এস ফ্যাক্টর by রুবেল খান,

তারপরও একটা আফসোস রয়েই গেল টেস্ট পরিবারের নবীন সদস্য ইলিয়াস সানির। অভিষেক টেস্টের প্রথম ইনিংসে এক পর্যায়ে ৭৮ রান খরচায় ৬ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন তিনি। ফলে বাংলাদেশের পক্ষে অভিষেক টেস্টের এক ইনিংসে ৮১ রানে ৬ উইকেট তুলে নেওয়া পেসার মঞ্জুরুল ইসলামের রেকর্ডটি কিছুক্ষণের জন্য নিজের করে নিয়েছিলেন সানি। কিন্তু এরপর বল হাতে সানি আর কোনো উইকেট না পাওয়ায় শেষ পর্যন্ত ১০ বছর আগে বুলাওয়েতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা মঞ্জুরুলের রেকর্ডটিই অক্ষত থেকে যায়। কারণ, উইকেটের দিক দিয়ে সমসংখ্যক হলেও রানে মঞ্জুরুলের চেয়ে ১৩ রান বেশি দিয়ে রেকর্ডটি নিজের করে রাখতে পারেননি সানি।


ফিল্ডাররা তার বলে বেশ কয়েকবার ক্যাচ ফেলে না দিলে হয়তো রেকর্ডটি তারই হয়ে যেত। সানির এই ৬ উইকেট শিকারের পর ৩ উইকেট নিয়ে ক্যারিবীয়দের প্রথম ইনিংসটি ২৪৪ রানেই থামিয়ে দেন সাবেক অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
এ দু'জনের ঘূর্ণিজাদুতেই প্রথম ইনিংসে কাটা পড়ে ক্যারিবীয় ৯ ব্যাটসম্যান। তবে ক্যারিবীয়দের প্রথম উইকেটের পতন ঘটান পেসার সাহাদাত হোসেন। বাংলাদেশ দলপতি মুশফিকুর রহিম ক্যারিবীয়দের বধ করতে পাঁচ বোলারের হাতে বল তুলে দিলেও শেষ পর্যন্ত তিন 'এস' অর্থাৎ সানি, সাকিব ও শাহাদাতেই বধ হয় সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল। দ্বিতীয় ইনিংসে ক্যারিবীয়দের যে দুটি উইকেটের পতন হয়েছে, সে দুটি উইকেটও নিয়েছেন সাকিব ও সানি। ম্যাচটি ড্র হলেও শেষ পর্যন্ত দুই ইনিংস মিলিয়ে একাই ক্যারিবীয়দের ৭ উইকেট তুলে নিয়ে অভিষেকেই ম্যাচসেরা হয়েছেন সানি।
সিমন্সকে গালিতে রাকিবুলের সহজ ক্যাচ বানিয়ে শুরুটা করেন পেসার শাহাদাত। এরপর শুরু হয় স্পিনার সানির ধ্বংসযজ্ঞ। নিজের তৃতীয় ওভারেই অ্যাডওয়ার্ডকে এলবিডবি্লউর ফাঁদে ফেলে প্রথম টেস্ট উইকেটের দেখা পান সানি। নিজের সপ্তম ওভারে শর্ট লেগে শাহরিয়ার নাফীসের তালুবন্দি করে ব্রাভোকে দ্বিতীয় শিকার বানান সানি এবং ১২তম ওভারে শর্ট লেগে ইমরুলের হাতে ক্যাচ দিতে ব্রাথওয়েটকে বাধ্য করেন। চতুর্থ শিকার বানাতে বেছে নেন চন্দরপলকে। ৪৯ রান করা চন্দরপল স্লিপে শাহরিয়ার নাফীসকে ক্যাচ দেন। অভিষেক টেস্টেই ৫ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করেন সানি শর্ট কাভারে স্যামুয়েলসকে রাকিবুলের সহজ ক্যাচ বানিয়ে। কার্লটন বাফকে বোল্ড করে ৭৮ রানে ৬ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে করা অভিষেক টেস্টের এক ইনিংসে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির রেকর্ডটি করেন তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত আর উইকেট না পাওয়ায় রেকর্ডটি নিজের করে রাখতে পারেননি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাকি ৩ উইকেট একাই তুলে নেন সাকিব। নিজের ১৭তম ওভারে রামপালকে মুশফিকের ক্যাচ বানান। এর তিন ওভার আগে সাকিবের বলে লং অফে তামিম ক্যারিবীয় অধিনায়ক ড্যারেন স্যামির সহজ ক্যাচ ফেলে দেন। রামপালকে আউট করার পরের ওভারেই ৫৮ রান করা ড্যারেন স্যামিকে বোল্ড করেন সাকিব। তিন বল পর বিশুকে বোল্ড করে ক্যারিবীয়দের প্রথম ইনিংস ২৪৪ রানে থামিয়ে দেন। এরপর ক্যারিবীয়দের দ্বিতীয় ইনিংসে সিমন্সের উইকেটটি তুলে নেন সাকিব। অভিষেক টেস্টে সানির শিকার ৭ উইকেট, যা তাকে ম্যাচসেরার পুরস্কারের পাশাপাশি এনে দিয়েছে তারকাখ্যাতিও।

No comments

Powered by Blogger.