দাম নির্ধারণ হয়নি-খাদ্যমন্ত্রী-সচিব একসঙ্গে বিদেশে by আশরাফুল হক রাজীব
ধান উঠছে,হাওর অঞ্চলে ২৫ শতাংশ বোরো ধান কাটা শেষ হয়েছে। অন্যান্য অঞ্চলেও ধান কাটা শুরু হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত বোরো ধান-চালের দাম নির্ধারণের কোনো খবর নেই। বিধিবিধান উপেক্ষা করে খাদ্যমন্ত্রী ও সচিব একই সময়ে বিদেশে অবস্থান করায় মূল্য নির্ধারণী সভা করতে পারছে না খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ ইউনিট। ফলে কৃষক কম দামে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।
খাদ্যমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক ও খাদ্যসচিব বরুণ দেব মিত্র দুজনই যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। মন্ত্রী রয়েছেন ওয়াশিংটনে। গত ১৪ এপ্রিল তিনি সেখানে গেছেন। যোগ দিচ্ছেন গ্লোবাল ফান্ড ফর ডিজাস্টার রিস্ক রিডাকশনের (ডিএফডিআর) স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকে। আগামীকাল শুক্রবার তাঁর দেশে ফেরার কথা রয়েছে। তবে তিনি আজও ফিরতে পারেন বলে তাঁর দপ্তর থেকে জানা গেছে। খাদ্যসচিব বরুণ দেব মিত্র (বিডি মিত্র) যোগ দিয়েছেন এঙ্পোর্ট সার্টিফিকেশন ওয়াকর্শপে। এটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডে। গত মঙ্গল ও বুধবার অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে অংশ নিতে তিনি শুক্রবার দেশ ত্যাগ করেন। সচিব মঙ্গলবার দেশে ফিরতে পারেন বলে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
মন্ত্রী ও আমলাদের বিদেশ ভ্রমণের ওপর বিধিনিষেধ রয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করে বছরের দীর্ঘ সময় বিদেশে অবস্থান করেন সরকারের আমলারা। কোনো কোনো মন্ত্রীও তাঁদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিদেশে অবস্থান করেন। পদ ও দায়িত্বের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয় এমন বৈদেশিক সেমিনার, ওয়ার্কশপ, শিক্ষা সফরেও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন। আবার অনেক ক্ষেত্রে একই কর্মকর্তা বারবার একই ধরনের কর্মসূচিতে বিদেশ ভ্রমণ করছেন। এর ফলে সরকারি কাজে প্রত্যাশিত গতিশীলতা আসছে না। দফায় দফায় নির্দেশনা জারি করেও প্রশাসনে গতি আনতে পারছে না সরকার। এ পরিস্থিতিতে দেশের স্বার্থে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মন্ত্রী ও সচিবের একসঙ্গে (একত্রে বা একই সময়ে) বিদেশ ভ্রমণ নিষিদ্ধ করা হয়। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালের ১৩ অক্টোবর পরিপত্র জারি করে এ বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এক পৃষ্ঠার এই পরিপত্র জারির পরও পরিস্থিতির কোনো উন্নতি দেখা যায়নি। এর প্রায় ২০ মাস পর বিদেশ ভ্রমণের অনুমতি ও অনুসরণীয় আনুষঙ্গিক বিষয়াদি নিয়ে নতুন করে তিন পাতার একটি সমন্বিত পরিপত্র জারি করা হয়। সমন্বিত পরিপত্রে মন্ত্রী-সচিবের একসঙ্গে বিদেশ ভ্রমণ আরো সীমিত করা হয়। এতে বলা হয়েছে, 'মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী-সচিবগণের একত্রে বিদেশ ভ্রমণ সাধারণভাবে পরিহার করতে হবে। জাতীয় স্বার্থে বিশেষ ক্ষেত্রে বিদেশ ভ্রমণ অপরিহার্য হলে অত্যন্ত সীমিত ক্ষেত্রে এর ব্যত্যয় করা যেতে পারে।'
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, কয়েক বছর ধরে দেশে বোরো উৎপাদন ভালো হচ্ছে। ফলে ধানের দাম নিয়ে প্রতিবছরই কৃষককে ঝুঁকির মধ্যে থাকতে হচ্ছে। সরকারের বোরো চাল সংগ্রহের ওপর বাজারে ধানের দাম ওঠানামা করে। বোরো সংগ্রহের জন্য সরকারের সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হলে ব্যবসায়ীরা সুযোগ নেন। তাঁরা একাট্টা হয়ে ধানের দাম কমিয়ে দেন। এবারও সেই সুযোগ নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। সরকার মোট সংগ্রহের প্রায় ৮০ ভাগ সংগ্রহ করে বোরো মৌসুমে। ফলে বোরো মৌসুম সরকারের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়। আবার বেশির ভাগ কৃষক বোরো ফসল উৎপাদন করেন বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য নিয়ে। বর্তমানে সরকারের গুদামে প্রায় ১৩ লাখ টন খাদ্যশস্য মজুদ রয়েছে। এর মধ্যে চালের পরিমাণ ১১ লাখ টন। সরকারি খাদ্যগুদামের ধারণক্ষমতা মাত্র ১৬ লাখ টন। এ অবস্থায় গুদাম খালি না করলে চলতি মৌসুমে বোরো চাল সংগ্রহ করা সরকারের জন্য দুঃসাধ্য হবে। আবার গুদামের মজুদ চাল এ সময়ে বাজারে ছেড়ে দিলে ধানের দাম আরো কমে যাবে। এমন সংকটময় পরিস্থিতিতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে চলতি মৌসুমে সরকার অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে কী পরিমাণ চাল সংগ্রহ করবে এবং গুদামে মজুদ চাল কী করা হবে। অথচ এ সময়ে খাদ্যমন্ত্রী ও খাদ্যসচিব দুজনই দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। তাঁরা দেশে না থাকায় খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটি বৈঠক করতে পারছে না। উচ্চ ক্ষমতার এ বৈঠকে ধান-চালের মূল্য নির্ধারণ ছাড়াও দেশের খাদ্য পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়। খাদ্যমন্ত্রী এ কমিটির প্রধান। এ ছাড়া কৃষিমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রী, স্থানীয় সরকারমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সচিবরা এ কমিটির সদস্য।
খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশে ধানের উৎপাদন ভালো হলেও ঢালাওভাবে রপ্তানির সিদ্ধান্ত নেওয়াও ঝুঁকিপূর্ণ। সরকারও সে বিষয়ে সজাগ রয়েছে। সরকারের গুদামে পর্যাপ্ত চাল মজুদ থাকলেও সেই চাল আরো এক বছর গুদামে রাখা যাবে কি না, তাও প্রশ্নসাপেক্ষ। সরকার এখনই অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে চাল সংগ্রহ না করলে আগামী দিনে আমদানির ওপর নির্ভর করতে হবে। অন্যদিকে সরকার এখনই চাল না কিনলে ব্যবসায়ীরা কৃষককে ঠকাবেন। এ পরিস্থিতিতে কৃষকের স্বার্থ রক্ষায় অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে বোরো চাল সংগ্রহ করা ছাড়া সরকারের বিকল্প নেই। কৃষি মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকার সীমিত পর্যায়ে চাল রপ্তানি করতে পারে। অন্যদিকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, কৃষকের স্বার্থ রক্ষা এবং নিরাপদ মজুদ গড়ে তুলতে চলতি মৌসুমে সরকারকে অবশ্যই অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে বোরো চাল সংগ্রহ করতে হবে। গুদামে চালের যে মজুদ রয়েছে, তা আরো এক বছর সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে না। ফলে নিয়ন্ত্রিতভাবে আগের মজুদকৃত চাল রপ্তানি করা যেতে পারে।
উল্লেখ্য, এর আগে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই ১৯৯৯ ও ২০০০ সালে বাংলাদেশ থেকে চাল রপ্তানি করা হয়। দুই বছর রপ্তানির পর দেশ আবার আমদানিকারক দেশে পরিণত হয়।
ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক ও অর্থনীতিবিদ ড. মাহবুব হোসেন বলেন, শুধু এবারই ভালো ফলন হয়েছে তা নয়, গত ফসলের বিপুল পরিমাণ মজুদ সরকারের গুদামে যেমন রয়েছে, ব্যবসায়ীদের কাছেও রয়েছে। ওই মজুদ ছেড়ে দিলে বাজার আরো পড়ে যাবে। এ পরিস্থিতিতে আগামী জুলাই পর্যন্ত নিয়ন্ত্রিতভাবে কিছু চাল রপ্তানি করা যেতে পারে।
কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী গত মঙ্গলবার কালের কণ্ঠকে বলেন, খাদ্যমন্ত্রী বিদেশ থেকে ফিরে এলেই পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির বৈঠক হবে। এ বৈঠক করার সময় শেষ হয়ে যায়নি। এক প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী বলেন, 'সরকারের কৃষিবান্ধব নীতির জন্য কৃষকরা ভালো ফলন পায়। এখানে প্রকৃতি একটা বড় ফ্যাক্টর হলেও আমরা কৃষকদের সহায়তা করি। এরই ফলাফল গত কয়েক বছরের বাম্পার ফলন। এই অবস্থায় দেশ রপ্তানির একটা পর্যায়ে পৌছেছে। আমরা অ্যারোমেটিক (সুগন্ধি) চাল রপ্তানি করছি। অন্যান্য চালের রপ্তানির বিষয়ে কৌশলে এগিয়ে যেতে হবে। রপ্তানি করতে গেলে দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।' ধানের দাম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, হাওরে ২৫ শতাংশ ধান কাটা হলেও অন্যান্য অঞ্চলে মাত্র কাটা শুরু হয়েছে। কৃষকরা ভেজা ধান বিক্রি করছেন। ভেজা ধানের দাম কম।
মন্ত্রী ও আমলাদের বিদেশ ভ্রমণের ওপর বিধিনিষেধ রয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করে বছরের দীর্ঘ সময় বিদেশে অবস্থান করেন সরকারের আমলারা। কোনো কোনো মন্ত্রীও তাঁদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিদেশে অবস্থান করেন। পদ ও দায়িত্বের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয় এমন বৈদেশিক সেমিনার, ওয়ার্কশপ, শিক্ষা সফরেও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন। আবার অনেক ক্ষেত্রে একই কর্মকর্তা বারবার একই ধরনের কর্মসূচিতে বিদেশ ভ্রমণ করছেন। এর ফলে সরকারি কাজে প্রত্যাশিত গতিশীলতা আসছে না। দফায় দফায় নির্দেশনা জারি করেও প্রশাসনে গতি আনতে পারছে না সরকার। এ পরিস্থিতিতে দেশের স্বার্থে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মন্ত্রী ও সচিবের একসঙ্গে (একত্রে বা একই সময়ে) বিদেশ ভ্রমণ নিষিদ্ধ করা হয়। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালের ১৩ অক্টোবর পরিপত্র জারি করে এ বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এক পৃষ্ঠার এই পরিপত্র জারির পরও পরিস্থিতির কোনো উন্নতি দেখা যায়নি। এর প্রায় ২০ মাস পর বিদেশ ভ্রমণের অনুমতি ও অনুসরণীয় আনুষঙ্গিক বিষয়াদি নিয়ে নতুন করে তিন পাতার একটি সমন্বিত পরিপত্র জারি করা হয়। সমন্বিত পরিপত্রে মন্ত্রী-সচিবের একসঙ্গে বিদেশ ভ্রমণ আরো সীমিত করা হয়। এতে বলা হয়েছে, 'মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী-সচিবগণের একত্রে বিদেশ ভ্রমণ সাধারণভাবে পরিহার করতে হবে। জাতীয় স্বার্থে বিশেষ ক্ষেত্রে বিদেশ ভ্রমণ অপরিহার্য হলে অত্যন্ত সীমিত ক্ষেত্রে এর ব্যত্যয় করা যেতে পারে।'
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, কয়েক বছর ধরে দেশে বোরো উৎপাদন ভালো হচ্ছে। ফলে ধানের দাম নিয়ে প্রতিবছরই কৃষককে ঝুঁকির মধ্যে থাকতে হচ্ছে। সরকারের বোরো চাল সংগ্রহের ওপর বাজারে ধানের দাম ওঠানামা করে। বোরো সংগ্রহের জন্য সরকারের সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হলে ব্যবসায়ীরা সুযোগ নেন। তাঁরা একাট্টা হয়ে ধানের দাম কমিয়ে দেন। এবারও সেই সুযোগ নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। সরকার মোট সংগ্রহের প্রায় ৮০ ভাগ সংগ্রহ করে বোরো মৌসুমে। ফলে বোরো মৌসুম সরকারের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়। আবার বেশির ভাগ কৃষক বোরো ফসল উৎপাদন করেন বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য নিয়ে। বর্তমানে সরকারের গুদামে প্রায় ১৩ লাখ টন খাদ্যশস্য মজুদ রয়েছে। এর মধ্যে চালের পরিমাণ ১১ লাখ টন। সরকারি খাদ্যগুদামের ধারণক্ষমতা মাত্র ১৬ লাখ টন। এ অবস্থায় গুদাম খালি না করলে চলতি মৌসুমে বোরো চাল সংগ্রহ করা সরকারের জন্য দুঃসাধ্য হবে। আবার গুদামের মজুদ চাল এ সময়ে বাজারে ছেড়ে দিলে ধানের দাম আরো কমে যাবে। এমন সংকটময় পরিস্থিতিতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে চলতি মৌসুমে সরকার অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে কী পরিমাণ চাল সংগ্রহ করবে এবং গুদামে মজুদ চাল কী করা হবে। অথচ এ সময়ে খাদ্যমন্ত্রী ও খাদ্যসচিব দুজনই দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। তাঁরা দেশে না থাকায় খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটি বৈঠক করতে পারছে না। উচ্চ ক্ষমতার এ বৈঠকে ধান-চালের মূল্য নির্ধারণ ছাড়াও দেশের খাদ্য পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়। খাদ্যমন্ত্রী এ কমিটির প্রধান। এ ছাড়া কৃষিমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রী, স্থানীয় সরকারমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সচিবরা এ কমিটির সদস্য।
খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশে ধানের উৎপাদন ভালো হলেও ঢালাওভাবে রপ্তানির সিদ্ধান্ত নেওয়াও ঝুঁকিপূর্ণ। সরকারও সে বিষয়ে সজাগ রয়েছে। সরকারের গুদামে পর্যাপ্ত চাল মজুদ থাকলেও সেই চাল আরো এক বছর গুদামে রাখা যাবে কি না, তাও প্রশ্নসাপেক্ষ। সরকার এখনই অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে চাল সংগ্রহ না করলে আগামী দিনে আমদানির ওপর নির্ভর করতে হবে। অন্যদিকে সরকার এখনই চাল না কিনলে ব্যবসায়ীরা কৃষককে ঠকাবেন। এ পরিস্থিতিতে কৃষকের স্বার্থ রক্ষায় অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে বোরো চাল সংগ্রহ করা ছাড়া সরকারের বিকল্প নেই। কৃষি মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকার সীমিত পর্যায়ে চাল রপ্তানি করতে পারে। অন্যদিকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, কৃষকের স্বার্থ রক্ষা এবং নিরাপদ মজুদ গড়ে তুলতে চলতি মৌসুমে সরকারকে অবশ্যই অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে বোরো চাল সংগ্রহ করতে হবে। গুদামে চালের যে মজুদ রয়েছে, তা আরো এক বছর সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে না। ফলে নিয়ন্ত্রিতভাবে আগের মজুদকৃত চাল রপ্তানি করা যেতে পারে।
উল্লেখ্য, এর আগে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই ১৯৯৯ ও ২০০০ সালে বাংলাদেশ থেকে চাল রপ্তানি করা হয়। দুই বছর রপ্তানির পর দেশ আবার আমদানিকারক দেশে পরিণত হয়।
ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক ও অর্থনীতিবিদ ড. মাহবুব হোসেন বলেন, শুধু এবারই ভালো ফলন হয়েছে তা নয়, গত ফসলের বিপুল পরিমাণ মজুদ সরকারের গুদামে যেমন রয়েছে, ব্যবসায়ীদের কাছেও রয়েছে। ওই মজুদ ছেড়ে দিলে বাজার আরো পড়ে যাবে। এ পরিস্থিতিতে আগামী জুলাই পর্যন্ত নিয়ন্ত্রিতভাবে কিছু চাল রপ্তানি করা যেতে পারে।
কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী গত মঙ্গলবার কালের কণ্ঠকে বলেন, খাদ্যমন্ত্রী বিদেশ থেকে ফিরে এলেই পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির বৈঠক হবে। এ বৈঠক করার সময় শেষ হয়ে যায়নি। এক প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী বলেন, 'সরকারের কৃষিবান্ধব নীতির জন্য কৃষকরা ভালো ফলন পায়। এখানে প্রকৃতি একটা বড় ফ্যাক্টর হলেও আমরা কৃষকদের সহায়তা করি। এরই ফলাফল গত কয়েক বছরের বাম্পার ফলন। এই অবস্থায় দেশ রপ্তানির একটা পর্যায়ে পৌছেছে। আমরা অ্যারোমেটিক (সুগন্ধি) চাল রপ্তানি করছি। অন্যান্য চালের রপ্তানির বিষয়ে কৌশলে এগিয়ে যেতে হবে। রপ্তানি করতে গেলে দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।' ধানের দাম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, হাওরে ২৫ শতাংশ ধান কাটা হলেও অন্যান্য অঞ্চলে মাত্র কাটা শুরু হয়েছে। কৃষকরা ভেজা ধান বিক্রি করছেন। ভেজা ধানের দাম কম।
No comments