শিশুর খেলার মাঠ বেদখলে by রহিম আবদুর রহিম
গত ২৩ জুন রাতে একুশে টেলিভিশনে এক প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে, ঢাকার কায়েতটুলী ওয়াসার পানির ট্যাঙ্ক মাঠটি দখল করে নিয়েছে ওয়াসার চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী হাফিজ উদ্দীন। প্রতিবেদক মাঠ দখল কাহিনীসহ চতুর্থ শ্রেণীর এক কর্মকর্তা কীভাবে কোটিপতি হলো_ এ প্রশ্নের অবতারণ ঘটানোর দক্ষতা দেখিয়েছেন।
সব কথার এক কথা, আজকের শিশুরা আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। এই ভাবী প্রজন্মের স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং ক্রীড়া-বিনোদনের খেলার মাঠ কেন, কীভাবে দখলে চলে গেল? সংবিধানের ২৪ ধারার স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে, রাষ্ট্রের সব সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব সরকারের। তবে কীভাবে হাফিজ উদ্দীন ওয়াসার খেলার মাঠ দখল করল? সরকার কি এই দখলদারের জিম্মি? একুশে টেলিভিশনে ২৬ জুনের মুক্ত খবরে দেখানো হয়েছে, শিশুদের শৈশব পরিবেশ ধ্বংস হতে চলছে। নদীমাতৃক বাংলাদেশের মানুষ প্রকৃতিগতভাবে সাঁতার কাটতে জানে অথচ শহর-গ্রামাঞ্চলের পুকুর-ডোবায় মৎস্য প্রকল্পের নামে খামারিরা দখল করে নিয়েছে। ফলে শিশুরা আর দলবেঁধে প্রকৃতি উপভোগ করতে পারছে না। একজন শিশু জন্ম থেকে মৃত্যু অবধি যেমন শিক্ষা গ্রহণ করে প্রকৃতি থেকে, তেমনি একজন শিশুর মানসিক বিকাশ শুরু হয় শুরু থেকেই। দ্রুত এবং প্রবলভাবে শিশুর বিকাশ ঘটে মূলত জন্মের পর থেকে পাঁচ বছর বয়সের মধ্যে। এ সময় শিশুদের দলবেঁধে চলার সুযোগ করে দিতে হবে। যে কাজ করলে শিশুটি মনে কষ্ট পায়, যে কথা বললে সে আঘাত পাবে_ এমন কথা বা কাজ শিশুটির ওপর চাপিয়ে দেওয়া আদৌ ঠিক নয়। আমি একজন শিশু সংগঠক এবং নাট্যকার হওয়ায় শিশুবিষয়ক কিছু প্রশিক্ষণ গ্রহণ করার সুযোগ পেয়েছি। তবে উল্লেখযোগ্য দুটি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছি, তার একটি ২০০৫ সালে সুইডিশ প্রশিক্ষক দ্বারা, অন্যটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রুদ্রপ্রসাদ সেন গুপ্তের দ্বারা। পাঁচ দিনব্যাপী এ প্রশিক্ষণে শিশুর মানসিক বিকাশ ও উন্নয়নে যে ধারণা দেওয়া হয়েছে তা সত্যিকার অর্থে গবেষণালব্ধ-জ্ঞানগর্ভ, যা একজন মা-বাবার জন্য অতীব প্রয়োজনীয়। শিশুসাহিত্যিক আলী ইমামের ভাষায়, 'রাশিয়ায় শিশু শিক্ষায় প্রথমে শিশুদের প্রকৃতির সঙ্গে পরিচিত করে। তারা শিশুদের পশুপাখি, বন-জঙ্গল, নদী-নালা, ইতি-ঐতিহ্য, খাবার-দাবারবিষয়ক নাটক নির্মাণ করে তা শিশুদের দ্বারা অভিনয় করায়। প্রাথমিক পর্যায়ে শিশুরা হঠাৎ করেই বই-পুস্তকে ধরাবাঁধা সিলেবাস কিংবা প্রাতিষ্ঠানিক নিয়মের জালে আটকা পড়ে না। উন্মুক্তভাবে প্রকৃতির মাঝে তাদের অবারিত সাঁতার কাটার সুযোগ করে দেওয়া হয়। আমাদের দেশে যা পুরোপুরি নিষিদ্ধ না হলেও অনুপস্থিত।' ভারতের পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম শিশু গবেষক রুদ্রপ্রসাদ সেন গুপ্ত বলেন, 'চাপিয়ে দেওয়া কোনো কাজ কোনো শিশুর স্বপ্নসাধ পূরণ করতে পারে না।'
সফ.ৎধযরস৩১@ুধযড়ড়.পড়স
সফ.ৎধযরস৩১@ুধযড়ড়.পড়স
No comments