টে লি ফো নে না গ রি ক ম ন্ত ব্য-কত দিন সময় প্রয়োজন তা পরিষ্কার করা জরুরি

প্রিয় পাঠক, আপনাদের সরাসরি মন্তব্য নিয়ে আমাদের নিয়মিত আয়োজনে এবার বিদ্যুৎ-সংকট, প্রধানমন্ত্রী সময় চেয়েছেন: আপনার মন্তব্য কী? প্রশ্নে টেলিফোনের মাধ্যমে মন্তব্য আহ্বান করা হয়েছিল। এ ব্যাপারে আপনারা উৎসাহব্যঞ্জক সাড়া দিয়েছেন। মন্তব্যগুলোর কিছু অংশ আজ ছাপা হলো; বাকি অংশ আগামীকাল প্রকাশিত হবে।


এম আলমগীর কবীর, শিক্ষার্থী
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ
বিদ্যুৎ-সংকট সমাধানে প্রধানমন্ত্রী সময় চেয়েছেন ঠিক, কিন্তু সেই সময়টার দৈর্ঘ্য কত তা তিনি উল্লেখ করেননি। সময়টা যদি দীর্ঘ হয়, তাহলে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব। তবে আমার মনে হয়, বর্তমান পরিস্থিতিতে তিনি শুধু স্বপ্নই দেখাতে পারেন। লোডশেডিংয়ের দুর্ভোগ শেষ হবে না।
হেদায়েত উল্লাহ, আইনজীবী সহকারী জজকোর্ট, গাজীপুর
প্রধানমন্ত্রী সময় চেয়েছেন। আমি মনে করি এ বিষয়ে সময় নেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। কারণ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় আমরা তো ভালো অবস্থায় ছিলাম। তবে এখন কেন সম্ভব নয়?
মো. রফিকুল ইসলাম, শিক্ষার্থী, মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ব., টাঙ্গাইল
সময় ও নদীর স্রোত কারও জন্য অপেক্ষা করে না। আমাদের বিদ্যুৎ খাতেরও প্রতিনিয়ত অবনমন হচ্ছে। এ বিষয়ে যত সময় নেওয়া হবে, ততই ক্ষতি বাড়তে থাকবে। এ বিষয়ে সরকারকে আরও প্রতিশ্রুতিশীল হতে হবে।
জাহাঙ্গীর মোহাম্মদ, বিদ্যুৎকর্মী
মালিবাগ বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র, ঢাকা
বিদ্যুৎ-সংকট নিরসন দ্রুত সম্ভব নয়। চাহিদার বিপরীতে উৎপাদন বৃদ্ধির দিকে মনোযোগ কোনো সরকার যথোপযুক্তভাবে দেয়নি। পুরোনো জীর্ণ পাওয়ার স্টেশন দিয়ে কোনো রকম চলছে। যখন উৎপাদন কেন্দ্রে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়, তখন তা প্রকট আকার ধারণ করে। তবে সরকারের একার পক্ষে এর সমাধান সম্ভব নয়। সবাইকে সমন্বিতভাবে এ বিষয়গুলো করার চেষ্টা করতে হবে—১. বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়া ২. বিদ্যুৎ-সাশ্রয়ী বাল্ব ব্যবহার করা ৩. বেসরকারি উদ্যোগ উৎসাহিত করা।
নিজামুদ্দিন, ব্যবসায়ী, উত্তরা, ঢাকা
প্রধানমন্ত্রী যে হিসাব দিয়েছেন, তার সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতির কোনো মিল নেই। আগে লোডশেডিং ছিল চার ঘণ্টা। বর্তমানে ছয়
থেকে আট ঘণ্টা। তাহলে নতুন যোগ হওয়া ৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কোথায় গেল? প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে আমাদের সুনির্দিষ্টভাবে আশ্বস্ত করবেন।
মাসুদ পারভেজ, চাকরিজীবী
জিগাতলা, ঢাকা
প্রধানমন্ত্রীর কথায় জনগণ মোটেই আশ্বস্ত হয়নি। তিনি এখন জাতিসংঘ ও বৃহত্ শক্তির দেশের কাছে ধরনা দিয়ে এ দেশের মানুষের জন্য কিছু করা যায় কি না, চেষ্টা করে দেখতে পারেন।
আফরোজা
চাকরিজীবী, মাদারীপুর
বিদ্যুৎ আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে খুবই দরকারি। কিন্তু বিভিন্ন কারণে এর সংকট বেড়েই চলেছে। আমরা নিজেরা যদি সচেতন হই, তবে এ সংকট কাটিয়ে ওঠা যেতে পারে। এ ছাড়া সরকার এ ব্যাপারে যে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে, তা অবশ্যই বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী যেহেতু সময় চেয়েছেন, অবশ্যই আমাদের সময় দেওয়া উচিত।
ফারুখ আহমেদ
সাংবাদিক, রাজশাহী
প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুৎ-সংকট উত্তরণে সময় চেয়েছেন। তাঁকে সময় দেওয়া উচিত। কারণ মানুষ বাড়লেও উৎপাদন বাড়েনি। এ বিষয়ে সরকারকে সবার সহযোগিতা করতে হবে।
মো. ওমর ফারুক
চাকরিজীবী, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা
বহু নাগরিক-সমস্যার কারণে আমরা অতিষ্ঠ। এগুলো মূলত বিদ্যুৎ-সংকটের কারণে হচ্ছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের কোনো বিকল্প নেই। এ অবস্থায় কোনো নতুন এলাকায় সংযোগ দেওয়া যাবে না। বিদ্যুতের অপচয় রোধ করতে হবে।
আহি আহমেদ
ব্যবসায়ী, ধানমন্ডি, ঢাকা
প্রধানমন্ত্রী সময় চেয়েছেন, এটা কত দিন, তা জনগণের কাছে পরিষ্কার করতে হবে। অন্তত ব্যবসায়ীদের কথা চিন্তা করে দিনের বেলা লোডশেডিং কমাতে হবে।
মো. বেলাল হোসেন, শিক্ষার্থী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী
বিদ্যুৎ-সংকট মোকাবিলায় কারও দোষ না দিয়ে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি। জনগণ তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করুক, কিন্তু জাতীয় সম্পদের যেন ক্ষতি না হয়।
লিটন চৌহান
ব্যবসায়ী, নারায়ণগঞ্জ
এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার প্রশ্ন, কত দিনে, কত সময়ে, কত অর্থ হলে এর সমাধান সম্ভব? দয়া করে সঠিক উত্তর দেবেন।
মো. মতিউর রহমান
শিক্ষার্থী, ঝালকাঠি
প্রধানমন্ত্রীর এই মত আমি কোনোভাবেই গ্রহণ করতে পারছি না। বর্তমানে যে পরিস্থিতি, এ অবস্থায় এ ধরনের ঘোষণা আসলে জনগণের সামনে মুলা ঝুলিয়ে দেওয়া।
কনক বর্মণ, শিক্ষার্থী
নাখালপাড়া, ঢাকা
প্রধানমন্ত্রী সময় চেয়েছেন, এটা সবাই দিতে প্রস্তুত। তবে বিদ্যুৎ-সংকট মোকাবিলায় তিনি যে পরিকল্পনা নিয়েছেন, তা জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে এবং প্রতিনিয়ত এর উন্নতি জনগণকে দেখাতে হবে। এটা যেন মনভুলানো রাজনৈতিক কোনো আশ্বাসে পরিণত না হয়।
মামুন, শিক্ষার্থী
বিদ্যাকোট, নবীনগর
প্রধানমন্ত্রী যে সময় চেয়েছেন, আমরা তা দেব। তবে এ বিষয়ে তাড়াতাড়ি পদক্ষেপ নিতে হবে। ভিশন-২১ সফলভাবে বাস্তবায়িত না হলে জনগণ তা মেনে নেবে না।
রেদোয়ান বসুনিয়া, শিক্ষার্থী
সরকারি কলেজ, নীলফামারী
প্রধানমন্ত্রী সময় চেয়েছেন। অতএব তাঁকে সময় দিতে হবে।
ওয়াহিদ মুরাদ
স্বরূপকাঠি, পিরোজপুর
সময় চেয়ে প্রধানমন্ত্রী ভালোই করেছেন। কারণ সমস্যার দ্রুত সমাধান করা সত্যি কঠিন। তবে বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি ও যানজটের মতো জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে শুধু প্রধানমন্ত্রী নন, সরকারের সব পর্যায়ের দায়িত্বশীল কর্তাব্যক্তিকে সচেতন হতে হবে। অপরদিকে অবশ্যই সাধারণ মানুষ যাতে কম কষ্ট ভোগ করে, সে জন্য দ্রুত উপরিউক্ত সমস্যাগুলোর সমাধান করতে হবে।
এ জন্য সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করার অনুরোধ রাখছি।
আজিজুল হক
চাকুরে, মিরপুর, ঢাকা
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধানের জন্য সময় চাওয়ায় জনগণ আশাবাদী যে তারা হয়তো বা এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে যাচ্ছে। কিন্তু এই আশা যেন ১০ টাকার প্রতি কেজি চাল খাওয়ার মতো না হয়। আমি মনে করি, সাধারণ জনগণ অল্পতেই সন্তুষ্ট। দ্রব্যমূল্য, পানি, বিদ্যুৎ ও নিরাপত্তা—এসব বিষয় জনগণকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। এই সরকারের অন্তত উচিত এসব বিষয়ে নজর দেওয়া, যেহেতু এই সরকারকে জনগণ নজীরবিহীনভাবে নির্বাচিত করেছে।
মো. মনিরুজ্জামান
কবি, কাজীপুর, সিরাজগঞ্জ
বিদ্যুতের সংকটসংক্রান্ত সরকারি ভাষ্য মেনে নেওয়া যায়। তবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ, যেই বঙ্গবন্ধুর কথা আপনারা বলেন, সেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে সার্থক করুন। যে লক্ষ্য সামনে রেখে বঙ্গবন্ধুর জীবদ্দশায় পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড গঠন করা হয়েছিল, তার পূর্ণ বাস্তবায়ন করুন।
আনিসুল কবীর
নিউয়র্ক-প্রবাসী, ব্যবসায়ী
এ বিষয়ে আমরা অবশ্যই সময় দিতে চাই। তবে রাতে নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ পাওয়ার জন্য সপ্তাহে তিন দিন শপিং মল বন্ধ এবং সব ধরনের নিয়ন সাইন এখন থেকে বন্ধ রাখা যেতে পারে।
মো. আবদুস সামাদ, শিক্ষার্থী, মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, টাঙ্গাইল
আমাদের দেশে বিদ্যুতের বড় অংশই অপচয় হয়। আর যেহেতু সরকার রাতারাতি বিদ্যুৎ সমস্যার সামাধান করতে পারবে না, তাই আমাদের উচিত বিদ্যুতের সুষ্ঠু ব্যবহার করা। সরকারের উচিত দেশ-বিদেশের বিত্তবানদের সহয়তায় বেশি বেশি বিদ্যুৎ প্লান্ট স্থাপন করা এবং গ্রামগুলোকে সৌর ও বায়োগ্যাস প্লান্টের আওতাভুক্ত করা।
রাজীব কামাল, শিক্ষার্থী
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা
সর্বপ্রথম আমাদের প্রত্যেককেই ব্যক্তিগতভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে। সব ধরনের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হবে। আমাদের সৌরশক্তির দিকে অধিক মনোযোগী হতে হবে। প্রধানমন্ত্রী যে বিদেশিদের বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন, এটি খুব ভালো একটি উদ্যোগ। সরকারকে যত দ্রুত সম্ভব পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করতে হবে।
রাখী, শিক্ষার্থী
রাজশাহী
বিদ্যুতের যে সংকট চলছে, এটা দিনে হলেও রাতে যেন বন্ধ না থাকে। সারা দিনের ক্লান্তি শেষে মানুষ যেন শান্তিতে ঘুমাতে যেতে পারে।
রফিকুল ইসলাম ভূইয়া
ব্যবসায়ী, ফেনী
বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফাঁসি কার্যকর ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মতো এত বড় সমস্যা যদি এই সরকার এত সহজেই সমাধান করতে পারে, তবে জাতীয় জীবনে অতি গুরুত্বপূর্ণ বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান করতে এত সময় কেন নিচ্ছে?
আবুল খায়ের
গবেষক, মিরপুর, ঢাকা
প্রধানমন্ত্রী সময় চেয়েছেন এটা ঠিক আছে। এ ক্ষেত্রে তাঁর পরিকল্পনা গণমাধ্যমের মাধ্যমে জনগণকে জানাতে হবে এবং পাশাপাশি সুষ্ঠু জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
মো. আকরামুল হক, শিক্ষার্থী, কবি কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়, ত্রিশাল
প্রধানমন্ত্রী প্রথম দফা সময় চেয়েছেন। সেটা আমরা দিতে রাজি। দ্বিতীয়, তৃতীয় দফা সময় দেওয়া যাবে। কিন্তু চার বছর পর যদি তিনি বলেন, আরও পাঁচ বছর সময় লাগবে, সে ক্ষেত্রে চারদলীয় সরকারের মতো অবস্থা হবে।

No comments

Powered by Blogger.