লিবিয়া-বিদ্রোহীদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্রসাহায্য by রবার্ট ফিস্ক
সৌদি আরবের বাদশাহকে অনুরোধ করেছেন ওবামা, তিনি যেন বিমান থেকে লিবিয়ার বেনগাজিতে বিদ্রোহীদের অস্ত্র সরবরাহ করেন। লিবিয়ায় এখন গাদ্দাফির বিরুদ্ধে দীর্ঘমেয়াদি সংগ্রাম চলছে। এ অবস্থায় সরাসরি মার্কিন বাহিনী না পাঠিয়ে এভাবেই উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।
কিন্তু মুশকিল হলো, সৌদি রাজতন্ত্র এরই মধ্যে দেশটির ১০ শতাংশ শিয়া সম্প্রদায়ের দিক থেকে গত শুক্রবার ‘ক্রোধ দিবসে’র মুখে পড়েছে। সে দেশে এখন সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ। এ অবস্থায় বাদশাহ আবদুল্লাহর পক্ষে মার্কিন অনুরোধ রাখা সম্ভব নয় হয়তো, যদিও গাদ্দাফির বিরুদ্ধে তাঁর ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা প্রবল। গত বছরই গাদ্দাফি তাঁকে হত্যার চেষ্টা করেছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের এমন অনুরোধ নতুন কিছু নয়। এটা বরং মার্কিন-সৌদি সামরিক সহযোগিতারই অংশ। জেদ্দায় অবস্থানকারী রাজপরিবার রিগ্যান প্রশাসনের কন্ট্রা কেলেঙ্কারির প্রধান সহযোগী। তারা আশির দশকে আফগানিস্তানে সোভিয়েত সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গেরিলাদের অস্ত্র সরবরাহ করেছিল। মার্কিন-সৌদি চক্রই তালেবানদের অস্ত্র ও অর্থ দিয়ে তৈরি করেছিল।
এ মুহূর্তে সৌদি আরবই যুক্তরাষ্ট্রের পা রাখার প্রধান জায়গা। তারাই কেবল পারবে লিবিয়ার গেরিলাদের অস্ত্রসজ্জিত করে দিতে। সৌদি সহযোগিতার বলেই যুক্তরাষ্ট্রে লিবিয়ায় তাদের সামরিক হস্তক্ষেপকে আড়াল করতে পারবে, যদিও অস্ত্রগুলো মার্কিন এবং তার মূল্য পরিশোধ করবে সৌদি আরব।
সৌদিদের বলা হয়েছে গাদ্দাফির বিরোধীদের এ মুহূর্তে ট্যাংক-বিধ্বংসী রকেট এবং বিমান-বিধ্বংসী মিসাইল প্রয়োজন। এসব ছাড়া তারা গাদ্দাফি বাহিনীর আক্রমণ সামলাতে পারছে না। এই অস্ত্র সরবরাহ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই সম্ভব, কিন্তু সেগুলোকে খালাস করতে হবে লিবিয়ার বিমান ঘাঁটিগুলোতে অথবা বেনগাজির বিমানবন্দরে। নতুন অস্ত্রবলে বলীয়ান বিরোধীরা যদি এরপর পশ্চিম লিবিয়ায় গাদ্দাফির শক্ত ঘাঁটিগুলোতে আক্রমণ করে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর ওপর থেকে লিবিয়ার আকাশকে ‘বিমান-উড্ডয়ন নিষিদ্ধ এলাকা’ ঘোষণার রাজনৈতিক চাপ কমে আসবে।
মার্কিন সামরিক কৌশলীরা এরই মধ্যে পরিষ্কার বলে দিয়েছেন, বিমানমুক্ত এলাকা ঘোষণা করতে হলে যুক্তরাষ্ট্রকে লিবিয়ার বিমান-বিধ্বংসী মিসাইল ঘাঁটিগুলোকে অকার্যকর করে দিতে হবে। আর তাহলে ওয়াশিংটন সরাসরি আবির্ভূত হবে গাদ্দাফিবিরোধী যোদ্ধাদের দলে। কিছুদিন ধরে মার্কিন নজরদারি বিমানগুলো লিবিয়ার আশপাশ দিয়ে উড়ে বেড়াচ্ছে এবং মাল্টায় অবস্থিত বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছে। তাদের কাছে তারা লিবীয় বিমান উড্ডয়নের দৈনন্দিন তালিকার বিশদ বিবরণ চেয়েছে। এই চাওয়ার তালিকায় রয়েছে গত ৪৮ ঘণ্টায় গাদ্দাফির ব্যক্তিগত জেট বিমানের জর্ডানে গমন ও ফিরে আসা সম্পর্কিত বিবরণ। সরকারিভাবে অবশ্য যুক্তরাষ্ট্র এ রকম কোনো টহল কার্যক্রমের অস্তিত্ব স্বীকার করছে না। তারা বলছে, নয়-এগারোর পর মধ্যপ্রাচ্যে সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের অংশ হিসেবেই এ ধরনের নজরদারি চালিয়ে থাকে।
লিবিয়ার বিমান চলাচল সম্পর্কে সব তথ্য ন্যাটোর বর্তমান বিধিমালা অনুযায়ী এরই মধ্যে ন্যাটোভুক্ত সব দেশের কাছে পাঠানো হয়েছে। এর মানে হলো, পশ্চিমা বাগিবধি অনুযায়ী গাদ্দাফি হলেন এক চরম সন্ত্রাসী। যা-ই হোক, বাস্তবে সামরিক অভিযান চালানো হলে এখন ন্যাটো সহজেই সেখানকার আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুগুলো চিহ্নিত করতে পারবে। পরশু রাতে আল-জাজিরা মাল্টার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের কাছে মার্কিন বিমান থেকে চাওয়া লিবীয় বিমান চলাচলের তথ্য, বিশেষত গাদ্দাফির জেট বিমানের তথ্য চাওয়ার রেকর্ড প্রচার করেছে।
গত শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের এ রকম একটি টহল বিমান (যার নম্বর এলএক্স-এন৯০৪৪২) থেকে মাল্টার কন্ট্রোল টাওয়ারের কাছে একটি লিবীয় ড্যাসল্ট-ফ্যালকন ৯০০ জেট বিমান, যা জর্ডানের রাজধানী আম্মান থেকে গাদ্দাফির নিজস্ব ভিআইপি বিমানবন্দর মিতিগায় অবতরণ করেছে, তার সম্পর্কে তথ্য চাওয়া হয়। ন্যাটোর বিমান থেকে প্রশ্ন করা হয়: ‘আপনাদের কাছে কি আমাদের থেকে ৮৫ মাইল দূরে উড্ডয়নরত স্কোয়াক ২০১৭ বিমান সম্পর্কে কোনো তথ্য আছে?’
মাল্টার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল থেকে উত্তর আসে: ‘মনে হচ্ছে, এটি একটি ফ্যালকন ৯০০ জেট বিমান। এটির উড্ডয়ন পরিকল্পনা থেকে মনে হচ্ছে, এটি মিতিগায় অবতরণ করতে যাচ্ছে।’
কিন্তু সৌদি আরব এ মুহূর্তে স্বদেশেরই শিয়া সম্প্রদায়ের সমন্বিত প্রতিরোধ দিবসের মুখে পড়েছে। সৌদি শিয়ারা এরই মধ্যে পার্শ্ববর্তী দ্বীপরাষ্ট্র বাহরাইনের শিয়া উত্থান দ্বারা উৎসাহিত। শুক্রবার তারা সৌদি আরবের শাসক আল-সউদ রাজপরিবারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ দিবস হিসেবে পালন করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে।
গত সপ্তাহে কাতিফ প্রদেশে সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা পুলিশ পাঠানোর পর সৌদি আরব সারা দেশে সব ধরনের গণজমায়েত নিষিদ্ধ করে দিয়েছে। শিয়া সংগঠকেরা জানিয়েছেন, ২০ হাজার মানুষের এই প্রতিবাদ মিছিলের সম্মুখভাগে তাঁরা নারীদের রাখবেন, যাতে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিবর্ষণ ঠেকানো যায়।
সৌদি সরকার যদি যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধ মেনে লিবিয়ার বিদ্রোহীদের বন্দুক ও মিসাইল পাঠায়, তাহলে ওবামার পক্ষে সৌদি আরবকে সমালোচনা করা অসম্ভব হয়ে পড়বে। এমনকি সৌদি আরবের উত্তর-পূর্ব প্রদেশের শিয়াদের মিছিলে সহিংসতা ঘটলেও যুক্তরাষ্ট্রকে নীরব থাকতে হবে।
এভাবেই আরব মহাজাগরণ, উত্তর আফ্রিকায় গণতন্ত্রের দাবি, শিয়া বিদ্রোহ এবং গাদ্দাফির বিরুদ্ধে সশস্ত্র লড়াই এবং মার্কিন সামরিক ঝোঁক সব পরস্পরের সঙ্গে জট পাকিয়ে এক কঠিন পরিস্থিতির দিকে ধাবিত হচ্ছে।
ইংরেজি থেকে অনূদিত
রবার্ট ফিস্ক: ব্রিটিশ সাংবাদিক, মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞ।
যুক্তরাষ্ট্রের এমন অনুরোধ নতুন কিছু নয়। এটা বরং মার্কিন-সৌদি সামরিক সহযোগিতারই অংশ। জেদ্দায় অবস্থানকারী রাজপরিবার রিগ্যান প্রশাসনের কন্ট্রা কেলেঙ্কারির প্রধান সহযোগী। তারা আশির দশকে আফগানিস্তানে সোভিয়েত সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গেরিলাদের অস্ত্র সরবরাহ করেছিল। মার্কিন-সৌদি চক্রই তালেবানদের অস্ত্র ও অর্থ দিয়ে তৈরি করেছিল।
এ মুহূর্তে সৌদি আরবই যুক্তরাষ্ট্রের পা রাখার প্রধান জায়গা। তারাই কেবল পারবে লিবিয়ার গেরিলাদের অস্ত্রসজ্জিত করে দিতে। সৌদি সহযোগিতার বলেই যুক্তরাষ্ট্রে লিবিয়ায় তাদের সামরিক হস্তক্ষেপকে আড়াল করতে পারবে, যদিও অস্ত্রগুলো মার্কিন এবং তার মূল্য পরিশোধ করবে সৌদি আরব।
সৌদিদের বলা হয়েছে গাদ্দাফির বিরোধীদের এ মুহূর্তে ট্যাংক-বিধ্বংসী রকেট এবং বিমান-বিধ্বংসী মিসাইল প্রয়োজন। এসব ছাড়া তারা গাদ্দাফি বাহিনীর আক্রমণ সামলাতে পারছে না। এই অস্ত্র সরবরাহ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই সম্ভব, কিন্তু সেগুলোকে খালাস করতে হবে লিবিয়ার বিমান ঘাঁটিগুলোতে অথবা বেনগাজির বিমানবন্দরে। নতুন অস্ত্রবলে বলীয়ান বিরোধীরা যদি এরপর পশ্চিম লিবিয়ায় গাদ্দাফির শক্ত ঘাঁটিগুলোতে আক্রমণ করে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর ওপর থেকে লিবিয়ার আকাশকে ‘বিমান-উড্ডয়ন নিষিদ্ধ এলাকা’ ঘোষণার রাজনৈতিক চাপ কমে আসবে।
মার্কিন সামরিক কৌশলীরা এরই মধ্যে পরিষ্কার বলে দিয়েছেন, বিমানমুক্ত এলাকা ঘোষণা করতে হলে যুক্তরাষ্ট্রকে লিবিয়ার বিমান-বিধ্বংসী মিসাইল ঘাঁটিগুলোকে অকার্যকর করে দিতে হবে। আর তাহলে ওয়াশিংটন সরাসরি আবির্ভূত হবে গাদ্দাফিবিরোধী যোদ্ধাদের দলে। কিছুদিন ধরে মার্কিন নজরদারি বিমানগুলো লিবিয়ার আশপাশ দিয়ে উড়ে বেড়াচ্ছে এবং মাল্টায় অবস্থিত বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছে। তাদের কাছে তারা লিবীয় বিমান উড্ডয়নের দৈনন্দিন তালিকার বিশদ বিবরণ চেয়েছে। এই চাওয়ার তালিকায় রয়েছে গত ৪৮ ঘণ্টায় গাদ্দাফির ব্যক্তিগত জেট বিমানের জর্ডানে গমন ও ফিরে আসা সম্পর্কিত বিবরণ। সরকারিভাবে অবশ্য যুক্তরাষ্ট্র এ রকম কোনো টহল কার্যক্রমের অস্তিত্ব স্বীকার করছে না। তারা বলছে, নয়-এগারোর পর মধ্যপ্রাচ্যে সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের অংশ হিসেবেই এ ধরনের নজরদারি চালিয়ে থাকে।
লিবিয়ার বিমান চলাচল সম্পর্কে সব তথ্য ন্যাটোর বর্তমান বিধিমালা অনুযায়ী এরই মধ্যে ন্যাটোভুক্ত সব দেশের কাছে পাঠানো হয়েছে। এর মানে হলো, পশ্চিমা বাগিবধি অনুযায়ী গাদ্দাফি হলেন এক চরম সন্ত্রাসী। যা-ই হোক, বাস্তবে সামরিক অভিযান চালানো হলে এখন ন্যাটো সহজেই সেখানকার আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুগুলো চিহ্নিত করতে পারবে। পরশু রাতে আল-জাজিরা মাল্টার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের কাছে মার্কিন বিমান থেকে চাওয়া লিবীয় বিমান চলাচলের তথ্য, বিশেষত গাদ্দাফির জেট বিমানের তথ্য চাওয়ার রেকর্ড প্রচার করেছে।
গত শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের এ রকম একটি টহল বিমান (যার নম্বর এলএক্স-এন৯০৪৪২) থেকে মাল্টার কন্ট্রোল টাওয়ারের কাছে একটি লিবীয় ড্যাসল্ট-ফ্যালকন ৯০০ জেট বিমান, যা জর্ডানের রাজধানী আম্মান থেকে গাদ্দাফির নিজস্ব ভিআইপি বিমানবন্দর মিতিগায় অবতরণ করেছে, তার সম্পর্কে তথ্য চাওয়া হয়। ন্যাটোর বিমান থেকে প্রশ্ন করা হয়: ‘আপনাদের কাছে কি আমাদের থেকে ৮৫ মাইল দূরে উড্ডয়নরত স্কোয়াক ২০১৭ বিমান সম্পর্কে কোনো তথ্য আছে?’
মাল্টার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল থেকে উত্তর আসে: ‘মনে হচ্ছে, এটি একটি ফ্যালকন ৯০০ জেট বিমান। এটির উড্ডয়ন পরিকল্পনা থেকে মনে হচ্ছে, এটি মিতিগায় অবতরণ করতে যাচ্ছে।’
কিন্তু সৌদি আরব এ মুহূর্তে স্বদেশেরই শিয়া সম্প্রদায়ের সমন্বিত প্রতিরোধ দিবসের মুখে পড়েছে। সৌদি শিয়ারা এরই মধ্যে পার্শ্ববর্তী দ্বীপরাষ্ট্র বাহরাইনের শিয়া উত্থান দ্বারা উৎসাহিত। শুক্রবার তারা সৌদি আরবের শাসক আল-সউদ রাজপরিবারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ দিবস হিসেবে পালন করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে।
গত সপ্তাহে কাতিফ প্রদেশে সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা পুলিশ পাঠানোর পর সৌদি আরব সারা দেশে সব ধরনের গণজমায়েত নিষিদ্ধ করে দিয়েছে। শিয়া সংগঠকেরা জানিয়েছেন, ২০ হাজার মানুষের এই প্রতিবাদ মিছিলের সম্মুখভাগে তাঁরা নারীদের রাখবেন, যাতে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিবর্ষণ ঠেকানো যায়।
সৌদি সরকার যদি যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধ মেনে লিবিয়ার বিদ্রোহীদের বন্দুক ও মিসাইল পাঠায়, তাহলে ওবামার পক্ষে সৌদি আরবকে সমালোচনা করা অসম্ভব হয়ে পড়বে। এমনকি সৌদি আরবের উত্তর-পূর্ব প্রদেশের শিয়াদের মিছিলে সহিংসতা ঘটলেও যুক্তরাষ্ট্রকে নীরব থাকতে হবে।
এভাবেই আরব মহাজাগরণ, উত্তর আফ্রিকায় গণতন্ত্রের দাবি, শিয়া বিদ্রোহ এবং গাদ্দাফির বিরুদ্ধে সশস্ত্র লড়াই এবং মার্কিন সামরিক ঝোঁক সব পরস্পরের সঙ্গে জট পাকিয়ে এক কঠিন পরিস্থিতির দিকে ধাবিত হচ্ছে।
ইংরেজি থেকে অনূদিত
রবার্ট ফিস্ক: ব্রিটিশ সাংবাদিক, মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞ।
No comments