জনশক্তি রফতানি-প্রতারণা চলছেই
জনশক্তি রফতানি খাতে কিছুতেই যেন প্রতারণার লাগাম টানা যাচ্ছে না। একাধিক সংবাদপত্রের খবরে প্রকাশ, মালয়েশিয়ায় শিক্ষার্থী ও ভ্রমণ ভিসায় কর্মী পাঠানো হচ্ছে। তাদের বলা হচ্ছে, এখন যেহেতু মালয়েশিয়া তিন লাখ অবৈধ বাংলাদেশিকে বৈধ করছে, তাই নতুন করে যারা সেখানে যাবে তারাও আপনাআপনি শ্রমবাজারে বৈধ হিসেবে
পরিগণিত হবে। তাদের কাজ মিলবে। অন্যান্য সুবিধাও পাওয়া যাবে। কিন্তু বাস্তবে এভাবে বৈধ হওয়ার সুযোগ নেই। মালয়েশিয়া যথেষ্ট উন্নত দেশ। তারা সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করে ডাটাবেস সংরক্ষণ করছে এবং এর ফলে ভুল তথ্য দিয়ে কেউ সেখানে গেলে বিপদে পড়ার সমূহ সম্ভাবনা। এখন নিজেদের প্রয়োজনেই তারা 'অবৈধ হয়ে পড়া' বিদেশিদের কাজ করার সুযোগ দিচ্ছে। একই সঙ্গে এ সুযোগে যেন বিভিন্ন দেশ থেকে নতুন কর্মী হাজির হতে না পারে সে বিষয়ে তারা সচেতন। যারা 'অবৈধ' জীবন থেকে মুক্ত হচ্ছে তাদের ওপরেও থাকবে নজরদারি। কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশ দূতাবাস এসব বিষয় জানে না সেটা বিশ্বাস করা কঠিন। কিন্তু তারা সময়মতো সচেতন হয়নি। আর এ কারণে দালাল ও প্রতারক চক্র কিছু বাংলাদেশিকে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে ভ্রমণ ও শিক্ষার্থী ভিসায় সেখানে পাঠাতে পেরেছে। তবে আশার কথা, শেষ পর্যন্ত প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় তৎপর হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়াগামী বিমান যাত্রীদের কাগজপত্র পরীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে। এ কাজ দক্ষতার সঙ্গে করা চাই। বিষয়টি নিয়ে প্রচার চালানোও জরুরি। একই সঙ্গে যারা এ অপকর্মে যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। যেসব অসাধু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান ভ্রমণ ও শিক্ষার্থী ভিসায় মালয়েশিয়ায় লোক পাঠানোর সঙ্গে যুক্ত তাদের খুঁজে বের করা কঠিন কাজ নয়। শুধু মালয়েশিয়ার ক্ষেত্রে নয়, অন্যান্য দেশের শ্রমবাজারের সঙ্গে যুক্ত অসাধু মহলের তৎপরতা বন্ধেও চাই সার্বক্ষণিক নজরদারি। বিশ্বের শ্রমবাজারগুলোতে এখন তীব্র প্রতিযোগিতা। একবার বাজার হারালে তা পুনরুদ্ধার করা কঠিন কাজ। মালয়েশিয়ার তিক্ত অভিজ্ঞতা নিশ্চয়ই সংশ্লিষ্ট সবার স্মরণে থাকবে।
No comments