শিপব্রেকিং শিল্পের নতুন নীতিমালা : চক্রান্তের বেড়াজালে বাংলাদেশ
জাহাজভাঙা শিল্পকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত করার লক্ষ্যে গৃহীত শিপব্রেকিং নীতিমালা নিয়ে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে পুরাতন জাহাজ শিল্প আমদানিকারকদের মধ্যে। জাহাজভাঙা শিল্পের জন্য গঠিত কমিটি প্রণীত শিপব্রেকিং নীতিমালা ওয়েবসাইটে দেয়া হয়েছে। কেনার ক্ষেত্রে বিশ্বের সবখানে উন্মুক্ত নীতিমালা থাকলেও প্রণীত নীতিমালায় শিপব্রেকিং অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য ছাড়া কেউ শিপব্রেকিং ব্যবস্থা পরিচালনা করতে পারবে না।তার পরও জাহাজ বিচিং করার সময় ট্রেড বডির অনুমতি নেয়ার বিধান রাখা হয়েছে। আগে পুরাতন জাহাজ আমদানির ক্ষেত্রে এসব নীতিমালা ছিল না।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বর্তমানে যে নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে তা কার্যকর হলে দুবাই ও সিঙ্গাপুরভিত্তিক ভারতীয় মালিকানাধীন জিএসএম ও ভিরানার সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে শিপব্রেকিং ব্যবসা। উল্লিখিত প্রতিষ্ঠান দুটির স্থানীয় এজেন্ট শিপব্রেকিং শিল্পের নিয়ন্ত্রক হয়ে এরই মধ্যে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
শিপব্রেকিং ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা জানান, পুরাতন জাহাজ আমদানি ও বিক্রির ক্ষেত্রে অহেতুক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে এগুলো করা হয়েছে। নতুন নীতিমালায় জাহাজ আমদানি করলে সংশ্লিষ্ট অ্যাসোসিয়েশন অর্থাত্ শিপব্রেকিং অ্যাসোসিয়েশনের ভ্যালিড সার্টিফিকেট এবং বিচিং করার সময় ট্রেড বডির পারমিশন নিতে হবে। অ্যাসোসিয়েশনের সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রণকরা ব্যবসা কুক্ষিগত করার লক্ষ্যে তাদের সঙ্গে মতের মিল না হলে বিভিন্ন ছুতো ধরে ওই সার্টিফিকেট দেয়া না হলে সংশ্লিষ্ট আমদানিকারকদের বিপাকে পড়তে হবে। তার ওপর এক্ষেত্রে অর্থের বিনিময়ে ছাড়পত্র দেয়ার প্রবণতা আরও প্রবল আকার ধারণ করবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র আরও জানায়, দুবাই ও সিঙ্গাপুরভিত্তিক ভারতীয় সরবরাহকারীর দেশীয় এজেন্টের দুজন প্রতিনিধির অধীন ৬০ শতাংশ শিপব্রেকারের মালিক প্রতিটি পুরাতন জাহাজের ক্ষেত্রে প্রতি টন ২৫ ডলার থেকে ৫০ ডলার মূল্য বাড়িয়ে দিচ্ছে এবং দেবে। এতে পুরাতন জাহাজ আমদানিকারকরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ছাড়া প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ডলার অর্থ বিদেশে পাচারও হবে। দেশীয় অর্থনীতিতে দেখা দেবে বিরূপ প্রতিক্রিয়া।
বাংলাদেশে ৮০ শতাংশ শিপব্রেকারের আন্তর্জাতিক জাহাজ বেচাকেনা সম্পর্কে ধারণা নেই। তাই গুটিকয়েক শিপব্রেকার দিয়ে শারীরিক, মানসিক ও অর্থনৈতিক হুমকিতে থাকে। এ হুমকির কারণে তারা উচ্চবাচ্য করতে সাহস পায় না। এ দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে কিং মেকাররা জাহাজের দাম বাড়িয়ে দেশের কষ্টার্জিত ডলার বিদেশে পাচার করে বলে সংশ্লিষ্ট অনেক পুরাতন জাহাজ আমদনিকারক জানান।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানান, সরকার চাইলে জাতীয় বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে তদন্ত করে শিপব্রেকিং ব্যবসাকে উন্মুক্ত করে সুস্থ ধারার শিপব্রেকিং ব্যবসার ব্যবস্থা করে দিতে পারে। এতে রডের দাম কমে আসবে।
উল্লেখ্য, ২৫ থেকে ৫০ ডলার দামে কেনার কারণে দেশে রডের বাজার সবসময় ২ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা বেশি থাকে।
প্রায় তিন যুগ আগে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড ও ফৌজদারহাট সমুদ্র অঞ্চলে আটকেপড়া জাহাজ কুইন আল লাইন ভাড়ার মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া দেশের প্রথম জাহাজভাঙা শিল্প বর্তমানে আরও বিস্তারলাভ করে কুমিরা-সীতাকুন্ড বাঁশবাড়িয়া এলাকাজুড়ে।
সম্প্রতি জাহাজভাঙা শিল্পের জন্য সুষ্ঠু নীতিমালা প্রণয়নের জন্য এর আগে শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়াকে প্রধান করে জাতীয় কমিটি এবং শিল্প সচিবকে প্রধান করে নির্বাহী কমিটি গঠন করা হয়। এসব কমিটি গঠনের পর সম্প্রতি দিলীপ বড়ুয়ার নেতৃত্বে একটি দল চীন সফরে গিয়ে শিপব্রেকিং ইয়ার্ড পরিদর্শন করেন। গত মাসের শেষ সপ্তাহে আসেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব। প্রতিবেশী দেশসহ বিভিন্ন দেশের প্রণীত নীতিমালা অনুযায়ী শিপব্রেকিং বিধিমালার কাজ এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, জাহাজভাঙা শিল্পে বর্তমানে দেশি-বিদেশি এবং রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো ২০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে।
বাংলাদেশের জাহাজ শিল্প এখন নেতৃত্বের অবস্থানে রয়েছে। ফলে একটি গোষ্ঠী চাইছে না এ শিল্প প্রতিষ্ঠিত হোক। তাই তারা এ শিল্প ধ্বংসের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। বাংলাদেশের জাহাজ শিল্প এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক মান অর্জন করেছে। এখন জাহাজভাঙা শিল্পকে পরিবেশ অধিদফতর সনদ, আইএসও সনদসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক কনভেনশন মেনে চলতে হয়। এ বক্তব্য নৌ বাণিজ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক কমোডর জোবায়ের আহমেদের।
বর্তমানে সীতাকুন্ডের শিপইয়ার্ডগুলোতে সরাসরি কাজ করছে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার শ্রমিক। পরোক্ষভাবে এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত হয়ে দেড় থেকে দুই লাখ লোক জীবিকা নির্বাহ করছে। বর্তমানে এই শিল্প পুরনো যন্ত্রপাতি, নানারকম মূল্যবান সামগ্রী ও প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য লাখ লাখ টন লোহা সরবরাহ করছে। দেশে লোহার চাহিদার ৮০ শতাংশই জোগান দিচ্ছে এই জাহাজভাঙা শিল্প। বর্তমানে ভারত, বাংলাদেশ, চীন, পাকিস্তান, তুরস্কসহ হাতেগোনা কয়েকটি দেশে জাহাজভাঙার কাজ চলছে। ২০০৫ সালের এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশ ৬৯, ভারত ৫৩ ও চীন ১০টি পুরনো জাহাজ কেটেছে বাণিজ্যিকভাবে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলো জাহাজভাঙার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়ায় ভবিষ্যতে বাংলাদেশই বিশ্বের প্রধান জাহাজভাঙা দেশে পরিণত হতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
শিপব্রেকিং ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা জানান, পুরাতন জাহাজ আমদানি ও বিক্রির ক্ষেত্রে অহেতুক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে এগুলো করা হয়েছে। নতুন নীতিমালায় জাহাজ আমদানি করলে সংশ্লিষ্ট অ্যাসোসিয়েশন অর্থাত্ শিপব্রেকিং অ্যাসোসিয়েশনের ভ্যালিড সার্টিফিকেট এবং বিচিং করার সময় ট্রেড বডির পারমিশন নিতে হবে। অ্যাসোসিয়েশনের সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রণকরা ব্যবসা কুক্ষিগত করার লক্ষ্যে তাদের সঙ্গে মতের মিল না হলে বিভিন্ন ছুতো ধরে ওই সার্টিফিকেট দেয়া না হলে সংশ্লিষ্ট আমদানিকারকদের বিপাকে পড়তে হবে। তার ওপর এক্ষেত্রে অর্থের বিনিময়ে ছাড়পত্র দেয়ার প্রবণতা আরও প্রবল আকার ধারণ করবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র আরও জানায়, দুবাই ও সিঙ্গাপুরভিত্তিক ভারতীয় সরবরাহকারীর দেশীয় এজেন্টের দুজন প্রতিনিধির অধীন ৬০ শতাংশ শিপব্রেকারের মালিক প্রতিটি পুরাতন জাহাজের ক্ষেত্রে প্রতি টন ২৫ ডলার থেকে ৫০ ডলার মূল্য বাড়িয়ে দিচ্ছে এবং দেবে। এতে পুরাতন জাহাজ আমদানিকারকরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ছাড়া প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ডলার অর্থ বিদেশে পাচারও হবে। দেশীয় অর্থনীতিতে দেখা দেবে বিরূপ প্রতিক্রিয়া।
বাংলাদেশে ৮০ শতাংশ শিপব্রেকারের আন্তর্জাতিক জাহাজ বেচাকেনা সম্পর্কে ধারণা নেই। তাই গুটিকয়েক শিপব্রেকার দিয়ে শারীরিক, মানসিক ও অর্থনৈতিক হুমকিতে থাকে। এ হুমকির কারণে তারা উচ্চবাচ্য করতে সাহস পায় না। এ দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে কিং মেকাররা জাহাজের দাম বাড়িয়ে দেশের কষ্টার্জিত ডলার বিদেশে পাচার করে বলে সংশ্লিষ্ট অনেক পুরাতন জাহাজ আমদনিকারক জানান।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানান, সরকার চাইলে জাতীয় বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে তদন্ত করে শিপব্রেকিং ব্যবসাকে উন্মুক্ত করে সুস্থ ধারার শিপব্রেকিং ব্যবসার ব্যবস্থা করে দিতে পারে। এতে রডের দাম কমে আসবে।
উল্লেখ্য, ২৫ থেকে ৫০ ডলার দামে কেনার কারণে দেশে রডের বাজার সবসময় ২ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা বেশি থাকে।
প্রায় তিন যুগ আগে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড ও ফৌজদারহাট সমুদ্র অঞ্চলে আটকেপড়া জাহাজ কুইন আল লাইন ভাড়ার মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া দেশের প্রথম জাহাজভাঙা শিল্প বর্তমানে আরও বিস্তারলাভ করে কুমিরা-সীতাকুন্ড বাঁশবাড়িয়া এলাকাজুড়ে।
সম্প্রতি জাহাজভাঙা শিল্পের জন্য সুষ্ঠু নীতিমালা প্রণয়নের জন্য এর আগে শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়াকে প্রধান করে জাতীয় কমিটি এবং শিল্প সচিবকে প্রধান করে নির্বাহী কমিটি গঠন করা হয়। এসব কমিটি গঠনের পর সম্প্রতি দিলীপ বড়ুয়ার নেতৃত্বে একটি দল চীন সফরে গিয়ে শিপব্রেকিং ইয়ার্ড পরিদর্শন করেন। গত মাসের শেষ সপ্তাহে আসেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব। প্রতিবেশী দেশসহ বিভিন্ন দেশের প্রণীত নীতিমালা অনুযায়ী শিপব্রেকিং বিধিমালার কাজ এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, জাহাজভাঙা শিল্পে বর্তমানে দেশি-বিদেশি এবং রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো ২০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে।
বাংলাদেশের জাহাজ শিল্প এখন নেতৃত্বের অবস্থানে রয়েছে। ফলে একটি গোষ্ঠী চাইছে না এ শিল্প প্রতিষ্ঠিত হোক। তাই তারা এ শিল্প ধ্বংসের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। বাংলাদেশের জাহাজ শিল্প এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক মান অর্জন করেছে। এখন জাহাজভাঙা শিল্পকে পরিবেশ অধিদফতর সনদ, আইএসও সনদসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক কনভেনশন মেনে চলতে হয়। এ বক্তব্য নৌ বাণিজ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক কমোডর জোবায়ের আহমেদের।
বর্তমানে সীতাকুন্ডের শিপইয়ার্ডগুলোতে সরাসরি কাজ করছে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার শ্রমিক। পরোক্ষভাবে এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত হয়ে দেড় থেকে দুই লাখ লোক জীবিকা নির্বাহ করছে। বর্তমানে এই শিল্প পুরনো যন্ত্রপাতি, নানারকম মূল্যবান সামগ্রী ও প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য লাখ লাখ টন লোহা সরবরাহ করছে। দেশে লোহার চাহিদার ৮০ শতাংশই জোগান দিচ্ছে এই জাহাজভাঙা শিল্প। বর্তমানে ভারত, বাংলাদেশ, চীন, পাকিস্তান, তুরস্কসহ হাতেগোনা কয়েকটি দেশে জাহাজভাঙার কাজ চলছে। ২০০৫ সালের এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশ ৬৯, ভারত ৫৩ ও চীন ১০টি পুরনো জাহাজ কেটেছে বাণিজ্যিকভাবে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলো জাহাজভাঙার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়ায় ভবিষ্যতে বাংলাদেশই বিশ্বের প্রধান জাহাজভাঙা দেশে পরিণত হতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
No comments