সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল-ছাত্রলীগের একাংশ ভাঙচুরে জড়িত, কলেজ বন্ধ
চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা এবং ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মবিরতি, সভা ও বিক্ষোভ করেছেন। এতে গতকাল বুধবার হাসপাতাল প্রায় অচল হয়ে পড়ে।
দুই ঘণ্টা জরুরি সেবা বন্ধ ছিল। বহির্বিভাগে বেলা ১১টার পর থেকে কেউ চিকিৎসা পায়নি।
অন্যদিকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীদের গতকাল বেলা ১১টার মধ্যে হোস্টেল ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে। কলেজের অধ্যক্ষ এ বি এম মাকসুদুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, মঙ্গলবার মধ্যরাতে একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। হাসপাতালের চিকিৎসক-কর্মকর্তারা বলেছেন, মঙ্গলবার রাতে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা হাসপাতালে ভাঙচুর করে। আর কলেজে ভাঙচুর করে ছাত্রলীগের একটি অংশ।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, মঙ্গলবার দুপুরে ছাত্রাবাসের পেছনে বহিরাগত চার যুবককে তাস খেলতে বাধা দেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়। এর জের ধরে সন্ধ্যা সাতটার দিকে ৩০-৪০ জন বহিরাগত ছাত্রাবাস ও হাসপাতালে ঢুকে ছাত্রদের পেটায় এবং জরুরি বিভাগ ও গ্রন্থাগারে ভাঙচুর করে। এতে ২০ জন ছাত্র, দুজন গাড়িচালক ও দুজন সেবক আহত হন। হামলকারীরা তিনটি অ্যাম্বুলেন্স ভাঙচুর করে। তারা হাসপাতালের পরিচালক এ কে এম মুজিবুর রহমানের দপ্তর, প্রশাসনিক কর্মকর্তার কক্ষ ও চিকিৎসকদের ক্যানটিনেও ব্যাপক ভাঙচুর করে।
হাসপাতালের ব্যবস্থাপক (রক্ষণাবেক্ষণ) এ কে এম মশিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ভাঙচুরের সময় হাসপাতালে বিদ্যুৎ ছিল না।
বহিরাগত ব্যক্তিদের হামলার কিছুক্ষণ পর কলেজের অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষর দপ্তরসহ বিভিন্ন কক্ষে ব্যাপক ভাঙচুর হয়। হাসপাতালের সচিব আলীমুজ্জামান বলেন, অধ্যক্ষের ওপর হামলা ঠেকাতে গিয়ে তিনি আহত হন।
পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার মো. ইমাম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, হাসপাতাল ও হোস্টেলে বহিরাগত ব্যক্তিরা ভাঙচুর করেছে। তবে কলেজে ভাঙচুর করেছে সোহ্রাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের একটি অংশ। ঘটনার দিন দুপুরে ছাত্রলীদের ওই অংশটি অধ্যক্ষের অপসারণের দাবিতে ক্যাম্পাসে মিছিলও করেছিল।
আহত শিক্ষার্থী ফরহাদ পারভেজ বলেন, হোস্টেলের পেছনের দুই দিকে সীমানাপ্রাচীর না থাকায় বহিরাগত ব্যক্তিরা ছাত্রীনিবাসের পেছনে এসে ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করে। তারা জুয়া খেলে ও ফেনসিডিল সেবন করে। আরেক শিক্ষার্থী আমজাদ হোসেন বলেন, হামলাকারীদের বয়স ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। তারা প্যান্ট-শার্ট ও লুঙ্গি পরা ছিল। তারা আগারগাঁওয়ের বটতলার বস্তিবাসী। তাদের সঙ্গে হাসপাতালের আশপাশে গড়ে ওঠা অবৈধ টংঘরের দোকানিরাও ছিল।
শিক্ষানবিশ চিকিৎসকেরা হামলকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং নিরাপত্তার দাবিতে মানববন্ধন ও হাসপাতালের পরিচালকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন। তাঁরা হোস্টেলের কলাপসিবল গেট ও সার্বক্ষণিক নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ, উঁচু সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ, আশপাশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের দাবি জানিয়েছেন। ২৯ এপ্রিলের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে তাঁরা বহির্বিভাগের চিকিৎসা বন্ধ করে কঠোর কর্মসূচি দেবেন।
গতকাল সকালে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কালো ব্যাজ পরে ছিলেন। তাঁরা আরও পাঁচ দিন কালো ব্যাজ রাখবেন। বেলা ১১টার দিকে চিকিৎসকেরা হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় সভা করেন। তখন থেকে জরুরি ও বহির্বিভাগে সেবা বন্ধ হয়ে যায়। অনেকে চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যান।
মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ার গাড়িচালক মনজুর হোসেন জানান, মাথার আঘাত চিকিৎসায় সিটি স্ক্যান করালেও তিনি ডাক্তার দেখাতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘মুন্সিগঞ্জ থেকে আইতে লাগছে ৬০০ টেহা, যাইতে লাগবে ৬০০ টেহা। আমরা গরিব মানুষ। এই টেহা কি ডাক্তার দেবে!’
শিক্ষানবিশ চিকিৎসক পরিষদের আসাদুজ্জামান ও তানভীর হাসান প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত বহির্বিভাগের চিকিৎসা বন্ধ থাকবে। এ সময় রোগীর টিকিট কাউন্টারও বন্ধ করে দেওয়া হবে। তবে জরুরি চিকিৎসক দল দিয়ে ২৪ ঘণ্টা জরুরি বিভাগ ও অন্তর্বিভাগের (ইনডোর) চিকিৎসা চালু রাখা হবে।
হাসপাতালের পরিচালক এ কে এম মুজিবুর রহমান বলেন, রোগীদের স্বার্থে তিনি চিকিৎসকদের কর্মবিরতি সংক্ষিপ্ত করতে অনুরোধ করেছেন।
মামলা: ভাঙচুর ও মারধরের ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। একটি মামলার বাদী হাসপাতালের পরিচালক এ কে এম মুজিবুর রহমান। এতে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের আসামি করে তাদের বিরুদ্ধে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ আনা হয়েছে।
অন্য মামলায় কলেজ কর্তৃপক্ষ বাদী হয়েছে। এতে কলেজের ১৮ ছাত্রকে আসামি করা হয়েছে। তারা সোহ্রাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী বলে পুলিশ জানিয়েছে।
তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার ইমাম হোসেন বলেন, হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে শাহজাহান ভাঙ্গারিসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
অন্যদিকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীদের গতকাল বেলা ১১টার মধ্যে হোস্টেল ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে। কলেজের অধ্যক্ষ এ বি এম মাকসুদুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, মঙ্গলবার মধ্যরাতে একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। হাসপাতালের চিকিৎসক-কর্মকর্তারা বলেছেন, মঙ্গলবার রাতে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা হাসপাতালে ভাঙচুর করে। আর কলেজে ভাঙচুর করে ছাত্রলীগের একটি অংশ।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, মঙ্গলবার দুপুরে ছাত্রাবাসের পেছনে বহিরাগত চার যুবককে তাস খেলতে বাধা দেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়। এর জের ধরে সন্ধ্যা সাতটার দিকে ৩০-৪০ জন বহিরাগত ছাত্রাবাস ও হাসপাতালে ঢুকে ছাত্রদের পেটায় এবং জরুরি বিভাগ ও গ্রন্থাগারে ভাঙচুর করে। এতে ২০ জন ছাত্র, দুজন গাড়িচালক ও দুজন সেবক আহত হন। হামলকারীরা তিনটি অ্যাম্বুলেন্স ভাঙচুর করে। তারা হাসপাতালের পরিচালক এ কে এম মুজিবুর রহমানের দপ্তর, প্রশাসনিক কর্মকর্তার কক্ষ ও চিকিৎসকদের ক্যানটিনেও ব্যাপক ভাঙচুর করে।
হাসপাতালের ব্যবস্থাপক (রক্ষণাবেক্ষণ) এ কে এম মশিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ভাঙচুরের সময় হাসপাতালে বিদ্যুৎ ছিল না।
বহিরাগত ব্যক্তিদের হামলার কিছুক্ষণ পর কলেজের অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষর দপ্তরসহ বিভিন্ন কক্ষে ব্যাপক ভাঙচুর হয়। হাসপাতালের সচিব আলীমুজ্জামান বলেন, অধ্যক্ষের ওপর হামলা ঠেকাতে গিয়ে তিনি আহত হন।
পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার মো. ইমাম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, হাসপাতাল ও হোস্টেলে বহিরাগত ব্যক্তিরা ভাঙচুর করেছে। তবে কলেজে ভাঙচুর করেছে সোহ্রাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের একটি অংশ। ঘটনার দিন দুপুরে ছাত্রলীদের ওই অংশটি অধ্যক্ষের অপসারণের দাবিতে ক্যাম্পাসে মিছিলও করেছিল।
আহত শিক্ষার্থী ফরহাদ পারভেজ বলেন, হোস্টেলের পেছনের দুই দিকে সীমানাপ্রাচীর না থাকায় বহিরাগত ব্যক্তিরা ছাত্রীনিবাসের পেছনে এসে ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করে। তারা জুয়া খেলে ও ফেনসিডিল সেবন করে। আরেক শিক্ষার্থী আমজাদ হোসেন বলেন, হামলাকারীদের বয়স ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। তারা প্যান্ট-শার্ট ও লুঙ্গি পরা ছিল। তারা আগারগাঁওয়ের বটতলার বস্তিবাসী। তাদের সঙ্গে হাসপাতালের আশপাশে গড়ে ওঠা অবৈধ টংঘরের দোকানিরাও ছিল।
শিক্ষানবিশ চিকিৎসকেরা হামলকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং নিরাপত্তার দাবিতে মানববন্ধন ও হাসপাতালের পরিচালকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন। তাঁরা হোস্টেলের কলাপসিবল গেট ও সার্বক্ষণিক নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ, উঁচু সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ, আশপাশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের দাবি জানিয়েছেন। ২৯ এপ্রিলের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে তাঁরা বহির্বিভাগের চিকিৎসা বন্ধ করে কঠোর কর্মসূচি দেবেন।
গতকাল সকালে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কালো ব্যাজ পরে ছিলেন। তাঁরা আরও পাঁচ দিন কালো ব্যাজ রাখবেন। বেলা ১১টার দিকে চিকিৎসকেরা হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় সভা করেন। তখন থেকে জরুরি ও বহির্বিভাগে সেবা বন্ধ হয়ে যায়। অনেকে চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যান।
মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ার গাড়িচালক মনজুর হোসেন জানান, মাথার আঘাত চিকিৎসায় সিটি স্ক্যান করালেও তিনি ডাক্তার দেখাতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘মুন্সিগঞ্জ থেকে আইতে লাগছে ৬০০ টেহা, যাইতে লাগবে ৬০০ টেহা। আমরা গরিব মানুষ। এই টেহা কি ডাক্তার দেবে!’
শিক্ষানবিশ চিকিৎসক পরিষদের আসাদুজ্জামান ও তানভীর হাসান প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত বহির্বিভাগের চিকিৎসা বন্ধ থাকবে। এ সময় রোগীর টিকিট কাউন্টারও বন্ধ করে দেওয়া হবে। তবে জরুরি চিকিৎসক দল দিয়ে ২৪ ঘণ্টা জরুরি বিভাগ ও অন্তর্বিভাগের (ইনডোর) চিকিৎসা চালু রাখা হবে।
হাসপাতালের পরিচালক এ কে এম মুজিবুর রহমান বলেন, রোগীদের স্বার্থে তিনি চিকিৎসকদের কর্মবিরতি সংক্ষিপ্ত করতে অনুরোধ করেছেন।
মামলা: ভাঙচুর ও মারধরের ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। একটি মামলার বাদী হাসপাতালের পরিচালক এ কে এম মুজিবুর রহমান। এতে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের আসামি করে তাদের বিরুদ্ধে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ আনা হয়েছে।
অন্য মামলায় কলেজ কর্তৃপক্ষ বাদী হয়েছে। এতে কলেজের ১৮ ছাত্রকে আসামি করা হয়েছে। তারা সোহ্রাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী বলে পুলিশ জানিয়েছে।
তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার ইমাম হোসেন বলেন, হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে শাহজাহান ভাঙ্গারিসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
No comments