে না। আমরা সেই কারণেই এই যুক্তি দিচ্ছি। ১৯৭৩ সালে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের কেশবানন্দ ভারতী বনাম কেরালা মামলায় সংবিধানের অপরিবর্তনীয় মৌলিক কাঠামো স্বীকৃত হয়েছে। সেই রায়ে বলা হয়েছে, সংবিধান সংশোধনের প্রক্রিয়ায় জাতীয় সংসদও সংবিধানের কোনো মৌলিক কাঠামো ধ্বংস করতে পারে না।
প্রথম আলো এম কে আনোয়ার বলছেন, আওয়ামী লীগ এটা বলতে পারছে। কারণ বিচারকেরা আপাতত তাদের পক্ষে আছেন। তারা কিন্তু ‘আপাতত’ শব্দটি ব্যবহার করছেন।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত মওদুদও বলছেন, সংবিধান কোরআন নয়। সেটা তো আমরাও বলছি। সংবিধান বদলানো যাবে। কিন্তু মৌলিক কাঠামো বদলানো যাবে না। এখন তাঁরা যদি গায়ের জোরে করতে চান, তাহলে সেটা ভিন্ন কথা। গায়ের জোরে তো তাঁরা অনেক কিছুই করেছেন। পুরো সংবিধানই তাঁরা বাতিল করতে পারবেন।
প্রথম আলো তত্ত্বাবধায়ক সরকারে পরিবর্তন আনার বিষয়টি বিএনপিও ইতিবাচক হিসেবে দেখছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও তারা এই প্রক্রিয়ায় শামিল হচ্ছে না। এই বিরোধীদলীয় রোগ আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করেন? এটা কবে দূর হবে?
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এটা বিএনপিই বলতে পারে।
প্রথম আলো আপনারা বিএনপির সহযোগিতা চান কি না?
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এক শ বার চাচ্ছি। তবে তাদের সহযোগিতা না করতে পারার কারণটা আমরা বুঝি। সেটা তাদের রাজনৈতিক দেউলিয়াপনা। তাদের সবকিছুই তো অবৈধ। তাদের জিয়াউর রহমান, তাদের সায়েম, তাদের মোশতাক—সবকিছুই তো অবৈধ।
প্রথম আলো এম কে আনোয়ার অভিযোগ করেছেন, আপনারা সহযোগিতা চান অথচ পুনর্মুদ্রিত সংবিধানের কপি তাঁদের দেন না। সুপ্রিম কোর্টের রায় পড়ে তাঁরা দেখেছেন, পঞ্চম সংশোধনীর ৪১টি অনুচ্ছেদ সংশোধন করা হয়েছিল; কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট মাত্র আটটি অনুচ্ছেদ বাতিল করেন। অথচ পুনর্মুদ্রিত সংবিধানে তার চেয়ে বহু বেশি অনুচ্ছেদ বিলোপ করা হয়েছে।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত পুনর্মুদ্রিত সংবিধান যদি আইনমন্ত্রী তাঁদের না দেন, তাহলে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের রায় তো তাঁরা পেয়েছেন। সেটা পেতে তো কোনো অসুবিধা হয়নি। তাহলে সেই রায় দুটো নিয়ে এসে যত কথাবার্তা আছে, সেটা তাঁরা আমাদের কমিটির কাছে বলতে পারেন।
প্রথম আলো আপনাকে ধন্যবাদ।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ধন্যবাদ।
No comments