নাসিক নির্বাচনঃ অধিকাংশ ভোটকেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ by শরিফুল হাসান ও আসিফ হোসেন
নারায়ণগঞ্জের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আটি এলাকার দুটি ভোটকেন্দ্র পানি উন্নয়ন বোর্ড উচ্চবিদ্যালয় ও ডিএনডি প্রকল্প প্রাথমিক বিদ্যালয়। এই দুটি কেন্দ্র প্রত্যন্ত এলাকায়, যোগাযোগব্যবস্থাও ভালো নয়। এখানে পাঁচ হাজার ভোটারকে ভোট দিতে হবে। এই দুটি কেন্দ্রের মতোই ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকার শিমরাইল মাদ্রাসা ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সুমীলপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র দুটিও প্রত্যন্ত এলাকায়। এই কেন্দ্রগুলোকে ঝুঁকিপূর্ণ মনে করা হচ্ছে। তবে নির্বাচন কমিশন কৌশলে বলছে, গুরুত্বপূর্ণ।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মোট কেন্দ্র ১৬৩টি। এর মধ্যে ১৩১টি কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ। এসব কেন্দ্রের বেশির ভাগই সিদ্ধিরগঞ্জ ও বন্দর এলাকায়। আছে শহরেরও কিছু কেন্দ্র। এসব কেন্দ্রে সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণে বিশেষ ব্যবস্থা নেবে কমিশন।
সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন গতকাল মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘১৩১টি কেন্দ্রকে আমরা গুরুত্বপূর্ণ মনে করছি। সেখানে আমাদের আলাদা নজরদারি থাকবে। দু-এক দিনের মধ্যে আবার এসব কেন্দ্রের নিরাপত্তার বিষয়ে কৌশল ঠিক করা হবে।’
কোন কোন নিয়ামকের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে, জানতে চাইলে ফরহাদ হোসেন বলেন, অতীতের নির্বাচনে কোন কোন কেন্দ্রে সমস্যা হয়েছে বা ভোট বন্ধ ছিল, সবচেয়ে বেশি ভোটার আছে এমন কেন্দ্র এবং যোগাযোগব্যবস্থা ভালো নয়—এই তিনটি বিষয় মাথায় রেখে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নারায়ণগঞ্জ শহর, বন্দরের কদমরসুল ও সিদ্ধিরগঞ্জ পৌরসভা নিয়ে সিটি করপোরেশন। এই তিন পৌরসভার মোট ভোটার চার লাখ চার হাজার ১৮৯ জন। শহরের নয়টি ওয়ার্ডে ভোটার এক লাখ ৬২ হাজার ৫২ জন। ভোটকেন্দ্র ৫৩টি। সিদ্ধিরগঞ্জের ভোটার এক লাখ ৪৪ হাজার ২৫৭ জন, ভোটকেন্দ্র ৫৯টি। বন্দরের ভোটার ৯৭ হাজার ৪০ জন, ভোটকেন্দ্র ৪১টি।
এই তিন পৌরসভার মধ্যে বন্দর ও শহর এলাকার সাংসদ নাসিম ওসমান মেয়র পদপ্রার্থী শামীম ওসমানের বড় ভাই। আর সিদ্ধিরগঞ্জের সাংসদ ছিলেন শামীম ওসমান। তাই সেখানে পেশিশক্তি ও কালোটাকার প্রভাবে নির্বাচনে কারচুপি হতে পারে বলে মনে করছেন সেলিনা হায়াৎ আইভী।
আইভী গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘সিদ্ধিরগঞ্জ ও বন্দর এলাকার অতীতের নির্বাচনী ইতিহাস ভালো নয়। এখানে বারবার ভোট ডাকাতি ও কেন্দ্র দখল হয়েছে। তাই আমরা এসব কেন্দ্রে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। এ ছাড়া শহরের চাষাঢ়ার সরকারি তোলারাম কলেজ, এবিসি স্কুল ও শ্রমকল্যাণ কেন্দ্রের পাশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নারায়ণগঞ্জ ক্লাব, নারায়ণগঞ্জ হাইস্কুল—এসব কেন্দ্রে বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থার দাবি জানাচ্ছি। আর ১৯৮৬ সালে সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ হাইস্কুল কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোট ডাকাতির সময় ব্যালট বাক্স ও অস্ত্র হাতে একজনের ছবি বিদেশি পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল। কাজেই নির্বাচন কমিশনের সব জেনেশুনে প্রস্তুতি নেওয়া উচিত।’
তবে আইভীর আশঙ্কা নাকচ করে দিয়েছেন শামীম ওসমান। তিনি বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জ ও বন্দরে সব সময়ই সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। অযথাই এসব এলাকাকে ঝুঁকিপূর্ণ বলে অপবাদ দেওয়া হচ্ছে।
নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সহসভাপতি রফিউর রাব্বী প্রথম আলোকে বলেন, ‘সিদ্ধিরগঞ্জ ও বন্দরের অনেক কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ। সেখানে অতীতেও অনেকবার কেন্দ্র দখল হয়েছে। এবারও ওই এলাকায় এমন আশঙ্কা করছি। এ ছাড়া একজন প্রার্থীর বাড়ির আশপাশের কেন্দ্রগুলোও ঝুঁকিপূর্ণ। এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’
বিএনপি-সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকারের নির্বাচনী পরিচালনা কমিটির সদস্য এবং শহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ টি এম কামাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা মনে করি, সব কেন্দ্রেই বিশেষ নজর দেওয়া উচিত। তবে সিদ্ধিরগঞ্জ ও বন্দর এলাকায় অতীতেও ঝামেলা হয়েছে। সেখানে অনেক স্থানে যাতায়াতের সমস্যা আছে। তাই কোনো অনিয়ম হলে যেন রোধ করা যায়।’ শহরের চাষাঢ়ার সরকারি তোলারাম কলেজ, এবিসি স্কুল ও শ্রমকল্যাণ কেন্দ্রের পাশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রগুলোতেও বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
কঠোর নিরাপত্তা: নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য নির্বাচন কমিশন বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের ওপর কমিশনের সার্বক্ষণিক নজরদারি থাকবে। ২৮ অক্টোবর ভোর ছয়টা থেকে মোতায়েন করা হবে সেনাবাহিনীর চারটি কোম্পানি। সঙ্গে থাকবে র্যাব, পুলিশ, কোস্টগার্ড ও আনসার। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাঁচ হাজার সদস্য নিয়োগ করা হবে। প্রতিটি কেন্দ্রে থাকবেন পুলিশ ও আনসারের ২৪ জন সদস্য। পুলিশের টহল দল থাকবে ৮২টি। নির্বাচনের দিন দায়িত্বে থাকবেন নয়জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও ২৭ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
নির্বাচনে কালোটাকার ছড়াছড়ি: মেয়র পদপ্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীর অভিযোগ, নির্বাচন সামনে রেখে নারায়ণগঞ্জে কালোটাকা ছড়ানো হচ্ছে। টাকা দিয়ে ভোট কেনার চক্রান্ত চলছে। তিনি এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনকে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান।
একই অভিযোগ তৈমুর আলমের। তিনিও কালোটাকার বিষয়টি তদন্তের জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি জানিয়েছেন। শামীম ওসমানও বলেছেন, নির্বাচনে কালোটাকা ছড়ানো হচ্ছে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা বিশ্বাস লুৎফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, কালোটাকা ছড়ানোর সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন গতকাল মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘১৩১টি কেন্দ্রকে আমরা গুরুত্বপূর্ণ মনে করছি। সেখানে আমাদের আলাদা নজরদারি থাকবে। দু-এক দিনের মধ্যে আবার এসব কেন্দ্রের নিরাপত্তার বিষয়ে কৌশল ঠিক করা হবে।’
কোন কোন নিয়ামকের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে, জানতে চাইলে ফরহাদ হোসেন বলেন, অতীতের নির্বাচনে কোন কোন কেন্দ্রে সমস্যা হয়েছে বা ভোট বন্ধ ছিল, সবচেয়ে বেশি ভোটার আছে এমন কেন্দ্র এবং যোগাযোগব্যবস্থা ভালো নয়—এই তিনটি বিষয় মাথায় রেখে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নারায়ণগঞ্জ শহর, বন্দরের কদমরসুল ও সিদ্ধিরগঞ্জ পৌরসভা নিয়ে সিটি করপোরেশন। এই তিন পৌরসভার মোট ভোটার চার লাখ চার হাজার ১৮৯ জন। শহরের নয়টি ওয়ার্ডে ভোটার এক লাখ ৬২ হাজার ৫২ জন। ভোটকেন্দ্র ৫৩টি। সিদ্ধিরগঞ্জের ভোটার এক লাখ ৪৪ হাজার ২৫৭ জন, ভোটকেন্দ্র ৫৯টি। বন্দরের ভোটার ৯৭ হাজার ৪০ জন, ভোটকেন্দ্র ৪১টি।
এই তিন পৌরসভার মধ্যে বন্দর ও শহর এলাকার সাংসদ নাসিম ওসমান মেয়র পদপ্রার্থী শামীম ওসমানের বড় ভাই। আর সিদ্ধিরগঞ্জের সাংসদ ছিলেন শামীম ওসমান। তাই সেখানে পেশিশক্তি ও কালোটাকার প্রভাবে নির্বাচনে কারচুপি হতে পারে বলে মনে করছেন সেলিনা হায়াৎ আইভী।
আইভী গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘সিদ্ধিরগঞ্জ ও বন্দর এলাকার অতীতের নির্বাচনী ইতিহাস ভালো নয়। এখানে বারবার ভোট ডাকাতি ও কেন্দ্র দখল হয়েছে। তাই আমরা এসব কেন্দ্রে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। এ ছাড়া শহরের চাষাঢ়ার সরকারি তোলারাম কলেজ, এবিসি স্কুল ও শ্রমকল্যাণ কেন্দ্রের পাশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নারায়ণগঞ্জ ক্লাব, নারায়ণগঞ্জ হাইস্কুল—এসব কেন্দ্রে বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থার দাবি জানাচ্ছি। আর ১৯৮৬ সালে সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ হাইস্কুল কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোট ডাকাতির সময় ব্যালট বাক্স ও অস্ত্র হাতে একজনের ছবি বিদেশি পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল। কাজেই নির্বাচন কমিশনের সব জেনেশুনে প্রস্তুতি নেওয়া উচিত।’
তবে আইভীর আশঙ্কা নাকচ করে দিয়েছেন শামীম ওসমান। তিনি বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জ ও বন্দরে সব সময়ই সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। অযথাই এসব এলাকাকে ঝুঁকিপূর্ণ বলে অপবাদ দেওয়া হচ্ছে।
নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সহসভাপতি রফিউর রাব্বী প্রথম আলোকে বলেন, ‘সিদ্ধিরগঞ্জ ও বন্দরের অনেক কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ। সেখানে অতীতেও অনেকবার কেন্দ্র দখল হয়েছে। এবারও ওই এলাকায় এমন আশঙ্কা করছি। এ ছাড়া একজন প্রার্থীর বাড়ির আশপাশের কেন্দ্রগুলোও ঝুঁকিপূর্ণ। এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’
বিএনপি-সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকারের নির্বাচনী পরিচালনা কমিটির সদস্য এবং শহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ টি এম কামাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা মনে করি, সব কেন্দ্রেই বিশেষ নজর দেওয়া উচিত। তবে সিদ্ধিরগঞ্জ ও বন্দর এলাকায় অতীতেও ঝামেলা হয়েছে। সেখানে অনেক স্থানে যাতায়াতের সমস্যা আছে। তাই কোনো অনিয়ম হলে যেন রোধ করা যায়।’ শহরের চাষাঢ়ার সরকারি তোলারাম কলেজ, এবিসি স্কুল ও শ্রমকল্যাণ কেন্দ্রের পাশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রগুলোতেও বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
কঠোর নিরাপত্তা: নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য নির্বাচন কমিশন বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের ওপর কমিশনের সার্বক্ষণিক নজরদারি থাকবে। ২৮ অক্টোবর ভোর ছয়টা থেকে মোতায়েন করা হবে সেনাবাহিনীর চারটি কোম্পানি। সঙ্গে থাকবে র্যাব, পুলিশ, কোস্টগার্ড ও আনসার। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাঁচ হাজার সদস্য নিয়োগ করা হবে। প্রতিটি কেন্দ্রে থাকবেন পুলিশ ও আনসারের ২৪ জন সদস্য। পুলিশের টহল দল থাকবে ৮২টি। নির্বাচনের দিন দায়িত্বে থাকবেন নয়জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও ২৭ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
নির্বাচনে কালোটাকার ছড়াছড়ি: মেয়র পদপ্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীর অভিযোগ, নির্বাচন সামনে রেখে নারায়ণগঞ্জে কালোটাকা ছড়ানো হচ্ছে। টাকা দিয়ে ভোট কেনার চক্রান্ত চলছে। তিনি এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনকে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান।
একই অভিযোগ তৈমুর আলমের। তিনিও কালোটাকার বিষয়টি তদন্তের জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি জানিয়েছেন। শামীম ওসমানও বলেছেন, নির্বাচনে কালোটাকা ছড়ানো হচ্ছে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা বিশ্বাস লুৎফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, কালোটাকা ছড়ানোর সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
No comments