পূজা-শামুক-ঝিনুকের মণ্ডপ ধানের প্রতিমা by ফখরে আলম,

হাজার হাজার শামুক-ঝিনুক দিয়ে তৈরি করা হয়েছে মণ্ডপ। আর লাখ লাখ ধান দিয়ে তৈরি করা হয়েছে প্রতিমা। এমনকি নেপালের হিমালয় পর্বতমালাকে এই ভূমিতে নামিয়ে এনে পর্বতের গুহায় বসানো হয়েছে দেবীকে। শ্যামাপূজা উপলক্ষে এই আয়োজন। আর এ কারণেই যশোর শহর এখন দীপাবলির উৎসবে দৃষ্টিনন্দন হয়ে উঠেছে। শিল্পীর সৃজনশীলতায় মাসের পর মাস আর রাত-দিন পরিশ্রম করে ভিন্ন আঙ্গিকে সাজানো হয়েছে শহরের ১০টি শ্যামাপূজার মণ্ডপ ও প্রতিমাকে। এরই মধ্যে এসব দেখার জন্য দূরদূরান্ত থেকে শত শত মানুষ এসে ভিড় জমাচ্ছে।


শহরের বেজপাড়া নিউ এঙ্টেনশন রোডের স্বপন স্মৃতিসংঘ হাজার হাজার ঝিনুক ও শামুক দিয়ে তৈরি করেছে মণ্ডপ। মণ্ডপে বসানো হয়েছে ধান দিয়ে নির্মিত প্রতিমা। মাটির ওপর আঠা দিয়ে একটি একটি করে ধান গেঁথে তৈরি করা হয়েছে প্রতিমা। শিল্পী প্রহ্লাদ পাল অভিনব মণ্ডপ ও তোরণ নির্মাণ করেছেন। এ জন্য খরচ হয়েছে প্রায় দুই লাখ টাকা। এ মণ্ডপের সভাপতি যোগেশ দত্ত বললেন, আমরা ছয় মাস আগে পরিকল্পনা করে শামুক-ঝিনুক দিয়ে মণ্ডপ তৈরি করেছি। তৈরি করতে সময় লেগেছে দুই মাস। বেজপাড়া পূজা উদ্যাপন সমিতি চট, কাঠের ফ্রেম, সিমেন্ট, প্লাস্টার অব প্যারিস দিয়ে তৈরি করেছে হিমালয়ের পর্বতমালা। মাটি থেকে ৪৫ ফুট উঁচু এই পর্বত। পাহাড় থেকে ঝরনার পানি নামছে। আর পর্বতের গুহায় বসানো হয়েছে প্রতিমাকে। শিল্পী পার্থ প্রতীম সাহার পরিকল্পনায় এই পাহাড় তৈরি করা হয়েছে। এর জন্য ব্যয় হয়েছে কয়েক লাখ টাকা। একই এলাকার সুধীর ঘোষ স্মৃতি পরিষদ আড়াই লাখ টাকা ব্যয়ে তৈরি করেছেন চট, দড়ি, আর শোলা দিয়ে অভিনব মণ্ডপ। এর আহ্বায়ক অসীম কুণ্ডু বললেন, প্রতিবছর শ্যামাপূজা উপলক্ষে আমরা ব্যতিক্রমধর্মী ভিন্ন আঙ্গিকের মণ্ডপ ও প্রতিমা তৈরি করি। এবার আরো বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করেছি। শ্রীধর পুকুরপাড় পূজা কমিটি পোড়া মাটির ফলক দিয়ে তৈরি করেছে মণ্ডপ। শিল্পী রেজাউল করিম সোহেলের তত্ত্বাবধানে অভিনব এই মণ্ডপ তৈরি করতে সময় লেগেছে এক মাসেরও বেশি। সভাপতি মোহিত কুমার নাথ বলেন, 'শ্যামাপূজা উপলক্ষে যশোরে শিল্পকর্মের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। আমরাও সেই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে প্রথম হওয়ার চেষ্টা করছি।' তিনি বলেন, 'আমাদের আলোকসজ্জাই অন্যতম। আলোকসজ্জা দেখার জন্য সব সময়ই ভিড় লেগে থাকছে। ওই সব মণ্ডপ-প্রতিমার মতো যশোরের আরো কয়েকটি মণ্ডপ নির্মাণ করা হয়েছে, শ্যামাপূজা উপলক্ষে যা শহরবাসীকে মুগ্ধ করছে।

No comments

Powered by Blogger.