প্রতিবাদ-বিক্ষোভ, জুতা মিছিল- সংঘর্ষ, গাফফার চৌধুরীর অনুষ্ঠান পণ্ড by মনির হায়দার
আল্লাহ,
রাসুল (স:) ও তাঁর সাহাবীদের সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করার প্রতিবাদে
এবার নিউ ইয়র্ক প্রবাসী বাংলাদেশীদের কয়েকটি গ্রুপ কতৃক প্রতিরোধের মুখে
পড়েছেন আবদুল গাফফার চৌধুরী। বর্তমানে নিউ ইয়র্ক সফররত এই সাংবাদিক
বিক্ষুব্ধ প্রতিবাদকারীদের শক্ত প্রতিরোধের মুখে রোববার নিউ ইয়র্ক সিটির
জ্যামাইকা ও ব্রুকলিনে দুটি পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি বাতিল করতে বাধ্য হন।
তার সম্ভাব্য বক্তৃতার অনুষ্ঠানকে ঘিরে ব্রুকলিন এলাকায় জুতা মিছিল এবং
সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. আব্দুল
মোমেনের আমন্ত্রণে নিউ ইয়র্ক সফররত আবদুল গাফফার চৌধুরী গত শুক্রবার
ম্যানহাটনের বাংলাদেশ মিশন মিলনায়তনে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
সেখানে আল্লাহ, রাসুল (স:), সাহাবিগণ এবং পর্দা প্রথাসহ ইসলামের বিভিন্ন
বিষয় সম্পর্কে তার কিছু বক্তৃতা দেশে-বিদেশে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। এই পটভূমিতে রোববার সন্ধ্যায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের একটি অংশ নিউ ইয়র্ক
সিটির জ্যামাইকা এলাকায় তাজমহল পার্টি সেন্টারে গাফফার চৌধুরীর সম্মানে
একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এই পার্টি সেন্টারের অনতিদূরেই অবস্থিত নিউ
ইয়র্ক শহরের অন্যতম বৃহৎ ইসলামিক সেন্টার। এলাকায় গাফফার চৌধুরী আসছেন-এমন
খবর জানাজানি হওয়ার পর বিকালের মধ্যেই বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশী
সেখানে জড়ো হয়ে প্রতিবাদ জানাতে শুরুর করেন । পরিস্থিতির অবনতির আশংকায়
সেখানে দ্রুত পুলিশের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। এ অবস্থায় তাজমহল পার্টি
সেন্টার কর্তৃপক্ষ অনুষ্ঠানের আয়োজকদের জানিয়ে দেন যে, তাদের পক্ষে সেখানে
অনুষ্ঠান করতে দেয়া সম্ভব নয়। এরপর আয়োজকরা অল্প সময়ের নোটিশে সিটির
ব্রুকলিন এলাকায় সন্দ্বীপ সমিতির মিলনায়তনে গাফফার চৌধুরীকে নিয়ে আরেকটি
অনুষ্ঠান করার ঘোষণা দেয়। এই খবরও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে কমিউনিটিতে। এরপর
কিছুক্ষণের মধ্যেই সন্দ্বীপ সমিতির ভবনের সামনে জড়ো হয়ে যায় শত শত মানুষ।
তারা গাফফার চৌধুরীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম শ্লোগান দিয়ে প্রতিবাদ জানাতে
থাকেন । এক পর্যায়ে তারা সেখানে জুতা মিছিল শুরু করে। নিউ ইয়র্ক প্রবাসী
আলেম, বিভিন্ন মসজিদের ইমাম ও খতীবদের সংগঠন মাজলিছুল উলামা ইউএসএ এবং
আমেরিকান মুসলিম ভয়েস যৌথ উদ্যোগে এসব প্রতিবাদের আয়োজন করে। প্রতিবাদ লে
বক্তব্য রাখেন মাওলানা রফিক আহমদ রেফায়ী, মাওলানা মোজাহিদুল ইসলাম,
মাওলানা আবদুল মুকিত, মুফতী মুহাম্মদ ইসমাঈল, আহমদ আবু উবায়দা, হাফেজ
রফিকুল ইসলাম, মাওলানা মাহমুদুর রহমান, রশীদ আহমদ, মাওলানা রেজাউল করীম,
মাওলানা বেলাল আহমদ, মাওলানা মাঈনুদ্দীন প্রমুখ। বক্তারা আবদুল গাফফার
চৌধুরীকে মুরতাদ বলে ঘোষণা দেন এবং তার সাথে যারা সম্পর্ক রাখবে, এমনকি
চলাফেরা করবে তাদেরকে সামাজিক ভাবে বয়কট করারও ঘোষনা দেন। এ সময় আয়োজকদের
একটি অংশ প্রতিবাদকারীদের সঙ্গে বাক-বিতন্ডায় লিপ্ত হয় এবং শেষ পর্যন্ত তা
সংঘর্ষে রূপ নেয়। অবশ্য দ্রুত পুলিশী হস্তক্ষেপে তা আর বেশি দূর গড়ায়নি।
তবে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে গাফফার চৌধুরী অনুষ্ঠানস্থলের কাছ থেকে ফিরে চলে
যান এবং শেষ পর্যন্ত গতকাল তিনি আর কোন অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারেননি।
No comments