তিউনিসিয়ায় নির্বাচনে জয়ের পথে এনাহদা

তিউনিসিয়ার প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচনে মধ্যপন্থী ইসলামী দল এনাহদা সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে। প্রাথমিক গণনা থেকে এনাহদার নেতারা এ দাবি করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার রাতের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনের ফল ঘোষণা করার কথা ছিল। তবে ভোটে এগিয়ে থাকলেও ধারণা করা হচ্ছে, অন্তর্বর্তী পরিষদ গঠনের জন্য এনাহদাকে অন্য কয়েকটি দলের সঙ্গে জোট করতে হবে।ব্যাপক আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরশাসক জাইন এল আবিদিন বেন আলীর পতনের ৯ মাস পর গত রবিবার তিউনিসিয়ার ইতিহাসের প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচন হয়।


দারিদ্র্য ও দুর্নীতির অবসান এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের দাবিতে তিউনিসিয়ায় প্রবল গণবিক্ষোভ শুরু হলে গত জানুয়ারিতে বেন আলী সৌদি আরবে পালিয়ে যান। এর পর থেকেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার দেশ চালাচ্ছে। নতুন সংবিধান প্রণয়ন এবং একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠনে ২১৭ সদস্যের একটি পরিষদ গঠনের জন্য গত রবিবার ভোট নেওয়া হয়। নতুন পরিষদের তত্ত্বাবধানে আগামী এক বছরের মধ্যে পার্লামেন্ট নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে।
তিউনিসিয়ার নির্বাচন কমিশনের মহাসচিব বোউবাকার বেথাবেত জানান, নিবন্ধিত ৪১ লাখ ভোটারের প্রায় ৯০ শতাংশই ভোট দিয়েছেন। কিন্তু নিবন্ধনহীন ৩১ লাখ ভোটারের মধ্যে কতজন ভোট দিয়েছেন, সে ব্যাপারে কোনো হিসাব নেই তাঁদের কাছে। এবারের নির্বাচনে অনিবন্ধিত ভোটারদেরও ভোটাধিকার প্রয়োগের অধিকার দেওয়া হয়। প্রাথমিক ভোট গণনা থেকেই গতকাল জয় পাওয়ার ঘোষণা দেন এনাহদা পার্টির নেতারা। শতকরা ৪০ ভাগ ভোট পাওয়ার দাবি করেন তাঁরা।
দলের মুখপাত্র ইয়ুসরা ঘান্নুচি জানান, 'যেসব দল বেন আলীর স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে তাদেরই ভোট দিয়েছে তিউনিসীয়রা। এর মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে এনাহদা পার্টি। আমরা এটাই আশা করেছিলাম।'
নির্বাচনের আগে মধ্য বামপন্থী দল পিডিপিকে এনাহদার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবা হয়েছিল। তবে প্রাথমিক গণনার পরই নিজেদের পরাজয় মেনে নিয়েছে তারা। বামপন্থী দল এত্তাকাতোল ও কংগ্রেস ফর দ্য রিপাবলিক (সিআরপি) জানায়, দ্বিতীয় অবস্থান পাওয়ার আশায় প্রতদ্বন্দ্বিতামূলক অবস্থানে আছে তারা। দুটি দলই ১৫ শতাংশের মতো ভোট পাওয়ার আশা করছে।
সাবেক প্রেসিডেন্ট বেন আলীর সময় ১০ বছরের জন্য এনাহদাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এই দলের কর্মীদের নির্যাতন ও বন্দি করা ছাড়াও নির্বাসনে পাঠানো হয়। পুলিশি নির্যাতনের কারণে এনাহদার নেতা রাশিদ ঘান্নুচি প্রায় ২২ বছর ব্রিটেনে নির্বাসনে থাকতে বাধ্য হন। ইসলামপন্থী হিসেবে পরিচিত হলেও উদার ও গণতান্ত্রিক নীতি নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালায় এনাহদা। উদারপন্থী হিসেবে তিউনিসিয়ার যে ভাবমূর্তি রয়েছে তা বজায় রাখবে এবং আরব বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে উন্নত নারী অধিকারের ব্যবস্থা করবে বলেও অঙ্গীকার করে দলটি। সূত্র : বিবিসি, এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.