উলফার সঙ্গে নয়াদিল্লির প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক

সামের স্বাধীনতাকামী সংগঠন উলফার আটক নেতাদের সঙ্গে প্রথমবারের মতো গতকাল আনুষ্ঠানিক বৈঠকে বসেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। উলফা বা ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসামের রাজনৈতিক ও সামরিক শাখার বেশ ক’জন শীর্ষনেতা গত কয়েক বছরে ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক আটক হয়েছেন। তাদের বিশেষ ব্যবস্থায় মুক্তি দিয়ে দলটির সঙ্গে সমঝোতা আলোচনা চালাচ্ছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। খবর ইন্দো এশিয়া নিউজ সার্ভিসের।


সমঝোতা উদ্যোগের অংশ হিসেবে গতকাল নয়াদিল্লিতে দু’পক্ষের এ বৈঠকে উলফার দাবি-দাওয়া নিয়ে আলোচনাকরা হয়। গোপন সূত্রে জানা গেছে, উলফা চেয়ারম্যান অরবিন্দ রাজখোয়ার নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। এছাড়া প্রতিনিধি দলে উলফার ভাইস চেয়ারম্যান প্রদীপ গগই, চিফ কমান্ডার রাজু বড়ুয়া, পররাষ্ট্র সচিব সাসা চৌধুরী, অর্থ সচিব চিত্রবন হাজারিকা ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মিথিঙ্গা দামারি রয়েছেন। কয়েক মাস আগেই দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উলফার দাবি-দাওয়া পাঠানো হয়েছে। রাজখোয়া এর আগে আইএনএসকে জানান, তিনি একটি ইতিবাচক ও ফলপ্রসূ বৈঠক প্রত্যাশা করছেন।
ভারতের সংবিধানে সংশোধনীর মাধ্যমে আসামের অধিবাসীদের আত্মনিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে কতগুলো অধিকার আদায়ের দাবি জানিয়েছে উলফা। দাবিগুলো হলো—আসামের প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহারে জনগণের পূর্ণ অধিকার, রাজ্যের রাজস্ব আয়ে আসামের পূর্ণ হিস্যা, বাত্সরিক পরিকল্পনা প্রক্রিয়ায় আসামের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ, জননিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং দ্রুত সুষম উন্নয়ন।
কিন্তু এই দাবিনামায় স্বাধীন ও সার্বভৌম আসামের কথা উল্লেখ করেননি উলফার আটক নেতারা। যদিও এর আগে উলফার একমাত্র দাবি ছিল আসামের স্বাধীনতা। ধারণা করা হচ্ছে, এ দাবির প্রেক্ষিতে উলফাকে চলমান যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানাবে সরকার। অস্ত্রসমর্পণের নির্দেশও দেয়া হতে পারে।
২০১১ সালের শুরুতেই শীর্ষ নেতাদের মুক্তির বিনিময়ে যুদ্ধবিরতির একটি চুক্তি হয়েছিল। এদিকে উলফার মধ্যে এখনও যুদ্ধরত অংশটি এ সমঝোতা উদ্যোগ প্রত্যাখান করেছে। গেরিলা দলটির সক্রিয় অংশের নেতা পরেশ বড়ুয়া সংবাদ মাধ্যমগুলোতে পাঠানো এক ই-মেইলে জানিয়েছেন, আমাদের শত্রুদের সঙ্গে কোনো সমঝোতা আলোচনা আমরা সমর্থন করবো না। পরেশ বড়ুয়ার নেতৃত্বাধীন অংশটি আসামের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব ছাড়া অন্য কোনো ইস্যুতে সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি নয়।
উল্লেখ্য, চা ও তেল সম্পদে সমৃদ্ধ আসামে ১৯৭৯ সাল থেকে উলফা স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র লড়াই করে আসছে। গত তিন দশকে সরকারের সঙ্গে উলফার যুদ্ধে কমপক্ষে ১০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।

No comments

Powered by Blogger.