ম্যালেরিয়া ঝুঁকি-চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত?

দেশে বিশেষ করে বৃহত্তর চট্টগ্রাম ও সিলেটের পাহাড়ি অঞ্চলে ম্যালেরিয়া ঝুঁকি না কমার খবর আমরা প্রতিবারই এ সংক্রান্ত দিবস পালনের সময় জেনে আসছি। তার মানে, বছর বছর কেবল কথার ফুলঝুরিই মিলছে, কাজ হচ্ছে না। অথচ একটি বিশেষ এলাকায় সীমাবদ্ধ একটি বিশেষ প্রজাতির মশক নির্মূল কঠিন হওয়ার কথা ছিল না।


ম্যালেরিয়ার হাত থেকে মানুষকে রক্ষা এবং এর বিস্তার রোধে একাধিক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা তৎপর থাকার পরও কেন এখনও এই রোগে প্রাণহানি ঘটছে, তা বড় প্রশ্ন হয়েই থাকবে। অস্বীকার করা যাবে না যে, ম্যালেরিয়াতে মৃত্যুর হার খুব বেশি নয়; কিন্তু ঝুঁকির হার কেন কমছে না? বুধবার সমকালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এখনও প্রতিবছর গড়ে ৫০ হাজার মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এই সংখ্যাকে খাটো করে দেখার অবকাশ নেই। দিবস পালনের পাশাপাশি সংশ্লিষ্টরা এর কারণ ও কার্যকর প্রতিকারের প্রতিও মনোযোগ দেবেন বলে প্রত্যাশা। সাধারণভাবে মনে করা হয়, আক্রান্ত এলাকাগুলোয় ম্যালেরিয়া প্রতিরোধক বিশেষ মশারি ব্যবহার করলেই ঝুঁকি অনেক কমে যায়। কমে যায় রোগের বিস্তার। পাহাড়ি অঞ্চলে কি পর্যাপ্ত বিশেষ মশারি সরবরাহ করা হচ্ছে? কর্তৃপক্ষ খতিয়ে দেখুক। এটা জানা কথা যে, ম্যালেরিয়া রোগের চিকিৎসার চেয়ে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ অনেক বেশি সহজ। তারপরও কেন সে ব্যাপারে মনোযোগ কম, ভাবনার বিষয়। ম্যালেরিয়া প্রতিরোধের সঙ্গে যে বিপুল বাণিজ্য সংশ্লিষ্টতা রয়েছে, তার কোনো অবদান থাকলেও থাকতে পারে। এই খাতে কর্মরত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থার মধ্যে সমন্বয়েও জোর দিতে হবে। জোর দিতে হবে সচেতনতামূলক কর্মসূচিতেও। পাশাপাশি ম্যালেরিয়া প্রতিরোধ, নির্মূলে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচিগুলো আরও বাস্তবানুগ ও কার্যকর করার আহ্বান জানাই আমরা। ম্যালেরিয়া আমাদের পুরনো সমস্যা, অস্বীকার করা যাবে না।
কিন্তু সেটা চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত হতে পারে না

No comments

Powered by Blogger.