দরিদ্র মানুষের সংখ্যা-দুষ্টচক্র থেকে এখনো মুক্ত নয় মানুষ
সংবাদটি সুসংবাদ হিসেবেই ধরা যেতে পারে। অনেক হতাশার মধ্যে যেন একটু আশার আলো। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাব অনুযায়ী, গত পাঁচ বছরে দেশে দারিদ্র্য পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। ২০০৫ সালে দেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ৪০ শতাংশ, সেখানে বর্তমানে ৩১ দশমিক ৫ শতাংশ।
বেড়েছে মানুষের জীবনযাত্রার মান। শহরাঞ্চলে কমেছে আয়বৈষম্য।
একটি সাম্যের দেশ ছিল আমাদের কাম্য। সেই স্বপ্ন নিয়েই দেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল, কিন্তু নানা ঘাত-প্রতিঘাতে সেই স্বপ্নের দেশ পাইনি আমরা। দেশে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা দিন দিন বেড়েছে। দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে মানুষকে। মানুষের সে লড়াই এখনো থেমে নেই। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর যে পরিসংখ্যান আমরা পাচ্ছি তাতে দেখা যাচ্ছে, দরিদ্র মানুষের সংখ্যা কমেছে। এটা একদিক থেকে ইতিবাচক। কিন্তু এর সঙ্গে একটি নেতিবাচক দিকও আছে। গ্রামাঞ্চলে আয়বৈষম্য বেড়েছে। অন্যদিকে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা যে হারে কমেছে, সেটা খুব আশাব্যঞ্জক বলা যায় কি?
আমাদের সমাজ একটা পালাবদলের মধ্য দিয়ে চলছে। সামাজিক এই পালাবদলে একটি শ্রেণী লাভবান হলে অন্য শ্রেণী ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়। স্বাধীনতার পর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের মধ্যবিত্ত শ্রেণী। মধ্যবিত্ত শ্রেণীকে বলা হয় সমাজের নিয়ামক। সমাজের বুদ্ধিবৃত্তিক দিকটি নিয়ন্ত্রণ করে মধ্যবিত্ত। এই মধ্যবিত্ত শ্রেণী যখন ক্ষতিগ্রস্ত হয়, ভেতরে ভেতরে ভেঙে যায়, তখন সমাজের সৌন্দর্য নষ্ট হয়। বাধাগ্রস্ত হয় সামাজিক বিকাশ। দারিদ্র্য এই মধ্যবিত্তকেও আঘাত করেছে। দেখা যাচ্ছে, দিনবদলের সঙ্গে সঙ্গে দেশের সমাজব্যবস্থায় পরিবর্তন এসেছে। আর্থসামাজিক-রাজনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন থেকে দেশের মানুষের ভাগ্যের কতটা পরিবর্তন হয়েছে সেটাই দেখার বিষয়। দেখা যাচ্ছে, স্বাধীনতার চার দশক পেরিয়ে এসেও মানুষের অনেক স্বপ্ন পূরণ হয়নি। দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি দেশের মানুষ। সবার জন্য মৌলিক সব চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হয়নি। অন্যদিকে সামাজিক মূল্যবোধ পাল্টে গেছে।
তার পরও বাংলাদেশে পরিসংখ্যান ব্যুরোর নতুন এই জরিপটি আমাদের দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে তাৎপর্যপূর্ণ। নানা কারণেই নতুন জরিপটি গুরুত্ব বহন করে। জরিপে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশে এমন একসময় দারিদ্র্য কমেছে, যখন বিশ্বে বড় ধরনের খাদ্য সংকট ও আর্থিক সংকট ছিল। ওই সময় বিশ্বে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ও দারিদ্র্য বেড়েছে। অর্থনীতিবিদদের মতে, প্রবৃদ্ধি ভালো হলে ও মাথাপিছু খাদ্য সরবরাহ ঠিক থাকলে মূল্যস্ফীতি হলেও দারিদ্র্য নিরসন সম্ভব হতে পারে। বিশ্বে যখন একটি বিশেষ দুঃসময় ছিল, তখন বাংলাদেশে গরিব মানুষের দারিদ্র্য কমেছে। কিন্তু এর পাশাপাশি নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণী খাদ্যের দাম বাড়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারা খাদ্যের পরিমাণ না কমালেও গুণগত মানে ছাড় দিতে বাধ্য হয়েছে। এদিকটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের সমাজের ভেতরে এভাবে ছাড় দিতে দিতে অনেককেই চলে যেতে হচ্ছে প্রান্তসীমায়। নীরবে ঘটে যাওয়া এই পরিবর্তন আমাদের দৃষ্টি হয়তো এড়িয়ে যাচ্ছে।
তার পরও দরিদ্র মানুষের সংখ্যা হ্রাস পাওয়ার এ খবরটি দেশের জন্য একটি ইতিবাচক। এই ধারা অব্যাহত থাকলে দেশ একদিন অবশ্যই দারিদ্র্যমুক্ত হবে। সামাজিক নিরাপত্তাবলয় নিশ্চিত করা গেলে এ পরিস্থিতির আরো উন্নতি হবে বলে ধরে নেওয়া যায়। তবে সব কিছুই নির্ভর করে রাজনৈতিক সদিচ্ছার ওপর। রাজনৈতিক সদিচ্ছা নিশ্চিত করা গেলে দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করা সম্ভব।
একটি সাম্যের দেশ ছিল আমাদের কাম্য। সেই স্বপ্ন নিয়েই দেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল, কিন্তু নানা ঘাত-প্রতিঘাতে সেই স্বপ্নের দেশ পাইনি আমরা। দেশে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা দিন দিন বেড়েছে। দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে মানুষকে। মানুষের সে লড়াই এখনো থেমে নেই। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর যে পরিসংখ্যান আমরা পাচ্ছি তাতে দেখা যাচ্ছে, দরিদ্র মানুষের সংখ্যা কমেছে। এটা একদিক থেকে ইতিবাচক। কিন্তু এর সঙ্গে একটি নেতিবাচক দিকও আছে। গ্রামাঞ্চলে আয়বৈষম্য বেড়েছে। অন্যদিকে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা যে হারে কমেছে, সেটা খুব আশাব্যঞ্জক বলা যায় কি?
আমাদের সমাজ একটা পালাবদলের মধ্য দিয়ে চলছে। সামাজিক এই পালাবদলে একটি শ্রেণী লাভবান হলে অন্য শ্রেণী ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়। স্বাধীনতার পর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের মধ্যবিত্ত শ্রেণী। মধ্যবিত্ত শ্রেণীকে বলা হয় সমাজের নিয়ামক। সমাজের বুদ্ধিবৃত্তিক দিকটি নিয়ন্ত্রণ করে মধ্যবিত্ত। এই মধ্যবিত্ত শ্রেণী যখন ক্ষতিগ্রস্ত হয়, ভেতরে ভেতরে ভেঙে যায়, তখন সমাজের সৌন্দর্য নষ্ট হয়। বাধাগ্রস্ত হয় সামাজিক বিকাশ। দারিদ্র্য এই মধ্যবিত্তকেও আঘাত করেছে। দেখা যাচ্ছে, দিনবদলের সঙ্গে সঙ্গে দেশের সমাজব্যবস্থায় পরিবর্তন এসেছে। আর্থসামাজিক-রাজনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন থেকে দেশের মানুষের ভাগ্যের কতটা পরিবর্তন হয়েছে সেটাই দেখার বিষয়। দেখা যাচ্ছে, স্বাধীনতার চার দশক পেরিয়ে এসেও মানুষের অনেক স্বপ্ন পূরণ হয়নি। দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি দেশের মানুষ। সবার জন্য মৌলিক সব চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হয়নি। অন্যদিকে সামাজিক মূল্যবোধ পাল্টে গেছে।
তার পরও বাংলাদেশে পরিসংখ্যান ব্যুরোর নতুন এই জরিপটি আমাদের দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে তাৎপর্যপূর্ণ। নানা কারণেই নতুন জরিপটি গুরুত্ব বহন করে। জরিপে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশে এমন একসময় দারিদ্র্য কমেছে, যখন বিশ্বে বড় ধরনের খাদ্য সংকট ও আর্থিক সংকট ছিল। ওই সময় বিশ্বে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ও দারিদ্র্য বেড়েছে। অর্থনীতিবিদদের মতে, প্রবৃদ্ধি ভালো হলে ও মাথাপিছু খাদ্য সরবরাহ ঠিক থাকলে মূল্যস্ফীতি হলেও দারিদ্র্য নিরসন সম্ভব হতে পারে। বিশ্বে যখন একটি বিশেষ দুঃসময় ছিল, তখন বাংলাদেশে গরিব মানুষের দারিদ্র্য কমেছে। কিন্তু এর পাশাপাশি নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণী খাদ্যের দাম বাড়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারা খাদ্যের পরিমাণ না কমালেও গুণগত মানে ছাড় দিতে বাধ্য হয়েছে। এদিকটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের সমাজের ভেতরে এভাবে ছাড় দিতে দিতে অনেককেই চলে যেতে হচ্ছে প্রান্তসীমায়। নীরবে ঘটে যাওয়া এই পরিবর্তন আমাদের দৃষ্টি হয়তো এড়িয়ে যাচ্ছে।
তার পরও দরিদ্র মানুষের সংখ্যা হ্রাস পাওয়ার এ খবরটি দেশের জন্য একটি ইতিবাচক। এই ধারা অব্যাহত থাকলে দেশ একদিন অবশ্যই দারিদ্র্যমুক্ত হবে। সামাজিক নিরাপত্তাবলয় নিশ্চিত করা গেলে এ পরিস্থিতির আরো উন্নতি হবে বলে ধরে নেওয়া যায়। তবে সব কিছুই নির্ভর করে রাজনৈতিক সদিচ্ছার ওপর। রাজনৈতিক সদিচ্ছা নিশ্চিত করা গেলে দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করা সম্ভব।
No comments