ফারাক্কার প্রভাবে উত্তরাঞ্চলের ৫৪টি নদী পানি শূন্য by সেলিম সরদার
ফারাক্কার প্রভাবে উত্তরাঞ্চলের ৫৪টি নদী শুকিয়ে গেছে । শুষ্ক মৌসুমে শূন্য হয়ে পড়ছে নদীর পানি । একদিকে যেমনি পানি শূন্য হয়ে পড়ছে নদীগুলো, অন্যদিকে তেমনি দ্রুত নেমে যাচ্ছে পানির স্তর। এদিকে শুষ্ক মওসুমের শুরুতেই পাবনার ঈশ্বরদীতে পানির জন্য হাহাকার সৃষ্টি হয়েছে।
এককালের প্রমত্তা পদ্মা নদী এখন প্রায় পানি শূন্য হয়ে পড়েছে।যতদুর চোখ যায় চারিদিকে শুধু ধু-ধু বালুচর ও বিস্তির্ণ আবাদী জমি। প্রশস্ত পদ্মা মরে গিয়ে ছোট থেকে আরও ছোট হয়ে আসছে। স্থান ভেদে কোথাও কোথাও পদ্মা এখন মাত্র ২শ’ মিটার চওড়া নদী।
সূত্র জানায়, শুষ্ক মওসুমের শুরুতেই পানির অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে দেশের বৃহত্তম ভেড়ামারা গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) সেচ প্রকল্প।
কালের সাক্ষি হয়ে ধু-ধু বালুচরে ও আবাদী জমির উপর দাঁড়িয়ে আছে দেশের বৃহত্তম রেল সেতু হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ও লালন শাহ্ সেতু। হার্ডিঞ্জ ব্রিজের ১৫টি স্প্যানের মধ্যে ১০ টিই এখন পানিশূন্য।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র বাংলানিউজকে জানায় শুষ্ক মওসুমে গঙ্গা নদীর পানির ভাগাভাগির লক্ষ্যে ১৯৯৬ সালে ভারত সরকারের সঙ্গে ৩০ বছর মেয়াদি পানি চুক্তি করে বাংলাদেশ।
চুক্তি অনুযায়ী ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ মে পর্যন্ত সময়কে অবহিত করে প্রতিটি মাসকে তিন চক্রে ভাগ করা হয়েছে।
কোন চক্রে কি পরিমাণ পানি পাবে তা চুক্তিতে উল্লেখ রয়েছে। ঠিক মতো পানিবণ্টন হচ্ছে কি না তা দেখার জন্য যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) সদস্যরা বাংলাদেশ-ভারত সফর করেন।
যৌথ নদী কমিশন (জেআরসি) সূত্র বাংলানিউজকে জানায়, চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ সব সময়ই বঞ্চিত হয়েছে ন্যায্য হিস্যা থেকে।
ঈশ্বরদী ও ভেড়ামারা হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টকে পানি প্রবাহ ও গবেষণা পয়েন্ট হিসেবে ধরে পর্যবেক্ষণ করে থাকে বাংলাদেশ ও ভারতের দুটি বিশেষজ্ঞ দল। এ পয়েন্টে দিন দিন পানি প্রবাহের পরিমাণ হ্রাস পাচ্ছে।
গত ১ জানুয়ারি থেকে ভারতের দুই সদস্য বিশিষ্ট এবং বাংলাদেশের তিন সদস্য বিশিষ্ট যৌথ বিশেষজ্ঞ দল হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি প্রবাহ পর্যবেক্ষণ করছে।
বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের হাইড্রোলজি বিভাগের উপ-নির্বাহী প্রকৌশলী, উপ-সহকারী প্রকৌশলী এবং একজন সেকশন অফিসার।
ভারতের পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ভারতের পানি গবেষণা মন্ত্রণালয়ের উপপরিচালক এবং উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী।
পাবনা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জামানুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর এত নিচে নেমে গেছে যে এ ভাবে চললে ১০ বছর পর এ অঞ্চলে পানি পাওয়া কঠিন হবে। তা ছাড়া বৃষ্টিপাত না থাকায় বিশুদ্ধ পানির প্রাপ্যতাও দিন দিন কঠিন হয়ে পড়ছে।
পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী কবিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘জলবায়ু পবির্তনের কারণে পৃথিবীর নদীগুলোর ভূগর্ভস্থ উচ্চতা বেড়েছে এবং পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। পানি প্রাপ্তির ক্ষেত্রে উচ্চ পর্যায়ে বৈঠক জরুরী বলে তিনি মনে করেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানান, ফারাক্কার প্রভাবে উত্তরাঞ্চলের ৫৪টি নদী শুকিয়ে গেছে, শুস্ক মৌসুমে নদীগুলো পানি শুন্যে হয়ে পড়ছে। যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) একজন সদস্য তার নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে বাংলানিউজকে বলেন, জানুয়ারি মাসের প্রথম চক্র ০১ থেকে ১০ পর্যন্ত ফারাক্কা পয়েন্টে পানি পাওয়া গেছে ৯৬ হাজার ১৭৯ কিউসেক।
পানি চুক্তি ১ অনুযায়ী ভারত পাবে ৪০ হাজার আর বাংলাদেশ পাবে ৫৬ হাজার কিউসেক পানি।
ফারাক্কার নিয়ম অনুযায়ী পানি পেলেও হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে বাংলাদেশের হিস্যা ছিল ৬৭ হাজার ৫১৬ কিউসেক। এসময় পানি পাওয়া গেছে ৬৩ হাজার ৮’শ ৫৭ কিউসেক। কম পেয়েছে ৩ হাজার ৬’শ ৫৯ কিউসেক।
১১ থেকে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত ১০ দিনে ফারাক্কা পয়েন্টে পানি পাওয়া গেছে ৮৮ হাজার ৩৬ কিউসেক।
পানি চুক্তি ১ অনুযায়ী ভারত পাবে ৪০ হাজার, বাংলাদেশ পাবে ৪৮ হাজার কিউসেক পানি। হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে বাংলাদেশের প্রাপ্য হিস্যা ছিল ৫৭ হাজার ৬’শ ৭৬ কিউসেক। পাওয়া গেছে ৫১ হাজার ৬’শ ৪১ কিউসেক। অর্থাৎ হিস্যার চেয়ে বাংলাদেশ কম পেয়েছে ৬ হাজার ৩২ কিউসেক পানি।
অন্যদিকে পানির অভাবে বন্ধ হওয়ার পথে দেশের বৃহত্তম গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্প। প্রকল্পের আওতায় ৪ লাখ ৮৮ হাজার একর জমিতে সেচ সরবরাহ করার কথা থাকলেও পানির অভাবে ১’লাখ ১৬ হাজার একর জমিতে সেচ সরবরাহ করা হচ্ছে। এতে এই অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষের জীবন জীবিকাসহ উত্তর-দক্ষিণ,পশ্চিমাঞ্চলের লাখ লাখ মানুষের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়েছে।
ভেড়ামারা পাম্প স্টেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মোশারফ হোসেন বাংলানিউজকে জানান, পানি না পাওয়ায় ইতোমধ্যে গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ পাম্প বন্ধ হওয়ার পর্যায়ে রয়েছে। সম্প্রতি পানি পর্যবেক্ষণ করতে এসে প্রতিনিধি দল হিস্যা অনুযায়ী বাংলাদেশ পানি কম পাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন।
সূত্র জানায়, শুষ্ক মওসুমের শুরুতেই পানির অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে দেশের বৃহত্তম ভেড়ামারা গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) সেচ প্রকল্প।
কালের সাক্ষি হয়ে ধু-ধু বালুচরে ও আবাদী জমির উপর দাঁড়িয়ে আছে দেশের বৃহত্তম রেল সেতু হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ও লালন শাহ্ সেতু। হার্ডিঞ্জ ব্রিজের ১৫টি স্প্যানের মধ্যে ১০ টিই এখন পানিশূন্য।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র বাংলানিউজকে জানায় শুষ্ক মওসুমে গঙ্গা নদীর পানির ভাগাভাগির লক্ষ্যে ১৯৯৬ সালে ভারত সরকারের সঙ্গে ৩০ বছর মেয়াদি পানি চুক্তি করে বাংলাদেশ।
চুক্তি অনুযায়ী ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ মে পর্যন্ত সময়কে অবহিত করে প্রতিটি মাসকে তিন চক্রে ভাগ করা হয়েছে।
কোন চক্রে কি পরিমাণ পানি পাবে তা চুক্তিতে উল্লেখ রয়েছে। ঠিক মতো পানিবণ্টন হচ্ছে কি না তা দেখার জন্য যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) সদস্যরা বাংলাদেশ-ভারত সফর করেন।
যৌথ নদী কমিশন (জেআরসি) সূত্র বাংলানিউজকে জানায়, চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ সব সময়ই বঞ্চিত হয়েছে ন্যায্য হিস্যা থেকে।
ঈশ্বরদী ও ভেড়ামারা হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টকে পানি প্রবাহ ও গবেষণা পয়েন্ট হিসেবে ধরে পর্যবেক্ষণ করে থাকে বাংলাদেশ ও ভারতের দুটি বিশেষজ্ঞ দল। এ পয়েন্টে দিন দিন পানি প্রবাহের পরিমাণ হ্রাস পাচ্ছে।
গত ১ জানুয়ারি থেকে ভারতের দুই সদস্য বিশিষ্ট এবং বাংলাদেশের তিন সদস্য বিশিষ্ট যৌথ বিশেষজ্ঞ দল হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি প্রবাহ পর্যবেক্ষণ করছে।
বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের হাইড্রোলজি বিভাগের উপ-নির্বাহী প্রকৌশলী, উপ-সহকারী প্রকৌশলী এবং একজন সেকশন অফিসার।
ভারতের পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ভারতের পানি গবেষণা মন্ত্রণালয়ের উপপরিচালক এবং উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী।
পাবনা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জামানুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর এত নিচে নেমে গেছে যে এ ভাবে চললে ১০ বছর পর এ অঞ্চলে পানি পাওয়া কঠিন হবে। তা ছাড়া বৃষ্টিপাত না থাকায় বিশুদ্ধ পানির প্রাপ্যতাও দিন দিন কঠিন হয়ে পড়ছে।
পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী কবিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘জলবায়ু পবির্তনের কারণে পৃথিবীর নদীগুলোর ভূগর্ভস্থ উচ্চতা বেড়েছে এবং পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। পানি প্রাপ্তির ক্ষেত্রে উচ্চ পর্যায়ে বৈঠক জরুরী বলে তিনি মনে করেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানান, ফারাক্কার প্রভাবে উত্তরাঞ্চলের ৫৪টি নদী শুকিয়ে গেছে, শুস্ক মৌসুমে নদীগুলো পানি শুন্যে হয়ে পড়ছে। যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) একজন সদস্য তার নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে বাংলানিউজকে বলেন, জানুয়ারি মাসের প্রথম চক্র ০১ থেকে ১০ পর্যন্ত ফারাক্কা পয়েন্টে পানি পাওয়া গেছে ৯৬ হাজার ১৭৯ কিউসেক।
পানি চুক্তি ১ অনুযায়ী ভারত পাবে ৪০ হাজার আর বাংলাদেশ পাবে ৫৬ হাজার কিউসেক পানি।
ফারাক্কার নিয়ম অনুযায়ী পানি পেলেও হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে বাংলাদেশের হিস্যা ছিল ৬৭ হাজার ৫১৬ কিউসেক। এসময় পানি পাওয়া গেছে ৬৩ হাজার ৮’শ ৫৭ কিউসেক। কম পেয়েছে ৩ হাজার ৬’শ ৫৯ কিউসেক।
১১ থেকে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত ১০ দিনে ফারাক্কা পয়েন্টে পানি পাওয়া গেছে ৮৮ হাজার ৩৬ কিউসেক।
পানি চুক্তি ১ অনুযায়ী ভারত পাবে ৪০ হাজার, বাংলাদেশ পাবে ৪৮ হাজার কিউসেক পানি। হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে বাংলাদেশের প্রাপ্য হিস্যা ছিল ৫৭ হাজার ৬’শ ৭৬ কিউসেক। পাওয়া গেছে ৫১ হাজার ৬’শ ৪১ কিউসেক। অর্থাৎ হিস্যার চেয়ে বাংলাদেশ কম পেয়েছে ৬ হাজার ৩২ কিউসেক পানি।
অন্যদিকে পানির অভাবে বন্ধ হওয়ার পথে দেশের বৃহত্তম গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্প। প্রকল্পের আওতায় ৪ লাখ ৮৮ হাজার একর জমিতে সেচ সরবরাহ করার কথা থাকলেও পানির অভাবে ১’লাখ ১৬ হাজার একর জমিতে সেচ সরবরাহ করা হচ্ছে। এতে এই অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষের জীবন জীবিকাসহ উত্তর-দক্ষিণ,পশ্চিমাঞ্চলের লাখ লাখ মানুষের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়েছে।
ভেড়ামারা পাম্প স্টেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মোশারফ হোসেন বাংলানিউজকে জানান, পানি না পাওয়ায় ইতোমধ্যে গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ পাম্প বন্ধ হওয়ার পর্যায়ে রয়েছে। সম্প্রতি পানি পর্যবেক্ষণ করতে এসে প্রতিনিধি দল হিস্যা অনুযায়ী বাংলাদেশ পানি কম পাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন।
No comments