'আফ্রিকার বীর'
গাদ্দাফিকে নিয়ে পশ্চিমা গণমাধ্যমে যতই নেতিবাচক প্রচার চালানো হোক না কেন, আফ্রিকা মহাদেশের অনেকের চোখেই তিনি ছিলেন একজন বীর। বিশেষ করে কৃষ্ণাঙ্গরা তাকে একজন 'আফ্রিকান বীর' বলে গণ্য করে। লিবীয় নেতার প্রাণহানির পর ওই মহাদেশের নিউজ টোয়েন্টি ফোরের কলামিস্ট মাস দিহলক লিখেছেন, তার চোখে কর্নেল মুয়াম্মার গাদ্দাফি হলেন সত্যিকারের আফ্রিকান সন্তান। যেহেতু তিনি নিজেকে আফ্রিকার একজন সৈনিক বলে দাবি করে বলেছিলেন, আফ্রিকার ভাগ্যোন্নয়নের জন্যই কাজ করবেন এবং কখনোই মহাদেশ পরিত্যাগ করবেন না। গাদ্দাফি তার কথা রেখেছেন। খবর নিউজ টোয়েন্টি ফোর অনলাইনের।
আফ্রিকানদের মতে, ক্ষমতাচ্যুত করার আগে গাদ্দাফিকে নিয়ে পশ্চিমারা নানা গালগল্প ও গুজব রটিয়েছে। তার বিরুদ্ধে শত শত বিক্ষোভকারী হত্যা করার অপপ্রচার হয়েছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের মিথ্যা অভিযোগ এনেছে শত্রুপক্ষ। এটাই ছিল স্বাভাবিক। ১৯৬৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর গাদ্দাফি লিবিয়ার তেল সম্পদ জাতীয়করণ করে পশ্চিমাদের চক্ষুশূল হয়ে উঠেছিলেন_ সেটা কোনো গোপন ব্যাপার নয়। অথচ প্রকৃত আফ্রিকান সন্তান হিসেবে গাদ্দাফি তেল সম্পদ আহরিত রাজস্বের বেশিরভাগই দেশের উন্নয়নে ব্যবহার করেছেন। ফলে গোটা আফ্রিকা মহাদেশের ভেতর লিবিয়ার জীবনযাত্রার মান ছিল সবচেয়ে উন্নত। বিনা খরচে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় ব্যয়ে বাড়ি নির্মাণ করে লাখ লাখ লিবীয়কে তাঁবু থেকে স্থানীয় আবাসে নিয়ে এসেছিলেন গাদ্দাফি। নারীদের ক্ষমতায়ন এবং তাদের রাজনীতিতে নিয়ে আসার পেছনে তিনি অবদান রেখেছিলেন। বেনগাজিতে শ্রমজীবী সমাজ তার পক্ষে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। সে জন্য ওই নগরী দখলের পর এনটিসি শত শত কৃষ্ণাঙ্গ লিবীয়কে হত্যা করেছে। কিন্তু সেদিকে বিশ্ববাসী বিশেষ করে পশ্চিমা গণমাধ্যমের চোখ ছিল অন্ধ। তারা শুধু গাদ্দাফির দোষ খুঁজতেই ব্যস্ত ছিল। কারণ তিনি চেয়েছিলেন, আফ্রিকার সত্যিকারের ঐক্য বা একত্রীকরণ। সেটা হতে দেয়নি পাশ্চাত্য। তাদের আশঙ্কা ছিল, আফ্রিকা ঐক্যবদ্ধ হলে ধনসম্পদ এবং সামরিক শক্তিতে অপ্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠবে।
No comments