অপরাধমুক্ত কিষ্কিন্ধাপুর by মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান
হে মহামান্য রাষ্ট্রপতি,
আর্জেস বোমার আঘাতে
দু'পা'ই হারায়ে
আর্জেস বোমার আঘাতে
দু'পা'ই হারায়ে
কয়েক ঘড়ি পরে
প্রাণ হারালেন
আপনার প্রাণপ্রিয় সহধর্মিণী।
কী মর্মান্তিক! কী মর্মান্তিক!
হে মহামান্য প্রধানমন্ত্রী,
আর্জেস বোমার বিস্ফোরণে
আপনার শ্রবণশক্তি
ক্ষতিগ্রস্ত হলো যখন
জনগণের ক্ষোভ-সংক্ষোভের কথা
শোনার জন্য শ্রবণেন্দ্রিয় আপনার
উৎকর্ণ রাখার কথা।
কী কর্ণবিদারক! কী মর্মবিদারক!
হে বেদনাবিধুর গৃহবধূ!
আপনার স্বামী ছিলেন
দেশের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী
বোমার আঘাতে আহত হয়ে
কারো কাছ থেকেই পেলেন না ত্বরিত সেবা।
আজ এখন স্বামীর হত্যা মামলায়
আপনাকে নারাজি দিতে হচ্ছে।
কী হৃদয়বিদারক! কী মর্মন্তুদ!
হে বাংলার সংস্কৃতিসেবীরা,
পয়লা বৈশাখে রমনার বটমূলে
এই হত্যাযজ্ঞ শুরু হলো
বেতমিজ মালাউন সংস্কৃতির
বেশরা বেদাত নিধনে।
কী অরুন্তুদ! কী মর্মন্তুদ!
হে দেশের সাম্যবাদীরা,
তোমাদের সম্মেলনে বোমা পড়লে
প্রাণ দিল সাম্যবাদী তরুণেরা
যারা দূরদেশের স্বপ্ন দেখে
নিজের দেশে বিপ্লব ঘটানোর স্বপ্ন দেখে :
'সোভিয়েত গেছে গোছে
বাংলাদেশ হবে লাতিন আমেরিকা।'
কী মর্মান্তিক! কী মর্মান্তিক!
হে উদীচী-সংস্কৃতিসেবীরা,
তোমাদের অনুষ্ঠানে বোমা পড়ে
তোমরা ছিন্নভিন্ন হয়ে গেলে।
বিদেশিদের প্রেরণায় উদ্দীপ্ত হয়ে
তোমরা যে বেশরা কাজ করেছিলে
তার তরেই নাকি সমুচিত এই শাস্তি!
কী মর্মভেদী! কী মর্মভেদী!
হে মন্ত্রী, সচিব, শৃঙ্খলাবাহিনীর প্রধানেরা,
আর সাদা পোশাকের টিকটিকি-গোয়েন্দারা,
আপনাদের সুদক্ষ সমবায়ে
সরকারি জাহাজঘাটায়
সরকারি পরিবহনে
অস্ত্র পাচার হলো!
কী আজব! কী আজব!
তাজ্জব! তাজ্জব!
এই সব দেখেশুনে
অপরাধমুক্ত কিষ্কিন্ধাপুরের
মনতাজ মোল্লা উদাস নয়নে চেয়ে রয়।
মহামান্যদের যখন এই অবস্থা
তখন গরিবের আবার বিচার চাওয়া!
সে বিচার চায়নি।
বলা নেই কওয়া নেই তার বড় ছেলে লাপাত্তা হয়ে গেল
তার ছোট ভাইকে পাড়ার দুর্বৃত্তরা প্রকাশ্যে করল খুন
মেজো মেয়েকে পাড়ারই বখাটেরা
পালা করে করল ধর্ষণ।
মেয়েটি কাউকে না জানিয়ে আত্মহত্যা করে
হারিয়ে গেল নীরবে।
পুরস্কারপ্রাপ্ত এনতাজ দারোগা
মনতাজের কাছে
এসে করজোড়ে কয়
'আমি পদক নেওয়ার জন্য ঢাকায়,
পরে জাতিসংঘে যাব।
তোমার জন্যই আমার এলাকা আজ অপরাধমুক্ত,
তিন তিনটে জঘন্য অপরাধ
তুমি কেমন করে গিলে ফেললে, মহারাজ!'
২২ জুন, ২০১১
প্রাণ হারালেন
আপনার প্রাণপ্রিয় সহধর্মিণী।
কী মর্মান্তিক! কী মর্মান্তিক!
হে মহামান্য প্রধানমন্ত্রী,
আর্জেস বোমার বিস্ফোরণে
আপনার শ্রবণশক্তি
ক্ষতিগ্রস্ত হলো যখন
জনগণের ক্ষোভ-সংক্ষোভের কথা
শোনার জন্য শ্রবণেন্দ্রিয় আপনার
উৎকর্ণ রাখার কথা।
কী কর্ণবিদারক! কী মর্মবিদারক!
হে বেদনাবিধুর গৃহবধূ!
আপনার স্বামী ছিলেন
দেশের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী
বোমার আঘাতে আহত হয়ে
কারো কাছ থেকেই পেলেন না ত্বরিত সেবা।
আজ এখন স্বামীর হত্যা মামলায়
আপনাকে নারাজি দিতে হচ্ছে।
কী হৃদয়বিদারক! কী মর্মন্তুদ!
হে বাংলার সংস্কৃতিসেবীরা,
পয়লা বৈশাখে রমনার বটমূলে
এই হত্যাযজ্ঞ শুরু হলো
বেতমিজ মালাউন সংস্কৃতির
বেশরা বেদাত নিধনে।
কী অরুন্তুদ! কী মর্মন্তুদ!
হে দেশের সাম্যবাদীরা,
তোমাদের সম্মেলনে বোমা পড়লে
প্রাণ দিল সাম্যবাদী তরুণেরা
যারা দূরদেশের স্বপ্ন দেখে
নিজের দেশে বিপ্লব ঘটানোর স্বপ্ন দেখে :
'সোভিয়েত গেছে গোছে
বাংলাদেশ হবে লাতিন আমেরিকা।'
কী মর্মান্তিক! কী মর্মান্তিক!
হে উদীচী-সংস্কৃতিসেবীরা,
তোমাদের অনুষ্ঠানে বোমা পড়ে
তোমরা ছিন্নভিন্ন হয়ে গেলে।
বিদেশিদের প্রেরণায় উদ্দীপ্ত হয়ে
তোমরা যে বেশরা কাজ করেছিলে
তার তরেই নাকি সমুচিত এই শাস্তি!
কী মর্মভেদী! কী মর্মভেদী!
হে মন্ত্রী, সচিব, শৃঙ্খলাবাহিনীর প্রধানেরা,
আর সাদা পোশাকের টিকটিকি-গোয়েন্দারা,
আপনাদের সুদক্ষ সমবায়ে
সরকারি জাহাজঘাটায়
সরকারি পরিবহনে
অস্ত্র পাচার হলো!
কী আজব! কী আজব!
তাজ্জব! তাজ্জব!
এই সব দেখেশুনে
অপরাধমুক্ত কিষ্কিন্ধাপুরের
মনতাজ মোল্লা উদাস নয়নে চেয়ে রয়।
মহামান্যদের যখন এই অবস্থা
তখন গরিবের আবার বিচার চাওয়া!
সে বিচার চায়নি।
বলা নেই কওয়া নেই তার বড় ছেলে লাপাত্তা হয়ে গেল
তার ছোট ভাইকে পাড়ার দুর্বৃত্তরা প্রকাশ্যে করল খুন
মেজো মেয়েকে পাড়ারই বখাটেরা
পালা করে করল ধর্ষণ।
মেয়েটি কাউকে না জানিয়ে আত্মহত্যা করে
হারিয়ে গেল নীরবে।
পুরস্কারপ্রাপ্ত এনতাজ দারোগা
মনতাজের কাছে
এসে করজোড়ে কয়
'আমি পদক নেওয়ার জন্য ঢাকায়,
পরে জাতিসংঘে যাব।
তোমার জন্যই আমার এলাকা আজ অপরাধমুক্ত,
তিন তিনটে জঘন্য অপরাধ
তুমি কেমন করে গিলে ফেললে, মহারাজ!'
২২ জুন, ২০১১
No comments