দুঃখ করো না, বাঁচো by জাহীদ রেজা নূর
একটি এফএম রেডিওতে বাজছিল গান। ‘হারিয়ে যাওয়া দিন হাত বাড়িয়ে ছুঁই...’। ভয়ের সংসারে স্বপ্ন বুনে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ গড়ার শপথ যেন শুনতে পাই তাতে। চমকে উঠতে হয়। প্রচলিত বিভিন্ন ধারার গানের মধ্যে ব্যতিক্রমী গানটি।
মৃত্তিকার গান। এই তো সেদিন, ১২ এপ্রিল, মৃক্তিকা ব্যান্ডের প্রথম অ্যালবাম দুঃখ করো না, বাঁচো প্রকাশিত হলো। গানগুলো জীবনঘনিষ্ঠ। আমাদের কথা, আমাদেরই দুঃখ, ক্লেদ, সংশয়, ভয় এবং তা থেকে বেরিয়ে আসার স্বপ্নই যেন ঘুরে ফিরে আসছে গানে। কণ্ঠ কোথাও উচ্চকিত নয়। শব্দ-ঝংকারে কানে তালা লাগিয়ে দেওয়ার কোনো চেষ্টা নেই। কথা ও সুর দিয়ে সত্যিকার বাংলাদেশকে স্পর্শ করার একটা বাসনাই শুধু টের পাওয়া যায়। ওদের কাছাকাছি হই।
ব্যান্ড-সদস্য মাহমুদুজ্জামান বাবু, আমজাদ, তুলসী সাহা, শোয়েব ও ফয়সালের সঙ্গে আড্ডা শুরু হলো বৈশাখের এক তপ্ত দিনে। অ্যালবামের সংগীত পরিকল্পক কিবরিয়া পারিবারিক কাজে আটকে পড়ায় জানিয়ে দিলেন, মানসিকভাবে এই আড্ডায় তিনিও শামিল।
রোমান্টিক ধাঁচের ‘আমি-তুমি’ ধরনের গান থেকে বের হওয়ার সুযোগ খুঁজছিল মৃত্তিকা। সমাজ-দেশে যে অসংগতিগুলো আছে, সেগুলোই হয়ে উঠেছে মৃত্তিকার গান। জনপ্রিয় ধারার বাইরে, স্রোতের বিপরীতে তরী বেয়ে যেতে কষ্ট হয় না? প্রশ্নটা ছুড়ে দেওয়া হয় ওদের দিকে। দেখা গেল, এ নিয়ে কোনো কষ্ট নেই মৃত্তিকা-সদস্যদের। আমজাদ আর শোয়েব মেঘদলে কাজ করে, একই সঙ্গে কাজ করে মৃত্তিকায়। স্টুডিও সেটআপও আছে। তুলসী সাহা মনের আনন্দে তবলা বাজান, পার্কেশানে দক্ষ মানুষ। জীবনের সবটা জুড়েই এই দলের সবার গান। গান ভালোবাসলে বহু কষ্টই ভুলে থাকা যায়।
আপনাদের গান তো প্রচলিত ধারার গণসংগীত নয়, কিন্তু মানুষের কথা বলে। প্রশ্নটা শেষ করার আগেই মাহমুদুজ্জামান বাবু বলেন, ‘যে ধারার গণসংগীত হয়েছে গত শতাব্দীতে, যে ধরনের সংকট ছিল তখন, এখন তা নেই; এখন সংকট ভিন্ন। আর একটা ব্যাপার দেখা যাচ্ছে, যাকে আমরা নাম দিয়েছি, “ভাবনাহীন কাল”। কোনো ভাবনা নেই। কেমন যেন একটা নিস্পৃহ হয়ে যাচ্ছে মানুষ। এ নিয়ে আমাদের গান আছে “মৌনতা ভালো নয়, কথা বললেই কথা শুরু হয়”। আমরা চাই, যে মানুষের মনে কান্না আছে, তাকে কাঁদাতে, যার মনে প্রশ্ন আছে, তা প্রকাশ করাতে, যে ভাবতে চায়, তাকে ভাবাতে। আমরা জানি, আমাদের গানের দিকে মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়বে না। কিন্তু তার পরও তারুণ্যের শক্তির প্রতি আমরা আস্থাবান। গণজাগরণে অল্প কিছু মানুষেরই মুখ্য ভূমিকা থাকে, তারাই পথ দেখান। পরে তাতে যুক্ত হয় সবাই। আমরা সেই অল্পসংখ্যক মানুষকেই টার্গেট করেছি, যাঁরা পথিকৃৎ হবেন।’
অ্যালবামের সবগুলো গানই আনন্দ দেয়, তবে ‘সংবিধান’ নামের গানটি যেভাবে শেষ হলো, তা যেন শরীরে কাঁপন ধরিয়ে দেয়।
মৃত্তিকার এই অ্যালবামে গান আছে ১০টি। ব্যবহার করা হয়েছে গিটার, কি-বোর্ড, ড্রামস, বাঁশি, সরোদ, ঢোল, তবলা, একতারা ও দোতারা। সবগুলো গান লিখেছেন ও সুর করেছেন মাহমুদুজ্জামান বাবু। তাঁরা জানালেন, দলের সামনের অ্যালবাম আসবে আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই। নামও ঠিক হয়ে গেছে—ভয় নেই।
গান গেয়ে কি সমাজ বদলানো যায়? এই প্রশ্নের উত্তরে তাঁরা বললেন, ‘আমরা ইতিহাসের হাত ধরে যাচ্ছি। আমাদের গানে ইতিহাস আছে। আমরা ইতিহাস তৈরি করি না, কিন্তু ইতিহাসের সঙ্গে ভবিষ্যতের সেতুবন্ধন করি।’
ব্যান্ড-সদস্য মাহমুদুজ্জামান বাবু, আমজাদ, তুলসী সাহা, শোয়েব ও ফয়সালের সঙ্গে আড্ডা শুরু হলো বৈশাখের এক তপ্ত দিনে। অ্যালবামের সংগীত পরিকল্পক কিবরিয়া পারিবারিক কাজে আটকে পড়ায় জানিয়ে দিলেন, মানসিকভাবে এই আড্ডায় তিনিও শামিল।
রোমান্টিক ধাঁচের ‘আমি-তুমি’ ধরনের গান থেকে বের হওয়ার সুযোগ খুঁজছিল মৃত্তিকা। সমাজ-দেশে যে অসংগতিগুলো আছে, সেগুলোই হয়ে উঠেছে মৃত্তিকার গান। জনপ্রিয় ধারার বাইরে, স্রোতের বিপরীতে তরী বেয়ে যেতে কষ্ট হয় না? প্রশ্নটা ছুড়ে দেওয়া হয় ওদের দিকে। দেখা গেল, এ নিয়ে কোনো কষ্ট নেই মৃত্তিকা-সদস্যদের। আমজাদ আর শোয়েব মেঘদলে কাজ করে, একই সঙ্গে কাজ করে মৃত্তিকায়। স্টুডিও সেটআপও আছে। তুলসী সাহা মনের আনন্দে তবলা বাজান, পার্কেশানে দক্ষ মানুষ। জীবনের সবটা জুড়েই এই দলের সবার গান। গান ভালোবাসলে বহু কষ্টই ভুলে থাকা যায়।
আপনাদের গান তো প্রচলিত ধারার গণসংগীত নয়, কিন্তু মানুষের কথা বলে। প্রশ্নটা শেষ করার আগেই মাহমুদুজ্জামান বাবু বলেন, ‘যে ধারার গণসংগীত হয়েছে গত শতাব্দীতে, যে ধরনের সংকট ছিল তখন, এখন তা নেই; এখন সংকট ভিন্ন। আর একটা ব্যাপার দেখা যাচ্ছে, যাকে আমরা নাম দিয়েছি, “ভাবনাহীন কাল”। কোনো ভাবনা নেই। কেমন যেন একটা নিস্পৃহ হয়ে যাচ্ছে মানুষ। এ নিয়ে আমাদের গান আছে “মৌনতা ভালো নয়, কথা বললেই কথা শুরু হয়”। আমরা চাই, যে মানুষের মনে কান্না আছে, তাকে কাঁদাতে, যার মনে প্রশ্ন আছে, তা প্রকাশ করাতে, যে ভাবতে চায়, তাকে ভাবাতে। আমরা জানি, আমাদের গানের দিকে মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়বে না। কিন্তু তার পরও তারুণ্যের শক্তির প্রতি আমরা আস্থাবান। গণজাগরণে অল্প কিছু মানুষেরই মুখ্য ভূমিকা থাকে, তারাই পথ দেখান। পরে তাতে যুক্ত হয় সবাই। আমরা সেই অল্পসংখ্যক মানুষকেই টার্গেট করেছি, যাঁরা পথিকৃৎ হবেন।’
অ্যালবামের সবগুলো গানই আনন্দ দেয়, তবে ‘সংবিধান’ নামের গানটি যেভাবে শেষ হলো, তা যেন শরীরে কাঁপন ধরিয়ে দেয়।
মৃত্তিকার এই অ্যালবামে গান আছে ১০টি। ব্যবহার করা হয়েছে গিটার, কি-বোর্ড, ড্রামস, বাঁশি, সরোদ, ঢোল, তবলা, একতারা ও দোতারা। সবগুলো গান লিখেছেন ও সুর করেছেন মাহমুদুজ্জামান বাবু। তাঁরা জানালেন, দলের সামনের অ্যালবাম আসবে আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই। নামও ঠিক হয়ে গেছে—ভয় নেই।
গান গেয়ে কি সমাজ বদলানো যায়? এই প্রশ্নের উত্তরে তাঁরা বললেন, ‘আমরা ইতিহাসের হাত ধরে যাচ্ছি। আমাদের গানে ইতিহাস আছে। আমরা ইতিহাস তৈরি করি না, কিন্তু ইতিহাসের সঙ্গে ভবিষ্যতের সেতুবন্ধন করি।’
No comments