মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্প-অনিয়মে শঙ্কা কৃষির
মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে সময়মতো পানি না ছাড়ায় বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার আশঙ্কার কথা জানিয়ে বৃহস্পতিবার সমকালে 'মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে অনিয়ম' শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ পেয়েছে। এটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সময়মতো ক্যানেল সংস্কার না হওয়া পানি ছাড়তে পারার অন্যতম কারণ।
কেন সময়মতো ক্যানেলটি সংস্কার করা যায়নি? সংস্কার না হওয়ার কারণ দেশের আর দশটি সরকারি প্রকল্পের মতো দুর্নীতি ও অনিয়ম। সময়মতো পানি ছাড়ার কারণে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সেচ প্রকল্পের আওতাধীন নয় হাজার হেক্টর কৃষি জমিতে চাষিরা এখনও বোরো ধানের চারা রোপণ করতে পারছেন না। অথচ জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই ক্যানেলে পানি আসার কথা। কিন্তু ক্যানেল সংস্কারসহ আনুষঙ্গিক উন্নয়ন কাজ এখনও শেষ হওয়া দূরে থাক বেশ কিছু ক্ষেত্রে টেন্ডার মূল্যায়ন পর্ব শেষ হয়নি। এদিকে ক্যানেল সংস্কারের বিভিন্ন অংশের কাজ নামকা ওয়াস্তে করে ৮০ শতাংশ বিল তুলে নেওয়ার নজিরও গড়েছেন কোনো কোনো ঠিকাদার। প্রতি বছরই এই প্রকল্পে নির্ধারিত ক্যানেল সংস্কারসহ আনুষঙ্গিক উন্নয়ন কাজ প্রত্যাশিত সময়ের চেয়ে বিলম্বে শুরু করা হয়। যাতে বোরো চাষের মৌসুম শুরু হয়ে যাওয়ার কথা বলে তড়িঘড়ি কম কাজ করে বেশি বিল উত্তোলন করা যায়, এ জন্যই এমনটা করা হয় বলে অভিযোগ। অন্যদিকে এত বড় একটি প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী সপ্তাহে দু'দিন অফিস করেও কী করে তিনি এর দেখভাল করতে পারছেন সেটা বিস্ময়ের ব্যাপার। এ ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন লোকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নিলে এরা অনিয়মকেই এক সময় নিয়মে পরিণত করে ছাড়ে। মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের অধীন নয় হাজার হেক্টর জমিতে যাতে কৃষকরা বোরো ধানের চাষ করতে পারেন তার জন্য ক্যানেলে অবিলম্বে পানি ছাড়ার ব্যবস্থা জরুরি ভিত্তিতে করা উচিত। প্রতি বছর ক্যানেল সংস্কারসহ আনুষঙ্গিক উন্নয়ন কাজে বিলম্ব করার আড়ালে যারা সরকাারি অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে তাদের চিহ্নিত করতে হবে এবং ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতি রোধ করা যায় তার জন্য সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে হবে।
No comments