নতুন ব্যাংকের শর্ত শিথিল করতে চাপ
নতুন ব্যাংক প্রতিষ্ঠার নীতিমালা করে বিপাকে পড়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নীতিমালাটি পছন্দ হয়নি আগ্রহী উদ্যোক্তাদের। তাঁরা অল্প বিনিয়োগে ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করতে চান, অর্থের উৎস জানাতেও চান না। নীতিমালার শর্ত শিথিল করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের ওপর তীব্র চাপ দেওয়া হচ্ছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা ও ঘনিষ্ঠজনেরা এই চাপ দিচ্ছেন। তাঁরাই মূলত নতুন ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করতে চান। এমনকি অর্থ মন্ত্রণালয় থেকেও চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। একাধিক মন্ত্রীও এই দলে রয়েছেন।
সবার চাপে পড়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক গতকাল মঙ্গলবার তাদের পরিচালনা পর্ষদে বিষয়টি উপস্থাপন করে। জানা যায়, নতুন ব্যাংক প্রতিষ্ঠায় প্রকাশিত নীতিমালাকে কিছুটা নমনীয় করে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রস্তাবটি পর্ষদ সভায় উপস্থাপন করে। তবে সরকার ও বেসরকারি খাতের বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত এই পর্ষদ নীতিমালা শিথিলের অনুমোদন দেয়নি।
জানা গেছে, নতুন ব্যাংক প্রতিষ্ঠার নীতিমালায় নতুন ব্যাংক প্রতিষ্ঠায় কমপক্ষে ৪০০ কোটি টাকার পরিশোধিত মূলধন সংরক্ষণে বাধ্যবাধকতা রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে এই অর্থের বিপরীতে আয়কর দেওয়া থাকতে হবে এবং আয়কর বিভাগের প্রত্যয়িত টাকায় উদ্যোক্তা হতে হবে। আবার কর বিভাগের কোনো অনিষ্পন্ন মামলা থাকলে নতুন ব্যাংকের উদ্যোক্তা হওয়া যাবে না বলেও শর্ত দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, মূলত এই তিনটি শর্ত নিয়েই সরকারের চাপের মুখে পড়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পর্ষদে অনুমোদিত এই নীতিমালাটি তৈরি করে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা। যাঁরা তৈরি করেছেন, তাঁরাও এখন সরকারের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের রোষানলে পড়েছেন বলে জানা গেছে।
নতুন ব্যাংক প্রতিষ্ঠা নিয়ে নানা সমালোচনা থাকলেও মূলত রাজনৈতিক চাপেই সরকার নতুন ব্যাংক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মূলত আওয়ামী লীগ সরকারদলীয় রাজনীতিবিদ, রাজনীতিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও বুদ্ধিজীবীরা এই সরকার আসার পর থেকেই নতুন ব্যাংকের জন্য আবেদনপত্র দিয়ে রেখেছেন। এমনকি প্রস্তাবিত ব্যাংকের কার্যালয়ও খোলা হয়েছে। নতুন ব্যাংক প্রতিষ্ঠার বিষয়টি রাজনৈতিক বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে বলে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সংবাদমাধ্যমকেও জানিয়েছিলেন।
ব্যাংক পেতে আগ্রহীরা মনে করেছিলেন, সহজেই এবং অল্প বিনিয়োগ করেই ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন। এ জন্য নতুন একটা নীতিমালাও করে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিপত্তি দেখা দিয়েছে এই নতুন নীতিমালা নিয়েই।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্ষদ সদস্য সাদিক আহমেদ গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, পর্ষদ ব্যাংকিং বিষয়ে আন্তর্জাতিক সর্বোত্তম চর্চাকে বিবেচনায় নিয়েই নতুন ব্যাংক প্রতিষ্ঠার নীতিমালা তৈরি করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা বরং আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় এসব ক্ষেত্রে কিছুটা শিথিল নীতি অনুসরণ করেছি। নতুন করে শিথিলতার সুযোগ নেই।’
বাংলাদেশে নতুন ব্যাংক প্রতিষ্ঠায় মূলধন ৪০০ কোটি টাকা করা হলেও ভারতে এর পরিমাণ ৫০০ কোটি রুপি। আর পাকিস্তানে তা ৮০০ কোটি রুপি।
বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন নীতিমালা তৈরি করে ১৪ ও ২৭ সেপ্টেম্বর নতুন করে আবেদনপত্র চায়। ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত আবেদনপত্র দেওয়া যাবে। তবে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত একটি আবেদনপত্রও জমা পড়েনি বলে জানা গেছে। মূলত বেশি এবং সাদা বা প্রদর্শিত অর্থ দিয়ে ব্যাংক করতে হবে বলে আগ্রহীরা পিছিয়ে গেছেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অপর পরিচালক মোস্তফা কে মুজেরীর সঙ্গে এ নিয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি পর্ষদের আলোচনার বিষয় নিয়ে কিছু বলতে অনাগ্রহ দেখান। তবে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নতুন ব্যাংক প্রতিষ্ঠার আবেদন আহ্বান করার পর শর্ত শিথিল করার সুযোগ কোথায়? এতে তো জটিলতা তৈরি হবে।’
এদিকে, বিশ্বব্যাংক গতকাল বাংলাদেশের অর্থনীতির সর্বশেষ যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, তাতে বলা হয়েছে যে ইতিমধ্যে বাংলাদেশ অতিরিক্ত ব্যাংক থাকার সমস্যার মধ্যে রয়েছে। এ অবস্থায় নতুন ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হলে প্রতিযোগিতা তৈরি না হয়ে বরং অর্থায়নে প্রবেশাধিকারের সুযোগ না-ও হতে পারে।
এর আগে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) একটি মিশন সরকারকে বেসরকারি খাতে নতুন ব্যাংক প্রতিষ্ঠার চিন্তা আপাতত বাদ দিতে পরামর্শ দিয়েছে। তারা বলেছে, নতুন ব্যাংকের আগে গুরুত্বপূর্ণ হলো বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা বৃদ্ধি ও ব্যাংক কোম্পানি আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধন।
বাংলাদেশ সফর করে আইএমএফের মিশনপ্রধান ডেভিড কাউয়েন গত সেপ্টেম্বরে সংবাদ সম্মেলন করে বলেছিলেন, ‘আমি মনে করি, বর্তমানে যে পরিস্থিতি বাংলাদেশে বিরাজ করছে, তাতে সরকারের উচিত হবে নতুন ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করার সিদ্ধান্তটি স্থগিত করা।’
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জাতীয় সংসদে চলতি অর্থবছরের বাজেট পাসের দিন গত ২৯ জুন দেশে নতুন ব্যাংক প্রতিষ্ঠার লাইসেন্স দেওয়ার জন্য দরপত্র আহ্বানের ঘোষণা দিয়েছিলেন। এর পর থেকেই দেশে নতুন ব্যাংক প্রতিষ্ঠার বিষয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।
জানা গেছে, নতুন ব্যাংক প্রতিষ্ঠার নীতিমালায় নতুন ব্যাংক প্রতিষ্ঠায় কমপক্ষে ৪০০ কোটি টাকার পরিশোধিত মূলধন সংরক্ষণে বাধ্যবাধকতা রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে এই অর্থের বিপরীতে আয়কর দেওয়া থাকতে হবে এবং আয়কর বিভাগের প্রত্যয়িত টাকায় উদ্যোক্তা হতে হবে। আবার কর বিভাগের কোনো অনিষ্পন্ন মামলা থাকলে নতুন ব্যাংকের উদ্যোক্তা হওয়া যাবে না বলেও শর্ত দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, মূলত এই তিনটি শর্ত নিয়েই সরকারের চাপের মুখে পড়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পর্ষদে অনুমোদিত এই নীতিমালাটি তৈরি করে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা। যাঁরা তৈরি করেছেন, তাঁরাও এখন সরকারের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের রোষানলে পড়েছেন বলে জানা গেছে।
নতুন ব্যাংক প্রতিষ্ঠা নিয়ে নানা সমালোচনা থাকলেও মূলত রাজনৈতিক চাপেই সরকার নতুন ব্যাংক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মূলত আওয়ামী লীগ সরকারদলীয় রাজনীতিবিদ, রাজনীতিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও বুদ্ধিজীবীরা এই সরকার আসার পর থেকেই নতুন ব্যাংকের জন্য আবেদনপত্র দিয়ে রেখেছেন। এমনকি প্রস্তাবিত ব্যাংকের কার্যালয়ও খোলা হয়েছে। নতুন ব্যাংক প্রতিষ্ঠার বিষয়টি রাজনৈতিক বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে বলে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সংবাদমাধ্যমকেও জানিয়েছিলেন।
ব্যাংক পেতে আগ্রহীরা মনে করেছিলেন, সহজেই এবং অল্প বিনিয়োগ করেই ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন। এ জন্য নতুন একটা নীতিমালাও করে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিপত্তি দেখা দিয়েছে এই নতুন নীতিমালা নিয়েই।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্ষদ সদস্য সাদিক আহমেদ গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, পর্ষদ ব্যাংকিং বিষয়ে আন্তর্জাতিক সর্বোত্তম চর্চাকে বিবেচনায় নিয়েই নতুন ব্যাংক প্রতিষ্ঠার নীতিমালা তৈরি করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা বরং আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় এসব ক্ষেত্রে কিছুটা শিথিল নীতি অনুসরণ করেছি। নতুন করে শিথিলতার সুযোগ নেই।’
বাংলাদেশে নতুন ব্যাংক প্রতিষ্ঠায় মূলধন ৪০০ কোটি টাকা করা হলেও ভারতে এর পরিমাণ ৫০০ কোটি রুপি। আর পাকিস্তানে তা ৮০০ কোটি রুপি।
বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন নীতিমালা তৈরি করে ১৪ ও ২৭ সেপ্টেম্বর নতুন করে আবেদনপত্র চায়। ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত আবেদনপত্র দেওয়া যাবে। তবে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত একটি আবেদনপত্রও জমা পড়েনি বলে জানা গেছে। মূলত বেশি এবং সাদা বা প্রদর্শিত অর্থ দিয়ে ব্যাংক করতে হবে বলে আগ্রহীরা পিছিয়ে গেছেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অপর পরিচালক মোস্তফা কে মুজেরীর সঙ্গে এ নিয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি পর্ষদের আলোচনার বিষয় নিয়ে কিছু বলতে অনাগ্রহ দেখান। তবে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নতুন ব্যাংক প্রতিষ্ঠার আবেদন আহ্বান করার পর শর্ত শিথিল করার সুযোগ কোথায়? এতে তো জটিলতা তৈরি হবে।’
এদিকে, বিশ্বব্যাংক গতকাল বাংলাদেশের অর্থনীতির সর্বশেষ যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, তাতে বলা হয়েছে যে ইতিমধ্যে বাংলাদেশ অতিরিক্ত ব্যাংক থাকার সমস্যার মধ্যে রয়েছে। এ অবস্থায় নতুন ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হলে প্রতিযোগিতা তৈরি না হয়ে বরং অর্থায়নে প্রবেশাধিকারের সুযোগ না-ও হতে পারে।
এর আগে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) একটি মিশন সরকারকে বেসরকারি খাতে নতুন ব্যাংক প্রতিষ্ঠার চিন্তা আপাতত বাদ দিতে পরামর্শ দিয়েছে। তারা বলেছে, নতুন ব্যাংকের আগে গুরুত্বপূর্ণ হলো বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা বৃদ্ধি ও ব্যাংক কোম্পানি আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধন।
বাংলাদেশ সফর করে আইএমএফের মিশনপ্রধান ডেভিড কাউয়েন গত সেপ্টেম্বরে সংবাদ সম্মেলন করে বলেছিলেন, ‘আমি মনে করি, বর্তমানে যে পরিস্থিতি বাংলাদেশে বিরাজ করছে, তাতে সরকারের উচিত হবে নতুন ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করার সিদ্ধান্তটি স্থগিত করা।’
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জাতীয় সংসদে চলতি অর্থবছরের বাজেট পাসের দিন গত ২৯ জুন দেশে নতুন ব্যাংক প্রতিষ্ঠার লাইসেন্স দেওয়ার জন্য দরপত্র আহ্বানের ঘোষণা দিয়েছিলেন। এর পর থেকেই দেশে নতুন ব্যাংক প্রতিষ্ঠার বিষয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।
No comments