জাতীয় অন্ধ সংস্থার দুই কর্মকর্তা হত্যা-পুলিশ নিশ্চিত, নেপথ্যে একই ব্যক্তিরা by গোলাম মর্তুজা
জাতীয় অন্ধ সংস্থার মহাসচিব খলিলুর রহমান (৫০) ও সাংগঠনিক সচিব ইদ্রিস আলী বেপারী (৪৩) হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে একই ব্যক্তিরা ছিলেন বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে। পুলিশ বলেছে, ইদ্রিস হত্যায় তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী পারভীন আক্তারও জড়িত। তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন।
গত বছরের ১ জানুয়ারি রাজধানীর মিরপুরে প্রতিপক্ষের সঙ্গে সমঝোতা বৈঠকের সময় খলিলকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় করা মামলায় সংস্থার একাংশের নেতা মিনহাজউদ্দীন, আইয়ুব আলী হাওলাদার, ইদ্রিস আলীসহ (পরে নিহত) কয়েকজনকে আসামি করা হয়। পুলিশ জানায়, তদন্তে এই হত্যার সঙ্গে মিনহাজ ও আইয়ুবের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়।
৬ জুলাই বকশীবাজারে অরফানেজ সড়কে অন্ধ সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে খুন হন ইদ্রিস। এ ঘটনায় সংস্থার নির্বাচিত সভাপতি কামাল হোসেন, যুগ্ম সচিব ওমর ফারুক, সাভারের আবু বকর সিদ্দিক, জাহিদুল ইসলাম, শুক্কুর আলী ও কামরুল ইসলামকে আসামি করে মামলা করেন ইদ্রিসের প্রথম পক্ষের মেয়ে। পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় আইয়ুব ও পারভীনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, তিন বছর পর পর নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও ১৫ বছর পর ২০১০ সালের ২১ আগস্ট অন্ধ সংস্থার নির্বাচন হয়। নির্বাচনে কামাল হোসেন সভাপতি ও খলিলুর রহমান মহাসচিব নির্বাচিত হন। তাঁদের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন যথাক্রমে মিনহাজউদ্দীন ও আইয়ুব আলী হাওলাদার। ১৫টি কার্যনির্বাহী পদের সাতটি পান কামাল-খলিলেরা এবং আটটি পান তাঁদের প্রতিপক্ষ মিনহাজ-আইয়ুবেরা। ২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে ভোট পুনর্গণনার আবেদন জানিয়ে হাইকোর্টে রিট করেন মিনহাজ ও আইয়ুব। এসব নিয়ে গত বছরের ১ জানুয়ারি মিনহাজের বাসায় সমঝোতা বৈঠকের সময় নিহত হন খলিল। এরপর ৩ মার্চ তলবি সভায় পাল্টা কমিটি গঠন করেন মিনহাজ-আইয়ুবেরা এবং তাঁরা নিজেদের যথাক্রমে সংস্থার সভাপতি ও মহাসচিব ঘোষণা করেন। এই তলবি সভার বিরুদ্ধে মামলা করেন কামাল হোসেন ও যুগ্ম সম্পাদক ওমর ফারুক। এই মামলাও চলছে। ৬ জুলাই খুন হন ইদ্রিস।
ইদ্রিস হত্যায় দ্বিতীয় স্ত্রীও জড়িত: গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ জানায়, ইদ্রিস হত্যা মামলার তদন্তভার পাওয়ার পর ডিবির একটি দল ২৪ নভেম্বর পারভীনের সঙ্গে কথা বলতে তাঁদের লালবাগের বাসায় যায়। ডিবির উপস্থিতি জেনে তিনি বাসা থেকে পালিয়ে যান। পরে তাঁকে চকবাজার থেকে আটক করা হয়।
ডিবি জানায়, পারভীন তাঁদের জানিয়েছেন, আইয়ুব এই হত্যাকাণ্ডের জন্য তাঁর সাহায্য চান। অন্ধ সংস্থায় মাসে পাঁচ হাজার টাকা বেতনের চাকরি ও অন্যান্য সুযোগের বিনিময়ে তিনি রাজি হন। হত্যাকাণ্ডের সময় সেখানে আরও সাতজন ছিলেন। তিনি ছাড়া অন্য ছয়জন ছিলেন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। তিনি সব দেখেও পুলিশকে মিথ্যা তথ্য দেন।
ডিবি আরও জানায়, পারভীনের তথ্যের ভিত্তিতে ২৮ নভেম্বর রনি তালুকদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। রনি ডিবিকে জানান যে তিনি, আশিক ও জনি মিলে ইদ্রিসকে হত্যা করেন। ওই দুজনকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। রনির বাবা আবদুল খালেক তালুকদার অন্ধ সংস্থার সদস্য। রনি আরও জানান, হত্যাকাণ্ডের প্রাথমিক খরচ নির্বাহের জন্য তাঁদের ৫০ হাজার টাকা দেন আইয়ুব। পরে আরও টাকা দেওয়ার কথা ছিল।
ডিবি জানায়, রনির তথ্যের ভিত্তিতে ১৩ ফেব্রুয়ারি আইয়ুবকে গ্রেপ্তার করে পরদিন তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। কেরানীগঞ্জে অন্ধ সংস্থার একটি জমি বিক্রি করেন মিনহাজ-আইয়ুবেরা। ওই টাকার ভাগ ইদ্রিসকেও দেওয়া হয়। তিনি আরও ১০ লাখ টাকা দাবি করায় তাঁকে খুন করে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করার পরিকল্পনা করেন আইয়ুব ও তাঁর সহযোগীরা।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক আশরাফ হোসেন বলেন, পারভীন আক্তার ও রনি তালুকদার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্যে হত্যার সঙ্গে আইয়ুবের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।
খলিল হত্যায়ও আইয়ুব!: খলিল হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি মিনহাজ ও আইয়ুব। এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় ডিবি পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। মিনহাজসহ দুই আসামি জামিনে রয়েছেন। হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তদন্ত সূত্র জানায়, খলিল হত্যাকাণ্ডে পাঁচজন অংশ নেয়। তাঁদের তিনজনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। তাঁরা জানিয়েছেন, খলিলকে হত্যার জন্য মিনহাজ ও আইয়ুব তাঁদের ভাড়া করেন। কিন্তু যে দুজনের সঙ্গে মিনহাজ ও আইয়ুবের চুক্তি হয়, সেই দুজন ধরা পড়েননি। এ কারণে অভিযোগপত্র দিতে দেরি হচ্ছে।
জাতীয় অন্ধ সংস্থার নির্বাচিত সভাপতি কামাল হোসেন বলেন, অন্ধদের আবাসন, বিদ্যালয় ইত্যাদি তৈরির জন্য ২০০৩ সালে কেরানীগঞ্জে দুই প্লটে ৪২ কাঠা জমি কেনা হয়েছিল। মিনহাজ ও আইয়ুব সেই জমি বিক্রি করে দেন। বর্তমানে ওই জমির দাম অন্তত কোটি টাকা। তিনি বলেন, আইয়ুবেরা ইদ্রিসকে হত্যা করে এর দায় তাঁদের (কামাল পক্ষ) ওপর চাপাতে চেয়েছিলেন।
৬ জুলাই বকশীবাজারে অরফানেজ সড়কে অন্ধ সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে খুন হন ইদ্রিস। এ ঘটনায় সংস্থার নির্বাচিত সভাপতি কামাল হোসেন, যুগ্ম সচিব ওমর ফারুক, সাভারের আবু বকর সিদ্দিক, জাহিদুল ইসলাম, শুক্কুর আলী ও কামরুল ইসলামকে আসামি করে মামলা করেন ইদ্রিসের প্রথম পক্ষের মেয়ে। পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় আইয়ুব ও পারভীনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, তিন বছর পর পর নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও ১৫ বছর পর ২০১০ সালের ২১ আগস্ট অন্ধ সংস্থার নির্বাচন হয়। নির্বাচনে কামাল হোসেন সভাপতি ও খলিলুর রহমান মহাসচিব নির্বাচিত হন। তাঁদের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন যথাক্রমে মিনহাজউদ্দীন ও আইয়ুব আলী হাওলাদার। ১৫টি কার্যনির্বাহী পদের সাতটি পান কামাল-খলিলেরা এবং আটটি পান তাঁদের প্রতিপক্ষ মিনহাজ-আইয়ুবেরা। ২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে ভোট পুনর্গণনার আবেদন জানিয়ে হাইকোর্টে রিট করেন মিনহাজ ও আইয়ুব। এসব নিয়ে গত বছরের ১ জানুয়ারি মিনহাজের বাসায় সমঝোতা বৈঠকের সময় নিহত হন খলিল। এরপর ৩ মার্চ তলবি সভায় পাল্টা কমিটি গঠন করেন মিনহাজ-আইয়ুবেরা এবং তাঁরা নিজেদের যথাক্রমে সংস্থার সভাপতি ও মহাসচিব ঘোষণা করেন। এই তলবি সভার বিরুদ্ধে মামলা করেন কামাল হোসেন ও যুগ্ম সম্পাদক ওমর ফারুক। এই মামলাও চলছে। ৬ জুলাই খুন হন ইদ্রিস।
ইদ্রিস হত্যায় দ্বিতীয় স্ত্রীও জড়িত: গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ জানায়, ইদ্রিস হত্যা মামলার তদন্তভার পাওয়ার পর ডিবির একটি দল ২৪ নভেম্বর পারভীনের সঙ্গে কথা বলতে তাঁদের লালবাগের বাসায় যায়। ডিবির উপস্থিতি জেনে তিনি বাসা থেকে পালিয়ে যান। পরে তাঁকে চকবাজার থেকে আটক করা হয়।
ডিবি জানায়, পারভীন তাঁদের জানিয়েছেন, আইয়ুব এই হত্যাকাণ্ডের জন্য তাঁর সাহায্য চান। অন্ধ সংস্থায় মাসে পাঁচ হাজার টাকা বেতনের চাকরি ও অন্যান্য সুযোগের বিনিময়ে তিনি রাজি হন। হত্যাকাণ্ডের সময় সেখানে আরও সাতজন ছিলেন। তিনি ছাড়া অন্য ছয়জন ছিলেন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। তিনি সব দেখেও পুলিশকে মিথ্যা তথ্য দেন।
ডিবি আরও জানায়, পারভীনের তথ্যের ভিত্তিতে ২৮ নভেম্বর রনি তালুকদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। রনি ডিবিকে জানান যে তিনি, আশিক ও জনি মিলে ইদ্রিসকে হত্যা করেন। ওই দুজনকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। রনির বাবা আবদুল খালেক তালুকদার অন্ধ সংস্থার সদস্য। রনি আরও জানান, হত্যাকাণ্ডের প্রাথমিক খরচ নির্বাহের জন্য তাঁদের ৫০ হাজার টাকা দেন আইয়ুব। পরে আরও টাকা দেওয়ার কথা ছিল।
ডিবি জানায়, রনির তথ্যের ভিত্তিতে ১৩ ফেব্রুয়ারি আইয়ুবকে গ্রেপ্তার করে পরদিন তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। কেরানীগঞ্জে অন্ধ সংস্থার একটি জমি বিক্রি করেন মিনহাজ-আইয়ুবেরা। ওই টাকার ভাগ ইদ্রিসকেও দেওয়া হয়। তিনি আরও ১০ লাখ টাকা দাবি করায় তাঁকে খুন করে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করার পরিকল্পনা করেন আইয়ুব ও তাঁর সহযোগীরা।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক আশরাফ হোসেন বলেন, পারভীন আক্তার ও রনি তালুকদার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্যে হত্যার সঙ্গে আইয়ুবের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।
খলিল হত্যায়ও আইয়ুব!: খলিল হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি মিনহাজ ও আইয়ুব। এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় ডিবি পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। মিনহাজসহ দুই আসামি জামিনে রয়েছেন। হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তদন্ত সূত্র জানায়, খলিল হত্যাকাণ্ডে পাঁচজন অংশ নেয়। তাঁদের তিনজনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। তাঁরা জানিয়েছেন, খলিলকে হত্যার জন্য মিনহাজ ও আইয়ুব তাঁদের ভাড়া করেন। কিন্তু যে দুজনের সঙ্গে মিনহাজ ও আইয়ুবের চুক্তি হয়, সেই দুজন ধরা পড়েননি। এ কারণে অভিযোগপত্র দিতে দেরি হচ্ছে।
জাতীয় অন্ধ সংস্থার নির্বাচিত সভাপতি কামাল হোসেন বলেন, অন্ধদের আবাসন, বিদ্যালয় ইত্যাদি তৈরির জন্য ২০০৩ সালে কেরানীগঞ্জে দুই প্লটে ৪২ কাঠা জমি কেনা হয়েছিল। মিনহাজ ও আইয়ুব সেই জমি বিক্রি করে দেন। বর্তমানে ওই জমির দাম অন্তত কোটি টাকা। তিনি বলেন, আইয়ুবেরা ইদ্রিসকে হত্যা করে এর দায় তাঁদের (কামাল পক্ষ) ওপর চাপাতে চেয়েছিলেন।
No comments