র্যাব কি আইনের ঊর্ধ্বে?-লিমনের কাটা পা
কর্মফল বলে একটা ব্যাপার আছে। তাহলে কার কর্মফলে র্যাবের গুলিতে পা হারাল তরুণ লিমন হোসেন? যে দরিদ্র তরুণের চিকিৎসার জন্য তার গ্রামবাসীও চাঁদা দেয়, চাল-ডাল এগিয়ে দেয়, এই ভালোবাসা পাওয়াও তো লিমনেরই কর্মফল। সবার ভালোবাসা ও সহানুভূতি যে কাড়তে পারে, যার বিরুদ্ধে কোথাও কোনো মামলা ছিল না,
যে কেবলই দাঁড়িয়ে ছিল বাড়ির পাশে, র্যাবের কী প্রয়োজন হয়েছিল তাকে গুলি করার? যে ছেলেটি ইটভাটায় মজুর খেটে রাতে লেখাপড়া করে উচ্চশিক্ষিত হওয়ার স্বপ্ন দেখত, পঙ্গুত্ব নিয়ে সে কীভাবেই বা কাজ করবে আর কীভাবেই বা পড়ালেখা চালিয়ে যাবে? লিমনের সৌভাগ্য যে সে জানে বেঁচে গেছে, কিন্তু র্যাবের সদস্যের গুলিতে শেষ হয়ে গেছে তার সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনের স্বপ্ন। ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হতভাগ্য লিমনের কান্না কেবল দুস্থ মানবতারই নয়, তা-ই আজ বিচারের বাণী, যা সরবেই কেঁদে চলেছে! মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কি তা শুনতে পান?
এভাবে কত লিমন পঙ্গু হয়েছে, কত মাসুম নির্যাতিত হয়েছে, কত বাপ্পী নিহত হয়েছে, কত মানুষ বিনা দোষে হয়রানির শিকার হচ্ছে, তার হিসাব কে দেবে? র্যাব কি আইনের ঊর্ধ্বে?
লিমনই কি একা? ইংরেজি দৈনিক নিউ এজ-এর সাংবাদিক এফ এম মাসুমকে বানোয়াট অভিযোগে আটক-নির্যাতনের ঘটনাও বেশি দিন আগের নয়। এর আগে তরুণ অভিনেতা বাপ্পীকে গুলি করে লাশ ফেলে রাখা হয়। গত বছরের মে মাসে সাতক্ষীরায় এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে অস্ত্র রেখে গ্রেপ্তার করা নিয়ে গল্প সাজিয়েছিল র্যাব। কিন্তু গ্রামবাসীর ঘেরাও এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলোর পদক্ষেপে তাদের সেই মিথ্যার খোলস খসে পড়ে।
যে নামেই ডাকা হোক, গোলাপ গোলাপই, অন্য কিছু নয়। যে পদ্ধতিতেই হত্যা করা হোক, র্যাব বা পুলিশের হত্যাকাণ্ড হত্যাই বটে। ছিল ‘ক্রসফায়ার’, পরে হয়েছে ‘বন্দুকযুদ্ধ’। গল্পটাই শুধু বদলায়, কিন্তু সব গল্পের শেষেই গুলিবিদ্ধ হয়ে কারও না কারও মৃত্যু হয়, বিচার হয় না। এবং বরাবরের মতো র্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা আত্মরক্ষার্থে গুলি করে এবং তাতে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে না। ঝালকাঠির লিমনের ঘটনাতেও র্যাব কল্পিত সন্ত্রাসীদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধের গল্প প্রচার করছে, যা কোনোভাবেই বিশ্বাসযোগ্য নয়।
মানবাধিকার সংস্থাগুলোর চোখে ২০১০ সালে সবচেয়ে উদ্বেগজনক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ছিল র্যাব ও পুলিশের ক্রসফায়ার; এ বছরের চিত্রও ভিন্ন নয়। আইন-আদালত থাকতে বিনা বিচারে মানুষ হত্যা কেন? অপরাধ দমনে র্যাবের কিছু কৃতিত্ব থেকে থাকলেও এসব বিচ্যুতির জন্য সেসবও কলঙ্কিত হচ্ছে। ক্রসফায়ারের নামে এ ধরনের বিচারবহির্ভূত হত্যা কিংবা মানুষকে পঙ্গু করার মতো নিষ্ঠুরতা বন্ধ করতে হবে।
অপরাধী ও অপরাধ দমনকারী সংস্থার আচরণ একই রকম নিষ্ঠুর হলে কেবল আইনের শাসনই হুমকিগ্রস্ত হয় না, মানুষ ভরসা হারায়। আমরা আশা করব, এ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত হবে এবং দোষী ব্যক্তি শাস্তি পাবে। আহত লিমনকে সব চিকিৎসা দিয়ে—প্রয়োজনে বিদেশে পাঠিয়ে—তার পা হারানোর ক্ষতি যতটা কমানো যায়, তার ব্যবস্থা করতে হবে। দ্বিতীয়ত, তার পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ার সব বন্দোবস্তও সরকারকেই করতে হবে।
এভাবে কত লিমন পঙ্গু হয়েছে, কত মাসুম নির্যাতিত হয়েছে, কত বাপ্পী নিহত হয়েছে, কত মানুষ বিনা দোষে হয়রানির শিকার হচ্ছে, তার হিসাব কে দেবে? র্যাব কি আইনের ঊর্ধ্বে?
লিমনই কি একা? ইংরেজি দৈনিক নিউ এজ-এর সাংবাদিক এফ এম মাসুমকে বানোয়াট অভিযোগে আটক-নির্যাতনের ঘটনাও বেশি দিন আগের নয়। এর আগে তরুণ অভিনেতা বাপ্পীকে গুলি করে লাশ ফেলে রাখা হয়। গত বছরের মে মাসে সাতক্ষীরায় এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে অস্ত্র রেখে গ্রেপ্তার করা নিয়ে গল্প সাজিয়েছিল র্যাব। কিন্তু গ্রামবাসীর ঘেরাও এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলোর পদক্ষেপে তাদের সেই মিথ্যার খোলস খসে পড়ে।
যে নামেই ডাকা হোক, গোলাপ গোলাপই, অন্য কিছু নয়। যে পদ্ধতিতেই হত্যা করা হোক, র্যাব বা পুলিশের হত্যাকাণ্ড হত্যাই বটে। ছিল ‘ক্রসফায়ার’, পরে হয়েছে ‘বন্দুকযুদ্ধ’। গল্পটাই শুধু বদলায়, কিন্তু সব গল্পের শেষেই গুলিবিদ্ধ হয়ে কারও না কারও মৃত্যু হয়, বিচার হয় না। এবং বরাবরের মতো র্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা আত্মরক্ষার্থে গুলি করে এবং তাতে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে না। ঝালকাঠির লিমনের ঘটনাতেও র্যাব কল্পিত সন্ত্রাসীদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধের গল্প প্রচার করছে, যা কোনোভাবেই বিশ্বাসযোগ্য নয়।
মানবাধিকার সংস্থাগুলোর চোখে ২০১০ সালে সবচেয়ে উদ্বেগজনক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ছিল র্যাব ও পুলিশের ক্রসফায়ার; এ বছরের চিত্রও ভিন্ন নয়। আইন-আদালত থাকতে বিনা বিচারে মানুষ হত্যা কেন? অপরাধ দমনে র্যাবের কিছু কৃতিত্ব থেকে থাকলেও এসব বিচ্যুতির জন্য সেসবও কলঙ্কিত হচ্ছে। ক্রসফায়ারের নামে এ ধরনের বিচারবহির্ভূত হত্যা কিংবা মানুষকে পঙ্গু করার মতো নিষ্ঠুরতা বন্ধ করতে হবে।
অপরাধী ও অপরাধ দমনকারী সংস্থার আচরণ একই রকম নিষ্ঠুর হলে কেবল আইনের শাসনই হুমকিগ্রস্ত হয় না, মানুষ ভরসা হারায়। আমরা আশা করব, এ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত হবে এবং দোষী ব্যক্তি শাস্তি পাবে। আহত লিমনকে সব চিকিৎসা দিয়ে—প্রয়োজনে বিদেশে পাঠিয়ে—তার পা হারানোর ক্ষতি যতটা কমানো যায়, তার ব্যবস্থা করতে হবে। দ্বিতীয়ত, তার পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ার সব বন্দোবস্তও সরকারকেই করতে হবে।
No comments