বোটানিক্যাল গার্ডেনে গাছ কাটার প্রকল্পঃ এই হঠকারী সিদ্ধান্ত রুখতে হবে
বন একদিন মানুষকে দিয়েছিল বাঁচার প্রেরণা, ক্ষুধায় আহার, পরনে বাকল, অসুখে ওষুধ, শ্রান্তিতে ছায়া। সেই সবুজ নিসর্গের দেশ এখন বন উজাড়ের দেশ বলে পরিচিতি পেয়েছে। ক্রম-উজাড়ের ফলে এই ভূখণ্ডে নেমে এসেছে প্রকৃতির অভিশাপ।
বনভূমির অভাবে দেশ শুধু প্রাণীবৈচিত্র্যের বিপুল ঐশ্বর্য হারায়নি, হারিয়েছে পরিবেশ-প্রতিবেশের ভারসাম্য। নির্বিচারে বৃক্ষ নিধনের এতসব ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া দেখেও আমাদের আক্কেল দাঁত গজায়নি। সরকারি রিজার্ভ ফরেস্ট ও অভয়ারণ্য থেকে শুরু করে নতুন বনায়নের গাছ পর্যন্ত সাবাড় হচ্ছে প্রতিদিন। এসবের পরিণতিতে এখন দেশ পরিবেশজনিত ব্যাপক ঝুঁকির সম্মুখীন। শেষ পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের চোখ পড়েছে শহরের ইতস্তত বিক্ষিপ্ত গাছের দিকে। এবারের লক্ষ্য বোটানিক্যাল গার্ডেন।
জানা গেছে, মিরপুর ন্যাশনাল বোটানিক্যাল গার্ডেনের দুষ্প্রাপ্য ও বিরল প্রজাতির কয়েকশ’ গাছ কেটে সরকারদলীয় নেতাদের জমি ভরাট করার একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের অনুমতি দিয়েছে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়। গার্ডেনের ভেতর দিয়ে একটি ব্যক্তিমালিকানাধীন ফার্মের সাড়ে তিন হাজার ফুট ড্রেজিং পাইপলাইন স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। এর ফলে গার্ডেনের এমন কিছু গাছ কাটা পড়বে যেগুলো দেশের কোথাও নেই এবং বিদেশ থেকে চারা এনে এর শূন্যতা পূরণও সহজে সম্ভব নয়। এই অবিমৃষ্যকারী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ রিট দায়ের করলে ১৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট তিন মাসের জন্য উল্লিখিত প্রকল্পের সব কাজ স্থগিত করেছেন এবং কেন এ প্রকল্প বাতিল করা হবে না তা জানাতে সরকারের প্রতি রুলনিশি জারি করেছেন। সবচেয়ে বিস্ময়কর সংবাদ হচ্ছে, সাবেক বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী এবং বর্তমান ভূমি প্রতিমন্ত্রীসহ বন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ প্রকল্পের বিরোধিতা করা সত্ত্বেও বর্তমান বন ও পরিবেশমন্ত্রী তাদের সিদ্ধান্ত আমলে আনেননি। বরং উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে দেয়া লিখিত আবেদনে সুপারিশ করেছেন।
একটি দেশে বোটানিক্যাল গার্ডেনের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট প্রতিমন্ত্রীর স্বভাবতই অন্যের চেয়ে বেশি জানার কথা। এ ব্যাপারে তার সংবেদনশীলতাই সবার কাম্য। অথচ কেন তিনি গাছ কাটার অবস্থান নিলেন তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়া স্বাভাবিক, সঙ্গতও বটে। উল্লেখ্য, ১৯৬১ সাল থেকে সংরক্ষিত বনের অন্তর্ভুক্ত এ গার্ডেনটি উদ্ভিদ বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং দেশি-বিদেশি গবেষকদের জন্য অপরিহার্য। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এ ধরনের উদ্যানকে পরম শুশ্রূষা সহকারে সুরক্ষা দেয়া হয়। কোনো ক্ষমতাধর ব্যক্তি-গোষ্ঠীর খেয়ালখুশিতে এ ধরনের সংরক্ষিত উদ্যানের একটি গাছও ফালতু অজুহাতে বিনাশ করা কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়। এভাবে নিজের পায়ে কুড়াল মেরে চিকিত্সার জন্য কোপেনহেগেন জলবায়ু সম্মেলনে গেলে কাঙ্ক্ষিত লাভ হবে না।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বাংলাদেশের মতো কৃষিপ্রধান দেশে শতকরা ২৫ ভাগ বনভূমি থাকা উচিত। সেখানে বর্তমানে বাংলাদেশে পাঁচ ভাগ নিবিড় বনাঞ্চলও নেই। দেশের চারটি বিখ্যাত বনাঞ্চল—সিলেট বনাঞ্চল, পার্বত্য চট্টগ্রাম বনাঞ্চল, ভাওয়াল ও মধুপুর বনাঞ্চল উজাড় হতে হতে স্থানবিশেষে খাঁখাঁ প্রান্তরে পরিণত হয়েছে। এমনকি সুন্দরবনের মতো ঐতিহ্যবাহী সংরক্ষিত বনেও অব্যাহত রয়েছে উজাড় প্রক্রিয়া। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় এই সর্বনাশের বিপরীতে কোমর কষে দাঁড়ায়নি কখনও। শুধু পরিবেশ রক্ষায় কাগুজে ফতোয়া জারি করে দায়মুক্ত থাকার চালাকি করেছে। বিকল্প উপায় থাকতেও ঢাকা শহরকে কংক্রিটের জঙ্গলে পরিণত করা হয়েছে। কয়েক বছর আগে ওসমানী উদ্যানের সমুদয় গাছ কাটার ফরমান জারি করেছিল তদানীন্তন সরকার। সচেতন ঢাকাবাসীর বাধায় সে যাত্রায় উদ্যানটি রক্ষা পেয়েছে। এবার বোটানিক্যাল গার্ডেনে গাছ কাটার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন স্বয়ং হাইকোর্ট। আমরা আশান্বিত কোর্টের সিদ্ধান্ত এবং পরিবেশ-সচেতন সবার সম্মিলিত চেষ্টায় বোটানিক্যাল গার্ডেনের গাছগুলোও রক্ষা পেতে পারে। এজন্য একযোগে এই হঠকারী সিদ্ধান্ত রুখতে হবে।
জানা গেছে, মিরপুর ন্যাশনাল বোটানিক্যাল গার্ডেনের দুষ্প্রাপ্য ও বিরল প্রজাতির কয়েকশ’ গাছ কেটে সরকারদলীয় নেতাদের জমি ভরাট করার একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের অনুমতি দিয়েছে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়। গার্ডেনের ভেতর দিয়ে একটি ব্যক্তিমালিকানাধীন ফার্মের সাড়ে তিন হাজার ফুট ড্রেজিং পাইপলাইন স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। এর ফলে গার্ডেনের এমন কিছু গাছ কাটা পড়বে যেগুলো দেশের কোথাও নেই এবং বিদেশ থেকে চারা এনে এর শূন্যতা পূরণও সহজে সম্ভব নয়। এই অবিমৃষ্যকারী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ রিট দায়ের করলে ১৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট তিন মাসের জন্য উল্লিখিত প্রকল্পের সব কাজ স্থগিত করেছেন এবং কেন এ প্রকল্প বাতিল করা হবে না তা জানাতে সরকারের প্রতি রুলনিশি জারি করেছেন। সবচেয়ে বিস্ময়কর সংবাদ হচ্ছে, সাবেক বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী এবং বর্তমান ভূমি প্রতিমন্ত্রীসহ বন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ প্রকল্পের বিরোধিতা করা সত্ত্বেও বর্তমান বন ও পরিবেশমন্ত্রী তাদের সিদ্ধান্ত আমলে আনেননি। বরং উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে দেয়া লিখিত আবেদনে সুপারিশ করেছেন।
একটি দেশে বোটানিক্যাল গার্ডেনের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট প্রতিমন্ত্রীর স্বভাবতই অন্যের চেয়ে বেশি জানার কথা। এ ব্যাপারে তার সংবেদনশীলতাই সবার কাম্য। অথচ কেন তিনি গাছ কাটার অবস্থান নিলেন তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়া স্বাভাবিক, সঙ্গতও বটে। উল্লেখ্য, ১৯৬১ সাল থেকে সংরক্ষিত বনের অন্তর্ভুক্ত এ গার্ডেনটি উদ্ভিদ বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং দেশি-বিদেশি গবেষকদের জন্য অপরিহার্য। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এ ধরনের উদ্যানকে পরম শুশ্রূষা সহকারে সুরক্ষা দেয়া হয়। কোনো ক্ষমতাধর ব্যক্তি-গোষ্ঠীর খেয়ালখুশিতে এ ধরনের সংরক্ষিত উদ্যানের একটি গাছও ফালতু অজুহাতে বিনাশ করা কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়। এভাবে নিজের পায়ে কুড়াল মেরে চিকিত্সার জন্য কোপেনহেগেন জলবায়ু সম্মেলনে গেলে কাঙ্ক্ষিত লাভ হবে না।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বাংলাদেশের মতো কৃষিপ্রধান দেশে শতকরা ২৫ ভাগ বনভূমি থাকা উচিত। সেখানে বর্তমানে বাংলাদেশে পাঁচ ভাগ নিবিড় বনাঞ্চলও নেই। দেশের চারটি বিখ্যাত বনাঞ্চল—সিলেট বনাঞ্চল, পার্বত্য চট্টগ্রাম বনাঞ্চল, ভাওয়াল ও মধুপুর বনাঞ্চল উজাড় হতে হতে স্থানবিশেষে খাঁখাঁ প্রান্তরে পরিণত হয়েছে। এমনকি সুন্দরবনের মতো ঐতিহ্যবাহী সংরক্ষিত বনেও অব্যাহত রয়েছে উজাড় প্রক্রিয়া। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় এই সর্বনাশের বিপরীতে কোমর কষে দাঁড়ায়নি কখনও। শুধু পরিবেশ রক্ষায় কাগুজে ফতোয়া জারি করে দায়মুক্ত থাকার চালাকি করেছে। বিকল্প উপায় থাকতেও ঢাকা শহরকে কংক্রিটের জঙ্গলে পরিণত করা হয়েছে। কয়েক বছর আগে ওসমানী উদ্যানের সমুদয় গাছ কাটার ফরমান জারি করেছিল তদানীন্তন সরকার। সচেতন ঢাকাবাসীর বাধায় সে যাত্রায় উদ্যানটি রক্ষা পেয়েছে। এবার বোটানিক্যাল গার্ডেনে গাছ কাটার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন স্বয়ং হাইকোর্ট। আমরা আশান্বিত কোর্টের সিদ্ধান্ত এবং পরিবেশ-সচেতন সবার সম্মিলিত চেষ্টায় বোটানিক্যাল গার্ডেনের গাছগুলোও রক্ষা পেতে পারে। এজন্য একযোগে এই হঠকারী সিদ্ধান্ত রুখতে হবে।
No comments