দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের পথে বাধা-স্বাস্থ্য খাতে ব্যাপক বৈষম্য
‘(১) সকল নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা নিশ্চিত করিতে রাষ্ট্র সচেষ্ট হইবেন; (২)...প্রজাতন্ত্রের সর্বত্র অর্থনৈতিক উন্নয়নের সমান স্তর অর্জনের উদ্দেশ্যে সুষম সুযোগ-সুবিধাদান নিশ্চিত করিবার জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।’ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান, দ্বিতীয় ভাগ: রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি; অনুচ্ছেদ ১৯-এর ১ ও ২)
এই যদি হয় আমাদের সংবিধানের নির্দেশনা, তাহলে স্বাস্থ্যসেবায় ব্যয়ের ক্ষেত্রে দেশের বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে যে বৈষম্যের চিত্র সরকারি পরিসংখ্যানে পাওয়া গেল, তা কি গ্রহণযোগ্য হতে পারে? প্রথম আলোয় প্রকাশিত এ-সংক্রান্ত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ জাতীয় স্বাস্থ্য নিরীক্ষা (জাস্বানি) বলছে, দেশের ছয়টি বিভাগের মধ্যে স্বাস্থ্য খাতে মাথাপিছু সর্বোচ্চ ব্যয় ও সর্বনিম্ন ব্যয়ের মধ্যে পার্থক্য ৩৩ শতাংশেরও বেশি। ঢাকা বিভাগে ৩৯.২ শতাংশ, আর বরিশাল বিভাগে মাত্র ৬.১ শতাংশ। মুদ্রার অঙ্কে যথাক্রমে এক হাজার ৩৩৭ টাকা ও ৪৪৯ টাকা। ঢাকার পরেই চট্টগ্রাম (১৯.৯ শতাংশ), এখানেও বৈষম্য প্রায় ২০ শতাংশ; তারপর রাজশাহী (১৮.২ শতাংশ), খুলনা (৯.৯ শতাংশ), সিলেট (৬.৬ শতাংশ)—বৈষম্য ক্রমাগত বেড়েছে।
হিসাবটি বার্ষিক এবং ২০০৭ সালের পরিসংখ্যান। এরপর পরিস্থিতির ইতরবিশেষ পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে হয় না। স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু বার্ষিক ব্যয় গড়ে এক হাজার ১১৮ টাকা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৈষম্যের শিকার বরিশাল বিভাগের একজন মানুষের ভাগে মাত্র ৪৪৯ টাকা! এই নগণ্য পরিমাণ অর্থ দিয়ে একজন মানুষের সারা বছরের স্বাস্থ্যসেবার খরচ আদৌ কি হওয়া সম্ভব?
মাথাপিছু যে ব্যয়ের হিসাব সরকারের সর্বশেষ পরিসংখ্যানে উল্লেখ করা হয়েছে, তার একটি অংশ দেয় সরকার; আর বড় অংশই খরচ করে ব্যক্তি নিজের পকেট থেকে। ধনী-গরিবের আয়-বৈষম্য কমানোর কথা হয়তো বৈপ্লবিক শোনায়; কিন্তু রাষ্ট্রীয় কোষ থেকে যখন মানুষের স্বাস্থ্যসেবার জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়, তখন সব নাগরিক সমান পাবেন—এটা নিশ্চিত করতে চাইলে বৈপ্লবিক পদক্ষেপের প্রয়োজন হয় না; কেবল সংশ্লিষ্ট বিধি-বিধানগুলো মেনে চললেই হয়। মন্ত্রী বা ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী সাংসদের নিজের এলাকায় বরাদ্দ বেশি হলে অন্যদের এলাকায় কম হবে, মানে বৈষম্য বাড়বে—এ তো জানা কথা। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এনজিও বা বিদেশি দাতা সংস্থাগুলোর প্রকল্প নিজের এলাকায় নিয়ে ভোটের বাক্স নিশ্চিত করার চেষ্টাও অনৈতিক।
দেশের স্বাস্থ্য খাতে বিভাগ ও অঞ্চলভেদে যে ব্যাপক বৈষম্য চলছে, তা চূড়ান্ত বিচারে জাতির মানবসম্পদ উন্নয়ন ও সামগ্রিক সমৃদ্ধির পথে বড় বাধা। এটা অবশ্যই দূর করার উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।
হিসাবটি বার্ষিক এবং ২০০৭ সালের পরিসংখ্যান। এরপর পরিস্থিতির ইতরবিশেষ পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে হয় না। স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু বার্ষিক ব্যয় গড়ে এক হাজার ১১৮ টাকা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৈষম্যের শিকার বরিশাল বিভাগের একজন মানুষের ভাগে মাত্র ৪৪৯ টাকা! এই নগণ্য পরিমাণ অর্থ দিয়ে একজন মানুষের সারা বছরের স্বাস্থ্যসেবার খরচ আদৌ কি হওয়া সম্ভব?
মাথাপিছু যে ব্যয়ের হিসাব সরকারের সর্বশেষ পরিসংখ্যানে উল্লেখ করা হয়েছে, তার একটি অংশ দেয় সরকার; আর বড় অংশই খরচ করে ব্যক্তি নিজের পকেট থেকে। ধনী-গরিবের আয়-বৈষম্য কমানোর কথা হয়তো বৈপ্লবিক শোনায়; কিন্তু রাষ্ট্রীয় কোষ থেকে যখন মানুষের স্বাস্থ্যসেবার জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়, তখন সব নাগরিক সমান পাবেন—এটা নিশ্চিত করতে চাইলে বৈপ্লবিক পদক্ষেপের প্রয়োজন হয় না; কেবল সংশ্লিষ্ট বিধি-বিধানগুলো মেনে চললেই হয়। মন্ত্রী বা ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী সাংসদের নিজের এলাকায় বরাদ্দ বেশি হলে অন্যদের এলাকায় কম হবে, মানে বৈষম্য বাড়বে—এ তো জানা কথা। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এনজিও বা বিদেশি দাতা সংস্থাগুলোর প্রকল্প নিজের এলাকায় নিয়ে ভোটের বাক্স নিশ্চিত করার চেষ্টাও অনৈতিক।
দেশের স্বাস্থ্য খাতে বিভাগ ও অঞ্চলভেদে যে ব্যাপক বৈষম্য চলছে, তা চূড়ান্ত বিচারে জাতির মানবসম্পদ উন্নয়ন ও সামগ্রিক সমৃদ্ধির পথে বড় বাধা। এটা অবশ্যই দূর করার উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।
No comments