পবিত্র কোরআনের আলো-আল্লাহর একত্ব সম্পর্কে পরিচ্ছন্ন বিশ্বাসের বিকল্প নেই
১৫২. ওয়াল্লাযীনা আমানূ বিল্লাহি ওয়ারুছুলিহী ওয়ালাম ইউফার্রিক্বূ বাইনা আহাদিম্ মিনহুম উলা-য়িকা ছাওফা ইউ'তীহিম উজূরাহুম; ওয়া কানাল্লাহু গাফূরার্ রাহীমা। ১৫৩. ইয়াছআ'লুকা আহ্লুল কিতাবি আন তুনায্যিলা আ'লাইহিম কিতা-বাম্ মিনাচ্ছামায়ি ফাক্বাদ ছাআলূ মূছা আকবারা মিন্ যালিকা ফাক্বালূ আরিনাল্লাহু জাহ্রাতান ফাআখাযাত্হুমুস্ সায়ি'ক্বাতু
বিযুলমিহিম; ছুম্মাত্তাখাযুল ই'জলা মিম্বা'দি মা জা-আত্হুমুল বায়্যিনাতু ফাআফাওনা আ'ন যালিকা ওয়া আতাইনা মূছা ছুলত্বানাম্ মুবীনা।
১৫৪. ওয়া রাফা'না ফাওক্বাহুমুত্-তূরা বিমীছাকি্বহিম ওয়া ক্বুলনা লাহুমুদ্খুলুল বা-বা ছুজ্জাদান ওয়া ক্বুলনা লাহুম লা-তা'দূ ফিচ্ছাবতি ওয়া আখায্না মিনহুম্ মীছাক্বান গালীযা। [সুরা : আন নিসা, আয়াত : ১৫২-১৫৪]
অনুবাদ
১৫২. আর যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলদের ওপর ইমান আনে এবং তাঁদের একজনের সঙ্গে আরেকজনের কোনো ব্যবধান সৃষ্টি করে না, এরা হচ্ছে সেই সব সৎ লোক, যাদের তিনি অচিরেই তাদের প্রাপ্য প্রতিদান দেবেন। প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ তায়ালা অত্যন্ত ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।
১৫৩. আহলে কিতাব, অর্থাৎ ইহুদি ও খ্রিস্টানরা আপনার কাছে ছওয়াল করতে পারে আপনি যেন আকাশ থেকে কোনো কিতাব নামিয়ে নিয়ে আসেন। এরা তো মুসার কাছে এর চেয়েও বড় রকমের আবদার পেশ করেছিল। তারা বলেছিল (হে মুসা), আপনি স্বয়ং আল্লাহকে আমাদের সামনে প্রকাশ্যভাবে দেখাবেন। অতঃপর তাদের বাড়াবাড়ির জন্য তাদের ওপর প্রচণ্ড বজ্রপাত এসে নিপতিত হয়েছিল। তদুপরি তারা বাছুরকে উপাস্য হিসেবে গ্রহণ করেছিল (একত্ববাদের)_সুস্পষ্ট প্রমাণাদি তাদের কাছে আসার পরও। এর পরও আমি তাদের ক্ষমা করেছিলাম এবং মুসাকে স্পষ্ট প্রমাণ দান করেছিলাম।
১৫৪. এদের ওপর তুর পাহাড়কে তুলে ধরে আমি আনুগত্যের প্রতিশ্রুতি আদায় করেছিলাম। আমি তাদের বলেছিলাম, নগরের দরজা দিয়ে প্রবেশ করার সময় তোমরা মাথা নত করে অনুগত হয়ে ঢুকবে। আমি তাদের আরো বলেছিলাম, শনিবারের ব্যাপারে সীমালঙ্ঘন করো না। এ ব্যাপারে আমি তাদের কাছ থেকে কঠোর প্রতিশ্রুতি আদায় করে নিয়েছিলাম।
ব্যাখ্যা
১৫২ নম্বর আয়াতটি এসেছে আগের আয়াতের ধারাবাহিকতায়। কাফের ও বিভ্রান্তদের বিপরীতে সত্যপথের অনুসারী প্রকৃত মুমিনদের উত্তম প্রতিদানপ্রাপ্তির সুসংবাদ এখানে দেওয়া হয়েছে। ১৫৩ ও ১৫৪ নম্বর আয়াতে আল্লাহর একত্ববাদ, হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর নবুয়ত এবং কোরআন নাজিলের মূল তাৎপর্য ও পরিচ্ছন্ন বিশ্বাস ধারণের বিষয়টি আনা হয়েছে। বিষয়টি পরিষ্কার করার জন্য এখানে সুদূর অতীত ইতিহাসের উদাহরণ টানা হয়েছে। ইহুদিরা মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর নবুয়তে বিশ্বাস করতে রাজি হয়নি এবং কোরআন প্রসঙ্গেও উদ্ভট প্রশ্ন নিয়ে রাসুলের দরবারে উপস্থিত হতো। একবার কয়েকজন ইহুদি সরদার রাসুলের (সা.) সমীপে উপস্থিত হয়ে প্রস্তাব করল, আপনি সত্যিকার নবী হয়ে থাকলে হজরত মুসা (আ.)-এর তওরাত কিতাবের ন্যায় আকাশ থেকে একটি পূর্ণ কিতাব একবারে নিয়ে আসুন। এর উত্তরে এই আয়াতটি নাজিল হয়।
এই আয়াতে আল্লাহর একত্ববাদ সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর ধারণা পোষণকারী লোকদের তিরস্কার করা হয়েছে। ১৫৪ নম্বর আয়াতে যে শনিবারের প্রসঙ্গ বলা হয়েছে, সেই শনিবারের ব্যাপারটি এ রকম_ইহুদিদের প্রতি নির্দেশ ছিল শনিবার দিন মাছ শিকার না করার। নদীতে মাছ বেশি পরিমাণে দেখা যেত শনিবারে। ইহুদিরা নদী তীরের ধারে ধারে গর্ত খনন করে নালা দ্বারা নদীর সঙ্গে সংযুক্ত করে দিত। শনিবার দিন মাছ ওই গর্তগুলোতে প্রবেশ করলে তারা গর্তের নালা বন্ধ করে দিত এবং পরের দিন এসব মাছ শিকার করত। আল্লাহর হুকুমের সঙ্গে এমন চালাকি করে তারা আল্লাহর অভিশাপে নিপতিত হয়েছিল। এই আয়াতে ইহুদিদের ওই চাতুর্যপূর্ণ কৌশল অবলম্বনের কাহিনী রাসুলকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
১৫৪. ওয়া রাফা'না ফাওক্বাহুমুত্-তূরা বিমীছাকি্বহিম ওয়া ক্বুলনা লাহুমুদ্খুলুল বা-বা ছুজ্জাদান ওয়া ক্বুলনা লাহুম লা-তা'দূ ফিচ্ছাবতি ওয়া আখায্না মিনহুম্ মীছাক্বান গালীযা। [সুরা : আন নিসা, আয়াত : ১৫২-১৫৪]
অনুবাদ
১৫২. আর যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলদের ওপর ইমান আনে এবং তাঁদের একজনের সঙ্গে আরেকজনের কোনো ব্যবধান সৃষ্টি করে না, এরা হচ্ছে সেই সব সৎ লোক, যাদের তিনি অচিরেই তাদের প্রাপ্য প্রতিদান দেবেন। প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ তায়ালা অত্যন্ত ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।
১৫৩. আহলে কিতাব, অর্থাৎ ইহুদি ও খ্রিস্টানরা আপনার কাছে ছওয়াল করতে পারে আপনি যেন আকাশ থেকে কোনো কিতাব নামিয়ে নিয়ে আসেন। এরা তো মুসার কাছে এর চেয়েও বড় রকমের আবদার পেশ করেছিল। তারা বলেছিল (হে মুসা), আপনি স্বয়ং আল্লাহকে আমাদের সামনে প্রকাশ্যভাবে দেখাবেন। অতঃপর তাদের বাড়াবাড়ির জন্য তাদের ওপর প্রচণ্ড বজ্রপাত এসে নিপতিত হয়েছিল। তদুপরি তারা বাছুরকে উপাস্য হিসেবে গ্রহণ করেছিল (একত্ববাদের)_সুস্পষ্ট প্রমাণাদি তাদের কাছে আসার পরও। এর পরও আমি তাদের ক্ষমা করেছিলাম এবং মুসাকে স্পষ্ট প্রমাণ দান করেছিলাম।
১৫৪. এদের ওপর তুর পাহাড়কে তুলে ধরে আমি আনুগত্যের প্রতিশ্রুতি আদায় করেছিলাম। আমি তাদের বলেছিলাম, নগরের দরজা দিয়ে প্রবেশ করার সময় তোমরা মাথা নত করে অনুগত হয়ে ঢুকবে। আমি তাদের আরো বলেছিলাম, শনিবারের ব্যাপারে সীমালঙ্ঘন করো না। এ ব্যাপারে আমি তাদের কাছ থেকে কঠোর প্রতিশ্রুতি আদায় করে নিয়েছিলাম।
ব্যাখ্যা
১৫২ নম্বর আয়াতটি এসেছে আগের আয়াতের ধারাবাহিকতায়। কাফের ও বিভ্রান্তদের বিপরীতে সত্যপথের অনুসারী প্রকৃত মুমিনদের উত্তম প্রতিদানপ্রাপ্তির সুসংবাদ এখানে দেওয়া হয়েছে। ১৫৩ ও ১৫৪ নম্বর আয়াতে আল্লাহর একত্ববাদ, হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর নবুয়ত এবং কোরআন নাজিলের মূল তাৎপর্য ও পরিচ্ছন্ন বিশ্বাস ধারণের বিষয়টি আনা হয়েছে। বিষয়টি পরিষ্কার করার জন্য এখানে সুদূর অতীত ইতিহাসের উদাহরণ টানা হয়েছে। ইহুদিরা মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর নবুয়তে বিশ্বাস করতে রাজি হয়নি এবং কোরআন প্রসঙ্গেও উদ্ভট প্রশ্ন নিয়ে রাসুলের দরবারে উপস্থিত হতো। একবার কয়েকজন ইহুদি সরদার রাসুলের (সা.) সমীপে উপস্থিত হয়ে প্রস্তাব করল, আপনি সত্যিকার নবী হয়ে থাকলে হজরত মুসা (আ.)-এর তওরাত কিতাবের ন্যায় আকাশ থেকে একটি পূর্ণ কিতাব একবারে নিয়ে আসুন। এর উত্তরে এই আয়াতটি নাজিল হয়।
এই আয়াতে আল্লাহর একত্ববাদ সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর ধারণা পোষণকারী লোকদের তিরস্কার করা হয়েছে। ১৫৪ নম্বর আয়াতে যে শনিবারের প্রসঙ্গ বলা হয়েছে, সেই শনিবারের ব্যাপারটি এ রকম_ইহুদিদের প্রতি নির্দেশ ছিল শনিবার দিন মাছ শিকার না করার। নদীতে মাছ বেশি পরিমাণে দেখা যেত শনিবারে। ইহুদিরা নদী তীরের ধারে ধারে গর্ত খনন করে নালা দ্বারা নদীর সঙ্গে সংযুক্ত করে দিত। শনিবার দিন মাছ ওই গর্তগুলোতে প্রবেশ করলে তারা গর্তের নালা বন্ধ করে দিত এবং পরের দিন এসব মাছ শিকার করত। আল্লাহর হুকুমের সঙ্গে এমন চালাকি করে তারা আল্লাহর অভিশাপে নিপতিত হয়েছিল। এই আয়াতে ইহুদিদের ওই চাতুর্যপূর্ণ কৌশল অবলম্বনের কাহিনী রাসুলকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments