প্রতিকূলতা পেরিয়ে আলোর পথে by সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেন
৮ জুলাই ছিল পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাদশ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ২০০০ সালের এই দিনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরুর পর থেকেই নানা রকম প্রতিকূলতা ও অস্থিরতা এবং ৬ বছরে ৪ জন ভাইস চ্যান্সেলর
পরিবর্তন ও নিয়োগের কারণে এর পরিকল্পিত ও কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন মারাত্মকভাবে হয়েছে ব্যাহত। এমনই এক ক্রান্তিলগ্নে আমি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২১ ডিসেম্বর ২০০৮ এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে যোগদান করি। যোগদানের পর থেকেই নিরলসভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী, সাংবাদিক, অভিভাবক এবং এলাকার সুশীল সমাজের সহযোগিতায় সবাই মিলে বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি আদর্শ, প্রযুক্তিসমৃদ্ধ, উন্নত ও মানসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এ পর্যন্ত আমি ৬টি একাডেমিক কাউন্সিল, ১৭টি অর্থ কমিটি, ১১টি পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস কমিটি এবং ১১টি রিজেন্ট বোর্ডে সভা করেছি। এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য একাডেমিক, আর্থিক ও প্রশাসনিক নীতিমালা হালনাগাদ ও যুগোপযোগী করা হয়েছে।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবন লালিত স্বপ্ন দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে 'সোনার বাংলা' আর বর্তমান সরকারের ভিশন ২০২১ : 'ডিজিটাল বাংলাদেশ' গড়ার লক্ষ্যে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের লক্ষ্যেও বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের স্নাতক পর্যায়ে একাডেমিক বিধান সংশোধন ও সংযোজন করে আধুনিকীকরণ, পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিএসসি অনার্স চালু, মাৎস্যবিজ্ঞান বিভাগকে অনুষদে রূপান্তর বিএএম ও সিএসই অনুষদে এমএস কোর্স চালু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ, ১০ বছর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠান উদযাপন ও এর মাধ্যমে ১০টি সেশনের ৮০০ জন ছাত্রের সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়েছে।
গবেষণাকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে ২০০৮-০৯ ও ২০১০-১১ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে গবেষণা মঞ্জুরি বাবদ প্রাপ্ত ৪ লাখ ও ১০ লাখ টাকা শিক্ষকদের অনুকূলে ছাড়করণ, বাংলাদেশের একমাত্র জাত 'বল্গ্যাক বেঙ্গল ছাগল' উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ, শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম উন্নয়নে ইতিমধ্যে নরওয়ে, জার্মানি ও ডেনমার্কের ৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে পবিপ্রবির দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় বাংলাদেশ মঞ্জুরি কমিশনের উচ্চশিক্ষা মানোন্নয়ন প্রকল্পের (ঐঊছঊচ) মাধ্যমে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ৩টি প্রকল্পে প্রায় ৯ কোটি টাকা রিসার্চ গ্রান্ট প্রাপ্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে আরও এক ধাপ এগিয়ে দিয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং সিট টেকনোলজি সংক্রান্ত ৬ মাসব্যাপী ডিপ্লোমা কোর্স চালুকরণ, স্থানীয় ১০০ কৃষক নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সহযোগিতার নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা এবং কৃষকদের সমস্যা সমাধানের জন্য 'ঙহব ঝঃড়ঢ় ঝবৎারপব' চালু ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং এদের সমন্বয়ে অচিরেই একটি আধুনিক ডিজিটাল মডেল ভিলেজ স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রশাসন, ব্যবস্থাপনা ও আর্থিক বিষয়ে ইন-সার্ভিস প্রশিক্ষণ চালু ও বাস্তবায়ন এ এলাকার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের বাস্তব পদক্ষেপ। বিনা সুদে ৫০ লাখ টাকা ব্যাংক ও ডরমিটরি ভবনের নির্মাণকাজ, পুরনো অধ্যক্ষ ভবন বর্ধিত করে ভিআইপি গেস্ট হাউসে রূপান্তর, ছাত্র ও ছাত্রী হলের বর্ধিতকরণ কাজ শুরু করা, প্রশাসনিক ভবনের বর্ধিতকরণ, বিএএম ও সিএসই ভবনের প্রথম ব্লক নির্মাণকাজ অনুমোদন, ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে নীলকমল লেকের ওপর লোকাল প্রযুক্তিতে সেতু তৈরি করা হয়েছে। পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা ও শিক্ষা কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা, ছাত্র শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা ও পরিবেশগত সমস্যা সমাধানে ডিন কাউন্সিল, প্রভোস্ট কাউন্সিল ও কমিউনিটি কাউন্সিল গঠন এবং প্রক্টোরিয়াল শাখাকে জোরদার করা হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১০-১১ সেশনে ভর্তি পরীক্ষার সব কর্মকাণ্ড টেলিটকের সহযোগিতায় মোবাইলের মাধ্যমে সম্পন্ন করা, পবিপ্রবির সব ক্লাসরুমে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর, ল্যাপটপ এবং ডিজিটাল সাউন্ড সিস্টেমে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা, লাইব্রেরির সব কার্যক্রম অটোমেশন, সব ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক, কর্মকর্তার জন্য উচ্চগতিসম্পন্ন (৬ সনঢ়ং নধহফরিঃয) লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক এবং ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টি, মেডিকেল সেন্টারে ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক ল্যাব স্থাপন, বিনামূল্যে সিএসই অনুষদের শিক্ষক দ্বারা দুমকী উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য কম্পিউটার ও ইন্টারনেট প্রশিক্ষণ, বিভিন্ন হল ও লাইব্রেরিসহ ক্যাম্পাসে তারবিহীন ওয়াইফাই প্রযুক্তির ইন্টারনেট চালু করা হয়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কর্মকাণ্ডে যেমন গতিশীলতা সৃষ্টি হয়েছে, তেমনি শিক্ষা প্রদানের গুণগত মান নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রফেসর ড. সৈয়দ সাখাওয়াত
হোসেন : ভাইস চ্যান্সেলর, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবন লালিত স্বপ্ন দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে 'সোনার বাংলা' আর বর্তমান সরকারের ভিশন ২০২১ : 'ডিজিটাল বাংলাদেশ' গড়ার লক্ষ্যে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের লক্ষ্যেও বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের স্নাতক পর্যায়ে একাডেমিক বিধান সংশোধন ও সংযোজন করে আধুনিকীকরণ, পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিএসসি অনার্স চালু, মাৎস্যবিজ্ঞান বিভাগকে অনুষদে রূপান্তর বিএএম ও সিএসই অনুষদে এমএস কোর্স চালু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ, ১০ বছর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠান উদযাপন ও এর মাধ্যমে ১০টি সেশনের ৮০০ জন ছাত্রের সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়েছে।
গবেষণাকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে ২০০৮-০৯ ও ২০১০-১১ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে গবেষণা মঞ্জুরি বাবদ প্রাপ্ত ৪ লাখ ও ১০ লাখ টাকা শিক্ষকদের অনুকূলে ছাড়করণ, বাংলাদেশের একমাত্র জাত 'বল্গ্যাক বেঙ্গল ছাগল' উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ, শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম উন্নয়নে ইতিমধ্যে নরওয়ে, জার্মানি ও ডেনমার্কের ৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে পবিপ্রবির দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় বাংলাদেশ মঞ্জুরি কমিশনের উচ্চশিক্ষা মানোন্নয়ন প্রকল্পের (ঐঊছঊচ) মাধ্যমে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ৩টি প্রকল্পে প্রায় ৯ কোটি টাকা রিসার্চ গ্রান্ট প্রাপ্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে আরও এক ধাপ এগিয়ে দিয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং সিট টেকনোলজি সংক্রান্ত ৬ মাসব্যাপী ডিপ্লোমা কোর্স চালুকরণ, স্থানীয় ১০০ কৃষক নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সহযোগিতার নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা এবং কৃষকদের সমস্যা সমাধানের জন্য 'ঙহব ঝঃড়ঢ় ঝবৎারপব' চালু ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং এদের সমন্বয়ে অচিরেই একটি আধুনিক ডিজিটাল মডেল ভিলেজ স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রশাসন, ব্যবস্থাপনা ও আর্থিক বিষয়ে ইন-সার্ভিস প্রশিক্ষণ চালু ও বাস্তবায়ন এ এলাকার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের বাস্তব পদক্ষেপ। বিনা সুদে ৫০ লাখ টাকা ব্যাংক ও ডরমিটরি ভবনের নির্মাণকাজ, পুরনো অধ্যক্ষ ভবন বর্ধিত করে ভিআইপি গেস্ট হাউসে রূপান্তর, ছাত্র ও ছাত্রী হলের বর্ধিতকরণ কাজ শুরু করা, প্রশাসনিক ভবনের বর্ধিতকরণ, বিএএম ও সিএসই ভবনের প্রথম ব্লক নির্মাণকাজ অনুমোদন, ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে নীলকমল লেকের ওপর লোকাল প্রযুক্তিতে সেতু তৈরি করা হয়েছে। পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা ও শিক্ষা কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা, ছাত্র শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা ও পরিবেশগত সমস্যা সমাধানে ডিন কাউন্সিল, প্রভোস্ট কাউন্সিল ও কমিউনিটি কাউন্সিল গঠন এবং প্রক্টোরিয়াল শাখাকে জোরদার করা হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১০-১১ সেশনে ভর্তি পরীক্ষার সব কর্মকাণ্ড টেলিটকের সহযোগিতায় মোবাইলের মাধ্যমে সম্পন্ন করা, পবিপ্রবির সব ক্লাসরুমে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর, ল্যাপটপ এবং ডিজিটাল সাউন্ড সিস্টেমে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা, লাইব্রেরির সব কার্যক্রম অটোমেশন, সব ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক, কর্মকর্তার জন্য উচ্চগতিসম্পন্ন (৬ সনঢ়ং নধহফরিঃয) লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক এবং ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টি, মেডিকেল সেন্টারে ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক ল্যাব স্থাপন, বিনামূল্যে সিএসই অনুষদের শিক্ষক দ্বারা দুমকী উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য কম্পিউটার ও ইন্টারনেট প্রশিক্ষণ, বিভিন্ন হল ও লাইব্রেরিসহ ক্যাম্পাসে তারবিহীন ওয়াইফাই প্রযুক্তির ইন্টারনেট চালু করা হয়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কর্মকাণ্ডে যেমন গতিশীলতা সৃষ্টি হয়েছে, তেমনি শিক্ষা প্রদানের গুণগত মান নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রফেসর ড. সৈয়দ সাখাওয়াত
হোসেন : ভাইস চ্যান্সেলর, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
No comments