বিএনপির ১৬ দলীয় জোটের ঘোষণা ১৮ এপ্রিল by মোশাররফ বাবলু

চারদলীয় জোট বিলুপ্ত করে ১৬ দলীয় জোট করার পথে আরো পথ এগোলো প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। জোট সম্প্রসারণ করার ব্যাপারে ১৬ দলীয় নেতাদের কাছে বিএনপির পক্ষ থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে ১৮ এপ্রিল বুধবার বিকেলে কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।


বিএনপি নেতারা বলছেন, দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এই অনুষ্ঠানেই জোট সম্প্রসারণের আনুষ্ঠানিক ঘোষণাপত্র পাঠ করবেন বলে তাঁরা আশা করছেন। অনুষ্ঠানে চারদলীয় জোটের শরিক ও সমমনা দলগুলোর শীর্ষ নেতাসহ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থাকবেন।
জোটের নামকরণ নিয়েও চলছে তৎপরতা। শরিক ও সমমনা দলের অনেকে চারদলীয় ঐক্যজোট বিলুপ্ত করে 'ষোলদলীয় জোট', 'জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট' কিংবা 'জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক ঐক্যজোট' নাম দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন।
এদিকে বিকল্প ধারার প্রেসিডেন্ট বদরুদ্দোজা চৌধুরী, গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন, জেএসডির আ স ম আবদুর রব ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে কয়েকটি রাজনৈতিক দল একটি পৃথক জোট গঠনের চিন্তাভাবনা করছে। জামায়াতে ইসলামী ১৬ দলীয় জোটের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত থাকায় বিকল্প ধারা, গণফোরাম, জেএসডি ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের শীর্ষ নেতারা সরাসরি জোটে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছেন না। তবে তাঁরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি পুনর্বহালের দাবিতে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ হবেন। এ নিয়ে বিএনপির সঙ্গে এই সমমনা দলের নেতাদের একাধিকবার কথাও হয়েছে বলে বিএনপির একটি সূত্রে জানা গেছে।
জোট সম্প্রসারণের বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, শিগগিরই জোট সম্প্রসারণের নাম ঘোষণা হবে, এটা নিশ্চিত। জোটের নাম পরিবর্তনের বিষয়ে তিনি বলেন, অবশ্যই নাম পরিবর্তন হবে। তবে কী নামে জোট আত্মপ্রকাশ করবে তা নির্ভর করছে কতগুলো দল জোটে অন্তর্ভুক্ত হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কালের কণ্ঠকে জানান, সম্ভাব্য ১৮ এপ্রিল চারদলীয় জোট সম্প্রসারণের ঘোষণা করা হতে পারে। গত ১২ মার্চ ঢাকার মহাসমাবেশ থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন চারদলীয় ঐক্যজোট সম্প্রসারণ করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
অন্যদিকে চারদলীয় জোট সম্প্রসারণ করা হবে- এ নিয়ে খালেদা জিয়ার সঙ্গে শরিক ও সমমনা দলের শীর্ষ নেতাদের অনেকবার বৈঠক হয়েছে। গত ১২ মার্চ ঢাকার মহাসমাবেশেও জোট সম্প্রসারণ করা হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয। জোটকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে শরিক ও সমমনা দলগুলোর পাশাপাশি বিকল্প ধারা বাংলাদেশ, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, গণফোরাম, জেএসডিসহ (আ স ম আবদুর রব) কয়েকটি দলকে এক কাতারে আনার চেষ্টা করেছিল বিএনপি। বিকল্প ধারার প্রেসিডেন্ট বদরুদ্দোজা চৌধুরী, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে বিএনপি বৈঠকও করে। গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন ও জেএসডির আ স ম আবদুর রবের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কথাও বলেছেন। কিন্তু বিকল্প ধারা বাংলাদেশ, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, গণফোরাম, জেএসডি সরাসরি জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জোটে যেতে আগ্রহী না। তারা পৃথক জোট করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি পুনর্বহালের দাবিতে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ হতে আগ্রহী। এ জন্য বাধ্য হয়েই শরিক ও সমমনা দলগুলোকে নিয়েই জোট সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে বিএনপিকে।
সম্প্রসারিত জোটের চার দলের বাইরে বাকি শরিক দলগুলোর মধ্যে আছে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা), ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) ও বাংলাদেশ ন্যাপ, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি), ন্যাপ-ভাসানী, লেবার পার্টি, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টি ও মুসলিম লীগ (কামরুজ্জামান)।

No comments

Powered by Blogger.