সেমিনারে গওহর রিজভী-ঢাকা-দিল্লি সমস্যা নিরসনে দুই প্রধানমন্ত্রীই কিছু ঝুঁকি নিয়েছেন
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার অনেক ইস্যু ইতিমধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে এবং তিস্তার মতো কয়েকটি ইস্যু নিষ্পত্তির পথে আছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী। ঢাকা ও দিল্লির মধ্যে বিরাজমান সমস্যাগুলো নিরসনে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীই কিছু 'হিসেবি ঝুঁকি' (ক্যালকুলেটিভ রিস্ক) নিয়েছেন বলে মনে করেন তিনি।বর্তমান সরকারের আমলে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়ন বিষয়ে গওহর রিজভী বলেন, 'দিল্লিতে যখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে একান্ত বৈঠকে বসেন তখন আমাদের প্রধানমন্ত্রী গতানুগতিক পদ্ধতি নাকচ করেছেন। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলেছিলেন একটা দেওয়া একটা নেওয়ার মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে এগিয়ে যেতে।
কিন্তু তিনি (শেখ হাসিনা) তা করেননি। তিনি সব সমস্যার সমাধান চেয়েছিলেন।'গতকাল মঙ্গলবার ঢাকায় নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত 'পররাষ্ট্রনীতি ও সুশাসন' শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
সেমিনারে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিএনপি নেতা এম মোরশেদ খান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাংঘর্ষিক কর্মপরিধি এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা সফরের বিভিন্ন অসংগতি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, "পররাষ্ট্রনীতিতে 'বড় ভাই ছোট ভাই' হলে চলে না।"
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির (এনএসইউ) উপাচার্য ড. হাফিজ জি এ সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে এ সেমিনার হয়। আলোচকদের মধ্যে আরো ছিলেন বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি নিল ওয়াকার ও ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত সুইং ওলিং।
সেমিনারে বক্তব্য দেন এনএসইউ ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এম নাঈম হোসেইন।
সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোরশেদ খান সেমিনারে পেঁৗছালে গওহর রিজভী তাঁকে জড়িয়ে ধরে উষ্ণ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এ সময় সবাই করতালি দিয়ে দুজনকে অভিনন্দন জানান।
গওহর রিজভী তাঁর বক্তব্যের শুরুতে বলেন, সরকার গঠনের পর প্রধানমন্ত্রী তাঁকে ডেকে বিরাজমান সমস্যাগুলো সমাধানে উদ্যোগ নিতে বলেন। সেই সময় তিনি মোরশেদ খানসহ সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও কূটনীতিকদের পরামর্শ নিয়েছিলেন।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির সাফল্য বিষয়ে উপদেষ্টা ইরাক ও আফগানিস্তানে বিদেশি সেনাদের দীর্ঘদিন ধরে উপস্থিতির উদাহরণ দেন। তিনি বলেন, সরকারের দূরদর্শিতার কারণে বিদেশি (ভারতীয়) সেনারা স্বাধীনতাযুদ্ধের পর স্বল্পতম সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ ছেড়েছিল।
গওহর রিজভী বলেন, ঢাকায় শেখ হাসিনা ও মনমোহন সিংয়ের শীর্ষ বৈঠকের মধ্য দিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক আরো এগিয়ে গেছে। প্রথম বারের মতো একটি সহযোগিতার কাঠামোবিষয়ক সমঝোতা হয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, গণমাধ্যমে তা গুরুত্ব পেল না। সবাই তিস্তাকেই গুরুত্ব দিয়ে বলেছে, 'তিস্তার জলে সব ডুবল।'
উপদেষ্টা বলেন, '৪৬টি পণ্য ভারতের বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পেয়েছে। এর ফলে আসলে আমাদের ৯৮ শতাংশ রপ্তানি পণ্য শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পেল। আমরা ভারত থেকে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ পাচ্ছি। এর ফলে আমাদের ব্যাপক হারে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।'
গওহর রিজভীর বক্তব্যে বিদ্যুৎ খাতে উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতার বিষয়টিও উঠে আসে। তিনি বলেন, নেপাল ও ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানির সুযোগ তৈরি হয়েছে। এমনকি আঞ্চলিক গ্রিডের মাধ্যমে উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ রপ্তানিও করতে পারবে। ভারতের ভেতর দিয়ে স্থলপথে ভুটানের সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগও বড় অর্জন বলে মনে করেন তিনি।
রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার দাবির পাশাপাশি উপকূলীয় বাণিজ্য, রেল যোগাযোগ, এশিয়ান হাইওয়ে নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলে জানান গওহর রিজভী। তিনি বলেন, মিয়ানমারের ভেতর দিয়ে চীনের সঙ্গে যোগাযোগের বিষয় নিয়েও আলোচনা হচ্ছে। চীনের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, দেশটি প্রকল্প বাস্তবায়নে আরো গতি চায়।
সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোরশেদ খান বলেন, বৈদেশিক সাহায্য, বাণিজ্য, বৈদেশিক গোয়েন্দা তথ্য (ইনটেলিজেন্স) ও জনশক্তি প্রেরণ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্রনীতি সংশ্লিষ্ট বিষয় হলেও এগুলো বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও পরিদপ্তর দেখভাল করছে। এর ফলে মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যেই কাজের পরিধিতে সংঘর্ষ হচ্ছে।
গত সেপ্টেম্বরে মনমোহনের সফরে তিস্তা চুক্তি না হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন মোরশেদ খান। পররাষ্ট্রনীতির (সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে শত্রুতা নয়) সমালোচনা করে তিনি বলেন, 'আমি বিশ্বাস করি, কেউই স্থায়ী শত্রু আবার কেউই স্থায়ী বন্ধু নয়। বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষা করাই বড়।' পানি ও অন্য সমস্যাগুলো নিরসনে চীনকে নিয়ে বৃহৎ পরিসরে আলোচনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন বিএনপির এই নেতা।
মোরশেদ খান আরো বলেন, দুই দেশের সরকার বাঘ রক্ষায় সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে। অথচ সীমান্তে হত্যা বন্ধে এ ধরনের কিছু হয়নি।
জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি নিল ওয়াকার সুশাসনের জন্য শাসন ব্যবস্থার মান, অংশগ্রহণের সুযোগ, আইনের শাসন ও মানবাধিকারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, মানবাধিকারবিষয়ক ৯টি গুরুত্বপূর্ণ দলিলে স্বাক্ষরের মাধ্যমে মানবাধিকারের প্রতি বাংলাদেশের দৃঢ় সংকল্পই প্রকাশ পেয়েছে।
ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত সুইং ওলিং বলেন, 'আমার দেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের সফর শেষে আমি তাদের কাছে এ দেশ সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলাম। তারা দুটি বিষয়ের কথা বলেছে। একটি হলো, যত ভালো শুনেছিলেন, এ দেশ তার চেয়েও ভালো। আরেকটি হলো এ দেশের মানুষ অত্যন্ত পরিশ্রমী।'
সেমিনারে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিএনপি নেতা এম মোরশেদ খান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাংঘর্ষিক কর্মপরিধি এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা সফরের বিভিন্ন অসংগতি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, "পররাষ্ট্রনীতিতে 'বড় ভাই ছোট ভাই' হলে চলে না।"
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির (এনএসইউ) উপাচার্য ড. হাফিজ জি এ সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে এ সেমিনার হয়। আলোচকদের মধ্যে আরো ছিলেন বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি নিল ওয়াকার ও ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত সুইং ওলিং।
সেমিনারে বক্তব্য দেন এনএসইউ ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এম নাঈম হোসেইন।
সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোরশেদ খান সেমিনারে পেঁৗছালে গওহর রিজভী তাঁকে জড়িয়ে ধরে উষ্ণ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এ সময় সবাই করতালি দিয়ে দুজনকে অভিনন্দন জানান।
গওহর রিজভী তাঁর বক্তব্যের শুরুতে বলেন, সরকার গঠনের পর প্রধানমন্ত্রী তাঁকে ডেকে বিরাজমান সমস্যাগুলো সমাধানে উদ্যোগ নিতে বলেন। সেই সময় তিনি মোরশেদ খানসহ সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও কূটনীতিকদের পরামর্শ নিয়েছিলেন।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির সাফল্য বিষয়ে উপদেষ্টা ইরাক ও আফগানিস্তানে বিদেশি সেনাদের দীর্ঘদিন ধরে উপস্থিতির উদাহরণ দেন। তিনি বলেন, সরকারের দূরদর্শিতার কারণে বিদেশি (ভারতীয়) সেনারা স্বাধীনতাযুদ্ধের পর স্বল্পতম সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ ছেড়েছিল।
গওহর রিজভী বলেন, ঢাকায় শেখ হাসিনা ও মনমোহন সিংয়ের শীর্ষ বৈঠকের মধ্য দিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক আরো এগিয়ে গেছে। প্রথম বারের মতো একটি সহযোগিতার কাঠামোবিষয়ক সমঝোতা হয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, গণমাধ্যমে তা গুরুত্ব পেল না। সবাই তিস্তাকেই গুরুত্ব দিয়ে বলেছে, 'তিস্তার জলে সব ডুবল।'
উপদেষ্টা বলেন, '৪৬টি পণ্য ভারতের বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পেয়েছে। এর ফলে আসলে আমাদের ৯৮ শতাংশ রপ্তানি পণ্য শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পেল। আমরা ভারত থেকে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ পাচ্ছি। এর ফলে আমাদের ব্যাপক হারে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।'
গওহর রিজভীর বক্তব্যে বিদ্যুৎ খাতে উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতার বিষয়টিও উঠে আসে। তিনি বলেন, নেপাল ও ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানির সুযোগ তৈরি হয়েছে। এমনকি আঞ্চলিক গ্রিডের মাধ্যমে উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ রপ্তানিও করতে পারবে। ভারতের ভেতর দিয়ে স্থলপথে ভুটানের সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগও বড় অর্জন বলে মনে করেন তিনি।
রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার দাবির পাশাপাশি উপকূলীয় বাণিজ্য, রেল যোগাযোগ, এশিয়ান হাইওয়ে নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলে জানান গওহর রিজভী। তিনি বলেন, মিয়ানমারের ভেতর দিয়ে চীনের সঙ্গে যোগাযোগের বিষয় নিয়েও আলোচনা হচ্ছে। চীনের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, দেশটি প্রকল্প বাস্তবায়নে আরো গতি চায়।
সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোরশেদ খান বলেন, বৈদেশিক সাহায্য, বাণিজ্য, বৈদেশিক গোয়েন্দা তথ্য (ইনটেলিজেন্স) ও জনশক্তি প্রেরণ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্রনীতি সংশ্লিষ্ট বিষয় হলেও এগুলো বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও পরিদপ্তর দেখভাল করছে। এর ফলে মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যেই কাজের পরিধিতে সংঘর্ষ হচ্ছে।
গত সেপ্টেম্বরে মনমোহনের সফরে তিস্তা চুক্তি না হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন মোরশেদ খান। পররাষ্ট্রনীতির (সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে শত্রুতা নয়) সমালোচনা করে তিনি বলেন, 'আমি বিশ্বাস করি, কেউই স্থায়ী শত্রু আবার কেউই স্থায়ী বন্ধু নয়। বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষা করাই বড়।' পানি ও অন্য সমস্যাগুলো নিরসনে চীনকে নিয়ে বৃহৎ পরিসরে আলোচনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন বিএনপির এই নেতা।
মোরশেদ খান আরো বলেন, দুই দেশের সরকার বাঘ রক্ষায় সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে। অথচ সীমান্তে হত্যা বন্ধে এ ধরনের কিছু হয়নি।
জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি নিল ওয়াকার সুশাসনের জন্য শাসন ব্যবস্থার মান, অংশগ্রহণের সুযোগ, আইনের শাসন ও মানবাধিকারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, মানবাধিকারবিষয়ক ৯টি গুরুত্বপূর্ণ দলিলে স্বাক্ষরের মাধ্যমে মানবাধিকারের প্রতি বাংলাদেশের দৃঢ় সংকল্পই প্রকাশ পেয়েছে।
ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত সুইং ওলিং বলেন, 'আমার দেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের সফর শেষে আমি তাদের কাছে এ দেশ সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলাম। তারা দুটি বিষয়ের কথা বলেছে। একটি হলো, যত ভালো শুনেছিলেন, এ দেশ তার চেয়েও ভালো। আরেকটি হলো এ দেশের মানুষ অত্যন্ত পরিশ্রমী।'
No comments