চরাচর-মুক্তিযুদ্ধকালীন সেই বাংলাদেশ হাসপাতাল by ফখরে আলম

ক্যাপ্টেন সেতারা মানচিত্রখচিত বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করছেন। দুজন স্বেচ্ছাসেবী স্ট্রেচারে করে আহত মুক্তিযোদ্ধাকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাচ্ছেন। ওটি, ল্যাবরেটরি, সার্জিক্যাল ওয়ার্ড, মেডিক্যাল ওয়ার্ড, এমআই রুম, ক্যাজুয়ালটিসহ ২০০ শয্যার 'মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশ হাসপাতাল'।


মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের জন্য যাঁরা লড়াই করে আহত হয়েছেন, তাঁদের এখানে চিকিৎসা করা হয়েছে। ভারতের আগরতলার বিশ্রামগঞ্জের সেই হাসপাতালের মডেল স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে যশোর সেনানিবাসের ক্যান্টনমেন্ট কলেজের মাঠে প্রদর্শন করা হয়েছে। ২৫ মার্চ তিন দিনের এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন ৫৫ পদাতিক ডিভিশনের অধিনায়ক মেজর জেনারেল মতিউর রহমান।
আর্মি মেডিক্যাল কোরের সহকারী পরিচালক কর্নেল কবীর কালের কণ্ঠকে বলেন, আগরতলার একটি গোয়ালঘরে ১৯৭১ সালে মেজর আখতারের উদ্যোগে মেজর খালেদ মোশাররফের তত্ত্বাবধানে মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশ হাসপাতাল চালু হয়। পরবর্তী সময়ে এই হাসপাতালের দায়িত্ব নেন ক্যাপ্টেন সেতারা। মুক্তিপাগল কয়েকজন চিকিৎসক, নার্স, স্বেচ্ছাসেবক এই হাসপাতালে যুদ্ধাহতদের চিকিৎসা সুবিধা দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন ডা. জাফর উল্লাহ, কবি সুফিয়া কামালের দুই মেয়ে সুলতানা কামাল ও শাহিদা কামাল, মেডিক্যালের ছাত্র শামসুদ্দিন, ডালিয়া ও সবিতা। পরবর্তী সময়ে এই হাসপাতালে আরো অনেকে যোগ দিয়ে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেছেন। ২০০ শয্যার এই হাসপাতালে সার্জিক্যাল, মেডিক্যাল, ক্যাজুয়ালটি, ইমার্জেন্সি, প্যাথলজি ওয়ার্ডের পাশাপাশি অপারেশন থিয়েটারও ছিল। অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, জেনারেল ওসমানী, আওয়ামী লীগ নেত্রী আইভি রহমানসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা এই হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন। বক্তারা বলেন, স্বাধীনতাযুদ্ধে আর্মি মেডিক্যাল কোরের সদস্যদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। এই কোরের ১৩৭ জন কর্মকর্তা ও সৈনিক শহীদ হয়েছেন। মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সেই সব শহীদের স্মরণে মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশ হাসপাতালকে আমরা তুলে ধরেছি। নতুন প্রজন্ম এই হাসপাতাল দেখে মুক্তিযুদ্ধের অন্য এক ইতিহাস সম্পর্কে জেনেছে।

No comments

Powered by Blogger.