চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘর্ষ-তদন্ত প্রতিবেদনে ছাত্রশিবির দায়ী by সুজন ঘোষ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবিরের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনার জন্য ছাত্রশিবিরকে দায়ী করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গঠিত তদন্ত কমিটি। ছাত্রশিবিরের জঙ্গি মনোভাব, সোহরাওয়ার্দী হলে ছাত্রলীগের চার কর্মীর ওপর নির্যাতন ও ফাঁকা গুলির ঘটনা ওই দিনের পরিণতির জন্য দায়ী বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।


পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গত ১২ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ারুল আজিম আরিফের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদনে সংঘর্ষে ছাত্রশিবিরের ১৮ জন ও ছাত্রলীগের ১৭ জন জড়িত বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
গত ১৫ মার্চ অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের সভায় এই প্রতিবেদন গৃহীত হয়। সিন্ডিকেটে সংঘর্ষের ঘটনার সঙ্গে জড়িত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
তদন্ত কমিটির প্রধান ও বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের সদস্য অধ্যাপক নুরুল আনোয়ার প্রথম আলোকে বলেন, সাক্ষীদের বক্তব্য ও যথাযথ উপাদানের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটিতে প্রতিবেদনটি পাঠানো হয়েছে। সেখানে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ছাত্রশিবিরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হাফেজ মুহাম্মদ আশিকুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘পক্ষপাতদুষ্ট এই তদন্ত কমিটিকে আমরা আগেই প্রত্যাখ্যান করেছি। আমরা বিচার বিভাগীয় তদন্ত চাই।’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৮ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের দুজন সহপাঠী (শিবিরের সমর্থক আল-আমীন ও ছাত্রলীগের সমর্থক শাহরিয়ার শাহীন) ৪১৯ নম্বর শ্রেণীকক্ষের সামনে কথা-কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন। এরপর উভয় পক্ষের নেতা-কর্মীরা সেখানে উপস্থিত হয়ে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সংঘর্ষের সময় ক্যাম্পাসে শিবিরের অবস্থান স্পষ্ট এবং তাদের কর্মকাণ্ড অত্যন্ত পরিকল্পিত ছিল। শিবিরের কর্মীরা ঘটনার দিন শক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে অত্যন্ত মারমুখী ছিলেন। ছাত্রদের পরস্পরবিরোধী বেপরোয়া ও অসহিষ্ণু আচরণের কারণে দুজন ছাত্র নিহত হওয়ার মতো দুঃখজনক ঘটনা ঘটে।
কমিটির সার্বিক পর্যবেক্ষণে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে সংঘর্ষে জড়িত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। এ ছাড়া প্রতিবেদনে ১১ দফা সুপারিশ দিয়েছে কমিটি।

No comments

Powered by Blogger.