পবিত্র কোরআনের আলো-বিশ্বের প্রথম ইবাদতগৃহ অবস্থিত মক্কায়
৯৫। ক্বুল সাদাক্বাল্লাহু; ফাত্তাবি'ঊ মিল্লাতা ইব্রাহীমা হানীফা; ওয়ামা কানা মিনাল মুশ্রিকীন। ৯৬। ইন্না আওয়্যালা বাইতিউঁ উদ্বি'আ লিন্নাসি লাল্লাযী বিবাক্কাতা মুবারাকাওঁ ওয়া হুদালি্লল 'আলামীন। ৯৭। ফীহি আ-ইয়াতুম বায়্যিনাতুম মাক্বামু ইব্রাহীম; ওয়া মান দাখালাহূ কানা আমিনা; ওয়া লিল্লাহি 'আলান্নাসি হিজ্জুল বাইতি মানিস্তাত্বা'আ ইলাইহি সাবীলা।
ওয়া মান কাফারা ফা-ইন্নাল্লাহা গানিয়্যুন 'আনিল 'আলামীন। [সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ৯৫-৯৭]
অনুবাদ : ৯৫। (হে নবী) আপনি বলে দিন, আল্লাহ তায়ালা সত্য কথা বলেছেন। অতএব তোমরা সবাই নিষ্ঠার সঙ্গে ইব্রাহিমের মতাদর্শ অনুসরণ করো। তিনি কখনোই মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না।
৯৬। নিশ্চয়ই গোটা মানবজাতির জন্য সর্বপ্রথম যে ঘরটি বানানো হয়েছিল, তা অবস্থিত আছে মক্কায়। আর এটা সারা বিশ্বের জন্য কল্যাণ ও সঠিক পথের দিশারি।
৯৭। এখানে রয়েছে আল্লাহর সুস্পষ্ট নিদর্শন, আর রয়েছে মাকামে ইব্রাহিম (ইব্রাহিমের দাঁড়ানোর স্থান)। এখানে যে ব্যক্তি প্রবেশ করবে, সে নিরাপদ হয়ে যাবে। মানবজাতির ওপর আল্লাহর পক্ষ থেকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে_যে ব্যক্তির এই ঘর পর্যন্ত ভ্রমণ করার সামর্থ্য থাকবে, সে যেন এই ঘরকে কেন্দ্র করে হজ আদায় করে। আর যে ব্যক্তি তা অস্বীকার করে, তার জানা থাকা উচিত, আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টিকুলের কারো মুখাপেক্ষী নন।
ব্যাখ্যা : এখানে কুরাইশ এবং ইহুদি সম্প্রদায়_উভয়ের পূর্বপুরুষ হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর প্রসঙ্গ আনা হয়েছে। হজরত ইব্রাহিম (আ.) মানবসভ্যতার আদি পিতাদের অন্যতম এক পবিত্র পুরুষ। তাঁর ধর্ম ও মতাদর্শ সম্পর্কে কোনো বিভ্রান্তি ছিল না। তিনি ছিলেন একনিষ্ঠ মুসলিমদের একজন। বিশ্ববাসীর কাছে একত্ববাদের মর্মবাণী তুলে ধরার ক্ষেত্রে তাঁর অবদান ছিল অনন্য। তাঁর মিল্লাত বা অনুসারী হিসেবে যাঁরা পরিচিত, তাঁরাও একত্ববাদের একনিষ্ঠ ধারক হিসেবেই পরিচিত হয়েছেন। ৯৫ নম্বর আয়াতে মানবজাতিকে ইব্রাহিম (আ.)-এর আদর্শের একনিষ্ঠ ধারক হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
৯৬ ও ৯৭ নম্বর আয়াতের শানে নুজুল এ রকম : ইহুদিরা জেরুজালেমে অবস্থিত বাইতুল মুকাদ্দাসকে মক্কার কাবাগৃহের চেয়ে বেশি পবিত্র বলে বিশ্বাস করত। অন্যদিকে কুরাইশসহ আরবরা মক্কার কাবাগৃহকে অধিকতর পবিত্র স্থান হিসেবে বিশ্বাস করত। ইসলামেও মক্কার কাবাগৃহকে কিবলা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে, যদিও এর আগে কিছুদিন বায়তুল মুকাদ্দাস মুসলমানদেরও কিবলা ছিল। এ ব্যাপারে ইহুদি এবং মুসলমানদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হতো। এই বিতর্ক অবসানের লক্ষ্যেই আয়াত দুটি নাজিল হয়। এখানে মক্কার কাবাগৃহকে আল্লাহর ইবাদতের প্রথম গৃহ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এই গৃহ নির্মাণ করা হয়েছিল মানুষের ইবাদতের জন্য; এবং কল্যাণ ও সুপথের দিশা লাভের কেন্দ্রভূমি হিসেবে।
উল্লেখ করা প্রয়োজন, কুরাইশ ও ইহুদিদের পূর্বপুরুষ হজরত ইব্রাহিম (আ.) তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র ইসমাঈল (আ.)-কে নিয়ে এই ঘর নির্মাণ করেছিলেন। কথিত আছে, হজরত আদম (আ.) প্রথম ওই স্থানে ইবাদতের জন্য ঘর তৈরি করেছিলেন। পরে সেই ঘরের চিহ্ন বিলুপ্ত হয়ে গেলেও আল্লাহর হুকুমে হজরত ইব্রাহিম (আ.) ওই একই স্থানে তাঁর পুত্র ইসমাঈল (আ.)-কে নিয়ে ইবাদতগৃহ নির্মাণ করেন। এই আয়াতে বলা হয়েছে, এখানে আল্লাহর নিদর্শন এবং ইব্রাহিম (আ.)-এর স্মৃতিচিহ্ন রয়েছে। এসব তথ্য ইহুদিদের নিবৃত্ত করার জন্য যথেষ্ট। জেরুজালেমের বায়তুল মুকাদ্দাস নির্মিত হয়েছে আরো অনেক পরে_হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর অধস্তন বংশধরদের মাধ্যমে। তাঁরাও ইব্রাহিম (আ.)-এরই অনুসারী ছিলেন।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
অনুবাদ : ৯৫। (হে নবী) আপনি বলে দিন, আল্লাহ তায়ালা সত্য কথা বলেছেন। অতএব তোমরা সবাই নিষ্ঠার সঙ্গে ইব্রাহিমের মতাদর্শ অনুসরণ করো। তিনি কখনোই মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না।
৯৬। নিশ্চয়ই গোটা মানবজাতির জন্য সর্বপ্রথম যে ঘরটি বানানো হয়েছিল, তা অবস্থিত আছে মক্কায়। আর এটা সারা বিশ্বের জন্য কল্যাণ ও সঠিক পথের দিশারি।
৯৭। এখানে রয়েছে আল্লাহর সুস্পষ্ট নিদর্শন, আর রয়েছে মাকামে ইব্রাহিম (ইব্রাহিমের দাঁড়ানোর স্থান)। এখানে যে ব্যক্তি প্রবেশ করবে, সে নিরাপদ হয়ে যাবে। মানবজাতির ওপর আল্লাহর পক্ষ থেকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে_যে ব্যক্তির এই ঘর পর্যন্ত ভ্রমণ করার সামর্থ্য থাকবে, সে যেন এই ঘরকে কেন্দ্র করে হজ আদায় করে। আর যে ব্যক্তি তা অস্বীকার করে, তার জানা থাকা উচিত, আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টিকুলের কারো মুখাপেক্ষী নন।
ব্যাখ্যা : এখানে কুরাইশ এবং ইহুদি সম্প্রদায়_উভয়ের পূর্বপুরুষ হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর প্রসঙ্গ আনা হয়েছে। হজরত ইব্রাহিম (আ.) মানবসভ্যতার আদি পিতাদের অন্যতম এক পবিত্র পুরুষ। তাঁর ধর্ম ও মতাদর্শ সম্পর্কে কোনো বিভ্রান্তি ছিল না। তিনি ছিলেন একনিষ্ঠ মুসলিমদের একজন। বিশ্ববাসীর কাছে একত্ববাদের মর্মবাণী তুলে ধরার ক্ষেত্রে তাঁর অবদান ছিল অনন্য। তাঁর মিল্লাত বা অনুসারী হিসেবে যাঁরা পরিচিত, তাঁরাও একত্ববাদের একনিষ্ঠ ধারক হিসেবেই পরিচিত হয়েছেন। ৯৫ নম্বর আয়াতে মানবজাতিকে ইব্রাহিম (আ.)-এর আদর্শের একনিষ্ঠ ধারক হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
৯৬ ও ৯৭ নম্বর আয়াতের শানে নুজুল এ রকম : ইহুদিরা জেরুজালেমে অবস্থিত বাইতুল মুকাদ্দাসকে মক্কার কাবাগৃহের চেয়ে বেশি পবিত্র বলে বিশ্বাস করত। অন্যদিকে কুরাইশসহ আরবরা মক্কার কাবাগৃহকে অধিকতর পবিত্র স্থান হিসেবে বিশ্বাস করত। ইসলামেও মক্কার কাবাগৃহকে কিবলা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে, যদিও এর আগে কিছুদিন বায়তুল মুকাদ্দাস মুসলমানদেরও কিবলা ছিল। এ ব্যাপারে ইহুদি এবং মুসলমানদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হতো। এই বিতর্ক অবসানের লক্ষ্যেই আয়াত দুটি নাজিল হয়। এখানে মক্কার কাবাগৃহকে আল্লাহর ইবাদতের প্রথম গৃহ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এই গৃহ নির্মাণ করা হয়েছিল মানুষের ইবাদতের জন্য; এবং কল্যাণ ও সুপথের দিশা লাভের কেন্দ্রভূমি হিসেবে।
উল্লেখ করা প্রয়োজন, কুরাইশ ও ইহুদিদের পূর্বপুরুষ হজরত ইব্রাহিম (আ.) তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র ইসমাঈল (আ.)-কে নিয়ে এই ঘর নির্মাণ করেছিলেন। কথিত আছে, হজরত আদম (আ.) প্রথম ওই স্থানে ইবাদতের জন্য ঘর তৈরি করেছিলেন। পরে সেই ঘরের চিহ্ন বিলুপ্ত হয়ে গেলেও আল্লাহর হুকুমে হজরত ইব্রাহিম (আ.) ওই একই স্থানে তাঁর পুত্র ইসমাঈল (আ.)-কে নিয়ে ইবাদতগৃহ নির্মাণ করেন। এই আয়াতে বলা হয়েছে, এখানে আল্লাহর নিদর্শন এবং ইব্রাহিম (আ.)-এর স্মৃতিচিহ্ন রয়েছে। এসব তথ্য ইহুদিদের নিবৃত্ত করার জন্য যথেষ্ট। জেরুজালেমের বায়তুল মুকাদ্দাস নির্মিত হয়েছে আরো অনেক পরে_হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর অধস্তন বংশধরদের মাধ্যমে। তাঁরাও ইব্রাহিম (আ.)-এরই অনুসারী ছিলেন।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments