উৎসবের সঙ্গে বাণিজ্যের যোগ by রওনক জাহান

আড়ং দেশীয় পণ্য প্রসারে কাজ করছে। এ কারণে পহেলা বৈশাখের আগমনী ঢোলের আওয়াজ শোনা গেলেই ডিজাইনার থেকে উৎপাদন কর্মী ও বিক্রেতা সবাই বিশেষ সচেতন হয়ে যায়। নববর্ষ উপলক্ষে ছোট-বড় সবার জন্য আমরা পোশাক তৈরি করি। এ ছাড়াও রয়েছে গৃহসজ্জার নানা সামগ্রী। আমাদের দেশের বাজার বড় হচ্ছে।


শহর ছাড়িয়ে সুদূর গ্রামেও মিলবে আড়ং কিংবা এ ধরনের বিশেষ হাউসের তৈরি পোশাক। আরও অনেক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। স্বল্প মূল্যের পোশাকের চাহিদাও বিপুল। এ চাহিদার সামান্যই পূরণ করে আড়ং। এ জন্য রয়েছে আরও অনেক প্রতিষ্ঠান, যাদের বিনিয়োগ প্রচুর এবং ক্রেতার সংখ্যাও অনেক।
আড়ংয়ের পোশাকের বৈশিষ্ট্য এখন দেশ-বিদেশে স্বীকৃৃত। আমাদের ক্রেতাদের মধ্যে মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্তের সংখ্যা অপেক্ষাকৃত বেশি। তাদের পছন্দ-রুচিকে বিবেচনায় নেওয়া হয়। ডিজাইন স্টুডিওতে কাজ করেন ৪০ জন কর্মী। বৈশাখ এসে গেছে, সেটা আমরা তাদের কর্মকাণ্ডে টের পাই। তাদের ডিজাইন চলে যায় আমাদের উৎপাদন কর্মকাণ্ডে যুক্ত ৬৫ হাজারের বেশি কর্মীর কাছে। তাদের শ্রম-সৃজনের ফসল চলে যায় শোরুমে, সেখানে ক্রেতার ভিড় উপচে পড়ে। নতুন কী এলো, সেটার প্রতি থাকে বিশেষ আগ্রহ। আর সবকিছুর সঙ্গে রয়েছে বিনিয়োগ, যার পরিমাণ বছর বছর বাড়াতে হচ্ছে।
আড়ংয়ের জন্য যারা পোশাক ও অন্যান্য সামগ্রী তৈরি করে তাদের জন্য বহু বছর প্রধান মৌসুম ছিল দুই ঈদের উৎসব। এখন তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বাঙালির নববর্ষ। বৈশাখের পোশাকে লাল-সাদার কাজ বেশি। আবার একুশে ফেব্রুয়ারির সময় বাজারে আসা পোশাকে থাকে সাদা-কালোর আধিপত্য। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস এবং ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের পোশাকে বেশি থাকে লাল-সবুজ। আমাদের উৎসব ও আনন্দের দিনগুলোতে সবাই চায় নিজেকে সুন্দর পোশাকে সাজাতে। ঘর এবং কাজের স্থানকেও সাজানো হয় বিভিন্ন ধরনের সামগ্রীতে। আড়ংয়ের নকশিকাঁথা ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। পহেলা বৈশাখে এর চাহিদা বাড়ে। বিছানার চাদর-কভারেরও প্রচুর চাহিদা থাকে। এসব সামগ্রীতে বাঙালি সংস্কৃতির ছোঁয়া যেন থাকে, ক্রেতাদের এ চাহিদার প্রতি আমরা মনোযোগী থাকি।
বাংলাদেশের বাইরে বসবাসকারী বাঙালিরাও উৎসবের দিনগুলোতে আড়ংয়ের পোশাক পেতে চায়। আগামী বছর থেকে আড়ং ই-বাণিজ্য চালু করবে। ফলে বিশ্বের সর্বত্র আমাদের পোশাক ছড়িয়ে পড়তে পারবে। এভাবে বাঙালি সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক সম্পর্কে অন্য দেশের নাগরিকরাও জানতে পারবে।
আড়ং এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কর্মকাণ্ড এখন সংবাদপত্রে ও টেলিভিশনেও প্রচার পাচ্ছে। ঈদের আগে যেমন ফ্যাশন শো হয়, এখন বৈশাখকে কেন্দ্র করেও তা হচ্ছে। এভাবে উৎসবের সঙ্গে যোগ হচ্ছে বাণিজ্যে, রুচি-পছন্দের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারার কারণে তা ক্রমশ বাড়ছে।

স রওনক জাহান :বিপণন প্রধান, আড়ং

No comments

Powered by Blogger.